নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৮ পিএম, ৩০ মে, ২০২০
বাংলাদেশে আগামীকাল থেকে সবকিছু খুলে দেওয়া হচ্ছে। যদিও বলা হচ্ছে যে, সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবকিছু খুলে দেওয়া হবে, তবে বাংলাদেশে স্বাস্থ্যবিধি কজন মানে তা একটি বড় প্রশ্ন। কার্যত এই খুলে দেওয়া একটি ঝুকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত এবং সরকার এই ঝূকিপূর্ণ সিদ্ধান্তটি নিয়েছে অর্থনীতিকে গতিশীল রাখার জন্য। তবে সরকারের একাধিক নীতিনির্ধারকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, এই সিদ্ধান্তটি একটি টেস্ট কেস হিসেবে নিয়েছে সরকার এবং সরকার যে প্রজ্ঞাপনটি জারি করেছে সেই প্রজ্ঞাপনে ১৫ই জুন পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বলবত থাকার কথা বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ১১ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করা হবে এবং সরকার এই দুই সপ্তাহ দেখতে চায় যে পরিস্থিতি কোনদিকে যায়। পরিস্থিতি খুব খারাপ হলে তখন সরকার হয়তো ১৫ই জুনের পর আবার ৭ থেকে ১৫ দিনের জন্য একটি কঠোর লকডাউন বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। সরকারের নীতিনির্ধারকরা বলছেন যে, এরকম সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সরকার কতগুলো সুনির্দিষ্ট বিষয় মাথায় রাখবে এবং কতগুলো ঘটনা ঘটলেই কেবল তাঁরা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তটি পূনর্বিবেচনা করতে পারে। যে ঘটনাগুলোর কারণে সরকার সিদ্ধান্তটি পূনর্বিবেচনা করতে পারে বলে সরকারের নীতিনির্ধারক সূত্রে জানা গেছে সেগুলো হলো-
১. জ্যামিতিক হারে যদি আক্রান্ত বাড়ে
বাংলাদেশে এখন আক্রান্ত বেড়ে যাচ্ছে এবং প্রতিদিন নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। এই জ্যামিতিক বৃদ্ধি অব্যহত থাকলে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়বে। ইতিমধ্যে হাসপাতালগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই, আইসিইউগুলোতে কোন শয্যা খালি নেই। এই পরিস্থিতি যদি আরো খারাপ হতে থাকে তাহলে সরকার হয়তো আরো কিছুদিনের জন্য আবার লকডাউনের সিদ্ধান্তে ফিরে যেতে পারে।
২. হাসপাতালগুলোর ওপর চাপ বাড়লে
শুধু করোনা রোগী নয়, অন্যান্য রোগীদের জন্য যদি চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায় এবং হাসপাতালগুলোর স্বাস্থ্যব্যবস্থা যদি একেবারে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয় সেক্ষেত্রে সরকার তাঁর যে সিদ্ধান্ত, সেই সিদ্ধান্ত পূণর্বিবেচনা করতে পারে।
৩. মৃত্যুর হার বেশি হলে
করোনার সঙ্গে বসবাসের যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের মূল যুক্তি ছিল যে করোনায় বাংলাদেশে মৃত্যুহার কম। এই মৃত্যুহার কম থাকার কারণে বাংলাদেশ করোনার সঙ্গে বসবাসের ঝুঁকিটা নিয়েছে। কিন্তু অনেক গবেষকরা বলছেন যে, যদি রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে তাহলে মৃত্যুহার সম্পূরকভাবে বাড়বে এবং মৃত্যু হার বাড়লে সেক্ষেত্রে সরকার হয়তো তাঁর সিদ্ধান্ত আবার পূণর্বিবেচনা করতে পারে।
৪. অফিস-আদালতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে
অফিস-আদালতগুলো খুলে দেওয়ার ফলে যে ঝুঁকিটি তৈরি হয়েছে যে অফিস-আদালতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা গেছে। অফিস সীমিত আকারে খুলুক বা বৃহৎ পরিসরে, অফিসে সব এলাকা থেকে লোকজন আসবে এবং সেই লোকজনের সঙ্গে মেলামেশায় সামাজিক দুরত্ব কতটুকু মানা হবে তা একটি বড় প্রশ্ন এবং সেই সামাজিক দুরত্ব না মানা হলে বড় বড় অফিসগুলো করোনার হটস্পটে পরিণত হতে পারে এবং সেগুলোর মাধ্যমে করোনার সংক্রমণ ব্যাপক ভাবে বাড়তে পারে। আর এই রকম ভাবে সংক্রমণ ছড়ালে সরকার হয়তো তাঁর সিদ্ধান্ত পূণর্বিবেচনা করতে পারে।
৫. মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়লে
করোনা নিয়ে ইতিমধ্যে মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব দেখা যাচ্ছে। মানুষ লঞ্চে-বাসে যেভাবে আসছে তাতে তাঁদের করোনা নিয়ে বিন্দুমাত্র ভয় আছে কিনা সন্দেহ। তাছাড়া একটি কথা বলা হচ্ছে যে, করোনা ধনীদের আক্রান্ত করছে, গরীবদের কিছু হবেনা। এধরণের ঠুনকো যুক্তি দেখিয়ে করোনাকে উপেক্ষা করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে জনগণের মধ্যে। কিন্তু সামনের দিনগুলোতে যদি করোনা সংক্রমণের হার বাড়তে থাকে এবং গরীব-দরিদ্র বা বস্তিবাসীদের মধ্যে করোনা ছড়িয়ে পড়ে তাহলে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক তৈরি হবে। এরকম আতঙ্ক তৈরি হলে সরকার হয়তো তাঁর সিদ্ধান্ত পূণর্বিবেচনা করতে পারে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে সামনের দিনগুলোতে কি হয় তা দেখার উপর।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।