নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
বেগম খালেদা জিয়া কঠোরভাবে নির্দেশ দিলেন যে, তার চিকিৎসা এবং জামিন বিষয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দ যেনো কোনও কথা না বলে। ভবিষ্যতে কথাবার্তা বলা হলে তাদের বিরুদ্ধে তিনি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। আজ দুপুরে বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খানকে টেলিফোন করে বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার খালেদা জিয়ার বরাত দিয়ে এ কথা জানান।
উল্লেখ্য যে, গতকাল বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য তার জামিনের শর্ত শিথিল করে তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হোক। এর আগেও বিএনপি নেতারা এধরনের কথাবার্তা বলেছেন এবং তখন বেগম খালেদা জিয়া একই রকম প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়ার জামিন সংক্রান্ত বিষয়টি নিষ্পত্তি করেছে আইন মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আইন মন্ত্রণালয় থেকে খালেদা জিয়ার যে, জামিনের আবেদন যেটি শামীম ইস্কান্দার করেছিলেন, সেটিতে খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবে এমন কোনও অনুরোধ করা হয় নি। অর্থাৎ তার জামিনের আবেদনে বিদেশে যাওয়ার প্রসঙ্গটি ছিলোই না।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়া শুধু জামিন চেয়েছেন, তিনি কখনো বিদেশে যাওয়ার জন্য আবেদন করেন নি। কাজেই তিনি যেভাবে আবেদন করেছিলেন সেভাবেই ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ অনুযায়ী তাকে জামিন দেয়া হয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করছেন যে, বিএনপি নেতারা মাঠ গরম করার জন্য এখন দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিচ্ছেন। আর এধরনের বক্তব্য বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়টিকে আরো জটিল করে তুলতে পারে এবং ভবিষ্যতে জামিন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করতে পারে। আর এ কারণেই বেগম খালেদা জিয়া এই ব্যাপারে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এর আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া নিয়ে একবার কথা বলেছিলেন। তখনও বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল, তার জামিন বা মুক্তি এ বিষয় নিয়ে আর যেনো কোনও কথা বলা না হয়। এরপর থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়ার বিষয় নিয়ে আর কোনও কথা বলেন নি।
গত কয়েক মাস ধরেই খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গটি নিয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দ আলোচনা করছেন না। এরপর তারা খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ মুক্তি, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ইত্যাদি নিয়ে কথা বলছেন। বেগম খালেদা জিয়া নিজেও এখন বিদেশ যেতে আগ্রহী নন। বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করছেন, বিশ্বে যে ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি, এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি সঙ্গত নয়। আর তাছাড়াও আগামী ২৫ মার্চ খালেদা জিয়ার বর্তমান জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। এরপর যে নতুন করে জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হবে সেখানে সরকারের সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে তার বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি উত্থাপন করা হতে পারে। তখন বিশ্বের করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হবে বলে বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করছেন। খালেদা জিয়া বিএনপির সব নেতাদের কাছে তার ভাই শামীম ইস্কান্দারের মাধ্যমে একটি কঠোর বার্তা দিয়েছেন যে, কোনও নেতাই যেনো তার মুক্তি, জামিন বা বিদেশ যাওয়ার বিষয় নিয়ে অপ্রাসঙ্গিক কথা না বলে।
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।