নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ৩১ মার্চ, ২০২০
আমেরিকার নিউইয়র্কে করোনাভাইরাসের আক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশী আমেরিকান মারা গেছেন। কারণ সেখানে বাংলাদেশীর সংখ্যা অন্য রাজ্যের তুলনায় অনেক বেশি। সে কারণে বাংলাদেশের অনেক মানুষের নজির আমেরিকার নিউইয়র্কের দিকে। বাংলাদেশ আর কানাডার দুইজন সিনিয়র সাংবাদিকের কথোপকথনে জানা গেছে যে, নিউইয়র্কে বাঙ্গালী কমিউনিটির প্রাথমিকভাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের একটা বড় অংশ হচ্ছে উবার চালাক। যারা উবারে শুধু এয়ারপোর্টে ড্রপ দিয়েছেন তাঁরা প্রায় সবাই ভালো আছেন। আর যারা এয়ারপোর্ট থেকে আবার যাত্রী নিয়ে এসেছেন তাঁদের একটা বড় অংশ সংক্রমিত হয়েছেন। এখানেও যা পাওয়া যাচ্ছে তা হলো প্রাথমিক আক্রান্তদের অধিকাংশই সামাজিক দূরত্বের বা ঘরে থাকার বিষয়টি মানেন নি। সেখানেও পরীক্ষার কিটের আর পিপিই’র সমস্যা, হাসপাতালে যায়গা নেই, এ্যাম্বুলেন্স ডাকলে আগে যেখানে ১৫ মিনিট সময় লাগত এখন ২/৩ ঘণ্টাতেও পাওয়া যায় না।
গত শুক্রবার ব্রিটিশ কলম্বিয়া ঘোষণা করেছে, সামাজিক দূরত্ব এবং নাগরিকরা ঘরে থাকার পর সেখানে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা ২৪ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশে নেমে এসেছে। কুইবেকের প্রিমিয়ার সতর্ক আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, মনে হচ্ছে কুইবেকে করোনা ভাইরাসের বিস্তৃতির হার কমে আসার লক্ষণ দেখা দিচ্ছে।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং নাগরিকরা ঘরে থাকার পর ইতালিতেও করোনাভাইরাসে আক্রান্তের হার কমতে শুরু করেছে। ইউরোপের অন্য দেশের চিত্রও একই। এতে বিশেষজ্ঞগনের বিশ্বাস যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং নাগরিকরা ঘরে থাকা করোনাভাইরাস থেকে বাঁচার অন্যতম উপায়।
এবার আসি করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সুস্থ হবার উপায় নিয়ে। নিউইয়র্কে করোনা থেকে বেঁচে যাওয়া ৩ সদস্যের এক পরিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন যে, আক্রান্ত হবার পরে তাঁরা নিয়মিত চিনি ছাড়া গরম চা পান করেছেন, গরম পানি আর সুপ খেয়েছেন দিনে ৪/৫ বার।
উহানে বসবাসকারী এক ভারতীয় ব্যবসায়ী দাবি করেছেন যে, করোনা ভাইরাসের অন্যতম ওষুধ হচ্ছে প্রতিদিন ৪/৫ বার করে চিনি ছাড়া গরম চা পান করা, গরম পানি, গরম দুধ পান করা আর নাকে মুখে গরম পানির ভাপ নেওয়া। এতেই অধিকাংশ রোগী ভালো হয়ে যাচ্ছেন যদি তাঁদের অন্য কোন জটিল অসুখ আগে থেকে না থাকে।
অন্যদিকে সামাজিক মাধ্যমে অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়ায় এক শ্রেণীর মানুষ বলছেন যে, সরকার ভাইরাস আক্রান্ত ও মৃত্যুর তথ্য গোপন করছেন। তাঁরা ঠিকমত যোগাযোগ করেও হট লাইনে কথা বলতে পারা যায় না, বা লাইন পায়া যায় না। যখন পাওয়া যায় তখন আর দরকার থাকে না। বিভিন্ন হাসপাতালে সর্দি কাশি, জ্বরের রোগী নিয়ে গেলেও হাসপাতালে কেউ ভর্তি নেন না। আমিও এমন অনেক শুনেছি। অবিশ্বাস করি না সব। কারণ সুরক্ষা যন্ত্রপাতির অভাবে অনেক হাসপাতাল করোনাভাইরাসের উপসর্গ আছে এমন রোগী ভর্তি নিতে অস্বীকার করছেন, হট লাইনও কাজে আসছে না।
হট লাইন সমস্যার সমাধান করতে সরকার একটি এপস তৈরি করেছেন। আগামী রবিবার নাগাদ তা সব মোবাইল অপারেটরের মাধ্যমে সবার মোবাইলে চলে যাবে। তাতে মোবাইলের মাধ্যমে অসুস্থতার সমস্যার বিস্তারিত এপসের মাধ্যমে অপারেটর হয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরকে জানানো যাবে। এবং খুব অল্প সময়ে ডাক্তারের পরামর্শ পাওয়া যাবে ফিরতি ম্যাসেজে। এতেই বুঝা যাবে যে, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না। সন্দেহ হলেই সেখান থেকে নমুনা নিয়ে ৩/৪ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল দিতে পারবেন সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর। বিভিন্ন অপপ্রচার আর পিপিই সংকটের কারণে ডাক্তারদের একটা বিরাট অংশ ডি মোটিভেটেড হয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই আবার সেবায় ফিরে আসছেন। যারা জ্বর, কাশি আর শ্বাস কষ্টে মারা যাচ্ছেন তাঁদের একটা অংশই আগে থেকেই শ্বাস কষ্টের বা জটিল রোগের রোগী। এখন সব মৃত্যুই করোনাভাইরাসের মৃত্যু হয়ে যাচ্ছে কি!
সরকার এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে ৫ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন। এর বাইরে বরিশাল, কুষ্টিয়া সহ দেশের নানা স্থানে করোনা সন্দেহে প্রায় বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন ৫ বা ৬ জন। এছাড়া ঢাকার একজন বৃদ্ধ যিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে হাসপাতালে সময়মত ভর্তি হতে না পারায় মারা যান, তাঁর নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস নেগেটিভ পাওয়া গেছে। করোনাভাইরাস সন্দেহে মৃত্যুর আর তেমন উল্লেখযোগ্য খবর কোন মিডিয়ায় আসেনি। আসলে মৌসুমি জ্বর, কাশি আর করোনাভাইরাসের উপসর্গ প্রায় কাছাকাছি। তাই অনেকেই ভয় পান। এমন খবর এসেছে যে, বগুড়ায় স্বামীকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। কারণ তাঁর নির্মাণ শ্রমিক স্বামী ঢাকা থেকে ফিরেছিলেন জ্বর গায়ে।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটা ইংরেজি দৈনিক এমন শিরোনামে খবর দিয়েছে যে চীনা কিটের কার্যকারিতা ঠিক নেই। কিন্তু ভিতরে লিখেছে যে যে কোম্পানি থেকে তাঁরা কিট নিয়েছে তা চীনা সরকার অনুমোদিত কিট নয়। বিবিসিও স্বীকার করেছে যে, চীন আর আলিবাবার সরবরাহ করা কিটের মান নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। বদমায়েশির রকমফের দেখে হতবাক হই। কারণ করোনাভাইরাস কিন্তু প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী বা সম্পাদককে ছাড় দেয় না।
এখন নাগরিক সাংবাদিকতার যুগ। সোশ্যাল মিডিয়া আর নিউজ পোর্টালে ছেয়ে গেছে গোটা দেশ। বিদেশে বসেও অনেকে বাংলা নিউজ পোর্টাল চালান। আমার আপনার বাড়ির পাশে কেউ মারা করোনাভাইরাস সন্দেহে মারা গেলে তা সাথে সাথেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বা দেশি বিদেশী পোর্টালে চলে আসবে। অনেকে বলতে পারেন দেশই পোর্টালে ছাপা হলে সে সরকারের রোষানলে পড়তে পারে, সেই ভয় আছে। কিন্তু বিভিন্ন এপস ব্যবহার করে বিদেশী আইডি’র সোশ্যাল মিডিয়া বা নিউজ পোর্টালে ছাপা হতে পারতো তথ্য প্রমাণ দিয়ে। তাঁদের অনেকেই তো মিথ্যা তথ্য দিয়ে খবর প্রচার করেন বিদেশে থাকার সুবিধা নিয়ে। এটা কেন করবেন না! বাংলাদেশে এমন কোন গ্রাম বা মহল্লা কী আছে যেখানে আওয়ামী লীগ বিরোধী মানুষ নেই! তাঁর এই মোক্ষম সুযোগ কী হাতছাড়া করবেন! মনে হয় না।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা গ্রহণের কারণে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়
ভুগে বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে এই
টিকা যারা নিয়েছেন তাদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কি না, তা খুঁজে দেখতে স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
বুধবার (৮ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সার্বজনীন
স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে টিকাদান কর্মসূচিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আয়োজিত সভায়
মন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন।
সামন্ত লাল সেন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। কিছু দেশে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গেছে। আমরাও যেহেতু অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা গ্রহণ করেছি, আমাদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কি না, তা খুঁজে দেখতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে এই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা
মন্তব্য করুন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তস্বল্পতাজনিত
দুরারোগ্য ব্যাধি। এ রোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান
রেখে চলেছে। বাংলাদেশে এই রোগের জিন বাহকের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। বাহকের সংখ্যা দিন
দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশের সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। বাহকে-বাহকে
বিয়ে হলে দম্পতির সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিধায় বিয়ের আগে এই
রোগের জিন বাহক কি না তা জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
বুধবার (৮ মে) বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে
তিনি এই আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্য খাতে ‘রূপকল্প-২০৪১’
বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা সক্ষম হব,
ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাসহ
বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা
পৌঁছে দিতে এবং জনসাধারণকে সুলভে মানসম্মত স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার কল্যাণ (এইচএনপি)
সেবা দেওয়ার মাধ্যমে একটি সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার লক্ষ্যে আওয়ামী
লীগ সরকার ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। আমরা একটি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি
প্রণয়ন করে যুগোপযোগী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন নতুন হাসপাতাল, নার্সিং
ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে হাসপাতালগুলোর শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধিসহ
চিকিৎসক, নার্স, সাপোর্ট স্টাফের সংখ্যাও বৃদ্ধি করেছি। গ্রামপর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায়
স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারা দেশে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন
স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের
মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ফ্রি স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ ও পুষ্টি সেবা দেওয়া হচ্ছে।
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোন ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা
চালু করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে গত ১৫ বছরে স্বাস্থ্য
খাতের উন্নয়নে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, মানুষের
গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ মাতৃমৃত্যু, নবজাতকের মৃত্যু ও অনূর্ধ্ব ৫ বছর বয়সী শিশুমৃত্যু হার,
অপুষ্টি, খর্বতা, কম ওজন ইত্যাদি হ্রাসে ক্রমাগত উন্নতি হচ্ছে। সম্পদের সীমাবদ্ধতা
থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এমডিজি লক্ষ্য অর্জনে অসাধারণ সফলতা দেখিয়েছে।
২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টগুলো (এসডিজি) অর্জনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
মন্তব্য করুন
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সমাজের সচেতন নাগরিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে
থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার (৮ মে) বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে
তিনি এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি এবং অনেক
ক্ষেত্রেই তা জটিল আকার ধারণ করতে পারে। তাই এ রোগ প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার
বিকল্প নেই। থ্যালাসেমিয়া বিস্তার রোধে বাহকদের এবং আত্মীয়ের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ককে
নিরুৎসাহিত করতে হবে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রে সন্তান ধারণের পর প্রয়োজনীয় সতর্কতা
অবলম্বন করতে হবে।
বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি কর্তৃক ‘বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস’
উদযাপনের উদ্যোগকে রাষ্ট্রপতি স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘সবাই মিলে থ্যালাসেমিয়া মুক্ত বাংলাদেশ
গড়ব-এটাই হোক এবারের বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবসের অঙ্গীকার।’
তিনি বলেন, থ্যালাসেমিয়া একটি জিনবাহিত রোগ যা বাহকের মাধ্যমে ছড়ায়।
স্বামী-স্ত্রী উভয়ই থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক হলে সন্তানদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা
থাকে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে থ্যালাসেমিয়া জিনবাহক নারী-পুরুষের
মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়ে থাকে। এজন্য বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ
হওয়ার আগেই পরীক্ষার মাধ্যমে পুরুষ বা নারী কেউ এ রোগের বাহক কিনা তা নির্ণয় করা জরুরি।
এছাড়া রক্তস্বল্পতাজনিত ভয়াবহ এ রোগটি প্রতিরোধে জনসচেতনতা গড়ে তোলাও প্রয়োজন।
রাষ্ট্রপতি ‘বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন থ্যালাসেমিয়া
মন্তব্য করুন
গত পাঁচ বছরে চিকিৎসাসেবা খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের ৩৫ শতাংশ
নিষ্পত্তি করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। অন্যদিকে ৬৫ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।
কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন
বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
অভিযোগ নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রতার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আগ্রহে ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।
আরও পড়ুন: অসুস্থতা নিয়েও পুরুষের তুলনায় বেশিদিন বাঁচে নারী: গবেষণা
বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে চিকিৎসাসেবাসংক্রান্ত
৬৬টি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ সময় নিষ্পত্তি হয়েছে ২৩টি অভিযোগ।
সে হিসাবে ৩৫ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে। নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে ৪৩টি অভিযোগ,
যা মোট অভিযোগের ৬৫ শতাংশ।
এর মধ্যে ২০২৩ সালে চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত ২৫টি অভিযোগ নিয়ে কাজ
