নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ১৪ জুলাই, ২০২০
পুরো দেশ এখন তাকিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে। শেখ হাসিনা কি পদক্ষেপ নেন, কি সিদ্ধান্ত নেন, কি করেন সেদিকে দৃষ্টি নিবন্ধন করে আছে জনগণ। বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতির চার মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে করোনা মোকাবেলার জন্য অনেকগুলো ইতিবাচক কাজ করেছে। কিন্তু সরকারের সব অর্জন-প্রাপ্তি ম্লান করে ফেলেছে কিছু দুর্বৃত্তের দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, কিছু উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গাফিলতি এবং সীমাহীন দায়িত্বহীনতায়।
পরিস্থিতি এমন হয়ে গেছে যে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এখন প্রকাশ্যে কাঁদা ছোড়াছুঁড়িতে নেমেছে। এরকম পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কি করবেন সেটা জানার জন্য উৎসুক হয়ে আছে সকলে। তিনি কি এভাবেই নিরবে সবকিছু সহ্য করবেন? তিনি কি স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক পরিবর্তন করবেন, তিনি কি যারা তাঁর নির্দেশনাগুলো মানেনি তাঁদেরকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করবেন? একা কি এসমস্ত ঝড়ঝাপটা সামলাতে পারবেন? এই প্রশ্নগুলোই এখন রাজনৈতিক অঙ্গনের সবথেকে বড় প্রশ্ন।
বাংলাদেশের প্রথম করোনা সংক্রমণ শুরু হয়েছিল ৮ মার্চ। কিন্তু জানুয়ারিতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন এবং এই বৈঠকে তিনি নির্দেশনা দিয়েছিলেন যে, করোনা মোকাবেলায় যেন এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তো সেই প্রস্তুতির ধারেকাছে যায়নি। বরং বাংলাদেশে করোনা হবে না বলে সেই ধরনের একটি আত্মতৃপ্তি নিয়েই ছিল। যখন সত্যি সত্যি করোনা এলো তখন দেখা গেল যে, প্রধানমন্ত্রীর কোন নির্দেশনাই বাস্তবায়ন করেনি। মাত্র ১ টি আরটি পিসিআর ল্যাবের মাধ্যমে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত, অযৌক্তিক কর্মকাণ্ড গোটা করোনা পরিস্থিতিকে জটিল এবং ঘোলাটে করেছিল। এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবকিছুর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। নিজ কার্যালয় থেকে করোনা মোকাবেলার জন্য সবগুলো জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী এবং নানারকম নির্দেশনা প্রদান করেন। তাঁর নির্দেশেই করোনা ল্যাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তাঁর নির্দেশেই সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। যখন তিনি এই করোনা চিকিৎসাকে একটি পদ্ধতির মধ্যে আনলেন তখন এলো আরেকটি নতুন ঝামেলা। একের পর এক দুর্নীতির ঘটনা। এখন স্বাস্থ্যখাতের পরিবর্তন জাতীয় ঐক্যমতে পরিণত হয়ে দাঁড়িয়েছে। সকলেই এক বাক্যে মনে করছেন যে, স্বাস্থ্যখাতে একটি পরিবর্তন করা দরকার। তবে এই পরিবর্তনের একমাত্র ক্ষমতা এবং এখতিয়ার একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। কাজেই জনগণ অপেক্ষায় আছে যে শেখ হাসিনা কি করবেন, তিনি কি পরিবর্তন আনবেন নাকি এই দুর্নীতিবাজদের দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাবেন?
গত চার মাসে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, স্বাস্থ্যখাতের বর্তমানের নেতৃত্ব দিয়ে স্বাস্থ্যখাতের ইতিবাচক অগ্রতি-উন্নতি করা সম্ভব নয়। আর এই কারণেই স্বাস্থ্যখাতে পরিবর্তনের কথা উচ্চারণ করা হচ্ছে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই পরিবর্তনগুলো হচ্ছে না।
আওয়ামী লীগের অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীরা অস্থির হয়ে গেছে । তাঁরা মনে করছেন যে এই হাতেগোনা চার-পাঁচজনের জন্য শেখ হাসিনার সকল অর্জন ম্লান হয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই বিশ্বের প্রথম সরকার প্রধান যিনি করোনার সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রণোদনার প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার এই প্রণোদনা প্যাকেজের বাস্তবায়ন নিয়েও ব্যাংকগুলো দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে। এখন পর্যন্ত এসএমই খাতের ২ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছিল, যেখানে ২০০ কোটি টাকাও এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অমান্যকারীরা কারা? কারা প্রধানমন্ত্রীর আকাঙ্ক্ষা বাস্তবয়ায়নে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁদের চিহ্নিত করা দরকার।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই মনে করছেন যে, অনেক হয়েছে এখন শেখ হাসিনাকে কঠোর হতে হবে। যারা এই ধরণের দুর্বৃত্তায়নের সঙ্গে জড়িত এবং এই দুর্বৃত্তায়নকে যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে তাঁদের ব্যাপারে শেখ হাসিনার কঠোর পদক্ষেপ দেখতে চান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এবং সাধারণ জনগণ। প্রশ্ন হলো যে, শেখ হাসিনা কখন ব্যবস্থা নিবেন? সবকিছু কি দেরি হয়ে যাচ্ছে? শেখ হাসিনা এখন কি করবেন?
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।