ইনসাইড হেলথ

ডায়াবেটিস ও রোজা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:৫৮ এএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২০


Thumbnail

রমাদান মোবারাক। বেশির ভাগ ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতি বছরের মত এবারও রোজা রাখবেন, ইনশাআল্লাহ । আগের বছরের মত রোগীরা বারডেম, অথবা বিভিন্ন ডাক্তার দের চেম্বারে গিয়ে যেভাবে উপদেশ নিতেন, এবার করোনা পরিস্থিতির কারনে সেটা অত জোড়ালো ভাবে হচ্ছে না। যদি ও বারডেম হাসপাতাল খোলা। কিন্তু লক ডাউনে রোগীরা আসতেই পারছে না। যেহেতু ডায়াবেটিস রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাই আমরা ও চাই না, এ পরিস্থিতিতে উনারা বাসার বাহিরে আসুক। 

এ বছর রোজায় দিনের প্রায় ১৪ থেকে ১৫ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হবে, তাপমাত্রা ও বেশি থাকবে। রাতের ৯ থেকে ১০ ঘন্টার ভিতরে ইফতার, রাতের খাবার, আর সেহরি খেতে হবে। সামনের ১ মাস সুস্থ থাকতে হলে খাবারের পরিমান ও মোট ক্যালরি, রোজার আগে যা ছিলো তাই রাখতে হবে। বেশি খেলে গ্লুকোজ বেড়ে যাবে, কম খেলে অসুস্থ হয়ে যাবেন। ডায়াবেটিস গাইড বইতে দেখে নিন, আপনার জন্য কত ক্যালরি ঠিক করা আছে। ১৮০০ ক্যালরি থাকলে রোজায় আপনি সে পরিমানই রাতে খাবেন, এবং গাইড বই থেকে রোজার খাদ্য তালিকা বুঝে নিন। 

রোজায় সুগার হঠাৎ কমে যাওয়া যাকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলা হয় অথবা বেশি খাওয়ার কারনে গ্লুকোজের পরিমান অনেক বেড়ে যাওয়া, পানি শুন্যতা, রক্তচাপ কমে যাওয়া অথবা ওষুধ বাদ দেওয়ার কারণে অনেক বেড়ে যাওয়া এই রকম জটিলতার কারণে অনেক রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। মারা ও যান অনেকে। এই জন্য প্রত্যেক ডায়াবেটিস রোগীকে আমরা very high, high, moderate, low risk এই গ্রুপে ভাগ করি। সমস্ত ইনসুলিন নেয়া রোগী, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, হাসপাতালে ভর্তি রোগী, গত তিন মাসের ভিতর খুব সুগার বেড়ে যাওয়া অথবা বেশী কমে যাওয়া, প্রেগনেন্সি, হার্ট , কিডনির জটিলতা থাকলে সবাই high risk. কিছু নিয়ম মানলে, বুঝেশুনে চললে রোজা রাখতে কোনো অসুবিধা হবে না, ইনশাআল্লাহ। যদিও high risk রোগীদের রোজা না রাখতে আমরা বেশির ভাগ সময় বলে থাকি। আমরা চাই রোজা রাখতে গিয়ে যাতে শরীর বেশি খারাপ না হয়, আবার রাখতে চাইলে কোনো সমস্যা ছাড়াই আপনি যাতে সব রোজা রাখতে পারেন। আসুন, আমারা ব্যাপারগুলো বুঝে নিই। 

১. মাগরেবের আজানের সাথে সাথে পানি খেয়ে ওষুধ / ইনসুলিন নিয়ে খাবার খেয়ে নিবেন। আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে না। তবে কিছু ইনসুলিন আছে যেগুলো রক্তে তাড়াতাড়ি মিশে যায়, কিন্তু খরচ বেশি। (Novorapid, Humalog, Apidra)। রোজার আগে সকাল বেলায় যে ওষুধ গুলো আপনি খেতেন রোজায় তা (ওষুধ, অথবা ইনসুলিন) ইফতারে নিবেন। অনেকে সকালে দুই রকম ইনসুলিন দেখতে ঘোলা অথবা স্বচ্ছ, (actrapid, insulated/Humulin R, Humulin N ) নিয়ে থাকেন, ইফতারে সময় পুরো ডোজ নিয়ে নিবেন । তার মানে, সকালে নাস্তার আগে ২০ ইউনিট ইনসুলিন নিলে ইফতারে তাই থাকবে। মূল ব্যাপার সকালে যে ওষুধ/ ইনসুলিন নিতাম ইফতারে সে ওষুধ পুরোটা আর রাতে যে ওষুধ / ইনসুলিন খেতাম সেহরির সময় সে ওষুধ / ইনসুলিন অর্ধেক ডোজ হবে। 

