নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২০
গার্মেন্টস মালিকরা তাঁদের অর্থলিপ্সার জন্য একের পর এক মিথ্যাচার এবং প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছেন। আর এই মিথ্যাচার আর প্রতারণার ফাঁদে পড়েছে সরকার। এর ফলে সবথেকে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হবে এদেশের সাধারণ জনগণকে। কারণ বাংলাদেশে যে এখন সামাজিকভাবে করোনা সংক্রমণের ব্যাপক বিস্তার হবে সেটা শুধুমাত্র গার্মেন্টস মালিকদের অমানবিক আচরণ, লোভ এবং অর্থলিপ্সার কারণে। এই গার্মেন্টসগুলো খোলা রাখার জন্য তাঁরা একের পর এক প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছেন এবং এই প্রতারণার ফাঁদে পড়ে সরকার গার্মেন্টস মালিকদের সব অন্যায় আবদার মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। দেখে নেয়া যাক গার্মেন্টস মালিকরা কি ধরণের প্রতারণা করছে-
১. ১৬ এপ্রিলের মধ্যে অনেক গার্মেন্টস মালিকরাই বেতন দেয়নি। শ্রম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গার্মেন্টস মালিকদের বলা হয়েছিল যে, বকেয়া বেতন ১৬ই এপ্রিলের মধ্যে পরিশোধ করতে। কিন্তু ১৬ এপ্রিলের মধ্যে অধিকাংশ গার্মেন্টস মালিকরা বেতন দেননি, বরং বেতন না দিয়ে তাঁরা গার্মেন্টস খোলার কৌশল গিয়েছেন- এটাই একটি প্রতারণার কৌশল বলছেন বিশ্লেষকরা। কারণ গার্মেন্টস যখন বন্ধ থাকবে শ্রমিকরা তখন অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকবে এবং গার্মেন্টস খোলা রাখলে শ্রমিকরা বেতন-ভাতার জন্যে আন্দোলন করবে না। অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, গার্মেন্টস খোলার পেছনে মূল কারণ হলো বেতন-ভাতা না দেওয়া। এর পেছনে মূল কারণ বিদেশি বায়ারদের অর্ডার সেটি নয়।
২. লে অফ নিয়ে মিথ্যাচার করেছে গার্মেন্টস মালিকরা। কিছু কিছু গার্মেন্টস মালিক লে অফ ঘোষণা করেছেন। তাঁরা বলেছেন যে সরকারি আইন মেনেই তাঁরা লে অফ ঘোষণা করেছেন। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে যে করোনা সঙ্কটের জন্য কোন গার্মেন্টসকে লে অফ করা যাবেনা। এখানেও গার্মেন্টস মালিকরা প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে।
৩. গার্মেন্টস মালিকরা বলছেন যে, শুধুমাত্র ঢাকায় যে সমস্ত শ্রমিক আছে, সেই সমস্ত শ্রমিকদেরকে কাজে আনা হবে। তাঁরা গতকাল প্রকাশ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে দাবি করেছেন যে, ঢাকার বাইরে থেকে কোন শ্রমিক আনা হবেনা। ঐ বৈঠক থেকে বের হয়ে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালেও গার্মেন্টসের দুই নেতা বলছেন যে, ঢাকার বাইরে থেকে কোন শ্রমিক আনা হচ্ছেনা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রত্যেকটি গার্মেন্টস শ্রমিককে ঐ গার্মেন্টস ম্যানেজাররা টেলিফোন করছেন এবং বলছেন যে যদি চাকরি বাঁচাতে চান, তাহলে আপনাদের অবশ্যই ঢাকায় আসতে হবে, নাহলে আপনাদের চাকরি থাকবে না। আজও গার্মেন্টস শ্রমিকদের ভিড়ে উপচে পড়েছে বিভিন্ন ফেরি-ঘাটে এবং তারা যে যেভাবে পারছে, সেভাবেই ঢাকায় আসছেন, এর ফলে সামাজিক সংক্রমণের বারোটা ইতিমধ্যেই বেজে গেছে।
৪. গার্মেন্টস মালিকরা সরকারের কাছে অঙ্গীকার করেছে যে, যারা আসবেন না তাঁদের কারও চাকরিচ্যুত করা যাবেনা। উপস্থিত না হলেও এপ্রিল মাসের বেতনের ৬০ শতাংশ দেয়া হবে। এটাকে প্রতারণা বলছেন গার্মেন্টসের সাথে সংশ্লিষ্টরা। শ্রমিকরা বলছেন যে, ম্যানেজাররা তাঁদেরকে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন যে, যদি তাঁরা ২ মে এর মধ্যে কারখানায় উপস্থিত হতে না পারে তাহলে তাঁদের চাকরি থাকবে না, বেতন তো দূরের কথা। অর্থাৎ তাঁরা যদি ঢাকায় না আসে, কর্মস্থলে যোগদান না করে বা বাড়িতে অবস্থান করে তাহলে বেতন তো দূরের কথা চাকরিটাও হারাবেন। অথচ গার্মেন্টস মালিকরা সরকারের কাছে বলে এসেছে যে, শ্রমিকদের ৬০ ভাগ বেতন দেয়া হবে। এটা আরেকটি প্রতারণা।
৫. তাঁরা বলছেন যে, স্বাস্থ্য বিধি মেনে তাঁরা গার্মেন্টস পরিচালনা করবেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে যে, হাতে গোনা দু-একটি গার্মেন্টস ছাড়া অধিকাংশ গার্মেন্টসে স্বাস্থ্যবিধি তো দূরের কথা নূন্যতম জনস্বাস্থ্যের নিয়মনীতি মানছে না। এটা না মানার ফলে সামাজিক সংক্রমণের ভয়ানক ঝুঁকি তৈরি হয়েছে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীগুলোকে ঘিরে।
৬. সবশেষ যে প্রতারণাটি গার্মেন্টস মালিকরা করছেন তা হলো, তাঁরা বলছেন যে, করোনা চিকিৎসা এবং করোনা পরীক্ষার জন্য পৃথক ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু বাস্তবে কোন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি এখন পর্যন্ত এই ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
আর সবশেষ জানা গেছে যে, বিদেশি বায়াররা চলে যাবে বা অর্ডার নষ্ট হয়ে যাবে বলে যে আর্তনাদ করছেন, সেটাও একটি প্রতারণা।
কারণ আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোন আলাপে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন যে কোন গার্মেন্টসের অর্ডার বাতিল হবেনা। বিশ্বের বায়াররা বাংলাদেশের গার্মেন্টস মালিকদের মতো অমানবিক নয়, এরকম পরিস্থিতিতে তাঁরা অর্ডার বাতিল করার মতো অমানবিক আচরণ করবেন না- এটা অতীতেও প্রমাণিত হয়েছে। বরং বাংলাদেশে করোনা ঝুঁকি এবং করোনার সংক্রমণ অব্যহত থাকলে বায়াররা স্বাস্থ্যগত কারণে অর্ডার বাতিল করতে পারেন, এরকম নজির আমরা অতীতেও দেখেছি। সেরকম সম্ভাবনাও রয়েছে।
গার্মেন্টস মালিকরা যখন অতি চালাকি করছেন, এই অতি চালাকদের বিপদ হয় বিভিন্ন ভাবে এবং তারাও হয়তো এরকম একটি বিপদে পড়তে পারেন। তবে সরকারের সাথে গার্মেন্টস মালিকরা যে প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছেন, এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মনে করেন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।