নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ০৯ অগাস্ট, ২০২০
ঘটনাটি ১৯৮৬ সালের। আওয়ামী লীগ নাটকীয়ভাবে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। ভাগ হয়ে গেল ১৪ দল। আওয়ামী লীগের সঙ্গে কমিউনিস্ট পার্টিসহ আরও কয়েকটি দল এরশাদকে হটানোর জন্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অর্থাৎ নির্বাচনের পথকেই বেছে নিল এবং এরশাদের অধীনে শর্তসাপেক্ষে নির্বাচনে যাওযার সিদ্ধান্ত নিল। এ সিদ্ধান্ত নিয়ে ১৪ দলের মধ্যে স্পষ্ট দ্বিধাবিভক্তি দেখা গেল। বিএনপি, জামাতের সঙ্গে জোট মেলালো জাসদ, বাসদসহ আরও কয়েকটি দল। তারা তখন স্লোগান তুলল- ‘নির্বাচনে যাবে যারা, এরশাদের দালাল তারা’। এ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাসদ ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আওয়ামীপন্থি ছাত্রলীগ এবং ছাত্র ইউনিয়ন নিধন অভিযান শুরু করলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বিতারিত হলো আওয়ামী ছাত্রলীগ এবং ছাত্র ইউনিয়ন। আর এই নিধন অভিযানে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তিনি হলেন জাসদপন্থি ছাত্রলীগের তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি শফি আহমেদ। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সেই শফি আহমেদ এখন আওয়ামী লীগে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দৌঁড়ঝাপ করেন তিনি প্রতিটা নির্বাচন এলেই। কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পেতে দৌড়ঝাপ করেন প্রতিটা সম্মেলনেই। কেন্দ্রীয় কমিটি থেকেও ছিটকে পড়েছেন। খড়কুটোর মতো এখন টিকে আছেন আওয়ামী লীগে। অথচ এই শফি আহমেদ এক সময় ছিলেন মুজিববাদী ছাত্রলীগের জন্য ত্রাস। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার কারণে মুজিববাদী ছাত্রলীগের ছেলেরা মিছিল মিটিং পর্যন্ত করতে পারতো না।
শুধু শফি আহমেদ একা নন, এ রকম অনেক আওয়ামীবিরোধী এবং আওয়ামী লীগকে যারা গণশত্রু মনে করতো, তারা এখন আওয়ামী লীগের নৌকায় উঠে বসেছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। কেউ কেউ আওয়ামী লীগের সহযাত্রী হয়েছেন জোটের মাধ্যমে। কিন্তু এরা সত্যি সত্যিই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করে কিনা বা আওয়ামী লীগকে পছন্দ করে কিনা সে প্রশ্ন যেমন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে আছে, তেমনি আছে শেখ হাসিনার মধ্যেও।
কৌশলগত কারণে হয়তো জাসদ, বাসদ থেকে যারা আওয়ামী লীগে এসেছেন, তাদেরকে তিনি দলে নিয়েছেন। অনেক সময় মনোনয়নও দেন। আবার যারা দলে আসেনি, যারা ১৪ দলীয় জোটে আছে, তাদের তিনি মন্ত্রিত্ব দিয়েছেন, নৌকাও ধার দেন, কিন্তু তাদের তিনি কতটুকু আপন করে নেন, সে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট যে পটভূমি তৈরি হয়েছিল, সেই পটভূমি তৈরির পেছনে যেমন খুনি চক্রের ভূমিকা ছিল, আন্তর্জাতিক চক্রান্ত ছিল, ঠিক তেমনি জাসদ নামক একটি বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ধ্বজাধারী বিভ্রান্ত রাজনৈতিক শক্তির হঠকারীতাও কম দায়ী ছিল না।
অনেক আওয়ামী লীগ নেতাই মনে করেন যে, বাহাত্তর থেকে পঁচাত্তর পর্যন্ত জাসদ যে সমস্ত নৈরাজ্য এবং অপকর্ম করেছে, সেই অপকর্ম এবং নৈরাজ্য না করলে, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট হতো না। আমরা জানি না শেখ হাসিনা এই তত্ত্বে বিশ্বাস করেন কিনা। তবে এখন জাসদে বিভ্রান্তি প্রকাশ্যে হলেও ঘুচেছে। জাসদের অনেক নেতাই আলাপ আলোচনায় বাহাত্তর থেকে পঁচাত্তরের ভূমিকার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন এবং তারুণ্যের বিভ্রাট বলেও তারা মনে করেন।
বাংলাদেশে নব্বইয়ের দশকে জাসদ বাসদ থেকে অনেকেই আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এই যোগদানের উদ্দেশ্য ছিল খুব স্বাভাবিক। সকলে মনে করেছিলেন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি যদি সত্যিকার অর্থে বিকশিত করতে হয়, তাহলে আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে হবে। এই বিবেচনা থেকে মাহমুদুর রহমান মান্না, আখতারউজ্জামান, শফি আহমেদের মতো অনেকেই জাসদ, বাসদ থেকে আওয়ামী লীগে নাম লেখান। যদিও এদের কারোরই আওয়ামী লীগে অবস্থান সংহত শক্তিশালী নয়। এদের মধ্যে মাহমুদুর রহমান মান্না আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছিলেন। শেখ হাসিনার বিশ্বাস এবং আস্থার প্রতিদান দিয়েছিলেন বিশ্বাসঘাতকতা দিয়ে। ওয়ান ইলেভেনে তিনি সংস্কারপন্থি ছিলেন। সে সময় মাইনাস ফর্মুলা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যারা মূল কাজ করেছিল আওয়ামী লীগে, তাদের মধ্যে মান্না ছিলেন অন্যতম।
আখতারউজ্জামানও আওয়ামী লীগে কোনো রকমে বেঁচে আছেন। মনোনয়ন না পেলেও তিনি কেন্দ্রীয় কমিটিতে আছেন।
শফি আহমেদ আছেন অস্তিত্ব রক্ষার মতোই। আর আওয়ামী লীগে না থেকেও যারা এখনও জাসদ করছেন তারা একরকম আওয়ামী লীগের কৃপা নিয়েই বেঁচে আছেন। গত মেয়াদে জাসদ থেকে হাসানুল হক ইনুকে মন্ত্রী করা হয়েছিল। পাঁচ বছর ধরে তিনি মন্ত্রিত্বকালীন সময়ে কী করেছেন, তা নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যেও নানা রকম প্রশ্ন আছে। জাসদ আওয়ামী লীগের সঙ্গে ১৪ দলীয় জোট করে থাকলেও এবং বঙ্গবন্ধু নিয়ে অনেক কথা বললেও সেই দুঃসময়ের স্মৃতিগুলো কোনো আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই ভুলতে পারেনি।
বাহাত্তর থেকে পঁচাত্তরে যেমন জাসদ হঠকারিতা করেছিল, তেমনি ছিয়াশিতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। সামনের কঠিন দিনগুলোতেও জাসদ কতটা আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকবে, সে নিয়ে প্রশ্ন আছে। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে জাসদ নৌকায় উঠলেও শেখ হাসিনার আপন হতে পারেনি কখনও।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ১৭ মে দেশের বিভিন্ন এতিমখানায় খাবার বিতরণ
করবে দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটি।
বুধবার (১৫ মে) আওয়ামী লীগের ত্রাণ
ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই কর্মসূচি
ঘোষণা করা হয়।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার
(১৬ মে) দুপুর ১টায় তেজগাঁও ‘রহমতে আলম ইসলাম মিশন এতিমখানা’য় সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে
সুষম খাবার বিতরণ করা হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এছাড়াও এদিন রাজধানী ঢাকায় আজিমপুর
সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা, মোহাম্মদপুর সলিমুল্লাহ রোডস্থ এতিমখানা, সোবহানবাগ মসজিদ
সংলগ্ন এতিমখানা, বাড্ডা বেরাইদ রহিম উল্লাহ এতিমখানায় এতিম অসহায়দের মাঝে খাবার সামগ্রী
বিতরণ করা হবে।
একই সঙ্গে সিলেট হযরত শাহজালালের (র.)
মাজার সংলগ্ন এতিমখানা এবং চট্টগ্রাম হযরত শাহ আমানতের (রহ) মাজার সংলগ্ন এতিমখানা
ও গরীব উল্লাহ শাহের (রহ) মাজার সংলগ্ন এতিমখানাতেও খাবার সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত
হবে।
এছাড়াও ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির
সদস্যদের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন জেলা সদরে অবস্থিত এতিমখানাগুলোতে সুষম খাবার পরিবেশন
করা হবে।
পরের দিন শনিবার দুপুর ১টায় চট্টগ্রামের
কদম মোবারক এতিমখানায় সুষম খাবার বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে
উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এতিমখানা আওয়ামী লীগ উপ-কমিটি
মন্তব্য করুন
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ২৯ মে অনুষ্ঠেয় তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ৫২ জন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী
তাদের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃতদের মধ্যে ১৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ২৬ জন ভাইস চেয়ারম্যান
প্রার্থী ও ৯ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। গতকাল বুধবার বিএনপির পাঠানো এক সংবাদ
বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিভাগভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, রংপুর বিভাগের ১২ জন, রাজশাহী বিভাগের চারজন, বরিশাল বিভাগের পাঁচজন, ঢাকা বিভাগের চারজন, ময়মনসিংহ বিভাগের ৯ জন, সিলেট বিভাগের সাতজন, চট্টগ্রাম বিভাগের একজন, কুমিল্লা বিভাগের ছয়জন ও খুলনা বিভাগের চারজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
ডোনাল্ড লু বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চীন সফর ভারত যুক্তরাষ্ট্র
মন্তব্য করুন
আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পর্যন্ত আওয়ামী লীগ দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী, দলের ভেতর সুবিধাবাদী, লুটেরা এবং দলের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। কিন্তু ২৩ জুনের পর আওয়ামী লীগের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ক্র্যাকডাউন হবে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী এবং দলের সুনাম নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করবে। আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগ এবং তার আদর্শিক জোট ১৪ দলের নেতাদের চীন সফরে হিড়িক পড়েছে। আওয়ামী লীগ এবং তার সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর এই চীন সফরকে ঘিরে কূটনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানামুখী আলাপ আলোচনা। ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই ১৪ দল এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের চীন সফরের ব্যাপারে দৃষ্টি রাখছেন। তবে তারা এই বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হচ্ছেন না। বিষয়টি তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় হিসেবেই মনে করছেন।