নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৮ পিএম, ১৪ অগাস্ট, ২০২০
কাল জাতীয় শোক দিবস। ১৯৭৫ এর এই দিনে বাঙালি জাতির সবথেকে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে, কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে যে ষড়যন্ত্র, সেই ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে যে রহস্য, তা এখনো উন্মোচিত হয়নি। প্রতি বছর আগস্ট মাস আসলেই যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল, প্রশাসনে যারা নিরব দর্শকের মতো দাঁড়িয়েছিল, যারা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছিল তাঁদের ব্যাপারে নির্মোহ তদন্তের দাবি করা হয়। একাধিক ব্যক্তিত্ব এই ব্যাপারে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠনেরও দাবি করেছেন, এর আগেও করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে এই ব্যাপারে একটি পূর্ণাংগ কমিশন করে তদন্তের দাবি উত্থাপন করেছিলেন।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি যেমন করা দরকার তেমনি আওয়ামী লীগের ভূমিকাও বিশ্লেষণ করা দরকার। কারণ ৭৫-এর ১৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ রুখে দাঁড়াতে তো পারেইনি, বরং খুনী মোশতাকের মন্ত্রিসভায় আওয়ামী লীগের ৭ জন ছাড়া প্রায় সবাই যোগদান করেছিলেন। আওয়ামী লীগের অধিকাংশ এমপি মোশতাকের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন, কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা জরুরী। তবে শুধু ৭৫-এর ১৫ আগস্ট নয়, ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, কোন সঙ্কটেই আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারেনা, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে যখন দলের প্রধান নেতা আক্রান্ত হন, তখন দলের ভেতর বিভ্রান্তি তৈরি হয়। আওয়ামী লীগের এই বিভ্রান্তির ইতিহাস অনেক দীর্ঘ এবং পুরনো। এক্ষেত্রে তিনটি বিভ্রান্তির ঘটনা উল্লেখ করা যেতে পারে।
যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির পিতা হয়ে ওঠেননি, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বন্দি হয়ে কারান্তরীণ। তখন আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছিল। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে আলোচনার জন্যে যখন আমন্ত্রন জানানো হয়েছিল, সেই প্রশ্নে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা দ্বিধাবিভক্ত হয়েছিলেন। শুধুমাত্র বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের দৃঢ়তাঁর কারণে সেই সময়ে আপোসকামীতার চোরাবালিতে পা রাখেনি আওয়ামী লীগ। ঐ সময়ে অনেক সিনিয়র নেতা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে এক ধরণের বিশ্বাসঘাতকতাই করেছিলেন।
এরপর ৭৫ এর ঘটনা। ৭৫-এ আওয়ামী লীগের অনেক বড় বড় নেতারা ব্যক্তিত্বহীন, দায়িত্বহীন এবং কাপুরুষের মতো আচরণ করেছিল তা আজ প্রকাশ্য। পরবর্তীতে এরা আওয়ামী লীগ করেছেন এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা যখন ২১ বছর পর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছেন তখন এদের কেউ কেউ এমপিও হয়েছেন। কিন্তু কেন তাঁরা সেদিন খুনী মোশতাকের মন্ত্রিসভায় গিয়েছিল সেই প্রশ্নের উত্তর নেই।
শুধু তাই নয় ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগের ভেতর বহুধাবিভক্ত দেখা দিয়েছিল। জোহরা তাজউদ্দীন যখন আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠিত করেন, তখন মিজানুর রহমান আলাদা আওয়ামী লীগ গঠন করেছিলেন। এমনকি মোজাফফর হোসেন পল্টুর নেতৃত্বেও একটা ভগ্ন আওয়ামী লীগ হয়েছে। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই মনে করেন যে, শেখ হাসিনা যদি দলের হাল না ধরতেন তাহলে আওয়ামী লীগ এতদিনে কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যেত।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের এই ব্যর্থতার ইতিহাস আরো দীর্ঘ এবং সর্বশেষ উদাহরণ হলো ২০০৭ সালে যখন ওয়ান ইলেভেন আসে তখন। এই সময়ে গণতন্ত্র যখন সঙ্কটে পড়ে, গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য যখন শেখ হাসিনা দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেন, তখনো তাঁর পাশে থাকেননি আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতারা। বরং আওয়ামী লীগের চার শীর্ষ নেতা তাদের জায়গা থেকে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যে সংস্কার প্রস্তাব আদতে মাইনাস ফর্মুলা। আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতারা এখনো দলে আছে। এদের কেউ কেউ মন্ত্রীও হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের তৃণমূলের অনেক নেতাই মনে করেন যে, আওয়ামী লীগের সঙ্কটে, বিশেষ করে প্রধান নেতা যখন আক্রান্ত হন তখন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা দায়িত্বশীল আচরণ করতে পারেনা। কিন্তু তৃণমূলের শক্তিতেই আওয়ামী লীগ বলীয়ান এবং তৃণমূল ঐক্যবদ্ধ থাকে। যার উদাহরণ ২০০৭ সালে দেখা গেছে। এই তৃণমূলের শক্তিতেই আওয়ামী লীগ এখনো টিকে আছে।