নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৮ পিএম, ১২ অগাস্ট, ২০২০
করোনাকালের শুরু থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরকারের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে এই সমন্বয়হীনতা অব্যাহত রয়েছে। সমন্বয়হীনতার সর্বশেষ নজির হল আজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকে এবং সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরস্পরবিরোধী অবস্থান। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, করোনা সংক্রান্ত যে লাইভ বুলেটিন প্রচারিত হয় সেই লাইভ বুলেটিন প্রচারিত হবে না। বরং একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে করোনার সর্বশেষ তথ্য হালনাগাদ করা হবে এবং গণমাধ্যমে দেওয়া হবে।
বিষয়টি হচ্ছে, করোনার বুলেটিনের নামে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা যেভাবে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতেন তা বন্ধ করে তথ্য উপাত্তগুলো গণমাধ্যমে সরবরাহ করা। অনেকগুলো কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এটি কোন কোন মহল না বুঝেই তথ্য বন্ধ, অবাধ তথ্য প্রবাহে হুমকি, তথ্য বিভ্রান্তি হবে, গুজব হবে ইত্যাদি নানা রকম কথা বলছে। বাস্তবতা হলো এই যে, করোনার প্রতিদিনের যে হালনাগাদ তথ্য দেয়া তা বন্ধ হয়নি। সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে একজন যে ভাষণ দিতেন তা বন্ধ করা হয়েছে।
তথ্যপ্রাপ্তি হল সবচেয়ে বড় কথা। এইজন্য ক্যামেরার সামনে এসে জাতির উদ্দেশ্যে তথ্য প্রদান করতেই হবে কেন? সেই প্রশ্ন উঠতেই পারে। আমরা তথ্য পাচ্ছি কিনা সেটি হল ব্যাপার। কোন কোন মহল এটি না বুঝেই তথ্য প্রাপ্তি বন্ধ হয়েছে বলে প্রচার করেছে। সেই প্রচারের ফাঁদে পা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও। ওবায়দুল কাদের আজ ভিডিও ব্রিফিং এ বলেছেন এই ধরণের তথ্য সম্প্রচার বন্ধ হওয়ার ফলে মানুষের মধ্যে গুজব এবং বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে। ওবায়দুল কাদের যদি পুরো ব্যাপারটা জানতেন বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলতেন, তাহলে নিশ্চয় তিনি এই ধরণের মন্তব্য করতেন না। এই ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও যদি সরকারকে বা জনগণকে সঠিকভাবে ব্রিফ করতেন তাহলে বিষয়টি এই রকম দাঁড়াত না। কোনভাবেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর প্রতিদিনের যে হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ তা বন্ধ করে নাই। বরং তথ্য প্রকাশের পদ্ধতি পাল্টে দিয়েছে।
এখন যদি কেউ মনে করেন টেলিভিশনে এসে সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে এই তথ্য দিতে হবে। তাহলে তারমধ্যেই বিভ্রান্তি আছে বা অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে বলে মনে করতে হবে। আর এই ধরণের সরকারের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর দ্বৈত অবস্থান, সরকারের সমন্বয়হীনতার ইঙ্গিত। এই রকম সমন্বয়হীনতা নতুন নয়। করোনা সংকটের শুরু থেকেই এই সমন্বয়হীনতা দেখা গেছে। যখন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে তখন মন্ত্রীপরিষদ সচিব বলেছেন, করোনার কারণে এটা সাধারণ ছুটি হিসেবে ঘোষণা করা হল। তারপর দেখা গেছে, গণপরিবহন বন্ধ করা হয় নাই। মানুষ গণপরিবহণে চলে যাচ্ছে। সেই সময় সড়ক পরিবহণ, রেলপথ ও নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের উচিত ছিল সঙ্গে সঙ্গে গণপরিবহণ ব্যবস্থাগুলো বন্ধ করে দেওয়া। কিন্তু সেখানে সেটি করা হয় নাই।
আবার যখন গার্মেন্টস খুলে দেওয়া হল, তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেই বলেছেন জাতীয় কমিটি এই সম্পর্কে অবহিত নয়। হোটেল, রেস্টুরেন্ট খোলা নিয়েও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অবহিত ছিল না। প্রতি ধাপে ধাপে এই ধরণের সমন্বয়হীনতার কারণে সরকারের অনেক ভালো উদ্যোগ প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে এবং জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। আবার এটি নিয়ে নতুন করে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হচ্ছে। এক্ষেত্রে এই সমন্বয়হীনতা দূর করার জন্য যে কোন মন্ত্রণালয় সম্পর্কে অন্য মন্ত্রণালয় যদি কোন বক্তব্য রাখে তাহলে প্রথমে সেই মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে নেওয়া উচিত। কারণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের মতো একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি যখন এই কথা বলেন তখন জনগণের মধ্যে অনাস্থা তৈরি হয় এবং সেটি সরকারের উপরই বর্তায়। তাই অন্য কোন মন্ত্রণালয় সম্পর্কে কোন মন্তব্য করার আগে ওই মন্ত্রণালয় কেন, কি কারণে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেই সম্পর্কে সঠিক ও বাস্তবসম্মত তথ্য নিয়েই মন্তব্য করা উচিত।
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান
বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোটার ও প্রার্থীদের ধারণা পাল্টিয়েছে, বিশ্বাস জন্মেছে।
তার কারণেই প্রার্থীরা আবারও ভোটাদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে। প্রার্থীরা ভোটাদের দ্বারে
যাওয়ার যে সংস্কৃতি সেটা আবারও ফিরে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) যশোর শিল্পকলা
একাডেমির মিলনায়তনে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে
অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে যশোর, নড়াইল ও মাগুরার জেলার প্রার্থী নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে
মতবিনিময় শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথা বলেন।
একদিন বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন বিশ্বের
রোল মডেল হবে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৩৬ শতাংশ
এ সময়ে অনেক। দেশের কয়েকটা রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ না নেয়াতে ভোটার উপস্থিতি কম।
আগামীতে দেশের যত ভোট আসছে, ততই আমাদের ভোটের পরিবেশ, ভোট গ্রহণ পরিবর্তন ঘটছে। বিগত
সময়ে নির্বাচন নিয়ে কি ঘটেছে সেটা ফিরে তাকানোর আর কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশের নির্বাচন
কমিশন সকল বির্তক, সমালোচনা পিছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়িয়ে দিন দিন উন্নতির দিকে যাচ্ছে।
ইসি আহসান হাবিব বলেন, নির্বাচনে ভোটারের
উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীরা কাজ করবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম
ধাপে মোট ভোট গ্রহণের শতাংশ প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা এবার থেকে ভোট গ্রহণে উপজেলা ভিত্তিক
তালিকা প্রকাশ করা হবে। ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীরা আলাদাভাবে
প্রচারণা করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যারা ভোটাদের বাঁধা দিবে তাদের প্রতিহত করবে প্রশাসন।
আমরা প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছি আইনের হাত ও ক্ষমতা অনেক বেশি। নির্বাচন বানচাল করতে
সেই ক্ষমতা কঠোরভাবে প্রয়োগ করবে প্রশাসন।
ইসি আরও বলেন, বিগত সময়ের চেয়ে বর্তমান
কমিশন সততার সঙ্গে কাজ করছে। শুধু কমিশন নয়, নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা সততার
সঙ্গে কাজ করছে। নির্বাচনে সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য আইন পাস করেছে এ কমিশন। কেউ সাংবাদিকদের
কাজে বাধাগ্রস্ত করলে জেল জরিমানার বিধান করা হয়েছে। মিডিয়াকে এ অবস্থানে নেয়ার ক্ষেত্রে
এ কমিশন ও সরকার ভূমিকা রাখছে।
যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল
হাছান মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় যশোর, নড়াইল ও মাগুরা জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপাররা
বক্তব্য রাখে। সভায় যশোর, মাগুরা ও নড়াইল জেলার সকল প্রার্থী, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট উপজেলাসমূহের
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাবৃন্দ, আচরণবিধি ও আইনশৃঙ্খলা
রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাবৃন্দ
এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ অংশ
নেয়।
অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে শার্শা উপজেলা
পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রশিক্ষণে অংশ নেন ইসি আহসান
হাবিব খান।
মন্তব্য করুন
অমর কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তার শ্রীকান্ত উপন্যাসে লিখেছিলেন, বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না, দূরেও ঠেলিয়া দেয়। রাজলক্ষী-শ্রীকান্তের প্রেম উপাখ্যানে বিরহ পর্বে শরৎচন্দ্রের এই মন্তব্যটি অমর। সাম্প্রতিক সময়ে এই মন্তব্যটি নতুন করে মনে পড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র বাংলাদেশ সফরের প্রেক্ষিতে। ডোনাল্ড লু’র বাংলাদেশে এটি প্রথম সফর নয়। এর আগেও তিনি দুবার এসেছিলেন। এককভাবে এসেছিলেন ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে। সেই সফর আর এই সফরের মধ্যে যে পার্থক্য সেটি ব্যাপক বিস্তর এবং দুই মেরুর অবস্থান।
ডোনাল্ড লু বিশ্ব রাজনীতিতে আলোচিত পাকিস্তানের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে। ইমরান খানের অভিযোগ, ডোনাল্ড লু ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই বক্তব্যকে অস্বীকার করা হয়নি। এর পরেই ডোনাল্ড লু বিশ্ব রাজনীতিতে বিশেষ করে উপমহাদেশের রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে ওঠেন।
বাংলাদেশের নির্বাচনের আগেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত সরব। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন; অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ইত্যাদি বিষয়ে তাকে অত্যন্ত সরব দেখা গেছে। ২৮ অক্টোবরের পর তিনি তিনটি রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিয়েছিলেন। দুই দফায় বাংলাদেশে এসেছিলেন। একবার এসেছিলেন এককভাবে। যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে নতুন ভিসা নীতি গ্রহণ করে তখন তিনি জিল্লুর রহমানের তৃতীয় মাত্রা টকশোতে সুদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকে অংশগ্রহণ করেছিলেন। বাংলাদেশ নিয়ে তার আগ্রহ এবং নির্বাচন নিয়ে তার অবস্থান সকলের কাছেই সুস্পষ্ট ছিল।
অনেকেই মনে করতেন যে, ডোনাল্ড লু হয়ত আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দেবে, পাকিস্তানে যেভাবে ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনের পরে এবার ডোনাল্ড লু’র সফর সম্পূর্ণ ভিন্ন মাত্রায়। তিনি ক্রিকেট খেললেন, ফুচকা খেলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বাসায় নৈশভোজের আমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন। সব পুরনো স্মৃতি ভুলে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার বার্তাও দিলেন। কিন্তু পুরনো বন্ধুদেরকে একেবারে ভুলে গেলেন। যারা নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড লু’র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় ছিলেন তাদের সঙ্গে একধরনের বিচ্ছেদের বার্তা দিয়েই ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফর করলেন। এ যেন বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না, দূরেও ঠেলিয়া দেয়।
কারণ নির্বাচনের আগে বিএনপি এবং সুশীল সমাজ ডোনাল্ড লু’র প্রেমে পাগল হয়ে গেছিল এবং ডোনাল্ড লু কে তারা মনে করতেন ত্রাতা হিসেবে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে যখন ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফর করেছিলেন, সেই সফরে তিনি বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। বাংলাদেশের সুশীলদের- বিশেষ করে বদিউল আলম মজুমদার, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, জিল্লুর রহমান, আদিলুর রহমান খানদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গভীর সম্পর্কের কথা সকলেই জানত এবং তারা বাংলাদেশে যেন একেকজন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিকেন্দ্র, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত ছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কী কী করতে পারে, নির্বাচনের পর কী কী হতে পারে, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে সরকারের কী পরিণতি হবে- ইত্যাদি নিয়ে এইসব সুশীলদের বাক্যবাণ জাতিকে শিহরিত করেছিল, আতঙ্কিত করেছিল। কিন্তু এবার তারা দেখাও পেলেন না ডোনাল্ড লু’র। তাদের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে বড়ো প্রেম তা এবার কাছে টানে নাই দূরে ঠেলে দিয়েছে।
একইভাবে বিএনপির আন্দোলনের ভারকেন্দ্র ছিল যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রই বিএনপির আন্দোলনকে সফল করবে, বিশেষ করে ২২ সালের ১৫ মার্চ পিটার ডি হাস বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে আসার পর থেকেই আস্তে আস্তে বিএনপি উজ্জীবিত হতে শুরু করে। কিন্তু ডোনাল্ড লু’র সঙ্গে পিটার ডি হাস যে বিভিন্ন স্থানগুলোতে গেলেন সেখানে পুরনো প্রেমের কোন চিহ্ন ছিল না। বিএনপি নেতারাও এখন ডোনাল্ড লু’র সাথে সাক্ষাৎ করতে না পেরে ডোনাল্ড লুকেই অপ্রয়োজনীয় বলছেন, গুরুত্বহীন বলছেন। অথচ এই ডোনাল্ড লু ছিল এক সময় বিএনপির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না, দূরেও ঠেলিয়া দেয়- এই বক্তব্যটি শুধুমাত্র যে প্রেম ভালোবাসার রোমান্টিকতার জন্য প্রযোজ্য তা নয়, এতদিন পরে প্রমাণ হল- কূটনীতির মাঠেও বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না, দূরেও ঠেলিয়া দেয়।
ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ রাজনীতি বিএনপি বদিউল আলম মজুমদার মির্জা ফখরুল
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।
অমর কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তার শ্রীকান্ত উপন্যাসে লিখেছিলেন, বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না, দূরেও ঠেলিয়া দেয়। রাজলক্ষী-শ্রীকান্তের প্রেম উপাখ্যানে বিরহ পর্বে শরৎচন্দ্রের এই মন্তব্যটি অমর। সাম্প্রতিক সময়ে এই মন্তব্যটি নতুন করে মনে পড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র বাংলাদেশ সফরের প্রেক্ষিতে। ডোনাল্ড লু’র বাংলাদেশে এটি প্রথম সফর নয়। এর আগেও তিনি দুবার এসেছিলেন। এককভাবে এসেছিলেন ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে। সেই সফর আর এই সফরের মধ্যে যে পার্থক্য সেটি ব্যাপক বিস্তর এবং দুই মেরুর অবস্থান।