নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ০১ অগাস্ট, ২০২০
আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা তোফায়েল আহমেদ দলে এবং দলের বাইরে অত্যন্ত জনপ্রিয়। জননেতা হিসেবে তাঁর স্বীকৃতি রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য, কখনো তিনি আওয়ামী লীগ ত্যাগ করেননি, তিনি তাঁর পরিচয় হিসেবে ব্যবহার করেন আওয়ামী লীগের তোফায়েল আহমেদ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সবথেকে ঘনিষ্ঠদের মধ্যে তিনি ছিলেন একজন।
অনেকেই মনে করতেন যে, তোফায়েল আহমেদ বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার। কিন্তু ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্টে বঙ্গবন্ধুর বিপর্যয়ের পর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে ১৯৮১ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা, তারপর থেকে তোফায়েল আহমেদের গুরুত্ব আওয়ামী লীগে কমতে থাকে। যদিও তিনি জাতীয় নেতা হিসেবে, অনলবর্ষী বক্তা হিসেবে কিংবা তাঁর রাজনৈতিক দূরদৃষ্টিতা বা মন্ত্রী হিসেবে তাঁর দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা ইত্যাদি কোনকিছু নিয়েই প্রশ্ন নেই, তারপরেও শেখ হাসিনা-তোফায়েল আহমেদ সম্পর্কের কোথায় যেন একটা চিড় আছে, কোথায় যেন একটা অবিশ্বাসের জমাট রক্ত সম্পর্ককে স্বাভাবিক হতে দেয়নি। কেন এই অবস্থা?
অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, তোফায়েল আহমেদ শেখ হাসিনার কাছে আস্থাভাজন নন এটা নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে কোন লুকোচুরি নেই। আওয়ামী লীগের একদম তৃণমূলের কর্মীটিও জানেন যে, তোফায়েল আহমেদ বড় নেতা, কিন্তু শেখ হাসিনার আস্থাভাজন নেতা নন। আর এই যে আস্থাভাজন নন তাঁর কারণ হিসেবে আওয়ামী লীগের অনেকেই মনে করেন যে, ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্টেই তোফায়েল আহমেদ শেখ হাসিনার আস্থা হারিয়েছেন। ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় এবং ১৪ই আগস্ট রাত ১০ টা পর্যন্ত তোফায়েল আহমেদ জাতির পিতার সঙ্গেই ছিলেন। গণভবনে একটি অনুষ্ঠানের পরে তোফায়েল আহমেদকে বঙ্গবন্ধু ৩২ নম্বরে আসতে বলেন এবং বলেন যে, পরের দিন তাঁর সঙ্গেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন এবং ঐদিন ভোররাতে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডটি ঘটে।
প্রশ্ন ওঠে যে, তোফায়েল আহমেদ বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব ছিলেন, এত ঘনিষ্ঠ থাকার পরেও কেন এই ঘটনা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জানেননি? রাজনৈতিক সচিবের দায়িত্ব রাজনৈতিক অঙ্গনে কোথায় কি ঘটছে খুঁটিনাটি সেই সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া এবং নেতাকে তা অবহিত করা। কিন্তু তোফায়েল আহমেদ রাজনৈতিক সচিব হয়েও দলের ভেতর এতগুলো নেতা এমন ষড়যন্ত্র করছে তা তিনি জানতে পারেননি তা একটি দূর্ভাগ্যজনক ঘটনা বলে মনে করেন অনেকে।
দ্বিতীয়ত তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, বিশেষ করে রক্ষীবাহিনীর ঘনিষ্ঠতার কথা জানা যায়। রক্ষীবাহিনীর গঠন এবং এর নেতৃত্বের ক্ষেত্রে তোফায়েল আহমেদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। কিন্তু তোফায়েল আহমেদ ঐ সঙ্কটের সময়ে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাদের ব্যবহার করে তাঁদেরকে নির্দেশনা দিতে সক্ষম কেন হননি তা নিয়ে আওয়ামী লীগের মাঝে প্রশ্ন আছে, আর শেখ হাসিনার মধ্যে প্রশ্ন আছে তো বটেই।
তৃতীয়ত সকলেই জানে যে, ১৫ই আগস্টের অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন জিয়াউর রহমান। আর এই জিয়াউর রহমানকেই জাতির পিতা রাষ্ট্রদূত করে বিদেশে বদলি করেছিলেন। কিন্তু পরে জিয়াউর রহমানের বদলি আদেশ বাতিল করতে যারা দেনদরবার করেছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তোফায়েল আহমেদ। মূলত তোফায়েল আহমেদের কারণে জাতির পিতা জিয়াউর রহমানের বদলি করেননি বলে অনেকে মনে করেন। আর শেখ হাসিনার পক্ষে এটা মনে করা স্বাভাবিক যে, জিয়াউর রহমানকে যদি সেই সময় রাষ্ট্রদূত হিসেবে বদলি করা হতো তাহলে ষড়যন্ত্রকারীরা হয়তো বার্তাটি পেত এবং ষড়যন্ত্র হতো না। সেখানেও তোফায়েল আহমেদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।
তোফায়েল আহমেদ যে বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন না, তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। এমনকি এই ষড়যন্ত্র প্রক্রিয়ার ধারেকাছেও তিনি ছিলেন না। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব হিসেবে যে দায়িত্বশীলতা এবং দায়িত্ব পালনের কথা ছিল তা তিনি কতটুকু পালন করেছিলেন তা নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে যেমন প্রশ্ন আছে, তেমনি প্রশ্ন আছে শেখ হাসিনার মধ্যেও। আর এই কারণে এক অজানা ব্যথা থেকে কিংবা ৭৫ এর স্মৃতিকাতরতা থেকেই হয়তো শেখ হাসিনার কাছে আস্থাভাজন হতে পারেননি তোফায়েল আহমেদ।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।