নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৮ পিএম, ০৪ অগাস্ট, ২০২০
জাতীয় চার নেতার প্রতি আলাদা ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা আছে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার। আর এই শ্রদ্ধা, ভালোবাসা প্রকাশে তিনি কোন রাখঢাক করেন না। চার নেতার উত্তরসূরীদের তিনি নিজের আপনজন মনে করেন এবং নিজের পরিবারের মর্যাদায় আসীন করেন। তাঁদের প্রতি তাঁর অপত্য স্নেহ। চার নেতার সন্তানদের মধ্যে শেখ হাসিনার সবচেয়ে বেশি পক্ষপাত সম্ভবত সোহেল তাজের পক্ষে। আওয়ামী লীগ সভাপতি সোহেল তাজকে যেভাবে ভালোবাসা দিয়েছেন, যেভাবে গড়ে তুলেছেন তা সাম্প্রতিক রাজনীতিতে এক বিরল ঘটনা। শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের অনেকেই মনে করেন যে, নিজের পুত্রের মতো করে সোহেল তাজকে তিনি স্নেহ দিয়েছেন আর এই অতিরিক্ত স্নেহের কারণে সোহেল তাজ বিপথগামী হয়েছেন কিনা সেই প্রশ্ন আওয়ামী লীগের অনেকের মধ্যে।
আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই মনে করেন যে, শেখ হাসিনার বেশি আদরে ‘নষ্ট’ হয়েছেন সোহেল তাজ। সোহেল তাজকে তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক করেছিলেন, ওয়ান ইলেভেনের পর তাঁকে দেশে নিয়ে এসে নিজের হাতে তৈরি করতে চেয়েছিলেন, তাঁকে দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব। শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদের পুত্র হিসেবে তিনি আলাদা মর্যাদা পেয়েছিলেন শেখ হাসিনার কাছে। শেখ হাসিনা তাঁকে গড়ে তোলার জন্যে যত সময় দিয়েছিলেন, অন্য কোন নেতাকে এতটা সময় দিয়েছিলেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কিন্তু সোহেল তাজ সেই স্নেহের মর্যাদা রাখতে পারেননি। সোহেল তাজের কথা মনে হলেই অনেকেই বলেন সেই পিতামাতার অবাধ্য ছেলের কথা, যারা পিতামাতার অতি আদরে বখে যায়।
সোহেল তাজ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার সময় কি হয়েছিল সেটা ভিন্ন প্রসংগ, তবে তিনি পদত্যাগ করলেন। প্রধানমন্ত্রী অনেক দিনই তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি। তিনি চেয়েছিলেন সোহেল তাজ যেন আবার ফিরে আসুক, দায়িত্ব গ্রহণ করুক বা তাঁকে তিনি অন্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সোহেল তাজের তখন মাথা বিগড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। তিনি পদত্যাগ করলেন, এরপর তিনি এমপি থেকেও পদত্যাগ করলেন। কিন্তু এরপরেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রুষ্ট হননি, তাঁর প্রতি খারাপ আচরণ করেননি, তাঁকে স্নেহ থেকেও বঞ্চিত করেননি। তারপরেও সোহেল তাজ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম মন্তব্য করে, বিভিন্ন রকম ঘটনা দিয়ে সরকারকে বিব্রত করার চেষ্টা করেছেন। কেন তিনি এটা করেছেন সেটা তিনি নিজেই জানেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ এবং জোহরা তাজউদ্দীনের প্রতি আলাদা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর এক বক্তৃতায় প্রকাশ্যে বলেছিলেন যে, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর যারা দলকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছেন, তাঁদের মধ্যে সবার আগে জোহরা তাজউদ্দীনের নাম আসে এবং জোহরা তাজউদ্দীনের প্রতি ঋণ-কৃতজ্ঞতা তিনি কোন রাখঢাক না রেখেই প্রকাশ করেন। এজন্যেই তিনি চেয়েছিলেন সোহেল তাজকে নিজ হাতে গড়ে তুলতে। কিন্তু সোহেল তাজ কখনোই যেন আওয়ামী লীগার হতে চাননি। বরং আওয়ামী লীগের বাইরে গিয়ে ‘তারকা’ হওয়ার এক অলীক স্বপ্ন তাঁকে পেয়ে বসে এবং সে কারণে তিনি নানারকম কাজ করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তুলে যে নেতা হওয়া যায়না তাঁর সবথেকে বড় উদাহরণ হয়তো সোহেল তাজ। তবে শেখ হাসিনা কখনোই তাজউদ্দীন আহমেদের পরিবারের প্রতি রুষ্ট আচরণ করেননি। তিনি শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদের কন্যাকে সংসদ সদস্য বানিয়েছেন। শেখ হাসিনা সোহেল তাজের প্রতি আলাদা স্নেহ সবসময় জমা করে রাখতেন। সোহেল তাজ সম্ভবত কখনোই শেখ হাসিনার স্নেহের মূল্য বুঝতে পারেননি এবং সেই স্নেহের প্রতিদানও দিতে পারেননি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সোহেল তাজ অনেক সম্ভাবনাময়ী ছিলেন। শেখ হাসিনার স্নেহের প্রতিদান দিয়ে তিনি যদি রাজনীতিতে থাকতেন তাহলে আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা হিসেবে দাঁড়াতে পারতেন। কিন্তু সেটা সোহেল তাজ করেননি। বারবার তিনি তাঁর প্রতি ভালোবাসার প্রতিদান দিয়েছেন অন্যভাবে, যেটা আওয়ামী লীগের অনেকের কাছেই বিব্রতকর।
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।