ইনসাইড পলিটিক্স

যে ১০ সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকে ‘অনন্য’ করেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০১ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২০


Thumbnail

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এখন বিশ্বনেতায় পরিণত হয়েছেন। তাঁর রাজনৈতিক বিচক্ষণতা, দূরদৃষ্টি এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতা দেশে-বিদেশে প্রশংসিত এবং সমাদৃত। এই মুহুর্তে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বে সেরা সরকার প্রধানদের মধ্যে তিনি অন্যতম। শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ দু’বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে রয়েছে এবং বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি এখন অস্তমিত সূর্যের মতোই। প্রশ্ন হলো যে, শেখ হাসিনা কিভাবে রাজনীতির চূড়ায় উঠলেন? কিভাবে তিনি সবাইকে ছাপিয়ে এই অনন্য উচ্চতায় নিজেকে আসীন করলেন? গবেষণা করলে দেখা যায় দশটি সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবনের বাঁক ঘুরিয়ে দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তগুলো শেখ হাসিনাকে অনন্য উচ্চতায় ধাপে ধাপে রাজনীতির স্বর্ণশেখড়ে নিয়ে গেছে।

এই সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে হচ্ছে-

রাষ্ট্রায়াত্ত এবং সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি থেকে সরে আসা

১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করে দেশে ফিরেছিলেন শেখ হাসিনা এবং দেশে ফেরার পরপরই আওয়ামী লীগকে সমাজতান্ত্রিক চিন্তার আদর্শ থেকে সরিয়ে আনেন। রাষ্ট্রায়াত্ত এবং সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক যে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ঘোষণাপত্র ছিল, তা পরিবর্তন করে তিনি মুক্তবায়ু অর্থনীতির পক্ষে দলকে প্রতিস্থাপন করেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে আওয়ামী লীগ গ্রহণযোগ্যতা পায়।

১৯৯১ এর নির্বাচনে পরাজয়ের পরেও সংসদীয় গণতন্ত্রের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান

১৯৯১ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আকস্মিকভাবে পরাজিত হয় কিন্তু এই পরাজয়ের ধাক্কা সামলে নিতে কুণ্ঠাবোধ করেননি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বরং এই নির্বাচনের পরেও তিনি সংসদীয় নির্বাচনের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান করেন এবং শেষ পর্যন্ত তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল বিএনপিকে সংসদীয় গনতন্ত্রে যেতে বাধ্য করেন। আর সংসদীয় গণতন্ত্রের যাওয়ার কারণে শেখ হাসিনার গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে একটি নতুন মাইলফলক তৈরি করতে সক্ষম হন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার

১৯৯৪ সালে শহীদ জননী জাহানার ইমামকে দিয়ে তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবির সূচনা করেন। এটা ছিল তাঁর অনন্য সিদ্ধান্ত। এর প্রেক্ষিতে গণআদালত গঠিত হয় এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিকে একটি জনপ্রিয় দাবি হিসেবে শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠিত করেন। যার ফল হিসেবে ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিভার কাজ করতে পারেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা স্থাপন

দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলেই যে নির্বাচনে কারচুপি হয় এবং জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়না- সেই উপলব্ধি প্রথম করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আর একারনেই তিনি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা উপস্থাপন করেছিলেন এবং তীব্র গণ আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ওই দাবি বাস্তবায়নে বিএনপি সরকারকে বাধ্য করেছিলেন। এটা ছিল বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত।

৯৬ এর বিজয়ী হয়ে ঐক্যমতে সরকার গঠন

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবার পর ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এই সময়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানাপ্রকার অপপ্রচার ছিল। তাই বাস্তবতাতে শেখ হাসিনা ঐক্যমতে সরকার গঠন করেন। সেসময় জাসদের আ স ম আব্দুর রব, জাতীয় পার্টির আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করে তিনি ঐক্যমতের রাজনীতির এক নতুন দিগন্ত স্থাপন করেন এবং যেটি শেখ হাসিনাকে ব্যতিক্রম রাজনীতিবিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

২০০১ সালে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো

২০০১ সালের পহেলা অক্টোবরের নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হয় এবং ওইদিন থেকে সারাদেশে তাণ্ডব শুরু করে বিএনপি। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী এবং সংখ্যালঘুদের উপরে শুরু হয় জুলুম-নির্যাতন-হত্যা। শেখ হাসিনা সেই সময়ে নির্বাচনের পরাজয়ের পরেও মুখ বুজে থাকেননি। বরং এইসব মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন এবং সারাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহস জুগিয়েছেন। আর এই কারণেই শেখ হাসিনা একজন নতুন নেতা, বিশেষ করে নির্যাতিত মানুষের নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন।

গ্রেনেড হামলার পর মানসিক দৃঢ়তা

২০০৪ সালে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াতের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় চালানো হয় একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা। তবে এই হামলার পর শেখ হাসিনা মুষড়ে পড়েননি, বরং যে মানসিক দৃঢ়তা দেখিয়েছেন তা তাকে অনন্য নেতার পর্যায়ে নিয়ে যায়।

তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল

২০০৮ সালে ওয়ান ইলেভেনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা রাজনীতিতে এক অনন্য উচ্চতায় আসেন এবং এরপরে তিনি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অগণতান্ত্রিক শক্তির হস্তক্ষেপ চিরতরে বন্ধ করার উদ্যোগ নেন। তারই পদক্ষেপ হিসেবে তিনি যেমন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করেন তেমনি অনির্বাচিত সরকারের ক্ষমতায় আসার সাংবিধানিক পথ চিরতরে রুদ্ধ করে দেন।

২০১৪ নির্বাচন

২০১৪ নির্বাচন ছিল শেখ হাসিনার জন্য এক অগ্নিপরীক্ষা। অত্যন্ত সাহস এবং দৃঢ়তার সঙ্গে শেখ হাসিনা এই নির্বাচন পদ্ধতি সামাল দেন। বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও সহিংস রাজনীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার নির্বাচনের পক্ষে অবস্থানকে জনগণ স্বাগত জানায়। এই নির্বাচন শেখ হাসিনাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়।

জাতীয় পার্টিকে সঙ্গে রাখা

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী বিরোধী শক্তিকে দ্বিখণ্ডিত করা শেখ হাসিনার এক অনন্য রাজনৈতিক কৌশল এবং সিদ্ধান্ত। জাতীয় পার্টিকে মহাজোটের মোড়কে তাদের পক্ষে রাখার ফলে তিনি আওয়ামী বিরোধী শক্তিকে খণ্ডিত করে দিতে সক্ষম হন এবং যেটা শেখ হাসিনাকে দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক সুফল দিয়েছিল।

আর এইসমস্ত কারনে বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনা এখন অমরত্বের মর্যাদা পেয়েছেন।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

অর্থকষ্টে বিএনপি

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপি নতুন করে আন্দোলন শুরু করতে চাইছে। কিন্তু আন্দোলন শুরু করার জন্য যে আর্থিক সামর্থ্য প্রয়োজন, সেই আর্থিক সামর্থ্য এখন বিএনপির অনেক কমে গেছে। অর্থকষ্টে ভুগছে দলটি। সম্প্রতি দলের স্থায়ী কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বিষয়টি লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার কাছে অবহিত করেন। তারেক জিয়া তাদের বলেছেন, ‘আমারই চলতে কষ্ট হচ্ছে, আপনারা টাকা জোগাড় করুন’।

উল্লেখ্য যে, বিগত দুই বছর বিএনপির বেশ কিছু কর্মসূচি করেছিল এবং তাদের কাছে আর্থিক প্রবাহে একটা স্ফীতিভাব লক্ষ্য করা গিয়েছিল। বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা গোপনে গোপনে দুই নৌকায় পা দেওয়ার মতো আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে অর্থ সহায়তা দিয়েছে। তাছাড়াও বিভিন্ন বিএনপিপন্থি ব্যবসায়ীরা দলটিতে অর্থ সহায়তা বাড়িয়েছিল। তাদের আশা ছিল যে, শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচন প্রতিরোধ করতে পারবে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটবে। আর এই কারণেই ডু অর ডাই অবস্থা থেকে অনেক ব্যবসায়ী বিএনপিকে দুই হাতে অর্থ ঢেলেছিল। আর এ কারণেই বিএনপির মধ্যে গত দুই বছর চাঙ্গাভাব দেখা দিয়েছিল। কোটি কোটি টাকা খরচ করে তারা বিভিন্ন বিভাগীয় সমাবেশ করেছে। কর্মসূচি পালন করেছে। এই সমস্ত কর্মসূচির ফলে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের আশা এবং উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের ঘটনার পর আস্তে আস্তে বিএনপিতে অর্থ প্রবাহ কমতে থাকে।

বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন যে, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত বিএনপিকে অনেকেই আর্থিক সহায়তা দিচ্ছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠিত হওয়া এবং বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রগুলো নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রেক্ষিতে এখন বিএনপিকে সবাই এড়িয়ে চলতে চাইছে। যে সমস্ত ব্যবসায়ীরা আগে বিএনপিকে অর্থ দিতেন তারা এখন বিএনপি নেতাদের টেলিফোন ধরছেন না বলেও কোন কোন নেতা অভিযোগ করেছেন। আর বিএনপিপন্থি যে সমস্ত ব্যবসায়ীরা সরকারের পতনের লক্ষ্যে আন্দোলনের গতি বাড়ানোর জন্য দুহাতে অর্থ দিয়েছেন তারা এখন হাত পা গুটিয়ে নিয়েছেন।

এখন ওই সমস্ত ব্যবসায়ীরা তাদের অস্তিত্ব রক্ষার চেষ্টা করছেন। নতুন করে সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে কারও কারও মধ্যে। কারণ তারা মনে করছে, আন্দোলনে বিএনপি পরাজিত হয়েছে, এখন বিএনপির পেছনে অর্থ ঢালা মানে নিজেকে ঝুঁকিতে ফেলা। এ কারণেই বিএনপি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে যে চাঁদা আদায় করত সেই চাঁদার পরিমাণ এখন শূন্যের কোঠায় নেমে গেছে।

বিএনপির অর্থ উপার্জনের একমাত্র উপায় হল, কমিটি গঠন করা এবং কমিটি গঠন করার মাধ্যমে বিভিন্ন নেতা কর্মীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা। কিন্তু নেতাকর্মীরা এখন আগের মতো সচল অবস্থায় নেই। বহু নেতাকর্মী জেলে। তাদের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। এমনকি অনেকে আদালতের খরচ মেটাতেও হিমশিম খাচ্ছেন। এ কারণে টাকা দিয়ে কমিটিতে জায়গা নেওয়াটা অনেকের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এখানেও আর্থিক অর্থ প্রাপ্তিতে একটি টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। এ কারণে বিএনপি এখন বহিষ্কার বাণিজ্যের দিকে ঝুঁকছে। বিভিন্ন নেতাকে ঢালাওভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। তখন তারা টাকা পয়সা দিয়ে দলে আবার জায়গা করে নিচ্ছেন। এভাবে কোনরকমে দলটি টিকছে।

তবে বিএনপি নেতারা মনে করছেন, যারা অর্থসংগ্রহ করছে সে সমস্ত নেতারা ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন। বিশেষ করে কয়েকজন নেতা যারা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তারা একটি মোটা অংকের টাকা নিজেদের কাছে রেখে অল্প কিছু দলের জন্য বরাদ্দ করেছেন। তবে ওই সমস্ত নেতাদের অনেকেরই দাবি তারা নিজের কাছে কিছুই রাখেননি। বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তারা যে চাঁদা বা আথিক অনুদান পেয়েছেন তার একটি বড় অংশই তাদেরকে লন্ডনে পাঠাতে হয়েছে তারেক জিয়ার বিলাসী জীবনযাপনের জন্য।


বিএনপি   আওয়ামী লীগ   ব্যবসায়ী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

হাইকমান্ডের হাতে বিএনপির ৩০০ নেতার ভাগ্য

প্রকাশ: ০৭:১৯ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

দীর্ঘদিন ধরে চলছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সরকারবিরোধী আন্দোলন। এই আন্দোলনকে ঘিরে নানা কারণে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে এখন পর্যন্ত সাত শতাধিক নেতাকে বহিষ্কার করেছে দলটি। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতারাও রয়েছেন। বহিষ্কার হওয়া এসব নেতারা এবার ভুল স্বীকার করে দলে ফিরতে চান।

এরই মধ্যে ক্ষমা চেয়ে অন্তত তিনশজন আবেদন করেছে দলীয় হাই কমান্ডের কাছে। আবেদনের পর এখন পর্যন্ত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে মাত্র ২০ জনের। বাকিদের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তে অনড় হাইকমান্ড।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্ষমা না পেয়ে কেউ কেউ একাধিকবার আবেদনও করেছেন। ঘুরছেন বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কাছে।

তবে কোনো সংকেত না মিললেও বিএনপির কর্মসূচিতে বহিষ্কৃত অব্যাহতি পাওয়া নেতাদের অনেকেই অংশ নিচ্ছেন।

ক্ষমা না করার কারণ হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, বেশ কয়েকজন একাধিকবার আবেদন করলেও স্থানীয় গ্রুপিং-দ্বন্দ্বের কারণে দলে ফেরানোর সিদ্ধান্ত হচ্ছে না। আবার ঢালাওভাবে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করলে দলে চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়তে পারে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বহিষ্কৃত নেতাদের আবেদন বিবেচনাধীন রয়েছে।

এদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় কেন্দ্রীয় জেলা পর্যায়ের ১৪ জনকে বহিষ্কার করে বিএনপি। এর মধ্যে দুজন ছাড়া কেউ বিজয়ী হতে পারেননি। ফলে বাকিদের কেউ কেউ বিএনপিতে ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছেন। ছাড়া ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত বহিষ্কার করা হয়েছে ২০৪ নেতাকে।


হাইকমান্ড   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তারেক কি যুক্তরাজ্যে অবাঞ্ছিত হচ্ছেন?

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রায় ১০ হাজারের বেশি অবৈধভাবে বসবাস করা বাঙালিকে যুক্তরাজ্য ফেরত পাঠিয়েছে। তাদের সেখানে থাকার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের দৈনিক টেলিগ্রাফ এবং স্ট্যান্ডার্ডের খবরে বলা হয়েছে, ১১ হাজার বাংলাদেশী শিক্ষার্থী, ভ্রমণ কিংবা অন্য কোন কাজের পেশায় যুক্তরাজ্যে যান। সেখানে তারা বসবাসের জন্য রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন। তবে তাদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। বাকি ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। আবেদন খারিজ হওয়া এসব বাংলাদেশীকে এখন বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন’ চুক্তির আওতায় এসব বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানানো গেছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র ‘ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন’ চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এই চুক্তি অনুযায়ী যারা যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে বসবাস করবেন তাদেরকে দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, তারেককে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার কৌশল হিসেবেই যুক্তরাজ্যের সাথে ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। এই চুক্তির আওতায় শুধুমাত্র অবৈধ ব্যক্তিদেরকেই দ্রুত ফেরত পাঠানো হবে না, বাংলাদেশে দন্ডিত, অপরাধী এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদেশে বসে অপপ্রচারকারীদেরও ফিরিয়ে নানার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এই চুক্তিতে বলা হয়েছে, যারা বাংলাদেশে অপরাধ করে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে যাবে তাদেরকে যুক্তরাজ্য ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করবে এবং তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিল করার জন্য প্রক্রিয়া করবে। সেই বিবেচনায় তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের একটি অন্যতম রাজনৈতিক কৌশল হল, তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে এনে দন্ড কার্যকর করা। ইতোমধ্যে তারেক জিয়া ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েছেন। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেননি এবং আপিল করার সময়সীমাও পেরিয়ে গেছে। এছাড়াও অর্থপাচারের একটি মামলায় হাইকোর্ট তাকে ৭ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত করেছেন। তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ সরকার নানা রকম দেন দরবার করে আসছেন। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে তারেক জিয়াকে দেশে আনা সম্ভব হয়নি।

তারেক এখন যুক্তরাজ্যে আছে রাজনৈতিক আশ্রয়ে এবং রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করা ব্যক্তিকে যে সমস্ত শর্ত এবং নিয়ম মানতে হয় তা মানছেন না বলেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একাধিকবার অধিকার করা হয়েছে। যেমন- লন্ডনে বসে তারেক বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্র এবং সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকম বিষেদাগার করছেন, সরকার পতনের জন্য ষড়যন্ত্র করছেন।

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর অন্তত ৩টি সফরে তারেক জিয়া লন্ডনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিলেন এবং তার নির্দেশে সেখানে সহিংস ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। বাংলাদেশ দূতাবাসেও তারেক জিয়ার নির্দেশে হামলা করা হয়েছিল এবং এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ বলে বাংলাদেশ সরকার মনে করে। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের দূতাবাস তারেক জিয়াকে ফিরিয়ে আনার জন্য কয়েক দফা আবেদন করেছে এবং কূটনৈতিকরা মনে করছেন, তারেক জিয়াকে ফিরিয়ে আনার স্বার্থেই ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে।

তবে কোন কোন মহল বলছে, তারেক জিয়ার বিষয়টি স্পর্শকাতর। তাকে যেহেতু যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া হয়েছে এবং তারেক জিয়া সেই রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের আবেদন সংক্রান্ত চিঠিতে উল্লেখ করেছেন যে, বাংলাদেশে এলে তার জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে সেকারণেই তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে পাঠানোর বিষয়টি এত দ্রুত নাও হতে পারে। তবে বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে এ ব্যাপারে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখবে বলেই জানা গেছে।


তারেক জিয়া   বিএনপি   যুক্তরাজ্য   ফাস্ট ট্র্যাক চুক্তি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপির লিফলেট বিতরণ: কাদের

প্রকাশ: ০১:০০ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন।

শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। 

বিএনপিকে উপহাস করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণঅভ্যুত্থান থেকে তারা লিটলেট বিতরণ কর্মসূচিতে নেমে এসেছে। এবার বুঝুন তাদের অবস্থা।

তিনি বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতার কারণেই আজ দেশের এত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি হয়েছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর কাছে আবেদন করে বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন, কিন্তু বিএনপি এবং মির্জা ফখরুল বাকশালকে গালিতে পরিণত করতে চায়।

তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমও লিখছে ভারত বিরোধিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখবে বিএনপি। ভারত প্রশ্নে এখন মধ্যপন্থা নিতে চায় বিএনপি।                     

সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্রের কোনো ঘাটতি নেই, সংসদ এবং সংসদের বাইরেও সরকারের বিরোধিতা জারি আছে। সরকার কোনো দল বা গোষ্ঠীর ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে না। গণতন্ত্রের বিচারে বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।


বিএনপি   লিফলেট   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। 

বিএনপির একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেছেন, দল এখন আন্দোলনে ব্যস্ত, তবে আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গে সংগঠনের বিষয়টিও সম্পৃক্ত। আন্দোলন এবং সংগ্রাম একসাথেই চলবে। এই অংশ হিসেবেই আমরা দলের নেতৃত্বের পুনর্গঠনের বিষয়টি বিবেচনা করছি। 

বিএনপির এই নেতা বলেন, তারেক জিয়া যখন বলবেন তখনই কাউন্সিল করার জন্য তাদের প্রস্তুতি আছে। তবে বিএনপির একাধিক নেতা আভাস দিয়েছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ তারা একটি সংক্ষিপ্ত কাউন্সিল করতে পারেন এবং সংক্ষিপ্ত কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতৃত্ব পুনর্গঠন করা হতে পারে। 

বিএনপিতে এখন নীতি নির্ধারণী সংস্থা স্থায়ী কমিটিতে পাঁচ সদস্য পদ শূন্য রয়েছে। আবার যারা স্থায়ী কমিটিতে আছেন এ রকম বেশ কয়েক জন এখন গুরুতর অসুস্থ এবং জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। অনেকে বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলামের মতো নেতারা এখন এতই অসুস্থ যে তারা কোন রাজনৈতিক দায়িত্ব পালনের মতো অবস্থায় নেই। 

বিএনপির একজন নেতা স্বীকার করেছেন, তারা দলকে সার্ভিস দিতে পারছেন না। কিন্তু বিষয়টি খুব স্পর্শকাতর বলে মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, অসুস্থ অবস্থায় তাদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে অমানবিক। তবে বিএনপির তরুণ নেতারা মনে করেন, এটি মোটেও অমানবিক নয়। একজন পদে থাকা ব্যক্তি যদি দায়িত্ব পালন না করতে পারেন তাহলে তাকে কোন আলঙ্কারিক পদ দিয়ে ওই শূন্যপদ পূরণ করা উচিত। বিএনপির মধ্যে একটি চাপ আছে যে, যারা মাঠের আন্দোলনে সক্রিয়, অপেক্ষাকৃত তরুণ তাদেরকে নেতৃত্বের সামনে আনা হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে তারেক জিয়া এবং বেগম খালেদা জিয়ার মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। 

তারেক জিয়া বিএনপিতে তরুণদেরকে সামনে আনতে চান। তবে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন এ ধরনের ব্যক্তিদেরকে খালেদা জিয়া এখনই দল থেকে বাদ দিতে রাজি নন বলেই বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। এ প্রসঙ্গে বলা যায় যে, রফিকুল ইসলাম মিয়া বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। বিভিন্ন সংকটে তিনি বেগম জিয়ার পাশে ছিলেন। এ কারণেই দীর্ঘদিন রোগশয্যা থাকার পরও তাকে স্থায়ী কমিটিতে রাখা হয়েছে। যদিও তারেক জিয়া তাকে স্থায়ী কমিটি থেকে সরিয়ে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদে দেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার আপত্তির কারণে তিনি সেটি করতে পারেননি। 

একইভাবে ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকারকেও স্থায়ী কমিটিতে না রাখার ব্যাপারে তারেক জিয়ার আগ্রহ আছে। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার অত্যন্ত আস্থাভাজন হওয়ার কারণ তারেক জিয়ার সেই চেষ্টা সফল হয়নি। আর এ কারণেই তারেক জিয়া কাউন্সিল করছেন না বলে অনেকে মনে করেন। কারণ এখন কাউন্সিল হলে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাকে সমঝোতা করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়ার পছন্দের অনেক ব্যক্তিকে দলের নেতৃত্ব রাখতে হবে। সেটি তারেক জিয়া চান। খালেদা জিয়ার হাত থেকে বিএনপির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিলেও এখন তারেক বিএনপিকে খালেদা জিয়ার প্রভাব মুক্ত করতে পারেনি। তাই কাউন্সিলের জন্য তার অপেক্ষা। তবে একাধিক সূত্র বলছে, দলের নেতাকর্মী মধ্যে কাউন্সিল করে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য একটি বড় ধরনের চাপ আছে।


কাউন্সিল   বিএনপি   তারেক জিয়া   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   বেগম খালেদা জিয়া  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন