নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
কামিনী, কাঞ্চনের সাথে নেশার আয়োজন যে খুব প্রভাবশালী তা এই উপমহাদেশের ইতিহাস দেখলেই পাওয়া যায়, এই বাংলা তো তার বাইরে না। তাই কামিনী দিয়ে কাঞ্চন এনে তার প্রবাহ ঠিক রাখতে বা বাড়াতে এর সাথে নেশার যোগান দেওয়া হয়। হালের অবস্থা দেখে মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে যে, যারা বাংলাদেশের গোটা রাজনীতিকে নিজের কব্জায় বন্দি করেছে তাঁদের আছে শত শত কামিনী। নজরুলের গানের ভাষায়, ‘পিয়া গেছে কবে পরদেশ পিউ কাহা ডাকে পাপিয়া’। ঘরে বৌ রেখেই উনারা ছুটে যান পাপিয়াদের কাছে। তাই তো বাংলার শহরে বন্দরে এখন পাপিয়াদের মহা-দাপট।
যাদের টাকা নেই তারা হয় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি বা চুরি করে না হয় আদিম ব্যবসার সাথে জড়িত হয়েই মূলধন তৈরি করে। এর প্রমাণ ভুরি ভুরি। আর এক শ্রেণির পুরুষ মানুষের হাতে যখন অসৎ পয়সা আসে সে তখন নিজেকে সম্রাট মনে করে। তাঁরা যায় পাপিয়াদের কাছে, কারণ তারা প্রতিদিন নতুন নতুন পাপিয়ার জন্ম দেয় টাকার লোভ দেখিয়ে বা অন্য বিপদে ফেলে। আর দেশের বিভিন্ন খাতে যারা সম্রাট, তারা সম্রাট হলেই সে নতুন নতুন হেরেমখানা খুঁজে ফেরেন। অতৃপ্তি তাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় ‘বেদি থেকে বেদিতে দিতে পূজার অর্ঘ্য’। তাই তারা সাহায্য নেয় ```` পাপিয়াদের মত দালালদের ``।
টাকা বা কাঞ্চনের লোভ নাই, এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু এমন মানুষ প্রায়ই দেখা যায় যে টাকা হলেই তারা সুরা আর সাকীতে আসক্ত হয়ে পড়েন। সুরা আর সাকী এমন নেশার দ্রব্য যাতে কেউ কোন দিন তৃপ্ত হয় না। তাই সুবিধাবাদীরা ক্ষমতাধর সুরা আর সাকী আসক্তদের কাজে লাগিয়ে টাকা আয় করে। অনেকে মন্তব্য করেন যে, জাতীয় পার্টির এক মহা ক্ষমতাধর ব্যক্তির সাকীর আসক্তি পার্টির পতনের অন্যতম কারণ। যারা জাতীয় পার্টির শাসনামল দেখেছে, তারা এই কথার সত্যতা উপলব্ধি করতে পারবেন। জাতীয় পার্টির এক বড় নেতার কত সেট গয়না ছিল জাতীয় সংসদে! যা নিয়ে তখনকার দিনে পত্রিকায় খবর বেরুতো।
বিএনপির শাসনামলে সুরা আর সাকীতে আসক্ত এক যুবক প্রধানমন্ত্রীর প্রায় সমান ক্ষমতাধর ছিলেন। সেই ক্ষমতাধর যুবকের কাছ থেকে অনৈতিক আর্থিক সুবিধা নিতে সুবিধাবাদীরা সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় সেই যুবকের জন্য বালাখানা তৈরি করে। যারা ঐ যুবকের সঙ্গী ছিলেন তারা হয়ে পড়েন অপ্রতিরোধ্য। লুটপাটে মেতে উঠলেও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কিছুই করতে পারেন নি বা করেন নি। ফলাফল পতন, মহা পতন।
মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন ও মুন্নুজান সুফিয়ানদের মতো নেত্রী তৈরির আশায় পাপিয়াদের দলে নেওয়া হলেও তারা ক্যাসিনো সেলিমদের সহযোগী হয়ে উঠেছে টাকার মোহে, ক্ষমতার মোহে। পাপিয়াদের মতো মনোরঞ্জনকারীদের যদি আওয়ামী লীগ, তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন থেকে ছেঁটে ফেলা না হয় তা হলে ভবিষ্যৎ যে খুব অন্ধকার তা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাস থেকেই জানা যায়। মানুষ যেভাবে জাতীয় পার্টি বা বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, একইভাবে তারা আওয়ামী লীগের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে না তার গ্যারান্টি কই। আমাদের মনে রাখতে হবে যে আওয়ামী লীগের ত্যাগী কর্মী সমর্থকরাও অনেকে কিন্তু এবার নগরীর মেয়র নির্বাচনে ভোট দিতে যান নি। এত এত উন্নয়নের পরেও এটা আওয়ামী লীগের জন্য একটা বিশেষ সতর্ক বার্তা।
এদিকে গত রোববার মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের যিনি মাতা, তাঁকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে।’ তিনি মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন সময়ে খালেদা জিয়ার নানা ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরে গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রের মায়ের জন্য আমাদের এখানে দাঁড়াতে হয়। এ লজ্জা রাখার জায়গা নেই আমাদের। দেশনেত্রী শুধু একজন নেতা নন। তিনি এই বাংলাদেশের সত্যিকার অর্থেই গণতন্ত্রের মাতা।’ এর পরে লাইনে উনি যা বলতে গিয়েও বলতে পারেন নি তা হলো, ‘গণতন্ত্রের পিতার ছেলে আজ নির্বাসিত। তিনি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন, ‘তাঁদের আমলের মত করে পাপিয়াদের ব্যাপক বিস্তার হউক। নেশায় বুদ হয়ে ফুর্তিতে মেতে উঠুক বড় বড় আমলা, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী সবাই। ‘করোনা ভাইরাস’এর মত পাপিয়া ভাইরাস আওয়ামী লীগের তৃনমূলে থাকা মূল দল, তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ছড়িয়ে পড়ুক। যাতে করে বাংলার মানুষের মনে ভালো মন্দের বিচারের কোন সুযোগ না থাকে। বলতে না পারে যে, অমুক ভালো আর অমুক খারাপ।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:১৫ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:১২ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:০৭ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিতে বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক অভাবনীয়, অনন্য এবং যুগান্তকারী একটি মডেল। শিশু স্বাস্থ্য, মাতৃ স্বাস্থ্য এবং কিশোরীদের স্বাস্থ্য পরিসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এটি একটি অসাধারণ উদ্যোগ। নবজাতকের মৃত্যু, মাতৃ মৃত্যু কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অনুসরণ শুরু করেছে। গত বছর ১৭ মে কমিউনিটি ক্লিনিক ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিসিয়েটিভ’ হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়। ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ সারা বিশ্বের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যাশী জনগণের জন্য ‘আলোক বর্তিকা’।
আজকে আমরা ১৭ মে নিয়ে কথা বলছি। যেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। আবার গত বছর এই দিনে তাঁর চিন্তা প্রসূত কমিউনিটি ক্লিনিককে জাতিসংঘ ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আজকে আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছি, উন্নয়নশীল বাংলাদেশের কথা বলছি, যে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি, একদিন উন্নত বাংলাদেশ হব বলে স্বপ্ন দেখছি এই সবকিছু শেখ হাসিনার স্বপ্ন, শেখ হাসিনার ইনিশিয়েটিভ। বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৭৮১ সালে পলাশি যুদ্ধে ইতিহাসের ঘৃণিত সেনাপতি মির্জাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাব সিরাজ উদ্দৌলার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ২০০ বছরের গোলামী আমাদের ললাটে এসেছিল। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হলেও বাঙালী এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা পায়নি। যার পটভূমিতে বীরদর্পে আবির্ভূত হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ থেকে ৭৫’ বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে স্বাধীনতার লাল পতাকা উড়েছিল বাঙালী আশায় বুক বেধেছিল।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বিয়োগান্তের ঘটনায় জাতি ছিল দিক নির্দেশনাহীন। নারকীয় এই ঘটনায় জনগণ হয়ে পড়েন দিশেহারা। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করার কোন শক্তি সাহস ছিল না। দলের অনেক বড় বড় নেতাও ছিলেন কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ধানমন্ডির ৩২ বাড়ি ছিল কবরের নীরবতা। সমগ্র জাতি তখন অন্ধকারে। সামরিক বুটে পিষ্ঠ গণতন্ত্র। নির্বাসনে সংবিধান আর মানুষের মৌলিক অধিকার। বাক স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না। এমনকি বঙ্গবন্ধু নাম উচ্চারণ ছিল নিষিদ্ধ।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের মৌলিক চরিত্রকেই বদলে ফেলা হয়। বিশেষ করে পাকিস্তানি ধারায় সামরিক শাসনের সংস্কৃতির প্রবর্তন ঘটে দেশে। সাম্প্রদায়িকতা ফিরে আসে রাজনীতি, প্রশাসন, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে। একের পর এক স্বপ্নভঙ্গের ঘটনা ঘটতে থাকে দেশে। বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ঘোর অমানিশার অন্ধকার। ঠিক এমন প্রতিকূল সময় ১৯৮১ সালের ১৭ মে সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর রক্তস্নাত মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন বাঙালির মুক্তির মহানায়কের যোগ্য উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনা।