নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫০ পিএম, ১৬ জুলাই, ২০২০
নিউইয়র্কে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে নৃশংসভাবে খুন হওয়া ফাহিম সালেহ নিজের সম্পর্কে ওয়েবসাইটে লিখেছিলেন অন্ট্রেপ্রেনিওর, ইনভেস্টর, ড্রিমার অর্থাৎ উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী, স্বপ্নবাজ।
তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহকর্মী হুসেইন এম ইলিয়াস বলেন, ‘সত্যিকার অর্থেই একজন স্বপ্নবাজ মানুষ ছিলেন ফাহিম সালেহ’। ‘পাঠাও’ নামের যে রাইড শেয়ারিং অ্যাপ বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়, তার প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ছিলেন ফাহিম সালেহ। আরেকজন হলেন হুসেইন এম ইলিয়াস।
‘খুব কম মানুষই এত তাড়াতাড়ি কিংবা অল্প বয়সে সফল হয়েছিলেন। এর কারণ হলো খুবই উদ্যোমী ও পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন তিনি, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বলেন হুসেইন ইলিয়াস’।
‘এক জায়গায় আটকে থাকতেন না তিনি। এজন্যই একটার পর একটা উদ্যোগ নিয়েছেন। কোনটায় সফল হয়েছেন, আবার কোনটায় হননি। কিন্তু হাল ছাড়েননি’।
ফাহিম সালেহ বাংলাদেশি বাবা-মায়ের সন্তান হলেও দেশে খুব একটা থাকেননি। ইনফরমেশন সিস্টেম নিয়ে পড়াশোনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বেন্টলি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
মাত্র ৩৩ বছর বয়সে যে অ্যাপার্টমেন্টে খুন হন তিনি, তার দাম বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২২ কোটি টাকা। নিজের কেনা অ্যাপার্টমেন্টে খুন হওয়া ফাহিম সালেহ বড় হয়েছেন নিউইয়র্কেই। পেশায় ছিলেন ওয়েবসাইট ডেভেলপার।
সেখানকার গণমাধ্যম তাকে চিহ্নিত করেছে ‘টেক মিলিওনিয়ার’ হিসেবে। ‘খুব অল্প বয়সেই কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। ১৫-১৬ বছর থেকে আমেরিকাতেই কাজ শুরু করেন- আইটি ফিল্ডেই। ফলে ২০১৪ সালে যখন ঢাকায় আসেন, তার আগেই প্রযুক্তির বিশ্বে তিনি পরিচিত ব্যক্তি, এবং সেটা তার কাজের জন্যই, বলছিলেন ইলিয়াস।
পাঠাও প্রতিষ্ঠার আগেই ফাহিম সালেহ ঢাকায় দুটি প্রতিষ্ঠান খুলেছিলেন, যার মধ্যে একটি ছিল হ্যাকহাউজ- অফিস ছিলো বনানীতে। এখানেই কাজ করতে এসে হুসেইন ইলিয়াস তার সঙ্গে পরিচিত হন এবং পরবর্তীতে তারা দু’জনসহ মোট তিনজন মিলে অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান পাঠাও চালুর কাজ শুরু করেন।
আগের দুটি উদ্যোগে কাঙ্ক্ষিত সফলতা না এলেও ২০১৬ সালের শেষের দিকে চালুর পর পাঠাও দারুণ জনপ্রিয়তা পায় ২০১৭ সালে। তরুণদের জন্য ফাহিম সালেহ তৈরি করেছিলেন আইকনডুড ডটকম এবং এআইএমডুড ওয়েবসাইট। পনের বছর বয়স থেকেই কাজ শুরু করে উদ্যোক্তা জগতে বেশ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তিনি।
পাশাপাশি ছিলেন অ্যাডভেঞ্চার ক্যাপিটাল গ্লোবালেরও একজন উদ্যোক্তা। ইলিয়াস বলেন, ফাহিম সালেহ সবসময়ই প্রযুক্তি-ভিত্তিক নতুন কিছু করার চিন্তা করতেন।
‘এক সময় পাঠাওয়ের শেয়ার ছেড়ে দিলেন, কারণ তখন তিনি আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোতে কী করা যায় তা নিয়ে বেশ উদ্যোগী হয়ে উঠেছিলেন’।
বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) বলছে, ফাহিম সালেহ বাংলাদেশের রাইড শেয়ারিং সেবা পাঠাও ছাড়াও নাইজেরিয়াতে ‘গোকাডা’ নামক আরেকটি রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফরম চালু করেন।
তার মৃত্যুর পর প্রকাশিত নানা খবরে বলা হচ্ছে যে তিনি কলম্বিয়াসহ ল্যাটিন আমেরিকার কয়েকটি দেশেও নানা ধরনের কার্যক্রম শুরু করেছিলেন।
‘আসলে তিনি খুব উচ্চাভিলাষী চিন্তা করতেন এবং সেটি বাস্তবায়ন করতে পরিশ্রমও করতেন। ঝুঁকি নিতে পছন্দ করতেন তিনি। যখন বাংলাদেশে অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং ছিল না, ই-কমার্স বলতে কিছু ছিল না, তখন তিনি পাঠাওয়ে বিনিয়োগ করার ঝুঁকি নিয়েছিলেন’।
ঢাকায় এলে একাই বাসা ভাড়া করে থাকতেন ফাহিম সালেহ। ঢাকায় কী করছেন তা দেখাতে ২০১৮ সালের বাবা-মাকেও একবার নিয়ে এসেছিলেন আমেরিকা থেকে। তবে বাংলাদেশে পাঠাওয়ের শেয়ার বিক্রি করে দিলেও অ্যাপভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জোবাইক ও যাত্রীতে বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি।
বিনিয়োগ ছিল আলফাপটেটো নামের আরেকটি উদ্যোগেও। নেপালের অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং প্লাটফরমেও বিনিয়োগ ছিল ফাহিম সালেহর। কলম্বিয়াতে সবচেয়ে বড় মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং কোম্পানি পিকাপ-এও বড় ধরনের বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি।
‘অর্থকে অনুসরণ করোনা, তাকেই তোমাকে অনুসরণ করতে দাও’ নিজের ব্লগে ফাহিম সালেহ লিখেছিলেন, ‘ডোন্ট ফলো দা মানি, লেট ইট ফলো ইউ’। ‘যখন তিনি প্রথম ইন্টারনেট গেমস শুরু করেছিলেন, তখন তার লক্ষ্য ছিলো খরচ কমানো’।
‘কেন আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে কাউকে ভাড়া করব, যখন আউটসোর্সিংয়ের সুযোগ আছে। কেন প্রিমিয়াম সার্ভার কিনতে হবে, যেটা আছে সেটাই যখন ভালো কাজ করছে। কেন অফিস নিতে হবে, যখন বাসা থেকেই কাজ করা যাচ্ছে।
কিন্তু যখন পেছন ফিরে তাকাই, তখন বুঝতে পারি যে আমরা আমাদের প্রবৃদ্ধিকে সীমিত করে ফেলেছি’। নিজের প্রথম ওয়েবভেঞ্চার উইজটিন ইনক-এর প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন এটিকে সঠিকভাবে বাড়তে দিলে বিশ্বখ্যাত জিগনা বা স্লাইড মতোই হতো। ২০০৫ সালে বেশ সম্ভাবনাময় হয়েছিল অন্তত ১৫টি সাইটের নেটওয়ার্ক উইজটিন ইনক।
এরপর তিনি যে নীতি নিয়েছিলেন, তাও লিখেছেন তার ব্লগে। ‘যতটা পারো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করো, ঠিক যতটুকু দরকার ততটুকুই বেতন নাও, পরে আরও বিনিয়োগ করো। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো অর্থকে অনুসরণ করো না, তাকেই তোমাকে অনুসরণ করতে দাও’।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) বলছে, ফাহিম সালেহর মৃত্যুতে দেশের আইটি ইন্ডাস্ট্রি কেবল একজন সফল উদ্যোক্তাকে হারায়নি, বরং দেশের তরুণ স্টার্টআপ উদ্যোক্তাগণ হারালো তাদের একজন অন্যতম অনুপ্রেরণাদাতা ও পথপ্রদর্শককে।
‘তরুণদের মধ্যে স্টার্টআপস কমিউনিটি গড়ে তোলার যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে, তাতে ফাহিম সালেহর এমন মৃত্যু নিঃসন্দেহে একটি বড় রকমের ধাক্কা হিসেবে প্রতিভাত হবে, এমনটিই বলা হয়েছে সংগঠনটির এক বিবৃতিতে।
মন্তব্য করুন
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি রাশিয়া
মন্তব্য করুন
ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি
মন্তব্য করুন
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের স্ত্রী এবং দেশটির ফার্স্ট লেডি আসমা আল-আসাদ লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগে ২০১৯ সালে তিনি ব্রেস্ট ক্যান্সার থেকে সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু এবার তিনি লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হলেন। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। খবর এএফপির।
এতে বলা হয়েছে, ৪৮ বছর বয়সী আসমা বিশেষ চিকিৎসা প্রোটোকলের মধ্য দিয়ে যাবেন; যার জন্য তাকে আইসোলেশনে থাকতে হবে। এর ফলে তিনি সরকারি কিংবা জনসংশ্লিষ্ট কোনও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারবেন না।
এর আগে, ২০১৯ সালের আগস্টে সিরিয়ার এই ফার্স্ট লেডি বলেছিলেন, তিনি ব্রেস্ট ক্যানসার থেকে পুরোপুরি সেরে উঠেছেন। ব্রেস্ট ক্যানসার একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে থাকাকালীন তা শনাক্ত করায় চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি।
২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ব্রিটিশ-বংশোদ্ভূত সাবেক এই ব্যাংকার বিভিন্ন ধরনের দাতব্য প্রতিষ্ঠানের কাজকর্মে জড়িয়ে পড়েন। দেশটিতে যুদ্ধে নিহত সৈনিকদের পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। দাতব্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের সাথে সংশ্লিষ্টতা বাড়ালেও দেশটিতে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
সিরিয়ার অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সিরিয়া ট্রাস্ট ফর ডেভেলপমেন্ট পরিচালনা করেন আসমা আল-আসাদ। তার এই প্রতিষ্ঠানের ছায়াতলে সিরিয়াজুড়ে অনেক দাতব্য ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে অন্যান্য সংস্থা।
সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গত বছর প্রথমবারের মতো স্বামী বাশার আল-আসাদের সাথে বিদেশ সফরে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে যান আসমা আল-আসাদ। ওই সফরে তিনি আমিরাতের প্রেসিডেন্টের মা শেখ ফাতিমা বিনতে মুবারকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
লিউকেমিয়া সিরিয়া ফার্স্ট লেডি
মন্তব্য করুন
ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তাবরিজে দেশটির সদ্য প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির-আব্দোল্লাহিয়ান ও অন্যান্য সহযাত্রীদের দাফন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রিয় নেতাকে শেষ বিদায় জানাতে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে তাবরিজে।
মঙ্গলবার (২১ মে) এ তথ্য দিয়ে ইরানের সংবাদমাধ্যম মেহের জানিয়েছে, সকালে ইরানের তাবরিজ শহরে নিহতদের জানাজা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট রাইসি ও তার সাত সহযাত্রীর দাফনে যোগ দিতে শহরটির একটি কেন্দ্রীয় স্কয়ার থেকে হেঁটে রওনা হন লাখো ইরানি। এ সময় তাদের হাতে ছিল ইরানের পতাকা ও প্রয়াত প্রেসিডেন্টের ছবি।
উল্লেখ্য, রবিবার আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় গত দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানসহ অন্য কর্মকর্তারা। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী বেল-২১২ মডেলের হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।
প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর সোমবার ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজের খবরে বলা হয়, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি দেশটির জনগণের জন্য তার দায়িত্ব পালন করার সময় একটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। তিনি শহীদ হয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানসহ বাকিরাও নিহত হয়েছেন।
ইব্রাহিম রাইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির-আব্দোল্লাহিয়ান ইরান
মন্তব্য করুন
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিসহ, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান ও উচ্চপদস্থ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা। হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর দীর্ঘ তল্লাশি অভিযান শেষে পাহাড়ি ও তুষারাবৃত এলাকা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের পর তাদের সন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েছিল ইরান। যুক্তরাষ্ট্র নিজেই এই তথ্য সামনে এনেছে।
তবে 'কোনও কারণে' ইরানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিকে সেই সহায়তা করতে পারেনি। মঙ্গলবার (২১ মে) এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার সাংবাদিকদের বলেন, এ ব্যাপারে তিনি বিস্তারিত বলছেন না। তবে ইরান সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত মূলত ব্যবস্থাপনাগত কারণে তারা সেটা দিতে পারেননি।
ম্যাথু মিলার ইঙ্গিত দেন, রবিবার দুপুরে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর সেটিকে খুঁজে পেতে দ্রুত সাহায্য চেয়েছিল ইরান।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার চেষ্টার পর বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটি উদ্ধার করে ইরান। ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর ঘটনায় আনুষ্ঠানিক শোক জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ওয়াশিংটন বলেছে, রাইসির হাতে 'রক্ত' লেগে আছে।
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে তেহরানের সঙ্গে ওয়াশিংটনের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তা সত্ত্বেও দুই দেশের মধ্যে কীভাবে যোগাযোগ হলো, তা বলতে অস্বীকৃতি জানান মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র।
ম্যাথু মিলার শুধু বলেন, রবিবার কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইরান। যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে বলে, এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিদেশি সরকারের অনুরোধে তারা সাড়া দেয়। এ ক্ষেত্রেও তারা ইরানকে সাহায্য করত। তবে মূলত ব্যবস্থাপনাগত কারণে সেটা সম্ভব হয়নি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের শোকবার্তায় বলা হয়েছে, ইরান এখন নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিচ্ছে। এ অবস্থায় ইরানের জনগণ ও তাদের মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র আবার তার সমর্থন জানাচ্ছে।
মার্কিন প্রশাসন বলেছে, এটি একটি রেওয়াজমাফিক শোকবার্তা। এটি রাইসির প্রতি কোনো রকম সমর্থন প্রকাশ করছে না। রাইসি সেই ব্যক্তি, যিনি বিচারক থাকাকালে গণহারে রাজবন্দীদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালে কর্তৃপক্ষ নারীদের গণ–আন্দোলন কঠোরভাবে দমন করেছে।
এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট-পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে তাদের কোনো হাত নেই বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত নিয়ে ইরান এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে দোষারোপ করেনি।
মন্তব্য করুন
ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তাবরিজে দেশটির সদ্য প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির-আব্দোল্লাহিয়ান ও অন্যান্য সহযাত্রীদের দাফন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রিয় নেতাকে শেষ বিদায় জানাতে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে তাবরিজে। মঙ্গলবার (২১ মে) এ তথ্য দিয়ে ইরানের সংবাদমাধ্যম মেহের জানিয়েছে, সকালে ইরানের তাবরিজ শহরে নিহতদের জানাজা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট রাইসি ও তার সাত সহযাত্রীর দাফনে যোগ দিতে শহরটির একটি কেন্দ্রীয় স্কয়ার থেকে হেঁটে রওনা হন লাখো ইরানি। এ সময় তাদের হাতে ছিল ইরানের পতাকা ও প্রয়াত প্রেসিডেন্টের ছবি।
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিসহ, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান ও উচ্চপদস্থ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা। হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর দীর্ঘ তল্লাশি অভিযান শেষে পাহাড়ি ও তুষারাবৃত এলাকা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের পর তাদের সন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েছিল ইরান। যুক্তরাষ্ট্র নিজেই এই তথ্য সামনে এনেছে।