২. এক টার বেশি খেজুর খাওয়া একেবারেই উচিৎ না। কম মিষ্টির শরবত খাওয়া যাবে। ভাজা পোড়া না খাওয়াই ভালো। সারারাত পানি যত বেশি খাওয়া যায়, তা ভালো। বেশি মিষ্টির খাবার খেলে গ্লুকোজ চট করে বেড়ে যায়। 

৩.ব্যায়াম করার দরকার নাই, তারাবির লম্বা নামাজই যথেষ্ট। করোনা পরিস্থিতিতে ঘরেই নামাজ পড়বেন। আল্লাহ সব জানেন, বুঝেন। 

৪.সন্ধ্যা রাতের খাবার ( যা আমরা তারাবির পর খেয়ে থাকি) না খেলে ইনসুলিন অথবা টেবলেট খাওয়ার দরকার নাই। কম খাবার খেলে ইনসুলিনের ডোজ কম হবে। 

৫. সেহরির খাবার কখনই বাদ দিবেন না, শেষ সময়ের দিকে খাবেন। বেশি আগে খাবেন না। অনেকে রাত ১ টায় খেয়ে ঘুমিয়ে যায়, ডায়াবেটিস রোগীদের এরকম করা নিষেধ। ভাত খাওয়া যাবে পরিমান মত। রোজার আগে রাতের বেলা আমরা যে ওষুধ অথবা ইনসুলিন নিতাম, সেহরিতে তার অর্ধেক মাত্রা নিবেন। যেহেতু সারাদিন না খেয়ে থাকবেন, তাই পরিমান কম হবে। অর্থাৎ রোজার আগে রাতে একটা টেবলেট খেলে সেহরিতে তার অর্ধেক খাবেন ইনসুলিনের মাত্রা ২০ ইউনিট ছিলো, এখন সেহরিতে নিবেন ১০ ইউনিট। আর কেউ যদি দুই টা ইনসুলিন নিলে ( actrapid , insulated / Humulin R , Humulin N ) দেখতে ঘোলা অথবা স্বচ্ছ) দুটো থেকেই রোজার আগের রাত্রের মাত্রার অর্ধেক কম নিবেন। অনেকে আছেন খাওয়ার আগে একটা ইনসুলিন তিন বেলা এবং শোয়ার আগে আরেকটা ইনসুলিন মোট ৪ বার ইনসুলিন নিয়ে থাকেন। রোজায় উনি সকালের পুরো ডোজ ইফতারে, দুপুরের ডোজ রাত ১০ টায় যদি খেয়ে থাকেন, না খেলে বাদ, কম খেলে ডোজ কম নিবেন। আর রোজার আগের রাতের খাওয়ার আগে যে পরিমান ইনসুলিন ডোজ নিতেন তার অর্ধেক হয়ে চলে যাবে সেহরির সময়। আর যে ইনসুলিনটা ঘুমানের আগে একটা fixed সময়ে নিতেন সে ইনসুলিন (Lantus, detemir, tresiba) একই সময়ে নিবেন। গ্লুকোজ কমার ভয় থাকলে আগের চেয়ে ৪ অথবা ৬ ইউনিট কমিয়ে দিবেন। 

৬. চেষ্টা করবেন একটা গ্লুকোমিটার কিনে নিতে। রোজায় গ্লুকোজ পরীক্ষা করলে রোজা নষ্ট হয় না বলে দেশে বিদেশে অনেক আলেম বলেছেন। 

দিনের বেলা গ্লুকোজ ৪ এর কম হলে অবশ্যই রোজা ভেংগে ফেলবেন। এরপর দিন থেকে, ওষুধ অথবা ইনসুলিনের পরিমান কমিয়ে দিবেন। রক্তে গ্লুকোজ ১৬ এর বেশি হলে, শরীরে পানি কমে গেলে, শরীরের চর্বি ভেঙে রক্তে কিটোন চলে আসে, যা খুবই খারাপ। হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। তাই শরীর খারাপ লাগলেই গ্লুকোমিটারে রক্ত পরীক্ষা করবেন। সেহরি, ইফতারের আগে ও ২ ঘন্টা পর, দিনের ১০টা থেকে ৩ / ৪ টার ভিতরে গ্লুকোজ পরীক্ষা করে ওষুধের মাত্রা ঠিক কমবেশি করতে হবে। 

৭. জিলিপী, মিষ্টি, চর্বি জাতীয় খাবার খাবেন না।

৮ রক্তচাপ কমে গেলে ব্লাডপ্রেসারের ওষুধের মাত্রা কমাতে হবে। 

৯.দিনের বেলা শারীরিক পরিশ্রম, ব্যায়াম করা যাবে না। 

১০.গ্লুকোজ কমে গেলে হাত পা কাপবে, বুক ধড় ফড় করবে, মাথা ঘুড়াবে, ঘাম হবে, চিন্তা করতে অসুবিধা হবে, এমন কি অজ্ঞান হয়ে যাবেন, সাথে সাথে চিনি, মিষ্টি খাবেন। পরদিন যাতে এর কম অবস্থা না হয়, ওষুধের মাত্রা কমিয়ে দিবেন।

১১. ডায়াবেটিস বেড়ে গেলে গলা শুকিয়ে যাবে, মাথা ঘুরাবে, বার বার পস্রাব হবে। 

১২. অনেকেই থাইরয়েডের ওষুধ খেয়ে থাকেন, সেহরির ঘুম ভাংগার সাথে সাথে খালিপেটে ওষুধ খেয়ে নিবেন। 

১৩. মনে রাখবেন, আগামী বছর রোজার তিন মাস আগে থেকেই রোজার প্রস্তুতি নিবেন, আধ্যাত্মিক ও শারীরিক দুভাবেই, ইনশাআল্লাহ। 

ইনশাআল্লাহ, মহান আল্লাহ আমাদের সবার এবাদত কবুল করবেন, আমাদের সুস্থ রাখবেন। 

 

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, বারডেম হাসপাতাল।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

হাসপাতালের অনুমোদনহীন ক্যান্টিন-ফার্মেসি বন্ধের নির্দেশ

প্রকাশ: ০৬:৩৫ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

সরকারি হাসপাতালের ভেতরে অবৈধভাবে তৈরি করা অনুমোদনহীন ক্যান্টিন, মেয়াদোত্তীর্ণ প্রতিষ্ঠানের (ফার্মেসি) কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। 

শুক্রবার (১০ মে) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই নির্দেশনা দেয়া হয়।

এতে বলা হয়, দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা সদর, জেনারেল হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবস্থিত অবৈধ, অনুমোদনহীন, ইজারা দেয়া মেয়াদোত্তীর্ণ ফার্মেসি, ক্যান্টিন বা ক্যাফেটেরিয়ার কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। তবে সরকারি বকেয়া বা পাওনা থাকলে তা আদায়ের ব্যবস্থা করে নির্দেশনা মানতে হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, সরকারি হাসপাতালের ভেতরে নতুনভাবে কোনো ফার্মেসি, ক্যান্টিন বা ক্যাফেটেরিয়া স্থাপনের অনুমতি প্রদান করা যাবে না। এ ছাড়া ইতোমধ্যে স্থাপিত ফার্মেসি-ক্যান্টিনের অনুমোদন নবায়ন না করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খতিয়ে দেখার নির্দেশ

প্রকাশ: ০১:০৩ পিএম, ০৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা গ্রহণের কারণে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগে বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে এই টিকা যারা নিয়েছেন তাদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কি না, তা খুঁজে দেখতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

বুধবার (৮ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে টিকাদান কর্মসূচিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আয়োজিত সভায় মন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন।

সামন্ত লাল সেন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। কিছু দেশে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গেছে। আমরাও যেহেতু অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা গ্রহণ করেছি, আমাদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কি না, তা খুঁজে দেখতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে এই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। 


স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন   অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে জেনে নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ: ০৯:২৬ এএম, ০৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তস্বল্পতাজনিত দুরারোগ্য ব্যাধি। এ রোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশে এই রোগের জিন বাহকের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। বাহকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশের সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। বাহকে-বাহকে বিয়ে হলে দম্পতির সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিধায় বিয়ের আগে এই রোগের জিন বাহক কি না তা জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

বুধবার (৮ মে) বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এই আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্য খাতে ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা সক্ষম হব, ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে এবং জনসাধারণকে সুলভে মানসম্মত স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার কল্যাণ (এইচএনপি) সেবা দেওয়ার মাধ্যমে একটি সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। আমরা একটি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করে যুগোপযোগী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন নতুন হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে হাসপাতালগুলোর শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধিসহ চিকিৎসক, নার্স, সাপোর্ট স্টাফের সংখ্যাও বৃদ্ধি করেছি। গ্রামপর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারা দেশে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ফ্রি স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ ও পুষ্টি সেবা দেওয়া হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোন ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা চালু করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে গত ১৫ বছরে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ মাতৃমৃত্যু, নবজাতকের মৃত্যু ও অনূর্ধ্ব ৫ বছর বয়সী শিশুমৃত্যু হার, অপুষ্টি, খর্বতা, কম ওজন ইত্যাদি হ্রাসে ক্রমাগত উন্নতি হচ্ছে। সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এমডিজি লক্ষ্য অর্জনে অসাধারণ সফলতা দেখিয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টগুলো (এসডিজি) অর্জনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।


প্রধানমন্ত্রী   থ্যালাসেমিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান

প্রকাশ: ০৮:০৬ এএম, ০৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সমাজের সচেতন নাগরিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

বুধবার (৮ মে) বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি এবং অনেক ক্ষেত্রেই তা জটিল আকার ধারণ করতে পারে। তাই এ রোগ প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই। থ্যালাসেমিয়া বিস্তার রোধে বাহকদের এবং আত্মীয়ের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ককে নিরুৎসাহিত করতে হবে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রে সন্তান ধারণের পর প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। 

বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি কর্তৃক ‘বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস’ উদযাপনের উদ্যোগকে রাষ্ট্রপতি স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘সবাই মিলে থ্যালাসেমিয়া মুক্ত বাংলাদেশ গড়ব-এটাই হোক এবারের বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবসের অঙ্গীকার।’

তিনি বলেন, থ্যালাসেমিয়া একটি জিনবাহিত রোগ যা বাহকের মাধ্যমে ছড়ায়। স্বামী-স্ত্রী উভয়ই থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক হলে সন্তানদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে থ্যালাসেমিয়া জিনবাহক নারী-পুরুষের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়ে থাকে। এজন্য বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আগেই পরীক্ষার মাধ্যমে পুরুষ বা নারী কেউ এ রোগের বাহক কিনা তা নির্ণয় করা জরুরি। এছাড়া রক্তস্বল্পতাজনিত ভয়াবহ এ রোগটি প্রতিরোধে জনসচেতনতা গড়ে তোলাও প্রয়োজন।  

রাষ্ট্রপতি ‘বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।


রাষ্ট্রপতি   মো. সাহাবুদ্দিন   থ্যালাসেমিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

চিকিৎসাসেবা খাতে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ৬৫ শতাংশ অভিযোগ

প্রকাশ: ১২:০০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

গত পাঁচ বছরে চিকিৎসাসেবা খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের ৩৫ শতাংশ নিষ্পত্তি করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। অন্যদিকে ৬৫ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।

কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

অভিযোগ নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রতার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আগ্রহে ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।

আরও পড়ুন: অসুস্থতা নিয়েও পুরুষের তুলনায় বেশিদিন বাঁচে নারী: গবেষণা

বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে চিকিৎসাসেবাসংক্রান্ত ৬৬টি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ সময় নিষ্পত্তি হয়েছে ২৩টি অভিযোগ। সে হিসাবে ৩৫ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে। নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে ৪৩টি অভিযোগ, যা মোট অভিযোগের ৬৫ শতাংশ।

এর মধ্যে ২০২৩ সালে চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত ২৫টি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে মানবাধিকার কমিশন, যা গত পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ। চলতি বছরের ৩১ মার্চ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে ২০২৩ সালের (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) বার্ষিক প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।

এদিকে ২০২৩ সালের ২৫টি অভিযোগের মধ্যে ভুক্তভোগী কর্তৃক দায়ের করা অভিযোগ দুটি।

অন্যদিকে কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমটো) হয়ে গ্রহণ করা অভিযোগের সংখ্যা ২৩, যা এ সময় কমিশন কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন সুয়োমটো অভিযোগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ। ভুক্তভোগীদের দায়ের করা দুটি অভিযোগ নিষ্পত্তি হলেও কমিশন কর্তৃক গৃহীত ২৩টি অভিযোগের মধ্যে মাত্র তিনটি অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে।

নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে আরও ২০টি অভিযোগ। সে হিসাবে গত বছর চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত অভিযোগের ৮০ শতাংশ নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।

এদিকে, ২০২০ সালে করোনাকালীন সর্বনিম্ন দুটি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে কমিশন।

এর মধ্যে একটি অভিযোগ জমা পড়ে আর কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দায়ের করে অন্যটি। ওই বছর কোনো অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়নি।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯-এর ধারা ১২ অনুযায়ী, দেশের নাগরিকরা কমিশনে চিকিৎসাসেবা খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবা খাতের অব্যবস্থাপনার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এসবের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করে সংস্থাটি। প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে কমিশন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। প্রতিবেদন পাওয়ার পর কোন কোন ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হয়েছেন তার গুরুত্ব বিবেচনা করে উচ্চ আদালতে রিট করে কমিশন।

আরও পড়ুন: করোনা টিকা ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

চিকিৎসাসেবা খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আগ্রহের ঘাটতিকে দায়ী করছেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘যেসব অভিযোগ কমিশনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা পড়েছে, সেগুলো নিষ্পত্তির জন্য আমরা নিয়মিত তাগিদ দিয়ে থাকি। চিকিৎসাসেবা খাতের অভিযোগগুলো নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আরো বেশি আগ্রহী হতে হবে।’

এ খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে কমিশন অনেক ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসাসেবা নিতে এসে অনিয়মের শিকার রোগীদের অভিযোগ জমা পড়তে পড়তে পাহাড় হয়েছে। আবার ভুল চিকিৎসা, সেবা নিতে গিয়ে অনিয়মের শিকার হয়েছেন এমন অভিযোগও অনেক। স্বাস্থ্যসেবার প্রকৃত চিত্র শিগগিরই পরিসংখ্যানের মাধ্যমে তুলে ধরবে কমিশন। এরপর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘জনসাধারণকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে মনে করে কমিশন। গত বছর আমরা জরায়ু ক্যান্সারের ভুয়া ভ্যাকসিন, হাসপাতালের শয্যা নিয়ে বাণিজ্য, ওষুধের মোড়ক পরিবর্তন করে বিদেশি ওষুধ বলে বিক্রি, অনুমোদন ছাড়া ক্লিনিক এবং বেসরকারি হাসপাতাল বন্ধে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে আইনের সীমাবদ্ধতার কারণে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে পারে না কমিশন। এ জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে কার্যকর ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে প্যারিস নীতিমালার আলোকে আইনের সংশোধন জরুরি।’


চিকিৎসাসেবা   জাতীয় মানবাধিকার কমিশন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন