নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন সংক্রান্ত শুনানি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে বিচারাধীন। হাইকোর্ট গতকাল তিনদফা নির্দেশনা দিয়ে এই শুনানির জন্য আগামী বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছেন। এই তিনদফা নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে;
১. বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানাতে হবে।
২. বেগম খালেদা জিয়াকে যে অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টর কথা বলা হয়েছিল, সেই অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট দেওয়া হচ্ছে কিনা।
৩. এই রকম অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের জন্য তিনি সম্মতি জানিয়েছেন কিনা।
বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, বেগম খালেদা জিয়া এখন পর্যন্ত এই অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের জন্য কোন রকম সম্মতি দেননি। বরং হাইকোর্টে এই শুনানির পর বেগম খালেদা জিয়ার নামে অভিযোগ উঠেছে, তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গে অসদাচরণ এবং অসহযোগিতা করছেন বলে বিএসএমইউ সূত্রে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ৭ সদস্যের যে মেডিকেল বোর্ড গঠিত হয়েছে সেই মেডিকেল বোর্ড গত কয়েকদিন ধরেই বেগম খালেদা জিয়ার বোঝানোর জন্য চেষ্টা করছেন চিকিৎসা দেওয়ার জন্য। এ ব্যাপারে বেগম খালেদা জিয়া দ্বিধান্বিত ছিলেন। তিনি চিকিৎসা নেবেন কি নেবেন না এ ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করতে হবে বলে জানিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসকদের জিজ্ঞাস করেছিলেন যে, এই ধরনের অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট বিএসএমএমইউতে আগে দেওয়া হয়েছে কিনা। তারা এই ধরেনের ট্রিটমেন্ট দিতে অভ্যস্ত কিনা। এর জবাবে চিকিৎসকদল বলেছিল, বিএসএমইউতে এই ধরণের চিকিৎসা দেওয়া হয়। বেগম খালেদা জিয়ার জন্য নিয়োজিত চিকিৎসকরা বলেছেন যে, ‘তাঁরা নিজেরাও এধরণের চিকিৎসা অনেক রোগীকে দিয়ে থাকেন।’
কিন্তু পরবর্তীতে বেগম খালেদা জিয়া এই চিকিৎসা নেয়ার ক্ষেত্রে অসম্মতি জানিয়েছেন। আজ চিকিৎসকরা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি চরম অসহযোগীতা করেছেন বলে জানা গেছে। এমনকি তিনি গালমন্দ করেছেন বলেও একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। বিএসএমইউ সূত্র থেকে জানা গেছে যে, বলা হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার ব্লাড স্যুগার অনেক হাই, কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম ব্লাড স্যূগার পরীক্ষা দুপুর ১ টার আগে করা যায় না। কারণ তিনি অনেক বিলম্বে ঘুম থেকে ওঠেন। আর আজ যখন তাঁর ব্লাড স্যুগার পরীক্ষার জন্য যাওয়া হয় তখন তিনি অস্বীকৃতি জানান। এছাড়া তাকে যে ওষধগুলো দেয়া হয়েছে, সেই ওষধগুলো নিতেও অস্বীকৃতি জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আজ তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন এবং বলেছেন যে, ‘আমি কোন চিকিৎসা নেব না’। অবশ্য বেগম খালেদা জিয়াকে তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা যে ওষধ দিচ্ছে, সেগুলো তিনি গ্রহণ করছেন। আজ তিনি বলেছেন যে, আমাকে বিদেশে চিকিৎসা করতে হবে এরকম রিপোর্ট দাও। কিন্তু কোনপ্রকার পরীক্ষা ছাড়া এরকম রিপোর্ট দেয়া যায়না জানালে, তিনি ক্ষুদ্ধ্ব হয়ে ওঠেন এবং সবাইকে দেখে নেব বলেও হুমকি দেন। বেগম খালেদা জিয়া বিগত ১ বছর ধরে বিএসএমইউ-তে আছেন এবং প্রায় সময় তিনি বিভিন্ন রকম খারাপ ব্যবহার করেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। কিন্তু হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসকরা অত্যন্ত ধৈর্য্যের সঙ্গে এসব ব্যবহার সহ্য করেছেন।
বিএসএমইউ কর্তৃপক্ষ মনে করছে যে, যেহেতু বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হয়েছে, তাই এরকম একটি পরিস্থিতি তৈরি করার জন্যেই খালেদা জিয়া এমন আচরণ করছেন।
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।