করেছে মানবাধিকার কমিশন, যা গত পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ। চলতি বছরের ৩১ মার্চ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে ২০২৩ সালের (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) বার্ষিক প্রতিবেদন হস্তান্তর
করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।
এদিকে ২০২৩ সালের ২৫টি অভিযোগের মধ্যে ভুক্তভোগী কর্তৃক দায়ের করা
অভিযোগ দুটি।
অন্যদিকে কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমটো) হয়ে গ্রহণ করা অভিযোগের
সংখ্যা ২৩, যা এ সময় কমিশন কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন সুয়োমটো অভিযোগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ।
ভুক্তভোগীদের দায়ের করা দুটি অভিযোগ নিষ্পত্তি হলেও কমিশন কর্তৃক গৃহীত ২৩টি অভিযোগের
মধ্যে মাত্র তিনটি অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে।
নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে আরও ২০টি অভিযোগ। সে হিসাবে গত বছর চিকিৎসাসেবা
সংক্রান্ত অভিযোগের ৮০ শতাংশ নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।
এদিকে, ২০২০ সালে করোনাকালীন সর্বনিম্ন দুটি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে
কমিশন।
এর মধ্যে একটি অভিযোগ জমা পড়ে আর কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দায়ের
করে অন্যটি। ওই বছর কোনো অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়নি।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯-এর ধারা ১২ অনুযায়ী, দেশের নাগরিকরা কমিশনে চিকিৎসাসেবা খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবা খাতের অব্যবস্থাপনার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এসবের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করে সংস্থাটি। প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে কমিশন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। প্রতিবেদন পাওয়ার পর কোন কোন ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হয়েছেন তার গুরুত্ব বিবেচনা করে উচ্চ আদালতে রিট করে কমিশন।
আরও পড়ুন: করোনা টিকা ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
চিকিৎসাসেবা খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতার
জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আগ্রহের ঘাটতিকে দায়ী করছেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন
আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘যেসব অভিযোগ কমিশনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট
কর্তৃপক্ষের কাছে জমা পড়েছে, সেগুলো নিষ্পত্তির জন্য আমরা নিয়মিত তাগিদ দিয়ে থাকি।
চিকিৎসাসেবা খাতের অভিযোগগুলো নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আরো বেশি আগ্রহী
হতে হবে।’
এ খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে কমিশন
অনেক ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসাসেবা নিতে এসে অনিয়মের শিকার রোগীদের
অভিযোগ জমা পড়তে পড়তে পাহাড় হয়েছে। আবার ভুল চিকিৎসা, সেবা নিতে গিয়ে অনিয়মের শিকার
হয়েছেন এমন অভিযোগও অনেক। স্বাস্থ্যসেবার প্রকৃত চিত্র শিগগিরই পরিসংখ্যানের মাধ্যমে
তুলে ধরবে কমিশন। এরপর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘জনসাধারণকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে মনে করে কমিশন। গত বছর আমরা জরায়ু ক্যান্সারের ভুয়া ভ্যাকসিন, হাসপাতালের শয্যা নিয়ে বাণিজ্য, ওষুধের মোড়ক পরিবর্তন করে বিদেশি ওষুধ বলে বিক্রি, অনুমোদন ছাড়া ক্লিনিক এবং বেসরকারি হাসপাতাল বন্ধে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে আইনের সীমাবদ্ধতার কারণে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে পারে না কমিশন। এ জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে কার্যকর ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে প্যারিস নীতিমালার আলোকে আইনের সংশোধন জরুরি।’
চিকিৎসাসেবা জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
মন্তব্য করুন
অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা গ্রহণের কারণে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগে বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে এই টিকা যারা নিয়েছেন তাদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কি না, তা খুঁজে দেখতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তস্বল্পতাজনিত দুরারোগ্য ব্যাধি। এ রোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশে এই রোগের জিন বাহকের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। বাহকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশের সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। বাহকে-বাহকে বিয়ে হলে দম্পতির সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিধায় বিয়ের আগে এই রোগের জিন বাহক কি না তা জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।