নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০০ পিএম, ০৩ জুলাই, ২০২০
নব্বই দশকে উপজেলা সদরে সরকারি কলেজে ছাত্রলীগের একজন কর্মী ছিলাম। মহান মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক ইতিহাস প্রচারে দেয়ালিকার কাজ করতাম। আর্ট পেপার ক্রয় করে লিখে কলেজে টানিয়ে রাখতাম। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে মঞ্চ নাটকের আয়োজন করলাম। কলেজ শাখা ছাত্রলীগের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্বে থাকার সময় গফরগাঁও সরকারি কলেজের মাঠে রক্তাক্ত বাংলা ` নামে এই নাটকে অভিনয় করলাম একাত্তরের কুখ্যাত রাজাকারের ভূমিকায়। বাবা ৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধা, নব্বই দশকে রাজাকারের ভূমিকার আমার অভিনয়! নিজের কাছে একটু কেমন লাগলো। কিন্তু অভিনয় ভাল হওয়ার অভিনন্দন পাওয়ার পর ঠিক করলাম এসব নাটক সাধারন মানুষদের দেখানো দরকার। তবে কিছুটা বাধাও ছিল। গফরগাঁও রেলওয়ে ষ্টেশনে পরপর দু` টি মঞ্চ নাটক করে ফেললাম।`মুক্তিযোদ্ধার কেচকি মাইর` নামে একটি নাটকেও ৭১ সালের রাজাকারের ভূমিকায় অভিনয় করতে হলো। নাটকের শেষ পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকারকে ধরে মারতে লাগলো। দর্শকদের করতালির স্রোত থেকে একটুকু বুঝতে পারলাম বিএনপি জামায়াত কর্তৃক মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস মুছে ফেলার যে অপচেষ্টা চলছে। তা নিশ্চয় ক্ষণিকের।
ছাত্রলীগ রাজনীতি করার সময় দেখেছি, বিএনপি ক্ষমতার সময় ৯৫ সালে কিভাবে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী সর্মথকদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশ্যে টাকা পয়সা জিনিস পত্র লুটপাট করে নিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। সেই সময়কার বিএনপির সন্ত্রাসীদের কেউ কেউ নাকি এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। ইদানিং আমার ভাবনা গুলো ইতিবাচক। তাই নাম প্রকাশ করতে চাই না। যাক, উপজেলা সদরে বিএনপি পাড়া বলে চিহ্নিত তৎকালীন নাম কেজি স্কুল ( বর্তমান আদর্শ শিশু নিকেতন )। এখানে গঠন করেছিলাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ। আহবায়কের দায়িত্ব পালন করার সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারীদের বিচার দাবী করার নানা রকম প্রচারণা করা হয়েছিল। এ কাজে খুশি হয়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৫ হাজার টাকা অনুদান দিলেন সংগঠনের নামে৷ উপজেলা নির্বাহী অফিস থেকে এই অনুদানের টাকা নিয়ে শুরু করলাম এবার সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। অনেক বাধার মাঝেও স্বাধীন দেশে রাজাকার ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার দাবী করার কাজ ছিল মূল উদ্যোগ। পরে রৌহা গ্রামের তৎকালীন উপজেলা মুক্তিযুদ্ধা সংসদের কমান্ডার মরহুম গিয়াস উদ্দিন চাচার পরামর্শে উপজেলা মুক্তিযুদ্ধা প্রজন্ম ছাত্র সাংস্কৃতিক কমান্ডের সভাপতির দায়িত্ব পালন করি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা থাকা কালীন সময়ে ছাত্রলীগ সংগঠন ও স্থানীয় সাংবাদিক থাকার সময় ১৯৯৮ সালে দেশে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ অসহায়দের পাশে কিভাবে দাঁড়াতে হয়। নদীতে নৌকায় করে হাঁটু পানিতে নেমে নেমে ত্রাণ দিয়েছি। প্রত্যক্ষ করেছি গণমানুষের দল আওয়ামী লীগকে মানুষ কি রকম পছন্দ করেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তৃণমূল আওয়ামী লীগের প্রাণ। হ্যাঁ বাস্তবতাও তাই। গ্রাম গঞ্জের আওয়ামী লীগের সৃজনশীল নেতা কর্মীদের কিছু কথা বলছি। চরাঞ্চলের শামছুল হক । সবাই মাইক শামছু ভাই নামে ডাকেন। কারণ, ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি, ব্রক্ষপুত্র নদের চরাঞ্চলের ওপারের শামছু ভাই হাট, বাজার, দোকান পাটসহ যে কোন স্থানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দিতেন। আওয়ামী লীগের যে কোন সভা সমাবেশে প্রারম্ভিক বক্তব্য দিতেন তিনি। তাই শামছু ভাই কমিটির প্রচার সম্পাদক ছিলেন। দেখতাম, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নৌকা নিয়ে লাঠি খেলোয়ার দল নানা কসরত করতে করতে বাদ্য যন্ত্রের শব্দে মাইলের পর মাইল হেঁটে হেঁটে বিশাল মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে যোগ দেওয়া।
১৯৯৬ সালের আওয়ামী লীগ সরকার দেশ পরিচালনার সময় যারা আমার নিজ এলাকার সুযোগ সুবিধাভোগী ছিলেন তারা ২০০১ সালে নির্বাচনের আগে হঠাৎ নিরব হতে লাগলেন। আমার নিজ গ্রামের চিত্র যদি বলি, এখানে কোন সময় নৌকা জয়লাভ করতে পারেনি। শুধুমাত্র ২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচনে নৌকার জয়লাভ দিয়ে শুরু। এখন এই গ্রাম আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলা চলে৷ এক সময় মুসলিম লীগ অধ্যুষিত এই এলাকা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের হওয়ার পেছনে অনেক ইতিহাস। এই গ্রাম, ইউনিয়ন বা উপজেলার আওয়ামী লীগের সেই সব নেতা কর্মী ও সমর্থকরা লড়াই সংগ্রাম করেছেন তাঁর অনুভূতির সংগঠন আওয়ামী লীগের জন্য। এটাই তাদের আনন্দ। তারা আছেন এখনও। এরপর ১/১১ সময় গ্রাম গঞ্জের সংগ্রামী আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী বা সমর্থকরা আওয়ামী লীগেই ছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তেমন পরিশ্রম হয়নি। নৌকার গণজোয়ার। দেখেছি, কিভাবে ঈদের আনন্দের মতো ভোটাররা নিজ এলাকায় নৌকা স্লোগান দিয়ে মুখরিত করেছিলেন ভোটের আগে। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপি জামায়াতের নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা সোচ্চার ছিলেন। নির্বাচনের পর বিএনপি জামায়াতের আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেও সাধারন নৌকা ভক্ত গ্রাম গঞ্জের মানুষ সজাগ ছিলেন। আগুনে পুড়া শিশু শিক্ষার্থী রাকিবের স্কুলে যাওয়া বন্ধ নিয়ে একটি প্রতিবেদন করতে গিয়ে দেখতে পেলাম মানুষ বিএনপি জামায়াতের সন্ত্রাস কিভাবে সমালোচনা করেন। অনেকে বললেন, বিএনপি জামায়াতের সন্ত্রাসী তান্ডব দেখেছি ২০০১ সালেই। যাক, গত জাতীয় নির্বাচনে আমি নিজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রাম গঞ্জের বিভিন্ন পেশার মানুষের একটু ব্যতিক্রম বক্তব্য প্রচার করার সময় দেখেছি কত সৃজনশীল চিন্তা ভাবনা রয়েছে তাদের৷ যেমন, একজন রিকসা চালক বললেন ‘আমার নেত্রী, আমার অহংকার’। এই কনটেন্ট ফেইসবুকে দেওয়ার পর ভাইরাল হয়ে গেল। কারণ, গ্রাম গঞ্জের সাধারন মানুষের সহজ সরল অনুভূতি অনেকেই পছন্দ করেন।
এছাড়া আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত আমার উপজেলার তরুণ প্রজন্ম বর্তমানে সৃজনশীলতা পছন্দ করেন। শুধু লোক দেখানোর জন্য নয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার বা আত্নকেন্দ্রীক করতে নয়, বাস্তব সৃজনশীল, বিজ্ঞান মনস্ক ও নতুন চিন্তাধারায় কাজ করতে চান তরুণরা। দুর্ণীতি ও দুর্বৃত্তায়ন পছন্দ করেন না এই তরুণ প্রজন্ম। ২০০১ সালে নির্বাচনের ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কলম সৈনিক থাকার অপরাধে মিথ্যা মামলায় জেল হাজত খাটতে হয়েছিল। পাশে কাউকে পাইনি। ১/১১ সময় ছাড় পাইনি। মিথ্যা মামলায় জেল হাজত। অবশ্য, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার পরও নিজেকে কোন সুবিধাভোগীর তালিকায় নাম লেখায়নি কিন্তু। কোন পদ পদবী নেওয়ার জন্য তদবীর করিনি। আমি মনে করি, কোন কিছু চাওয়ার বা পাওয়ার নাই। কারণ,আমার অনুভূতির সংগঠন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। এই সংগঠনের সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আছেন বলেই আমরা সুরক্ষিত। এ কথা শুধু আমার নয়, গ্রাম গঞ্জের আওয়ামী লীগের সৃজনশীল অসংখ্য নেতা কর্মীদের। আওয়ামী লীগের গ্রাম গঞ্জের একজন প্রয়াত নেতার কথা বলছি! গরিবের উপকার করতেন । সম্ভব নয়, এটা ভাবতেন না, উপকার করতেন কর্মীদের। পকেট থেকে টাকা বের করে দিতে দেখেছি। একদিন খাবার দোকান নজরুল ভাইকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আচ্ছা আপনার ভাতের হোটেলের সব চেয়ে বড় কাষ্টমার কে ? তিনি বলেছিলেন, খোকা চেয়ারম্যান। অবাক হয়ে কারণ জিজ্ঞেস করার পর বললেন, হরদম মানুষকে খাওয়ান। কেন, উত্তরে জানালেন, এমনেই। এই থেকে বুঝে নিতে হবে কতটা মানবিক মানুষ ছিলেন তিনি। তখন অবশ্য খোকা ভাই চেয়ারম্যান ছিলেন না। দেখতাম প্রায়ই অনেক দলীয় কর্মী খোকা ভাইয়ের বিরুদ্ধে খুব উত্তেজিত থাকতেন। ভাবতাম এভাবে বলছেন কেন। কৌতুহলী হওয়ার কারণে একটু কাছে গিয়ে দেখলাম ‘উত্তেজিত ওই দলীয় কর্মী খোকা ভাইয়ের সামনে যাওয়ার পর নরম। কত শান্ত। মনে হয় জীবনেও কোন ক্ষোভ বা রাগ ছিল না খোকা ভাইয়ের প্রতি।
অনেক ইতিবাচক ঘটনা আছে, লিখে শেষ করা সম্ভব না। জনবান্ধব , কর্মীবান্ধব ও দলবান্ধব ছিলেন অ্যাডভোকেট মীর আবু তালেব খোকা ভাই। ৫ বার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তৃণমূলের এই রাজনৈতিক ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় সবাই চিনতেন। বলতেন গফরগাঁওয়ের খোকা চেয়ারম্যান। রাজনীতি, আইন পেশা ও সমাজকল্যাণমূলক কাজ করে গেছেন আমৃত্যু। কখনই দলের মতাদর্শ থেকে আদর্শচ্যুত হননি এই মুক্তিযোদ্ধা। ছাত্রলীগ করার কারণে নয়, মূলত পাশাপাশি সাংবাদিকতা করার কারণে একটা অভ্যাস ছিল, প্রশ্ন করা। একদা খোকা ভাইয়ের কাছে প্রশ্ন ছিল, আওয়ামী লীগের আপনারা প্রবীণ হচ্ছেন। কিন্তুু একটা সময় তৃণমূলের ` সেগেন্ড লাইন অফ ডিফেন্স কারা ! খোকা ভাইয়ের মতো রাজনৈতিক নেতা আওয়ামী লীগের জন্য আগামীদিনে অনেক দরকার। কিন্তুু আমার এলাকায় কয়জন খোকা ভাই বর্তমানে আছেন, একটু বলবেন ! গত জুন মাসে প্রাক্তন আ্যডভোকেট, আওয়ামী লীগ নেতা, ৫ বার নির্বাচিত গফরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা মীর আবু তালেব খোকা ভাইয়ের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী ছিলো। আন্দোলন, সংগ্রাম, মিছিল, মিথ্যা মামলা, নির্যাতন ও নীপিড়ন এসব নিজের চোখে অনেকেই প্রত্যক্ষ করেননি এখনকার নতুন প্রজন্ম! আমি নিজে ভুক্তভোগী। খালেদা নিজামী সরকারের আমলে পুলিশের লাঠি ও মিথ্যা মামলার জেল হাজত, রিমান্ড এবং কি নিজ এলাকা ছেড়ে থাকা। খোকা ভাইরা ছিলেন আমাদের নেতা। ইতিবাচক একটি বিষয় দিয়ে লেখার ইতি টানছি, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০১২ সালে ‘দিন বদলের এক বছর’ নামে উপজেলায় তৎকালীন সময়ের সরকারের চলমান উন্নয়ন বার্তা জনগনের মাঝে পৌঁছানোর জন্য একটি প্রকাশনার সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেছিলাম। সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি ছিলেন খোকা ভাই। বইটি আছে, কিন্তুু তৃণমূলের জনমানুষের এই নেতা নেই। তবে আমি দেখেছিলাম কিভাবে মানুষের মাঝে এই আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বার্তার প্রকাশনা তুলে দিতেন খোকা ভাই। কি চমৎকার মূখের হাঁসি ছিল এই অনুভূতির দলের প্রতি।
লেখক
গণমাধ্যমকর্মী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:১৫ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:১২ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:০৭ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিতে বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক অভাবনীয়, অনন্য এবং যুগান্তকারী একটি মডেল। শিশু স্বাস্থ্য, মাতৃ স্বাস্থ্য এবং কিশোরীদের স্বাস্থ্য পরিসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এটি একটি অসাধারণ উদ্যোগ। নবজাতকের মৃত্যু, মাতৃ মৃত্যু কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অনুসরণ শুরু করেছে। গত বছর ১৭ মে কমিউনিটি ক্লিনিক ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিসিয়েটিভ’ হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়। ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ সারা বিশ্বের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যাশী জনগণের জন্য ‘আলোক বর্তিকা’।
আজকে আমরা ১৭ মে নিয়ে কথা বলছি। যেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। আবার গত বছর এই দিনে তাঁর চিন্তা প্রসূত কমিউনিটি ক্লিনিককে জাতিসংঘ ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আজকে আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছি, উন্নয়নশীল বাংলাদেশের কথা বলছি, যে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি, একদিন উন্নত বাংলাদেশ হব বলে স্বপ্ন দেখছি এই সবকিছু শেখ হাসিনার স্বপ্ন, শেখ হাসিনার ইনিশিয়েটিভ। বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৭৮১ সালে পলাশি যুদ্ধে ইতিহাসের ঘৃণিত সেনাপতি মির্জাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাব সিরাজ উদ্দৌলার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ২০০ বছরের গোলামী আমাদের ললাটে এসেছিল। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হলেও বাঙালী এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা পায়নি। যার পটভূমিতে বীরদর্পে আবির্ভূত হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ থেকে ৭৫’ বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে স্বাধীনতার লাল পতাকা উড়েছিল বাঙালী আশায় বুক বেধেছিল।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বিয়োগান্তের ঘটনায় জাতি ছিল দিক নির্দেশনাহীন। নারকীয় এই ঘটনায় জনগণ হয়ে পড়েন দিশেহারা। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করার কোন শক্তি সাহস ছিল না। দলের অনেক বড় বড় নেতাও ছিলেন কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ধানমন্ডির ৩২ বাড়ি ছিল কবরের নীরবতা। সমগ্র জাতি তখন অন্ধকারে। সামরিক বুটে পিষ্ঠ গণতন্ত্র। নির্বাসনে সংবিধান আর মানুষের মৌলিক অধিকার। বাক স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না। এমনকি বঙ্গবন্ধু নাম উচ্চারণ ছিল নিষিদ্ধ।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের মৌলিক চরিত্রকেই বদলে ফেলা হয়। বিশেষ করে পাকিস্তানি ধারায় সামরিক শাসনের সংস্কৃতির প্রবর্তন ঘটে দেশে। সাম্প্রদায়িকতা ফিরে আসে রাজনীতি, প্রশাসন, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে। একের পর এক স্বপ্নভঙ্গের ঘটনা ঘটতে থাকে দেশে। বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ঘোর অমানিশার অন্ধকার। ঠিক এমন প্রতিকূল সময় ১৯৮১ সালের ১৭ মে সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর রক্তস্নাত মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন বাঙালির মুক্তির মহানায়কের যোগ্য উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনা।