নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৪ পিএম, ০২ এপ্রিল, ২০২০
করোনা বাংলাদেশে এখন মহা আতঙ্ক তৈরী করেছে। শুধু জনস্বাস্থ্যের কারণে নয়, করোনার কারণে যে অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি বাংলাদেশে হতে যাচ্ছে, দারিদ্রর কষাঘাত থেকে মুক্তপ্রায় বাংলাদেশ আবার যে দরিদ্রর টানেলে ঢুকতে যাচ্ছে তা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের দরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের প্রাজ্ঞবান পরামর্শ এবং একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাওয়া।
কিন্তু দু:খজনক হলেও বাস্তবতা হলো যে, শেখ হাসিনা একাই লড়ছেন। তার পাশে পরামর্শ দেওয়ার মতো, এমনকি প্রকৃত তথ্য উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করার মতো লোকজনও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।তাকে দিনরাত ২৪ ঘন্টা কাজ করে সব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে নির্দেশনা দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে। কিন্তু দিনের শেষে শেখ হাসিনাও একজন মানুষ। একা তিনি কতক্ষণ লড়বেন সেই প্রশ্ন করতেই পারেন। আর করোনা এমন একটি রোগ যা সারাবিশ্বকে একটা জিনিস বুঝিয়ে দিয়েছে যে, করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে একা কেউ সফল হতে পারবে না। এজন্য দরকার একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং একটি টিমওয়ার্ক। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে সমন্বিত কর্ম উদ্যোগ গ্রহণের চেষ্টা করছেন এবং অন্তত ১৪ টি মন্ত্রণালয়কে তিনি এই করোনা মোকাবিলার কাজে সম্পৃক্ত করেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য আমাদের বর্তমান মন্ত্রিসভায় যারা বিভিন্ন মন্ত্রীত্বের দায়িত্বে রয়েছেন এবং যারা আমলা রয়েছেন তাদের ব্যাপারে জনআস্থার সংকট রয়েছে।
প্রথমত; জনগণ তাদের সম্বন্ধে খুব একটা জানে না। দ্বিতীয়ত; তাদের যে বাচণিক ভঙ্গি, তাদের যে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ তা জনগণকে আশ্বস্ত করতে পারছে না। তৃতীয়ত; সুযোগ পেয়ে এমন কোন উদ্ভাবনী বা দায়িত্বশীল আচরণ করছেন না যাতে মনে হতে পারে তারা জণগনের পাশে আছেন এবং সমস্যা সমাধানে আন্তরিক।
বাংলাদেশের মানুষ এখনো মনে করেন শেখ হাসিনাই যেকোন সমস্যায় জনগনের পাশে থাকবেন্ যেকোন সমস্যা জণগনকে সাথে নিয়ে সমাধান করতে চান। কিন্তু যাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারা কেউ জণগনের বন্ধু হিসেবে জণগণের পাশে থেকে সমস্যা মোকাবিলা করতে চান এমন বিশ্বাস স্থাপন করতে পারেননি, সমস্যাটা এখানেই।
আওয়ামী লীগের অনেক হেভিওয়েট নেতা আছেন, যাদেরকে আমরা জননেতা বলতে পারি এবং তাঁদের জনপরিচিত, জনপ্রিয়তা এবং জনগণের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ততা আছে। জনবিচ্ছিন্ন আমলা বা মন্ত্রী কখনো জনগণের হৃদয়ের স্পন্দন অনুভব করতে পারেননা। যেমনটি এই মন্ত্রিসভার অনেক মন্ত্রীই পারছেন না। আবার জনগণের সাথে যারা সবসময় সংযুক্ত থাকেন, যেমন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁরা জনগণের কথা বুঝতে পারেন। আওয়ামী লীগের যে সমস্ত নেতাদেরকে এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় রাখা হয়েছে, তাঁদের অনেকের জনসম্পৃক্ততা অনেক বেশি।
শুধু আওয়ামী লীগ নয়, ১৪ দলীয় জোটের এমন অনেক নেতা-ব্যক্তি আছেন যাদের সাথে জনগণের সম্পৃক্ততা আছে, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় যারা জনগণের ভাষা বোঝেন, জনগণের কান্না শুনতে পান এবং জনগণের অব্যক্ত বেদনাকে বুঝতে পারেন। এই সমস্ত যেসব নেতৃবৃন্দ আছেন, তাঁদেরকে এই সঙ্কটে আওয়ামী লীগ সভাপতি কি পাশে নেবেন? আমরা দেখেছি যে, ২০১৩ সালের শেষ দিকে যখন বিএনপি সারাদেশে সবগুলো সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী হলো এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জ্বালাও-পোড়াও এর রাজনীতি শুরু করলো, তখন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রথমে মন্ত্রিসভায় তোফায়েল আহমেদ, রাশেদ খান মেনন এবং হাসানুল হক ইনুকে অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছিলেন। সেসময় তোফায়েল আহমেদ এবং রাশেদ খান মেনন মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে চাননি। কিন্তু যখন বিএনপি নির্বাচন বর্জনের ডাক দিলো, তখন আওয়ামী লীগ একটি সর্বদলীয় মন্ত্রিসভা গঠন করলো এবং তাতে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, বেগম মতিয়া চৌধুরী, রাশেদ খান মেননসহ যারা রাজনীতিতে দীর্ঘদিন যাবত প্রাজ্ঞ তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করলেন। বিএনপি সেই নির্বাচন বর্জনের পরেও সেই নির্বাচন জনআস্থা অর্জন করতে পারলো। এখন করোনা ২০১৪ এর নির্বাচনের থেকেও বড় সঙ্কটময় পরিস্থিতির দিকে দেশকে নিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং জনস্বাস্থ্য সঙ্কট মোকাবেলার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সভাপতি কি এই প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদদেরকে কি তাঁর পাশে নেবেন? আমরা জানি যে, বিচক্ষণতা-দূরদৃষ্টিতায় শেখ হাসিনার ধারেকাছেও কেউ নেই। কিন্তু আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, বেগম মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, রাশেদ খান মেনন কিংবা হাসানুল হক ইনু- যারা জনগণকে নিয়ে কাজ করেন এবং জনগণের ভাষা-আকাঙ্ক্ষা বোঝেন, তাঁদেরকে নিলে শেখ হাসিনা অন্তত যে জনআস্থার সঙ্কট দানা বেঁধেছে, মানুষের মাঝে যে অবিশ্বাস সৃষ্টি হচ্ছে- সেই অবিশ্বাস এবং আস্থাহীনতা থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে পারবেন। শেখ হাসিনা বিষয়টি ভেবে দেখবেন কি?
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।