নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০১ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
আজ আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা অসত্য তথ্য দিয়েছেন। হাইকোর্ট বিভাগ যখন জানতে চান যে গত ১২ ডিসেম্বর যে খালেদা জিয়ার যে স্বাস্থ্য প্রতিবেদন ছিল, তাতে উল্লেখ করা হয়েছিল যে বেগম খালেদা জিয়ার সম্মতির ভিত্তিতে উন্নততর চিকিৎসা দরকার। সেই প্রেক্ষিতেই হাইকোর্ট বিভাগ জানতে চান যে তার সেই উন্নততর চিকিৎসার ব্যাপারে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এসময় খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবীরা বলেন, তিনি উন্নততর চিকিৎসার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন। এই সম্মতির ভিত্তিতে তাকে উন্নততর চিকিৎসা দেওয়া হলেও তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এর উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেছেন যে, এটা ডাহা অসত্য তথ্য। বেগম খালেদা জিয়াকে বার বার উন্নত চিকিৎসার কথা বলে হলেও তিনি অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তার অসম্মতির কারণেই তাকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিএনপির মিথ্যাচার এটিই প্রথম নয়। বেগম জিয়া রাজনীতিতে আসার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিভিন্ন মিথ্যাচার হয়েছে। আসুন দেখে নেওয়া যাক বেগম জিয়াকে নিয়ে বিএনপির মিথ্যাচারগুলো-
সহায় সম্বলহীন অসহায় নারী খালেদা
১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান মারা যাওয়ার পর বেগম জিয়াকে সহায় সম্বলহীন অসহায় নারী হিসেবে চিহ্নিত করেন। তখনকার বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলেন, দুই সন্তানকে নিয়ে চলার মতো অবস্থা তার নেই। জিয়াউর রহমান ছেড়া গেঞ্জি এবং ভাঙা স্যুটকেস ছাড়া কিছুই রেখে যাননি। আর এ কারণেই ১ টাকা মূল্যমানে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি দেওয়া হয়েছিল, তার দুই ছেলের চিকিৎসা ও শিক্ষার সমস্ত খরচ রাষ্ট্র বহন করবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায় যে খালেদার নামে এসব মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছিলেন নেতাকর্মীরা। জিয়াউর রহমান সেসময়ই বেগম খালেদা জিয়ার জন্য প্রায় ৪০ কোটি টাকার সম্পদ রেখে গিয়েছিলেন। এছাড়া শতাধিক কোটি টাকার জমিজমাও খালেদার জন্য রেখে গিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান।
এরশাদের অধীনে নির্বাচন
১৯৮৬ সালে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয় বেগম খালেদা জিয়া এরশাদ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। এটি ছিল পুরোই অসত্য। সেসময় ১৫ দলীয় জোটের সঙ্গে ৭ দলীয় জোটের বৈঠকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এরশাদকে ক্ষমতায় রাখার জন্যই বেগম জিয়া নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছিলেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে নিয়ে বক্তব্য
১৯৯৪ সালে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে আজগুবি এবং অবাস্তব বলেছেন। পাগল এবং উন্মাদ ছাড়া কেউই নিরপেক্ষ নয় বলে বেগম জিয়া মন্তব্য করেন। পরবর্তীতে দেখা যায় যে এটা পুরোই মিথ্যে ছিল। বেগম খালেদা জিয়া পরে তত্ত্বাবধায়ক সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধন করতে বাধ্য হন।
নির্বাচনে কারচুপি তত্ত্ব
১৯৯৬ এর নির্বাচনের পরপরই বেগম জিয়া সংবাদ সম্মেলন করে বলেন যে ওই নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা ছিল যে, ১৯৯৬ এর নির্বাচন ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন।
১৫ আগস্ট জন্মদিন
খালেদা জিয়ার পক্ষে বিএনপির আরেকটি বড় মিথ্যাচার ছিল ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালন করা। যদিও কোনো কাগজপত্রে বেগম জিয়ার জন্মদিন ১৫ আগস্ট উল্লেখ ছিল না। শুধুমাত্র জাতির পিতার হত্যাকারীদেরকে সমর্থন করার জন্যই ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালন করা হয়েছিল।
যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা দেয়া
২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বিএনপি সরকার দুই যুদ্ধাপরাধীকে জাতীর মন্ত্রীত্ব দেয় এবং তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়তে থাকে। এসময় সমালোচনার জবাবে বিএনপি জানায় যে, বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা দেয়নি। এটা ছিল আরেকটি চরম মিথ্যাচার, আসলে বিএনপি ছিল স্বাধীনতাবিরোধীদের পৃষ্ঠপোষকতা দানকারী প্রথম রাজনৈতিক দল। জিয়াউর রহমানই গোলাম আজমকে দেশে এনেছিলেন এবং আইন করে যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দিয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় বেগম খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রীত্ব দিয়েছিলেন।
২০০৮ সালে সৌদি আরবে যাওয়া নিয়ে
২০০৮ সালে বেগম খালেদা জিয়া ওয়ান ইলেভেন সরকারের সঙ্গে একটি আপোস সমাঝোতায় পৌঁছেছিলেন এবং এই কারনে বেগম খালেদা জিয়ার ৮৬টি স্যুটকেস বিমানবন্দরে পৌঁছান হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওয়ান ইলেভেন সরকার তারেকের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানালে বেগম খালেদা জিয়া একা সৌদি আরবে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। অথচ বিএনপি নেতৃবৃন্দরা বলে, বেগম খালেদা জিয়া দেশেই থাকতে চান, দেশেই রাজনীতি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, বেগম খালেদা জিয়া তাঁর পুত্রকে নিয়ে সৌদি আরব যেতে চেয়েছিলেন।
ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি নিয়ে মিথ্যাচার
বেগম খালেদা জিয়ার যখন ক্যান্টনমেন্টের বাড়িটি যে ১ টাকা মূল্যে লিজ দেয়া হয়েছিল, সেই লিজটি ছিল প্রতারণাপূর্ন এবং মিথ্যাচার। একইসঙ্গে তিনি গুলশানের একটি বাড়িও তাকে দেয়া হয়েছিল, অথচ সেই বাড়ির তথ্য গোপন করা হয়েছিল। এই নিয়ে যখন ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা করা হয় তখন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আবার মিথাচার আশ্রয় নিয়েছিলেন।
প্রণব মূখার্জীর সঙ্গে সাক্ষাৎ না করা নিয়ে
প্রণব মুখার্জী যখন বাংলাদেশে এসেছিলেন তখন জামায়াতের হরতালের আজুহাতে বেগম খালেদা জিয়া তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। পরবর্তীতে যখন এই নিয়ে কূটনৈতিক মহলে উত্তেজনা এবং কূটনৈতিক শিষ্টাচারবিরোধী তৎপরতা হিসেবে এটিকে চিহ্নিত করা হয়েছিল, তখন বিএনপি নেতৃবৃন্দ আবার মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছিল। তাঁরা বলেছিল যে, নিরাপত্তার কারণে বেগম খালেদা জিয়া প্রণব মুখার্জীর সঙ্গে দেখা করেননি।
২০১৪ সালে জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি নিয়ে মিথ্যাচার
২০১৪ সালে নির্বাচন প্রতিরোধের জন্য বেগম খালেদা জিয়া জ্বালাও-পোড়াও, অগ্নিসংযোগের নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং জনজীবনকে দুর্বিষহ করার জন্য যা যা করা দরকার তাই করা জন্য কর্মীদের বলেছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে বিএনপি এটা অস্বীকার করে এবং বলে যে, বেগম খালেদা জিয়া এমন নির্দেশনা দেননি। যদিও এই জ্বালাও-পোড়াও নিয়ে জনগণের মাঝে নেতিবাচক মনোভাব দেখা গেলে পরবর্তীতে তাদের জ্বালাও-পোড়াও কর্মসুচী প্রতাখ্যান করতে বাধ্য হয়।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।