নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ৩০ জুন, ২০২০
লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল কুয়েতে আটক হয়েছেন এটা পুরনো খবর। এই আটকের পর কুয়েত সরকার কারাগারে রেখেছেন সেটাও সবাই জানে। লক্ষ্মীপুরের এই এমপি স্বতন্ত্র এমপি এবং তাঁর স্ত্রীও স্বতন্ত্র কোটায় এমপি হয়েছেন। কিন্তু পাপুলের গ্রেপ্তারের পর আওয়ামী লীগের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পাপুল স্বতন্ত্র এমপি হলেও এই ঘটনায় আওয়ামী লীগ বিব্রত হয়েছে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন উঠেছে যে, আওয়ামী লীগের একটি অংশকে ম্যানেজ করেই পাপুল এমপি হতে পেরেছিলেন এবং আওয়ামী লীগের একটি অংশ তাঁকে সহায়তা করেছিল। সবথেকে বড় অভিযোগ এসেছে যে, পাপুল যখন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তখন আওয়ামী লীগের প্যাডে তাঁকে সমর্থন দেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এই চিঠি দেওয়ার ফলেই ঐ নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন পাপুল। অনেকেই অভিযোগ করেন যে, টাকা দিয়ে তিনি বিজয়ী হয়েছেন।
কিন্তু আওয়ামী লীগের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায় যে, আওয়ামী লীগের কোন দায়িত্বশীল নেতা এই চিঠি দেননি। এই চিঠিটি কে দিয়েছে তা নিয়ে আওয়ামী লীগের মাঝেও তোলপাড় চলছে। নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে কাকে সমর্থন দেওয়া হবে, কাকে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে হবে ইত্যাদি বিষয়ে চিঠি দেওয়ার ক্ষমতা একমাত্র দলের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের। সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক ছাড়া এই ধরণের চিঠি দেওয়ার এখতিয়ার কারো নেই। অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা পাপুলের ব্যাপারে চিঠি দেওয়া তো দূরের কথা, এই ব্যাপারে তিনি অবহিতই ছিলেন না। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও এই ব্যাপারে কোন চিঠি দেননি। প্রশ্ন উঠেছে যে, চিঠি দিয়েছে কে তাহলে?
অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, পাপুলকে নির্বাচনে জিতিয়ে দেওয়ার জন্যে চিঠি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর এক সদস্য এবং তিনি প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টাও বটে। আর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটিতে সদ্য যোগ দেওয়া একজন সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্যও চিঠি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে যে, এই দুইজন কিসের ভিত্তিতে চিঠি দিলেন এবং এই চিঠির কার্যকারিতা কি? এই ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক বলেছেন যে, আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে কখনোই পাপুলের পক্ষে অবস্থান করেনি এবং এই সংক্রান্ত কোন সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা বা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় গৃহীত হয়নি।
অর্থাৎ সুস্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে যে, লক্ষ্মীপুর-২ আসনে ২০১৮ এর ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে পাপুলকে সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্তটি আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত ছিলনা এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি কখনোই এই ধরণের সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না বলে নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেছেন যে, যারা এই ধরণের ন্যাক্কারজনক কাজ করেছেন এবং যারা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন তাঁরা এটা নিজ দায়িত্বেই করেছেন। এই ব্যাপারে দলের পরবর্তী নির্বাচকমণ্ডলীর সভায় বিষয়টি আলোচিত হবে বলেও নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের একজন মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য।
জানা গেছে যে, ওই উপদেষ্টার সঙ্গে পাপুলের ব্যক্তিগত সখ্যতার কারণেই ঐ চিঠি দেওয়া হয়েছিল। একইভাবে এই চিঠি দেওয়ার জন্য দলের সম্পাদক মণ্ডলীতে সদ্য আসা সেই তরুণ নেতাকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে। তবে আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন যে, বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ বিব্রত। পাপুলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোন সম্পর্ক নেই এবং যারা এই সম্পর্কে জড়ানোর চেষ্টা করেছে তাঁদেরকে চিহ্নিত করা হবে। আওয়ামী লীগ এইসমস্ত অপকর্মকারীদের দায় কখনোই নিবে না এবং তাঁদের সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন যে, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু কিছু ব্যক্তি হটাৎ করেই আওয়ামী লীগের নেতা হয়েছেন। তাঁরা তাঁদের ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধার এবং ব্যক্তিগত লাভের জন্য অনেক বিতর্কিত এবং প্রশ্নবিদ্ধ লোকজনকে আওয়ামী লীগে ভেড়াচ্ছেন। পাপুলকেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়ার চেষ্টা করার পর ব্যর্থ হয়ে স্বতন্ত্রভাবে দাঁড় করান। আওয়ামী লীগের কোন নেতা ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে সাহায্য করতে পারেন, তবে তাঁর দায়িত্ব কোনভাবেই আওয়ামী লীগের নয়।
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন।
শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপিকে উপহাস করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণঅভ্যুত্থান থেকে তারা লিটলেট বিতরণ কর্মসূচিতে নেমে এসেছে। এবার বুঝুন তাদের অবস্থা।
তিনি বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতার কারণেই আজ দেশের এত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি হয়েছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর কাছে আবেদন করে বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন, কিন্তু বিএনপি এবং মির্জা ফখরুল বাকশালকে গালিতে পরিণত করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমও লিখছে ভারত বিরোধিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখবে বিএনপি। ভারত প্রশ্নে এখন মধ্যপন্থা নিতে চায় বিএনপি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্রের কোনো ঘাটতি নেই, সংসদ এবং সংসদের বাইরেও সরকারের বিরোধিতা জারি আছে। সরকার কোনো দল বা গোষ্ঠীর ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে না। গণতন্ত্রের বিচারে বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন। শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।