নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৫ অগাস্ট, ২০২০
জাতীয় শোক দিবস পার হয়ে গেছে, এখন শেখ হাসিনার অ্যাকশনের সময়। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ঘনিষ্ঠদেরকে বলেছিলেন যে, ১৫ আগস্ট পার হয়ে গেলে তিনি কিছু কিছু ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে যাবেন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস, শেখ হাসিনার জন্য এই দিনটি আরো বেদনাবিধুর। কারণ এই একটি দিন তাঁর সকল আপনজনকে কেড়ে নিয়েছিল। এই কারণে আগস্ট মাসে শেখ হাসিনা আবেগ আক্রান্ত থাকেন, এই মাসে তিনি একটু নিজস্ব জগতের মধ্যে থাকেন।
এবারের ১৫ আগস্ট পালিত হচ্ছে একটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। যখন দেশে করোনার সংক্রমণ চলছে, একইসঙ্গে বন্যা এবং অর্থনৈতিক সঙ্কট চেপে বসেছে। এরকম পরিস্থিতির মধ্যেও শেখ হাসিনা শোকে পাথর চেপে দেশের অগ্রগতি-উন্নয়ন অব্যহত রাখার জন্যে কাজ করে যাচ্ছেন। আর ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস শেষ হওয়ার পর তিনি কিছু কিছু বিষয়ে বেশ কঠিন অবস্থানে যাবেন বলেও দলের নীতিনির্ধারকরা আভাস দিয়েছেন। যে সমস্ত বিষয়গুলোতে শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থানে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে, তাঁর মধ্যে রয়েছে-
দলে অনুপ্রবেশকারীদের নির্মূল করা
গত কিছুদিন ধরেই আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের উৎপাত বেড়ে গিয়েছিল এবং এই অনুপ্রবেশকারীদের কারণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দলের বদনাম হচ্ছিল। সাহেদ-সাবরিনা-পাপিয়াদের মতো ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের সাফল্য এবং অর্জনগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী অনেক আগে থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন এবং তিনি তাঁর উদ্যোগে প্রায় ৮ হাজার অনুপ্রবেশকারীর তালিকা তৈরি করে দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের দিয়েছিলেন প্রায় ১ বছর আগে। কিন্তু তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এবার প্রধানমন্ত্রী নিজেই এই শুদ্ধি অভিযানের নেতৃত্ব দিবেন বলে জানা গেছে এবং শুধু সাংগঠনিক ব্যবস্থা নয়, যারা সুনির্দিষ্ট অপরাধ করছে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা যেন কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে সে ব্যাপারে তিনি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এটা এখন তিনি নিজে তদারকি করবেন বলেও জানা গেছে। এক্ষেত্রে ফরিদপুর মডেল অনুসরণ করা হবে বলেও দলের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা
টানা তৃতীয়বারের মতো দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছিলেন যে, দুর্নীতিকে তিনি কোনরকম আশ্রয়প্রশ্রয় দেবেন না এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করবেন। কিন্তু তারপরেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি হচ্ছে, এই দুর্নীতি বন্ধে শেখ হাসিনা আরো কঠিন অবস্থানে যাবেন বলে আভাস পাওয়া গেছে। বিশেষ করে দুর্নীতির মামলাগুলো যেন দ্রুত নিষ্পত্তি হয় এবং সরকারি কেনাকাটা ও প্রকল্পে যেন দুর্নীতি বন্ধ করা হয় সে ব্যাপারে শেখ হাসিনা আরো কঠোর অ্যাকশন নিতে যাচ্ছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
প্রশাসনে শুদ্ধি অভিযান
গত সাড়ে ১১ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। এই সময় প্রশাসনের ভেতর ঘাপটি মেরে রয়েছে যেমন জামাত-শিবির, তেমনি প্রশাসনের ভেতর কিছু অতি আওয়ামী লীগার প্রশাসনের বদনাম করছে এবং তাঁরা দায়িত্ব পালনের চেয়ে রাজনৈতিক কার্যক্রমে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। এই ব্যাপারেও একটি বড় ধরণের শুদ্ধি অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিশেষ করে যারা প্রশাসনে কাজ করছেন না তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পুলিশে শুদ্ধি অভিযান
সাম্প্রতিক সময়ে সিনহা হত্যাকাণ্ড সরকারের চোখ খুলে দিয়েছে এবং দেখা যাচ্ছে যে, পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে এখনো বেশকিছু অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে জামাত-শিবিরের অপতৎপরতা। আর এসব বিষয়গুলো বন্ধের জন্যে পুলিশে শুদ্ধি অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে খুব শীঘ্রই। প্রধানমন্ত্রী এই ব্যাপারে পুলিশ প্রধানের সঙ্গে কথাও বলেছেন এবং এই নিয়ে জাতীয় শোক দিবসের পর থেকে দৃশ্যমান কার্যক্রম দেখা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মন্ত্রিসভার গতিশীলতা
টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভায় অনেক সিনিয়র সদস্যকে বাদ দিয়েছিলেন। একটি নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করেছিলেন। কিন্তু এই মন্ত্রিসভায় কয়েকজন মন্ত্রীর কাজ অগোছালো এবং তাঁরা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সঠিক যোগ্যতার পরিচয় দিচ্ছেন না। মন্ত্রিসভায় গতিশীলতা আনার জন্যে প্রধানমন্ত্রী একাধিক পদক্ষেপ নিতে পারেন বলে আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।