নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৩৫ পিএম, ২০ জানুয়ারী, ২০২১
‘নিজেরা লুটপাটের দল বলেই বিএনপি সবকিছুতে লুটপাট দেখে’বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এমজি কিবরিয়া চৌধুরীসহ রফিক উল্যা সিকদার, কাজী আনোয়ার কামাল, মাসুদুর রহমান, নীতিশ সাহা সভায় করোনাকালে সংবাদপত্র শিল্পরক্ষার নানদিক নিয়ে প্রাণবন্ত আলোচনায় অংশ নেন।
বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্য ‘সরকার ভ্যাকসিন নিয়ে লুটপাট করছে’ এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি মনে করেছিল, এই করোনা মহামারি সরকার সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে পারবে না। তারা প্রথম থেকেই ধারণা এমনকি হয়তো প্রার্থনাও করেছিল যে, এই মহামারিতে যেন ব্যাপক লোকক্ষয় হয় এবং দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিন্তু সেটি হয়নি। তাতে তারা প্রচন্ড হতাশ হয়ে ভুল সংবাদের প্রেক্ষিতে গুজব রটিয়েছিল, সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন আসছে না।’
কিন্তু ভ্যাকসিন সঠিক সময়েই আসছে, এমনকি ভারত সরকারের উপহার হিসেবে আমরা বিনামূল্যে ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাচ্ছি উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপি যখন সবকিছুতেই ব্যর্থ হচ্ছে, তখন ভ্যাকসিন নিয়ে লুটপাটের কাল্পনিক কথা বলছে। প্রকৃতপক্ষে লুটপাটের দল তো বিএনপি, সেজন্য তারা সবকিছুতেই লুটপাট দেখার চেষ্টা করে।’
ভ্যাকসিন সরকার একটি নীতিমালার ভিত্তিতে প্রয়োগ করবে এবং যারা ফ্রন্টলাইন ফাইটার, এই করোনা মহামারির ক্ষেত্রে তারা নিশ্চয়ই প্রথমে ভ্যাকসিন পাওয়ার অধিকার রাখে, ব্যাখ্যা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে সরকার চিন্তাভাবনা করবে, যাদেরকে আগে দেয়া প্রয়োজন তাদেরকে আগে দেয়া হবে। সাংবাদিকরা এই করোনা মহামারির সময় অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে ফ্রন্ট লাইনার হিসেবে কাজ করেছে। আমি বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো।
‘তবে বিএনপি যদি আগে ভ্যাকসিন পেতে চায়, তাহলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করতে পারি, বিএনপিকে যেন আগে ভ্যাকসিন দেয়া হয়’ বলেন ড. হাছান মাহমুদ।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য ‘দেশে সরকার কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি কায়েম করেছে’ এর জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবকে বলবো, উনি যেই দল করেন সেই দলে যে কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি আছে, আগে সেটি নিয়ে একটু কথা বলুন। একজন শাস্তিপ্রাপ্ত কয়েদী আর আরেকজন শাস্তিপ্রাপ্ত পলাতক আসামী, সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপার থেকে যেটি বলে সেটিই হয় এবং সেভাবে তাদের দলে সিদ্ধান্ত হয়।’
‘কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি বিএনপিতেই আছে, আমাদের দলে নেই’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘আমাদের দলে কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি থাকলে কাদের মির্জা এতো কথা বলতে পারতেন না, কারণ বললে সে নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হতো, সেটি হয়নি। অথচ তাদের দলের মেজর হাফিজ তাদের একটু সমালোচনা করেছে, সেজন্য তাকে যে ভাষায় শো-কজ করা হয়েছে, সেই দলের মহাসচিবের এই রাজনীতি নিয়ে কথা বলার কোনো নৈতিক অধিকার আছে বলে আমি মনে করি না।’
মন্তব্য করুন
ডোনাল্ড লু বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চীন সফর ভারত যুক্তরাষ্ট্র
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বিএনপির আশা ভরসার কেন্দ্রস্থল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণ সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবে না- এমন বক্তব্যগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে বহুল প্রচারিত ছিল। বিএনপির সব নেতারা প্রকাশ্যেই এ কথা বলত।
বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন র্যাবের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানায় না তখন বিএনপি নেতারা উল্লাসে ফেটে পড়েছিলেন। তারা দলীয় কার্যালয়ে মিষ্টিমুখের ব্যবস্থাও করেছিলেন।
আবার ডোনাল্ড লু নির্বাচনের আগে যখন বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং ভিসা নীতি প্রয়োগ করেছিলেন তখন বিএনপি নেতাদের প্রকাশ্যে মার্কিন বন্দনা করতে দেখা গেছে। ২৮ অক্টোবরের আগ পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই মার্কিন দূতাবাসে বা মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের বাসভবনে বিএনপির নেতাদের আনাগোনা ছিল। তারা সেখানে চা চক্রে মিলিত হয়েছেন, নৈশভোজে মিলিত হয়েছেন এবং বিভিন্ন রকমের শলাপরামর্শ করেছেন।
পিটার ডি হাস গত বছরের ১০ অক্টোবর বিএনপি যখন সমাবেশ করতে পারেনি তখনও একতরফা বিবৃতি দিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি বিতর্কিত সংগঠন মায়ের ডাকের এক নেতার বাসায় গিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি বিএনপির প্রতি এক ধরনের সহানুভূতি জানিয়েছিলেন। এভাবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির উপর এক ধরনের প্রচ্ছন্ন সমর্থন এবং সহানুভূতি দেখিয়েছিল।
অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সহানুভূতি এবং পরোক্ষ সমর্থনের কারণেই বিএনপির আন্দোলনের পালে হাওয়া লেগেছিল। নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি চাঙ্গা ভাব তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করে। যদিও ২৮ অক্টোবরের পর এই ডোনাল্ড লু শর্তহীন সংলাপের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং এই আহ্বানের চিঠি নিয়ে পিটার ডি হাস তিনটি দলের নেতাদের কাছে গিয়েছিলেন এবং একটি সংলাপ আয়োজনের শেষ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেই সংলাপ আয়োজনে বিএনপি বা আওয়ামী লীগ কেউই সাড়া দেয়নি।
এখন নির্বাচন সমাপ্ত হয়েছে এবং ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর ১১ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলার পরও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া এবং নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছেন। ডোনাল্ড লু’র আগে আফরিন আক্তার নির্বাচনের পরে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং সেই সময় তিনি হোটেল ওয়েস্টিনে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তখন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং শামা ওবায়েদ আফরিন আক্তারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যদিও সেই সাক্ষাতের পর তারা কোনও কিছুই সাংবাদিকদেরকে জানাননি। কিন্তু এবার ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। আর এটি বিএনপির মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে।
বিএনপি মনে করছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদেরকে আর আগের মতো গুরুত্ব দিচ্ছেন না, পাত্তা দিচ্ছে না। বরং সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে বিএনপিকে এড়িয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। বিএনপি নেতারা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ, শামা ওবায়েদ, তাবিথ আউয়ালসহ যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এবং মার্কিন দূতাবাসে যাদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে তাদেরকে দুষছেন। তারা মনে করছেন যে, বিএনপির মধ্যেই সমস্যা রয়েছে। বিএনপির নেতারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পারেননি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিএনপির বক্তব্যগুলো তারা সঠিকভাবে ও যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারেননি। আর একারণেই ডোনাল্ড লু’র সফরের পর বিএনপির মধ্যে চলছে এক ধরনের হতাশা।
ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ রাজনীতি বিএনপি
মন্তব্য করুন
আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পর্যন্ত আওয়ামী লীগ দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী, দলের ভেতর সুবিধাবাদী, লুটেরা এবং দলের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। কিন্তু ২৩ জুনের পর আওয়ামী লীগের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ক্র্যাকডাউন হবে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী এবং দলের সুনাম নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করবে। আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগ এবং তার আদর্শিক জোট ১৪ দলের নেতাদের চীন সফরে হিড়িক পড়েছে। আওয়ামী লীগ এবং তার সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর এই চীন সফরকে ঘিরে কূটনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানামুখী আলাপ আলোচনা। ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই ১৪ দল এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের চীন সফরের ব্যাপারে দৃষ্টি রাখছেন। তবে তারা এই বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হচ্ছেন না। বিষয়টি তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় হিসেবেই মনে করছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বিএনপির আশা ভরসার কেন্দ্রস্থল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণ সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবে না- এমন বক্তব্যগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে বহুল প্রচারিত ছিল। বিএনপির সব নেতারা প্রকাশ্যেই এ কথা বলত।