নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০
সরকারি টাকায় নিজের চিকিৎসা করেছেন। ছোট ভাই মির্জা ফয়সাল আমিনকে বানিয়েছেন পৌরসভার মেয়র। ছোট ভাইয়ের জন্য নিয়মিত বিভিন্ন মন্ত্রীর কাছে দেন-দরবার করেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং ভারতের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এমনকি দলীয় ফোরামে বলেছেন, দেশে এখন শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই। এ রকম সাত অভিযোগে অভিযুক্ত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। এই সব অভিযোগ তথ্য প্রমানসহ দেয়া হয়েছে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে। খালেদা মির্জা ফখরুলের এই সব কর্মকান্ডে ‘হতবাক’ বলেই জানিয়েছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
আর এ কারণেই শেষ পর্যন্ত হয়তো সরে যেতে হচ্ছে ফখরুলকে। তবে মহাসচিব পদে শেষ পর্যন্ত ফখরুল থাকবেন কিনা, এ ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। বিএনপি মহাসচিবের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার সুনির্দিষ্ট ৭টি অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। অভিযোগগুলো হলোঃ
১। সরকারি টাকায় চিকিৎসা
মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ হলো, গোপনে তিনি তার চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। দুই দফায় মির্জা ফখরুল তার চিকিৎসা বাবদ ৪৮ লাখ টাকা নেন। সরকারি টাকায় তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নেন। এ সময় তার চিকিৎসার সার্বিক তদারকি করে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ মিশন। সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তার চিকিৎসার বিল মেটায় বাংলাদেশ মিশন। বিএনপির অনেক নেতার কাছেই এ সংক্রান্ত কাগজপত্র রয়েছে, বলে জানা গেছে।
২। ভাইকে পৌরসভার মেয়র বানানো
বিএনপি মহাসচিবের ছোট ভাই ঠাকুরগাও পৌরসভার মেয়র। এটি সরকারের সাথে আঁতাতের ফসল বলেই মনে করেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। ঐ মেয়র প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে, সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
৩। ভাইয়ের জন্য দেন-দরবার তদবির
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার ভাইয়ের পৌরসভার বরাদ্দ, বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য নিয়মিত টেলিফোন করেন বিভিন্ন মন্ত্রীকে। সরকারের একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে বিএনপি মহাসচিবের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ।
৪। জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট
জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসরাম আলমগীর। এই ফ্রন্ট বিএনপির আদর্শ পরিপন্থী, বলে মনে করেন বিএনপির অধিকাংশ নেতা। আওয়ামী লীগকে তৃতীয় দফা ক্ষমতায় আনা নিশ্চিত করতেই এই ফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল বলে মনে করেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ।
৫। নিজের মামলা নিষ্ক্রিয় করা
সরকারের সঙ্গে আঁতাতের মাধ্যমেই মির্জা ফখরুল তার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো নিষ্ক্রিয় করেছেন, বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে ২৯টি মামলার একটিও চলমান নেই। যে দলের চেয়ারপারসন ২৫ মাস জেল খাটেন, সেই দলের মহাসচিব কিভাবে মামলা থামিয়ে রাখেন- সে প্রশ্ন বিএনপি নেতৃবৃন্দের।
৬। বিদেশি দূতাবাসে সরকারের প্রশংসা
অন্তত দুটি দূতাবাসের সঙ্গে বৈঠকে মির্জা ফখরুল বর্তমান সরকারের প্রশংসা করেছেন, বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, সরকার কিছু ভালো করছে।
৭। প্রধানমন্ত্রীর বিকল্প নেই
দলীয় ফোরামের বৈঠকে একাধিকবার মির্জার ফখরুল বলেছেন, ‘এখন চুড়ান্ত আন্দোলন করে কাকে ক্ষমতায় বসাবেন? এখন শেখ হাসিনার বিকল্প কে আছে দেখান।’
আর এই বক্তব্যকে বিশ্বাসঘাতকতার সামিল বলেছে, বিএনপি নেতৃবৃন্দ। আর এই সব কারণেই কে. এম ওবায়দুর রহমান কিংবা আবদুল মান্নান ভুঞার ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে মির্জা ফকরুলকে।
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।