নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৪৮ পিএম, ২৯ জুন, ২০২০
সিনেমাপাড়া বা বিএফডিসিকে নিয়ে কত মানুষের কত অভিযোগ। ভালো ছবি হয় না, ভালো শিল্পী নেই- কত কি! কিন্তু এই সিনেমাপাড়ায় কেউ গিয়ে থাকলে একটা জিনিস খেয়াল করবেন, সম্মান। আগের মতো না থাকলেও কমতি নেই। সিনিয়রদের পায়ে পড়ে সালাম, সম্মানে মাথা নিচু করে কথা বলা, স্যার, ম্যাডাম সম্বোধন করা- এগুলো এফডিসিতে দেখে আপনি বাইরের কেউ হলে অবাক হবেন। কিছু ঘটনা জানলে আপনি সেটা ভালোমতোই বুঝতে পারবেন।
পরিচালক রায়হান মুজিবের সেটে শুটিং করছিলে জসিম- শাবানা। শুটিংয়ের জন্য লাইট অন করা হলো। হুট করে শাবানাকে পাওয়া যাচ্ছে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সে মেকাপ রুমে এক সাংবাদিককে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। জসিম পরিচালক মুজিবকে জিজ্ঞাস করলেন, তোমার কাছে কি বলে গেছে? মুজিব আমতা আমতা করে বললেন, না। জসিম তখন আর কিছু বললেন না। শাবানা স্পটে আসলেন। জসিম- শাবানার একটা দৃশ্য ধারণ হলো। পাশেই জসিমের আরেকটা সিনেমার সেট ডিজাইন চলছিল। সেখানে যাওয়ার জন্য মুজিবের অনুমতি নিলেন শাবানার কাছ থেকে। একটু জোরেই মুজিবকে বললেন, পরিচালক আমি কি যেতে পারি? নিজেই ওই ছবির প্রযোজক ছিলেন। কিন্তু তিনি পরিচালকের অনুমতি নিয়ে অন্য সেটে কিছুক্ষণের জন্য যেতে চাইলেন। শাবানার বুঝতে এক মুহূর্ত দেরি হলো না। শাবানা গিয়ে মুজিবের গায়ে হাত দিয়ে বললেন, সরি ভাই। আমাকে মাফ করে দে। আমি তাড়াহুরায় খেয়াল করতে পারিনি। আমার আর কখনো এমন ভুল হবে না।’
জসিম যেদিন মারা গেলেন, মান্না গাজীপুরে ‘খবর আছে’ ছবির শুটিং করছিলেন। পাশেই ইলিয়াস কাঞ্চনের একটা সিনেমার শুটিং চলছিলো। সেখান থেকে ফাইটার মোসলেমকে একজন এসে জানালেন জসিম বস আর নেই। মান্না ধপ করে বসে পড়লেন। মাথায় হাত দিয়ে বললেন আমরা শেষ। শুটিং রেখে নিজে গাড়ি চালিয়ে জসিমের উত্তরার বাসায় চলে আসলেন। মান্না এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমি লাশ দেখার আগ পর্যন্ত বিশ্বাস করিনি। গাড়ি চালাচ্ছিলাম আর আল্লাহকে জপছিলাম খবরটা যেন মিথ্যা হয়।
২৪ বছর আগের। এই ঘর এই সংসার এর শুটিং। পরিচালক মালেক আফসারী ক্যামেরা সেট করছিলেন ভর দুপুরে। সালমান শাহ একটা ছাতা এনে ছায়া দিলো তার মাথার উপর। এতো বড় স্টার হয়ে`ও সালমান শাহ ছিল নিরহংকার। টেকশিয়ানের কাছে নিজেকে ছাত্র মনে করতেন। আফসারী একটা ছবি দিয়ে বললেন, ‘ওর চাঁদ মুখটি ভালো করে দেখুন কি গভীর মনোযোগ আমার দিকে। আমি কি বলছি? ক্যামেরায় কি লেন্স লাগাচ্ছি? সব কিছু মন দিয়ে দেখছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সময়ে ছবির শুটিং-সেটে এরকম চিত্র নিছক কল্পনাই বলতে হবে। নায়ক-আর নায়িকাদের মেক-আপ রুমে থাকতে দেখা যায়। ক্যামেরার সামনে আসেন শট দেয়ার সময়। রোদ থাকলে তাদের মাথার ওপর ছাতা ধরে থাকেন প্রোডাকশনের লোকেরা।সালমান যেন একেবারে উলটো। ছবিটি বলে দেয়, সেই সময়ের সালমান কতটা উদার।’
নব্বই-পরবর্তী এমন নায়ক-নায়িকা খুব কমই পাওয়া যাবে, যাঁরা সাদেক বাচ্চুর কাছে অভিনয় শেখেননি।আশির দশকের শেষ দিককার কথা। সাদেক বাচ্চু তখন তুমুল জনপ্রিয়। বিটিভিতে বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করে নজর কেড়েছেন। পথে-ঘাটে মানুষের কাছে নিজের অভিনয়ের প্রশংসা শোনেন। এর মধ্যেই একদিন পরিচালক এহতেশামের ফোন পেলেন। শিগগির দেখা করার তাগিদ দিলেন। তাঁর অফিসে গেলেন বাচ্চু। সেদিনই দারুণ এক প্রস্তাব পেলেন গুণী এই পরিচালকের কাছ থেকে। সেদিনের কথা বললেন বাচ্চু, “আমার জ্ঞান সীমিত। কতটা অভিনয় জানি সেটা নিয়েও কথা বলতে চাইনি কখনো। এহতেশাম দাদুভাই সেদিন আমাকে একটা প্রস্তাব দিলেন, নতুন ছবি ‘চাঁদনী’র জন্য নতুন নায়ক-নায়িকা নিয়েছেন তিনি। আমার গুরুদায়িত্ব তাঁদের অভিনয়ের তালিম দেওয়ার। দাদুভাইয়ের প্রস্তাব কি আর ফেরানো যায়! এহতেশামের আবিষ্কার শাবনূরও প্রথম দিকে তাঁর কাছে গ্রুমিং করেছেন। আমিন খান, শাহীন আলমরাও বাচ্চুর হাতে গড়া। অবশ্য নিজে যে এত তারকার গুরু তা কখনো জানতে দেননি মানুষকে। ‘এখন হয়তো অনেকেই স্বীকার করবে না, আমি তাদের অভিনয় শিখিয়েছি। সত্যি বলতে, আমি চাই-ও না সেই স্বীকৃতি। তবে যেটুকু নিজের মধ্যে ছিল তা সবার সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছি। অনেক কিছু হয়তো অজান্তে তাদের কাছে শিখেছিও। এটাকে আমি আদান-প্রদান বলব।’ নাঈম-শাবনাজ, আমিন খান, শাহীন আলম, জায়েদ খান, আমান রেজা ও বাপ্পী-অনেকের ভিড়ে শিষ্য হিসেবে এঁদের নাম বলতে পছন্দ করেন বাচ্চু। এঁদের কেউ কেউ তাঁকে বাবা বলেও ডাকেন, কেউ ডাকেন আংকেল বা স্যার। এতেই দারুণ খুশি এই অভিনেতা।
গুরুকে নিয়ে বললেন চলচ্চিত্রে তাঁর প্রথম শিষ্য নাঈম, ‘আমি আর শাবনাজ তাঁকে আংকেল বলে ডাকি। শাবনাজের বাবাও মঞ্চে অভিনয় করতেন। বাচ্চু আংকেল ছিলেন তাঁর বন্ধু। মনে পড়ে, প্রথম ছবির শুটিং শুরুর আগে তিনি আমাদের হাতে ধরে শেখিয়েছিলেন কিভাবে হাঁটতে হয়, কিভাবে ক্যামেরার সামনে লুক দিতে হয়, কোন সংলাপের ডেলিভারি কিভাবে দিতে হয়। আমি বাচ্চু আংকেলের চোখের অভিনয়টা খুব ফলো করতাম। একেকটা সংলাপ বলার সময় তাঁর চোখের ধরনটা থাকত একেক রকম। আর ব্যক্তিমানুষ হিসেবেও বাচ্চু আংকেলের কোনো তুলনা হয় না।’
পূর্ণিমাকে সেদিনও দেখা গেছে গুরু জাকির হোসেন রাজুর পায়ে সালাম করতে। সাইমন সাদিক তার জাতীয় পুরস্কার উৎসর্গ করেন গুরু জাকির হোসেন রাজুকে। গুরুর কথা উঠলে যেভাবে সম্মান দিয়ে কথা বলেন তা মুগ্ধ করার মতো।
এমন শ্রদ্ধা ভালোবাসা আর মমতার গল্প লিখলে শেষ হবে না। আর সিনেমার এত খারাপের দিনেও এই ভালোবাসা অটুট রয়েছে। এটাও কি বড় কথা না।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
কয়েক
মাস আগেই মা হারিয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী পূজা চেরি। মা হারানোর ব্যথা এখনো ভুলতে পারেননি
। বিশ্ব মা দিবসে মায়ের শূন্যতা ও একরাশ অভিমান নিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে
পোস্ট করেছেন তিনি।
পোস্টে
মায়ের সঙ্গে তোলা একটি ছবি শেয়ার করে পূজা লিখেছেন, ‘ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল মা। মামুনি
দেখেছো? তুমি কি পচা কাজ করেছো, সকালে ঘুম থেকে উঠেই অঝরে চোখ থেকে জল পরতে দিলে
!! সারাজীবনই তো এই জল পরবে গো মা। কি করে থামাবো? উফ খুব কষ্ট হচ্ছে মামুনি। আর লিখতে
