নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০১ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২০
মহান মুক্তিযুদ্ধের অকুতোভয় যোদ্ধা মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) শওকত আলী বীরপ্রতীক শনিবার (৪ জুলাই) চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। কিছুদিন ধরে তিনি ডায়াবেটিস ও বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে সাহস ও বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য শওকত আলীকে বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত করা হয়।
মৃত্যুর আগে এক সাক্ষাৎকারে তিনি চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়ে গেছেন। যেখানে মুক্তিযুদ্ধের সময় খালেদা জিয়ার ভূমিকা নিয়ে কথা বলেছেন।
‘চট্টগ্রাম শপিং কমপ্লেক্সটির জায়গায় তখন ছিল একটি বড় গোডাউনের মতো। এইট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ক্যাম্প ছিল সেখানে। সেকেন্ড ইন কমান্ড তখন জিয়াউর রহমান। একদিন আমাকে ডেকে পাঠালেন মেজর জিয়াউর রহমান। আমি স্টুডেন্ট অবস্থাতেই মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেই। স্টুডেন্ট হওয়াতে কেউ সন্দেহ করবে না। তাই বেগম জিয়াকে নিয়ে আসার দায়িত্ব দেন আমায়।
জিয়াউর রহমান বললেন, তোমার ভাবী আর তারেককে আনতে হবে।
বললাম, স্যার, একলা যেতে পারব না।
তিনি বলেন, তুমি কাকে কাকে নেবে?
বলি, মিনিমাম ছয়জন লাগবে।
বেগম জিয়া তখন থাকতেন রোড ফোরে, নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটিতে। দোতলা ওই বাসাটা এখনও আছে। আমাকে একটা চিঠি লিখে দিলেন জিয়াউর রহমান। তাতে লেখা ছিল— ‘পুতুল, পত্রবাহকের সঙ্গে ছেলেকে নিয়ে চলে আসো।’
ব্রিটিশ স্টেনগান লোড, সিঙ্গেল সট, র্যাপিড ফায়ার— এগুলো তখন শিখে গেছি। রিভলবারও চালাতে পারতাম। ওগুলোসহ কিছু গ্রেনেডও সঙ্গে নিলাম। বাজারের ব্যাগের মধ্যে নিই অস্ত্রগুলো। সবার পরনে লুঙ্গি আর গেঞ্জি। চেনার উপায় নেই।
রোড নম্বর টু পেরিয়ে থ্রি ধরে এগোচ্ছি। ফোরের কাছাকাছি আসতেই থমকে গেলাম। কখন যে পাকিস্তানিদের থার্ড কমান্ডো ব্যাটেলিয়ান ঢুকে গেছে, টেরই পাইনি। দেখলাম দুইজন সেনা পেট্রোলে বেরিয়েছে।
তখন আমরা পরিকল্পনা পাল্টাই। লুকিয়ে পেছন দিক দিয়ে বেগম জিয়ার বাড়িতে ঢুকি। দরজা নক করতেই তিনি নিজেই দরজা খুলেন। দেখে চিৎকার করার আগেই ইশারায় চুপ থাকতে বলি। অতঃপর হাতে তুলে দিই জিয়াউর রহমানে সেই চিঠিটা।
জিয়ার চিঠিটি বেগম জিয়া পড়লেন। অতঃপর যে কথাগুলো বললেন দ্যাটস ভেরি ইম্পর্টেন্ট।
তিনি রেগে বললেন, আমি যাব না। জিয়া একটা গাদ্দার। কমিশনড নেওয়ার সময় পাকিস্তানের ফ্ল্যাগ আর কোরআন শরীফ ধরে সে শপথ করেছিল- পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কিছু করবে না। আর আজ, পাকিস্তানের বিরুদ্ধেই সে বিদ্রোহ করেছে। আমি ওই বিদ্রোহী জিয়ার কাছে ফিরে যাব না।
অতঃপর তিনি বলেন, আমি তোমাদেরও ধরিয়ে দিব।
আমরা ভয় পেয়ে গেলাম। দেখলাম বাড়ির গেইটে পাকিস্তানি আর্মি দাঁড়িয়ে আছে।
তখন বিনয়ের সঙ্গে বললাম, ‘স্যার আমাদের অর্ডার করেছেন। তাই আসছি। চাইলে আপনি ধরিয়ে দিতে পারেন।’ কী চিন্তা করে যেন বেগম জিয়া আমাদের ছেড়ে দিলেন। বললেন, ‘ঠিক আছে তোমরা যাও।’
সাতজনই ফিরে জিয়াউর রহমানকে একত্রে সব খুলে বললাম। উনি তখন খুবই বিমর্ষ হয়ে পড়েছিলেন।”
মুক্তিযুদ্ধের সময়কার নানা ঘটনার কথা এভাবেই তুলে ধরছিলেন যুদ্ধাহত ও বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত মুক্তিযোদ্ধা মেজর শওকত আলী।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সিরাজগঞ্জে গণমাধ্যম কর্মীদেরকে নিয়ে ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য নারী পক্ষ নামে একটি সংগঠন সিরাজগঞ্জ ও পাবনার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রবিবার (১৯ মে') দুপুরে শহরের এস. এস রোডস্থ নর্থ টাউন রেস্তোরাঁয় প্রোগ্রাম ফর উইম্যান ডেভোলপমেন্ট (পি ডাব্লিউডি) সার্বিক সহযোগিতা ও নারীপক্ষ আয়োজনে ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য দিনব্যাপী মতবিনিময় সভার শুভ উদ্বোধন করেন নারীপক্ষ চেয়ার পারসন গীতা দাস।
মতবিনময় সভায় নারীপক্ষ চেয়ারপার্সন গীতা দাস বলেন, মানুষ কোনো ভালো কর্ম করলে তাকে বিশেষায়িত করা যায়। কিন্তু নারীরা নির্যাতিত হলেও তাদেরকে বিশেষায়িত করা হয়। যেমন ধর্ষণের শিকার হলে তাকে ধর্ষিতা, নির্যাতনের শিকার হলে নির্যাতিতা বলা হয়। অথচ ধর্ষণের শিকার, নির্যাতনের শিকার লিখলেও হয়।’ একজন নারীকে মানুষ হিসেবে দেখলে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন কামরুন নাহার, ফেরদৌসী আখতার, পিডাব্লিউডি নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা জলি।
এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি চ্যানেল টুয়েন্টিফর সিনিয়র রিপোর্টার সাংবাদিক হীরুকগুণ, এনটিভি জেলা প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম ইন্না, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সুজন সরকার, বৈশাখী টেলিভিশন সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সুজিত সরকার, দীপ্ত টিভির সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি শিশির, দীপ্ত টিভি পাবনা জেলা প্রতিনিধি শামসুল আলম সহ অনেকে।
মন্তব্য করুন
পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামালের বিরুদ্ধে জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে প্রচারণার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের শিবপুর বাজার এলাকা থেকে জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করেন চেয়ারম্যার প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামাল।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপে আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যার প্রার্থী তানভীর ইসলাম বলেন, সাইফুল ইসলাম কামালের গুন্ডা সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত আমার কর্মী, সমর্থক, ভোটারদের ভয়ভীতি, হুমকী, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে ভোট দিতে নিরুৎসাহিত করছে। ফলে নির্বাচন কমিশনের ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আচরণবিধি সাইফুল ইসলাম কামাল বারবার লঙ্ঘন করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামাল বলেন, ‘ঘোড়া নিয়ে প্রচার প্রচারণা করিনি। তবে আমি ঘেড়ার গাড়ি নিয়ে প্রচার প্রচারণা করেছি। এটাও যদি বিধি নিষেধ থাকে তাহলে এটাও পরিহার করবো।’
পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট ও রিটার্নিং অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় চেয়ারম্যান প্রার্থী এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি আমরা। তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন