নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে যদিও বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলছে যে, তারা বেগম জিয়ার জন্য করুণা ভিক্ষা করবেন না। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হলো তার একটি হক, ন্যায্য অধিকার। এই জামিনের জন্য তারা রাজপথে আন্দোলন এবং আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনার ঘোষণাও দিচ্ছেন। ইতিমধ্যে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য দ্বিতীয়দফা আদালতের শরনাপন্ন হয়েছেন বিএনপির আইনজীবীরা।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। আগামী রোববার এই জামিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে বিএনপির নেতৃবৃন্দই দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিভিন্ন তৎপরতায় রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে বেশ কানাঘুষাও চলছে।
বিএনপির একাধিক সূত্র মনে করছেন যে, পর্দার অন্তরালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদার মুক্তির জন্য সরকারের কাছে দেন-দরবার করছেন। এ কারণে প্রায়ই মধ্যরাতে তিনি দলের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছেন। গতকাল মধ্যরাতে ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলীয় কার্যালয় থেকে হঠাৎ করেই গায়েব হয়ে যান। তাকে প্রায় একঘণ্টা খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর তিনি দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আবার যোগাযোগ শুরু করেন এবং শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণের বিষয়ে শীর্ষনেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। দলের স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য তার কাছে জানতে চান যে তিনি কোথায় গিয়েছিলেন। এর জবাবে অবশ্য তিনি কোনো উত্তর দেননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একক উদ্যোগে সরকারের নীতি-নির্ধারক কয়েকজনের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন। একটি সুনির্দিষ্ট ফর্মূলা নিয়ে তিনি সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে কথা বলছেন। এই ফর্মূলাটি হলো বেগম খালেদা জিয়া হাইকোর্টে জামিনের যেই আবেদন করেছেন, এই জামিনের আবেদনে চিকিৎসার কারণে তার জামিন দেওয়া হবে এবং এক্ষেত্রে সরকার বাধা দেবে না।
সরকারের বিশ্বস্ত কয়েকটি সূত্র বলছে যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বিশ্বাস করা অত্যন্ত কঠিন। তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে মোবাইলে সাক্ষাৎ করেছিলেন, দলের চাপে আবার তিনি সেই আলাপকে অস্বীকারও করেছিলেন। কাজেই তিনি যখন বেগম খালেদার মুক্তির জন্য দেন-দরবার করছেন, তখন তিনি যে কথা বলছেন, পরবর্তীতে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না বিধায়ই তাকে নিয়ে সরকারের মধ্যে বিশ্বাসহীনতা রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, সরকারের পক্ষ থেকে বেগম জিয়ার মুক্তির ক্ষেত্রে ৫টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রথমত, তিনি রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা দেবেন।
দ্বিতীয়ত, তিনি একটি নির্দিষ্ট মেয়াদে শুধুমাত্র চিকিৎসার জন্য মুক্ত হবেন।
তৃতীয়ত, তিনি প্যারোল বা জামিনে মুক্তি পেলে অন্য কোনো রাজনৈতিক বক্তৃতা, বিবৃতি দেবেন না।
চতুর্থত, বেগম খালেদা জিয়া প্রতিমাসে আদালত এবং সরকারের কাছে তার স্বাস্থ্য প্রতিবেদন জমা দেবেন।
পঞ্চমত, তার চিকিৎসা শেষে তিনি আবার আইনের আওতায় আসবেন।
কিন্তু জানা যাচ্ছে, এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা খুব একটা এগোচ্ছে না বেগম জিয়ার পরিবার এবং তার নিজের একগুয়েমির জন্য। এজন্যই পর্দার আড়ালে একা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তৎপরতা চালাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও বিএনপির ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে অংশগ্রহণ, সংলাপে যোগদান, সংসদে যাওয়ার বিষয়টি মির্জা ফখরুল এককভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়ে করেছিলেন। যদিও বিএনপির অনেকে মনে করেন যে, তারেক জিয়ার সঙ্গে আলাপ করেই তিনি সংসদে যাওয়া এবং সংসদ সদস্যদের শপথের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু সেসব সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে দলের স্থায়ী কমিটিকে আড়ালে রেখেছিলেন। এখনো তিনি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য দেন-দরবার করছেন, তাতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যের আড়ালে রাখছেন কিনা তা নিয়ে বিএনপির মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে।
তবে সরকারের বিভিন্ন সূত্র বলছে, বেগম জিয়ার মুক্তির বিষয়টি সরকার কিছু করতে পারে না। যেই মামলায় তিনি দণ্ডিত হয়েছেন সেটি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা। দুদক একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। এখানে সরকার এককভাবে খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে কিছু করতে পারেন কিনা, সেটি নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন।
শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপিকে উপহাস করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণঅভ্যুত্থান থেকে তারা লিটলেট বিতরণ কর্মসূচিতে নেমে এসেছে। এবার বুঝুন তাদের অবস্থা।
তিনি বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতার কারণেই আজ দেশের এত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি হয়েছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর কাছে আবেদন করে বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন, কিন্তু বিএনপি এবং মির্জা ফখরুল বাকশালকে গালিতে পরিণত করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমও লিখছে ভারত বিরোধিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখবে বিএনপি। ভারত প্রশ্নে এখন মধ্যপন্থা নিতে চায় বিএনপি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্রের কোনো ঘাটতি নেই, সংসদ এবং সংসদের বাইরেও সরকারের বিরোধিতা জারি আছে। সরকার কোনো দল বা গোষ্ঠীর ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে না। গণতন্ত্রের বিচারে বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন। শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।