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৭৫ এর ঘটনা এবং ২০০৭ সালের ঘটনা একটি বিষয়ে ইঙ্গিত করে যে, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা, যারা দলের পরিচয়ে পরিচিত, দলের জন্য যারা মন্ত্রী হন, দলের জন্যে যারা জনগনের কাছে পরিচিত হন তাঁরা যোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারেন না এবং ১৫ আগস্টের জাতীয় শোক দিবসে এই নিয়ে নির্মোহ বিশ্লেষন, গবেষণা এবং অনুসন্ধান প্রয়োজন বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান
বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোটার ও প্রার্থীদের ধারণা পাল্টিয়েছে, বিশ্বাস জন্মেছে।
তার কারণেই প্রার্থীরা আবারও ভোটাদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে। প্রার্থীরা ভোটাদের দ্বারে
যাওয়ার যে সংস্কৃতি সেটা আবারও ফিরে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) যশোর শিল্পকলা
একাডেমির মিলনায়তনে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে
অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে যশোর, নড়াইল ও মাগুরার জেলার প্রার্থী নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে
মতবিনিময় শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথা বলেন।
একদিন বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন বিশ্বের
রোল মডেল হবে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৩৬ শতাংশ
এ সময়ে অনেক। দেশের কয়েকটা রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ না নেয়াতে ভোটার উপস্থিতি কম।
আগামীতে দেশের যত ভোট আসছে, ততই আমাদের ভোটের পরিবেশ, ভোট গ্রহণ পরিবর্তন ঘটছে। বিগত
সময়ে নির্বাচন নিয়ে কি ঘটেছে সেটা ফিরে তাকানোর আর কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশের নির্বাচন
কমিশন সকল বির্তক, সমালোচনা পিছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়িয়ে দিন দিন উন্নতির দিকে যাচ্ছে।
ইসি আহসান হাবিব বলেন, নির্বাচনে ভোটারের
উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীরা কাজ করবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম
ধাপে মোট ভোট গ্রহণের শতাংশ প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা এবার থেকে ভোট গ্রহণে উপজেলা ভিত্তিক
তালিকা প্রকাশ করা হবে। ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীরা আলাদাভাবে
প্রচারণা করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যারা ভোটাদের বাঁধা দিবে তাদের প্রতিহত করবে প্রশাসন।
আমরা প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছি আইনের হাত ও ক্ষমতা অনেক বেশি। নির্বাচন বানচাল করতে
সেই ক্ষমতা কঠোরভাবে প্রয়োগ করবে প্রশাসন।
ইসি আরও বলেন, বিগত সময়ের চেয়ে বর্তমান
কমিশন সততার সঙ্গে কাজ করছে। শুধু কমিশন নয়, নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা সততার
সঙ্গে কাজ করছে। নির্বাচনে সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য আইন পাস করেছে এ কমিশন। কেউ সাংবাদিকদের
কাজে বাধাগ্রস্ত করলে জেল জরিমানার বিধান করা হয়েছে। মিডিয়াকে এ অবস্থানে নেয়ার ক্ষেত্রে
এ কমিশন ও সরকার ভূমিকা রাখছে।
যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল
হাছান মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় যশোর, নড়াইল ও মাগুরা জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপাররা
বক্তব্য রাখে। সভায় যশোর, মাগুরা ও নড়াইল জেলার সকল প্রার্থী, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট উপজেলাসমূহের
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাবৃন্দ, আচরণবিধি ও আইনশৃঙ্খলা
রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাবৃন্দ
এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ অংশ
নেয়।
অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে শার্শা উপজেলা
পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রশিক্ষণে অংশ নেন ইসি আহসান
হাবিব খান।
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।