নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৮ পিএম, ২০ জানুয়ারী, ২০২১
বিএনপিতে জামাতপন্থীদের অভ্যুত্থান ঘটেছে। ২০ দল অকার্যকর কেন, এবং বিএনপির দীর্ঘদিনের মিত্র জামাতকে সংগে নিয়ে বিএনপি কেন আন্দোলন করছেনা এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আছে কি নেই-তা খোলাসা করতে বলেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। আর এনিয়ে অনতিবিলম্বে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডাকতে বলা হয়েছে। বিএনপির জামাত বিরোধিরা এটাকে পরিকল্পিত এবং জামাতের প্ররোচনায় সংগঠিত ঘটনা বলে মনে করছে। দলের মহাসচিবের কাছে ২০ দলকে সক্রিয় করতে এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে যারা বার্তা দিয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন, ড: খন্দকার মোশারফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দিন।
২০১৮ সালের নির্বাচনের পর ২০ দলে টানা পোড়েন চলছে। আন্দালিব রহমান পার্থর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সহ বেশ কয়েকটি দল ২০ দল থেকে বেরিয়ে যায়। গত দুবছরে জোটের বৈঠক হয়েছে মাত্র ২টি। স্থানীয় সরকার নির্বাচন ২০ দলীয় জোটগত ভাবে হচ্ছে না। ফলে, অধিকাংশ পৌরসভায় বিএনপি এবং জামাতের প্রার্থীরা ভোটে প্রার্থী হচ্ছে। এতে লাভবান হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। সম্প্রতি জামাতের পক্ষ থেকে সরকার বিরোধি আন্দোলনের জন্য তিনদফা প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এই প্রস্তাবে আছে: ১. ঐক্যবদ্ধ ভাবে সরকার বিরোধি আন্দোলন গড়ে তোলা, ২. স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ ভাবে অংশ গ্রহন ৩. সরকার বিরোধি নূন্যতম কর্মসূচী গ্রহন। কিন্তু জামাতের এই লিখিত প্রস্তাবে সাড়া দেন নি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মির্জা ফখরুল, ২০ দল নয় বরং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সক্রিয় করতে চান। মির্জা ফখরুল মনে করেন, জামাতের সঙ্গে প্রকাশ্য ঐক্য বিএনপির গ্রহনযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। আর একারনেই, তিনি ২০ দলকে চাঙ্গা করতে অনাগ্রহী। সর্বশেষ ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে (যেটি গত বছরের জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হয়েছিল) তার সঙ্গে জামাত নেতার কথাকাটাকাটিও হয়েছিল। জামাত তাদের বৈঠকেও মূল্যায়ন করে স্থায়ী কমিটিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং নজরুল ইসলাম খান জামাত বিরোধি। এজন্যই বিএনপিকে জামাতের সঙ্গে রাখতে অন্য কৌশল নেয় যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত দলটি। তারা বিএনপির বিভিন্ন নেতাকে দিয়ে একটি দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। ঐ দোয়া মাহফিলের পর থেকেই ২০ দলকে পুনরুজ্জীবিত করার চাপ আসছে বিএনপির ভেতর থেকেই।
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।