পারছি না, বুকটা ফেটে যাচ্ছে। ভালো থেকো মামুনি আর মনে রেখো তোমার হাতের লাঠিটা অনেক
মিস করি অনেক অনেক অনেক।’
পেইজের
পাশাপাশি ফেসবুক আইডিতেও একটি পোস্ট দিয়েছেন তিনি। এতে লিখেছেন, ‘আমি তো এতো ভেঙ্গে
পরার মতো মেয়ে না। তবে আজকে কেন এতো ভেঙ্গে পড়ছি। ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল মা।’ চলতি
বছরের ২৪ মার্চ সকালে মিরপুরের নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন পূজা চেরির মা ঝর্ণা রায়।
মন্তব্য করুন
বর্তমানে
ব্যস্ত সময় পার করছেন জনপ্রিয় বলিউড অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিনহা। সর্বশেষ সিনেমা ডাবল
এক্সএলের পর ওয়েব সিরিজ 'হীরামান্ডি: দ্য ডায়মন্ড বাজার' এ ফরিদান ও তার মা রেহানার
দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়াচ্ছেন।
বিখ্যাত
অভিনেত্রী রেখা সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে সোনাক্ষীর অভিনয়ের প্রশংসা করে নিজেকে সোনাক্ষীর
দ্বিতীয় মা বলে অভিহিত করেছেন। সোনাক্ষীর মাকে রেখা বলেন, ও আমার মেয়ে, আপনার মেয়ে
নয়।
পিঙ্কভিলায়
এক সাক্ষাৎকারে সোনাক্ষী জানান, 'হীরামান্ডি: দ্য ডায়মন্ড বাজার'- এর প্রিমিয়ারের
সময় রেখা তার কাজের প্রশংসা করেছিলেন। এমনকি রেখা নিজেকে তার দ্বিতীয় মা হিসেবেও
বলেন।’
রেখার
প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সোনাক্ষী বলেন, ‘রেখা ব্যক্তি হিসাবে অনেক সুন্দর। তার মতো
একজনের কাছ থেকে মেয়ে ডাক শুনতে অবাক লেগেছে।’
মন্তব্য করুন
ঢাকাই
চলচ্চিত্রের শীর্ষ নায়ক শাকিব খানের বিগ বাজেটের সিনেমা ‘তুফান’ মুক্তি পাবে আসন্ন
ঈদুল আজহায়। মুক্তির আগেই পুরোদমে চলছে এই ছবির শুটিং। ইতোমধ্যেই প্রকাশ পেয়েছে তুফানের
পোস্টার ও টিজার। যা বেশ সাড়া ফেলেছে দর্শকদের মাঝে।
তবে এরই মধ্যে আইন ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে সিনেমাটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই এগিয়ে যাচ্ছে ‘তুফান’ এমনটাই দাবি করছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড।
কয়েকদিন আগেই প্রকাশ পেয়েছে ‘তুফান’ ছবির টিজার। সিনেমাটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেন্সর ছাড়পত্র বিহীন টিজার প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান খালেদা বেগম। তিনি জানান, সেন্সর বোর্ডের অনুমতি ছাড়াই নারায়ণগঞ্জে ‘গুলশান’ সিনেমা হলে গতকাল ১০ মে দুপুর ১২টার শোতে দেখানো হয় ‘তুফান’ সিনেমার টিজার। বিষয়টি নজরে এসেছে তাদের।
খালেদা বেগম বলেন, ‘সেন্সর বিহীন টিজার প্রদর্শনের বিষয়টি আমরা শুনেছি। আমাদের ইন্সপেক্টর যাবে সেখানে। সেন্সর ছাড়পত্র বিহীন সিনেমা প্রদর্শন করা বেআইনি। নারায়ণগঞ্জ ছাড়াও অন্য কোথাও চলে কি না সেটাও আমরা দেখছি। সারা বাংলাদেশে আমাদের ইন্সপেক্টর মাত্র তিনজন। যে কারণে সবগুলো প্রেক্ষাগৃহে দেখা মুশকিল। তারপরও যেখানে এমন বেআইনি প্রদর্শন হবে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
জানা গেছে, একজন গ্যাংস্টারের গল্পে তৈরি হয়েছে তুফান সিনেমা। যেখানে উঠে আসবে নব্বই দশকের চিত্র। সে সময়ের এক নামকরা গ্যাংস্টারের কাহিনী নিয়েই এগিয়ে যাবে তুফানের গল্প।
মন্তব্য করুন