নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৭ পিএম, ২৫ মে, ২০২০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৬ বছরের বেশি সময় ধরে সরকার প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে টানা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি ক্ষমতায় রয়েছেন।দীর্ঘ সময় ধরে সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে তাকে অনেকগুলো সঙ্কট মোকাবিলা করতে হয়েছে। নিতে হয়েছে অনেক ঝুঁকিও। শুধু সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে নয়, বিরোধী দলের নেতা হিসেবেও অনেক কঠিন সময় তিনি পাড় করেছেন। তার রাজনৈতিক এবং সরকার প্রধান হিসেবে ক্যারিয়ারে করোনা ভাইরাস মোকাবিলা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কিনা সেই প্রশ্ন অনেক বিশেষজ্ঞরা করছেন। তবে সঙ্কট মোকাবিলায় শেখ হাসিনার একটি নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি আছে। আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ মানুষ যেভাবে চিন্তা করেন, শেখ হাসিনা তার চেয়ে একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করেন।
শুধু শেখ হাসিনা নন, যারা বিশ্বে কিংবদন্তিতুল্য রাষ্ট্রনায়ক জননগনের যারা নিবেদিত প্রাণ তাদের চিন্তাভাবনা দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ আলাদা। সেই আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই শেখ হাসিনা একটি সমস্যাকে দেখেন এবং সমাধানের চেষ্টা করেন। তবে লক্ষণীয় যে, শেখ হাসিনা যখনই কোন সঙ্কটে পড়েছেন, যখনই কোন সঙ্কটের উত্তরণের পথ খুঁজেছেন তখন তার ক্যারিশমা দেখা গেছে। তার একটি ‘ম্যাজিক’ সলুউশন সামনে নিয়ে এসেছেন। যার সাহায্যে দ্রুত সঙ্কটের পথ পাওয়া গেছে। এত দ্রুত হয়তো সমাধানের পথ হয়তো কেউ চিন্তাও করতে পারতো না। এবার প্রশ্ন উঠেছে শেখ হাসিনা কি ‘ম্যাজিক’ দেখাবেন?
আমরা যদি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখবো যে, সঙ্কট মোকাবিলায় হঠাৎ একটি সিদ্ধান্ত যা গতানুগতিকতা বা সকলের অনুমানের সীমার বাইরে সেরকম একটি সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন। আমরা যদি ধরি যে, ১৭ মে তার স্বদেশে প্রত্যাবর্তন যেটিকে মনে করা হয় তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে সবচেয়ে টার্নিং পয়েন্ট সেেই সিদ্ধান্তটাও গ্রহণ করা হয়েছিল একটি ম্যাজিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে। অনেকেই মনে করেছিল, শেখ হাসিনা হয়তো আওয়ামী লীগের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন কিন্তু দেশে আসবেন না। কারণ দেশে তখন প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিবেশ। তাকে হত্যার ভয়। ঘাতকরা ক্ষমতার মসনদে। রাষ্ট্রপ্রধান জিয়াউর রহমানের পৃষ্টপোষকতায় ঘাতকরা তখন অস্ত্র উচিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ঠিক সেই সময় জীবনকে তুচ্ছজ্ঞান করে শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছিলেন। শেখ হাসিনা যদি দেশে না ফিরতেন তাহলে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অন্যরকম হতো। শেখ হাসিনার দেশে ফেরা পাল্টে দেয় দেশের রাজনীতির সব হিসেব নিকেশ।
আমরা যদি দেখি ১৯৯৬ সালে তিনি যখন সরকার গঠন করলেন। তখন শেখ হাসিনা আরেকটি ম্যাজিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি ঐক্যমতের সরকার গঠন করেছিলেন। যদি ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছিল। কিন্তু তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকার গঠন না করে জাতীয় ঐক্যমত করেছিলেন এবং ২১ বছর পর গঠিত আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভায় তিনি জাসদ এবং জাতীয় পার্টিকে স্থান দিয়েছিলেন। জাসদ থেক আব্দুর রব এবং জাতীয় পার্টি থেকে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাঁর এই ম্যাজিক সিদ্ধান্ত রাজনীতির গতিপথ পরিবর্তন করেছিল।
আমরা যদি দেখি যে, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যখন পরাজিত হয়েছিল, সেই পরাজয়ের পরেও বিরোধী দলে থেকে সংসদীয় ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য বিল উত্থাপন করেছিলেন এবং জাতীয় ঐক্যমত গঠন করতে সফল হয়েছিলেন। এই সিদ্ধান্তটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। ১৯৯৬ সালে যখন বিএনপি-জামায়াতের ভোট ডাকাতি, ভোট কারচুপিতে সোচ্চার তখন শেখ হাসিনা আরেকটি ম্যাজিক সিদ্ধান্ত নিয়ে জাতির সামনে উপস্থিত হন। তিনি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করেন। ২০০৭ সালে যখন ওয়ান ইলেভেন সরকার আসে, শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে, তখনো শেখ হাসিনা এক ম্যাজিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি ঐ অনির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে তৃণমূলকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন এবং তাঁর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মীরা যখন পিছুটান দিয়েছিল, অনেকে যখন সংস্কারপন্থী হয়েছিল তখন তিনি বিভক্তির পথে যাননি। বরং ম্যাজিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি ক্ষমতায় আসার নতুন কৌশল গ্রহণ করেছিলেন। এটাই হলো শেখ হাসিনার ম্যাজিক। অবশ্য শেখ হাসিনার ম্যাজিক সিদ্ধান্তগুলোর একটি হলো ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর, সে সময় ফেব্রুয়ারি মাসে সংগঠিত মর্মান্তিক বিডিআর বিদ্রোহের পর তিনি যেভাবে একা বুক চিতিয়ে ক্যান্টনমেন্টে গিয়েছিলেন এবং দরবারে বক্তব্য রেখেছিলেন, সেটা তাঁর সাহসিকতার অনন্য নজির হয়ে থাকবে। আর এই সাহসিকতাই তাঁকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। অবশ্য অন্যান্য সঙ্কট মোকাবেলা এবং করোনা সঙ্কট মোকাবেলা সম্পূর্ণ ভিন্ন- তা বলছেন বিশ্লেষকরা। তবে করোনা নিয়েও শেখ হাসিনা অনেক কাজ করছেন। সারাক্ষণ এই সঙ্কট নিয়ে ভাবছেন এবং এই সঙ্কট নিয়ে তাঁর যে পথরেখা তা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। তবে এখন অপেক্ষা শেখ হাসিনার একটি ম্যাজিক সিদ্ধান্তের, যে সিদ্ধান্তের কথা হয়তো আমি-আপনি কেউ ভাবতে পারছি না এরকম একটি ম্যাজিক সিদ্ধান্ত নিয়ে শেখ হাসিনা আসবেন এবং পুরো জাতি যে একটি অস্বস্তি-দম বন্ধ করা অবস্থায় রয়েছে তা থেকে মুক্তি পাবে এবং আমরা পাবো এক নতুন দিকনির্দেশনা।
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি রাজনীতির খবর মির্জা আব্বাস
মন্তব্য করুন
ডোনাল্ড লু বিএনপি আওয়ামী লীগ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সুশীল সমাজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
এনবিআর কাস্টমস জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করলে বিএনপিকে আবারও পালাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার দরকার নেই। সরকারেরও দরকার নেই। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির নেতাকর্মীরা বক্তব্য দিয়েছে, আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না। সেদিনও দেখলাম পল্টন ময়দান থেকে একে একে দৌড়াতে দৌড়াতে অলিগলি কোথায় দিয়ে যে পালিয়েছে, কেউ চিন্তাও করেনি।
সোমবার (১৩ মে) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির আওয়ামী লীগের সভাপতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা হবে। যদি তারা আবারও জ্বালাও-পোড়াও করে। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করলে বিএনপিকে আবারও পালাতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাসে পালিয়ে যাওয়ার কোনো রেকর্ড নেই। ২০০৭ সালে আর রাজনীতি করব না এই মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাদের মূল নেতা পালিয়ে আছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২৮ অক্টোবরও বক্তব্য দিয়েছিল আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না। শেষ পর্যন্ত দেখলাম দৌড়াতে দৌড়াতে তারা পালিয়েছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশে এসে কেউ আবারও বিএনপিকে মদত দেবে সে পরিস্থিতি এখন বিশ্বে নেই। যারা দাপট দেখাতো তাদের ক্ষমতা মধ্যপ্রাচ্যেই সংকুচিত হয়ে গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথাই ইসরায়েল শুনে না।
এসময় ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক গোলাপ, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের বিএনপি
মন্তব্য করুন
জামায়াতকে নিয়ে নতুন বিরোধের মুখোমুখি হচ্ছে বিএনপি। স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের এই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বিএনপির ভেতরে যেমন শুরু হয়েছে দ্বন্দ্ব অন্তঃকলহ তেমনই বিএনপি যাদের সঙ্গে নির্বাচন প্রতিরোধের আন্দোলন করেছিল তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মতদ্বৈততা। বিএনপির নেতৃত্বের একটি বড় অংশ জামায়াতকে নিয়ে আবার প্রকাশ্য আন্দোলনের পক্ষে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভাতেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল এবং সেই বৈঠকে মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সহ স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য জামায়াতের সঙ্গে প্রকাশ্য জোটের ব্যাপারে তাদের ইতিবাচক মনোভাবের কথা জানিয়েছেন।
আগামীকাল দুদিনের সফরে ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে আসছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর এটি প্রথম সফর। নানা কারণেই এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড লুর বাংলাদেশ সফর নিয়ে যেরকম উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ত, এখন সে রকম পরিস্থিতি নেই। ডোনাল্ড লু এর বাংলাদেশ সফর নিয়ে রাজনীতির মাঠে আলাপ আলোচনা আছে। তবে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এর কেউই এই সফরকে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন না।
আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করলে বিএনপিকে আবারও পালাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার দরকার নেই। সরকারেরও দরকার নেই। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির নেতাকর্মীরা বক্তব্য দিয়েছে, আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না। সেদিনও দেখলাম পল্টন ময়দান থেকে একে একে দৌড়াতে দৌড়াতে অলিগলি কোথায় দিয়ে যে পালিয়েছে, কেউ চিন্তাও করেনি।