নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:১৮ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
চলতি বৎসরের নভেম্বর মাসের ৩ তারিখ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনঅনুষ্ঠিত হবে। ২০১৬ সালের মতো, এবারও নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের কথা বলছে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা। এই ঘটনায় ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের ভারপ্রাপ্ত পরিচালককে বদলিও করেন ট্রাম্প।
গোয়েন্দাদের ধারণা, রাশিয়া ট্রাম্পকে দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউজের দায়িত্ব দিতে যাচ্ছে। কেন রাশিয়া ট্রাম্পকে নির্বাচনে জিতাতে চায়, তার একটি বিশ্লেষণ করেন মার্কিন সংবাদমাধ্যম ক্যাবল নিউজ নেটওয়ার্ক (সিএনএন) এর মস্কো প্রতিনিধি নাথান হজ। বাংলা ইনসাইডারের পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হল;
সম্প্রতি আইনপ্রণেতাদেরকে গোয়েন্দা সংস্থার সর্বোচ্চ কর্মকর্তারা ২০২০ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে সতর্ক করে দেন। তারা জানান, এই নির্বাচনেও হস্তক্ষেপ করছে রাশিয়া। ট্রাম্পকে দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্রপতি করতে চাচ্ছে তারা।
আমেরিকার, রাশিয়া আতঙ্ক আবার ফিরে এসেছে। কেন রাশিয়া আমেরিকার গণতন্ত্রে আবারও হস্তক্ষেপ করবে? ট্রাম্পের শাসনামলে রাশিয়া কূটনীতিতে ধারাবাহিক জয় লাভ করতে পেরেছে, এ রকমটা স্পষ্ট নয়।
ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনে মারণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে প্রক্সি যুদ্ধ লাগিয়ে রেখেছে। ফলে, ইউক্রেনে কার্যত অচলবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কূটনীতিক দিক থেকে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে এখন শীতল হাওয়া বইছে। সিরিয়ার সংঘাত থেকে শুরু করে, ভেনিজুয়েলাতে রাজনৈতিক অশান্তি ইত্যাদি সবই এক একটা কারণ। তাছাড়া, ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস ট্রিয়েটি (এনপিটি) থেকে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেয়। আর এর নিন্দা জানাতেও ভুল করে নি ক্রেমলিন।
ওয়াশিংটনকে মোকাবিলা করার জন্য রাশিয়া তার অর্থ ব্যয় অব্যাহত রাখছে। ট্রাম্পের ট্রেজারি বিভাগ, রাশিয়াকে ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ এবং ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করার জন্য মুক্ত হস্তে অর্থ দিয়েছিল।
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত এক প্রাক্তন রাশিয়ান গুপ্তচরকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়। এবং এর মাধ্যমে মাধ্যমে আমেরিকা তার মিত্রদের সাথে নিয়ে কয়েক ডজন রাশিয়ান কূটনীতিককে দেশটি থেকে বিতাড়িত করে।
তবে দুটি বিষয় মনে রাখার মতো। ২০১৬ সালে, হোয়াইট হাউসে জিতবেন হিলারি ক্লিনটন, ট্রাম্প নয়। এমন একটি সম্ভাবনা ছিল। এটি ক্রেমলিনের জন্য বড় উদ্বেগের বিষয় ছিল। রাশিয়ার এই সম্ভাবনার সাথে লড়াই করতে হয়েছিল। ফলে, মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে এখনকার সম্পর্ক যতই হিমশীতল হোক না কেন; ট্রাম্পের মনে এখনও, পুতিনের জন্য এখনো উষ্ণ জায়গা রয়েছে।
২০২০ সালের নির্বাচনে রাশিয়া ট্রাম্পকে সাহায্য করতে যাচ্ছে, বলে আইনপ্রনেতাদের জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
ক্লিনটন-পুতিনের শত্রুতা সর্বজন বিদিত বিষয়। ২০১১ সালের সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগে, সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পুতিন এর জন্য আমেরিকা এবং তৎকালীন সেক্রেটারি অব স্টেট ক্লিনটনকে দোষ দিয়েছিলেন।
ক্লিনটনের জেনারেল হকিশনেসও ক্রেমলিনকে উস্কানি দিত। এর বিপরীতে, ট্রাম্প পুতিনের একটি মুক্ত প্রশংসক ছিলেন। এমনকি, ক্রেমলিন নেতা তাঁর “নতুন সেরা বন্ধু” হয়ে উঠবেন বলে, প্রকাশ্যে টুইটারে আশা প্রকাশ করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্পের রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন সেই সম্পর্কের কোন পরিবর্তন হয়নি। ট্রাম্প ২০১৮ সালে হেলসিংকি শীর্ষ সম্মেলনে বলেন, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ সম্পর্কে পুতিনের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তার মতে, তিনি তার গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের পরামর্শও এতোটা গুরুত্ব দেন নি।
ট্রাম্প পুতিনের সাথে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের প্রতি আমার অনেক আস্থা রয়েছে। তবে আমি আপনাকে(পুতিনকে) বলব যে, আপনি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং শক্তিশালী ছিলেন”।
রাশিয়ান সরকার রাষ্ট্রপতি প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে, ২০১৬ সালের নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চেয়েছিল এমন একটি সুস্পষ্ট প্রমাণ ছেড়ে দিন দেখি!
বর্তমান রাষ্ট্রপতি এখন তার মেয়াদের চতুর্থ বছরে। ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী মনোনীত হতে আরও কয়েক মাস লাগবে। এদিকে, পুতিন তার বিপরীত মেরুর লোকজনদের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে জোর দিয়েছেন। যেমনটা তার সম্পর্ক রয়েছে শি জিনপিং, রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান এবং বিশ্বের অনেক নেতৃবৃন্দের সাথে।
ভুয়া সংবাদ, গুজব এবং উত্তর আধুনিক প্রচারণা কৌশলের মাধ্যমে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছে। গোয়েন্দা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের এই সতর্কতা, সত্যিকারের কোন কাজের সংবাদ নয়।
গত বছর এফবিআইয়ের পরিচালক ক্রিস্টোফার ওয়াই বলেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া সংবাদ তৈরি, প্রচার ও ভুয়া ব্যক্তির নামে একাউন্ট খোলা ইত্যাদি কার্যক্রমের মাধ্যমে হস্তক্ষেপ করে। এ সকল কর্মকাণ্ড আমাদেরকে একে অন্যের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দেয়, নিজেদের মধ্যে বিভক্তি বাড়ায় এবং গণতন্ত্রের প্রতি আমেরিকানদের বিশ্বাসকে ক্ষুণ্ন করে”। তিনি এটিকে কেবল নির্বাচন-কালীন হুমকি না ভেবে, বছরের ৩৬৫ দিনের হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেন।
রাশিয়ার তদন্ত সম্পর্কে ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া- গোয়েন্দা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা - রাশিয়ার কৌশলে ভূমিকা পালন করা, আইনের শাসনে আমেরিকানদের বিশ্বাসকে ক্ষুন্ন করে এবং সরকারের উপর অবিশ্বাস ডেকে আনে।
বাংলা ইনসাইডার/এমবি
মন্তব্য করুন
দিনকে দিন বিশ্বব্যাপী ছোট হয়ে আসছে মাছের আকার। এর ফলে বর্তমানে যেসব দীর্ঘাকৃতির মাছ সাগরে পাওয়া যাচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে হয়তো তেমনটি আর পাওয়া যাবে না। বিশ্বজুড়ে মাছের আবাসস্থল নিয়ে এক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এমন চমক জাগানিয়া তথ্য উঠে এসেছে।
মেরুদণ্ডী প্রাণীর মধ্যে মাছ সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় প্রজাতি। এদের মধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র গবি ও জেব্রাফিশ থেকে শুরু করে বিশালাকার টুনা, তিমি ও হাঙর। মাছের মাধ্যমে অত্যাবশ্যক খাদ্য সরবরাহ হয় বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি মানুষের। স্বাভাবিকভাবেই মাছ জলজ বাস্তুতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সেই গুরুত্বপূর্ণ অংশটিই বিশ্বজুড়ে এখন হুমকির মুখে।
বিশ্বজুড়ে মাছের আবাসস্থল নিয়ে পরিচালিত এক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের ওপর উল্লেখযোগ্যহারে প্রভাব ফেলছে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন। এর ফলে ধীরে ধীরে বিশ্বজুড়ে উষ্ণ হয়ে আসছে মাছের আবাসস্থল। আর এতে দিনকে দিন ছোট হয়ে আসছে মাছের আকার। বলা হচ্ছে, গত ৪০ বছরে উত্তর সাগরের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক মাছের প্রজাতি আকারে ১৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। কারণ এই সময়ে সেখানে পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গবেষণায় দেখা গেছে, মাছের ওপর উষ্ণ জল অত্যন্ত খারাপ ধরনের প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে, বড় মাছের ক্ষেত্রে এই প্রভাব খুবই উল্লেখযোগ্য। বড় মাছ আকারে ছোট হয়ে গেলে দ্রুত পরিপক্ব হয় এবং অল্প বয়সে প্রজননে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এতে আকারে ছোট হতে থাকে মাছের পরবর্তী প্রজন্ম।
তাড়াতাড়ি পরিপক্ব হওয়ার এই বৈশিষ্ট্যটি মাছের বর্তমান থেকে নতুন প্রজন্মে স্থানান্তরিত হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, এটি ‘মৎস্য-প্ররোচিত বিবর্তন‘ নামে পরিচিত। এর ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মাছ আকারে হ্রাস পেতে থাকে।
বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ছোট মাছ আনুপাতিকভাবে কম সন্তান উৎপাদন করে। মাছের আকার ছোট হওয়ার অর্থ হলো প্রতিটি মাছের কম সন্তান হবে এবং বেশি বেশি মাছ ধরা পড়বে। পরিবেশগত এবং বাণিজ্যিকভাবে এই প্রক্রিয়ার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে এবং তা সরাসরি আঘাত করবে মানবজাতিকে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি
মন্তব্য করুন
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত ইরানের প্রেসিডেন্ট
মন্তব্য করুন