নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫৮ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
৫ম ধাপের (২৮ ফেব্রুয়ারি ) পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন সরগরম লক্ষীপুরের রায়পুর পৌরসভা। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই চড়াচ্ছে ভোটের উত্তাপ। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের বিরামহীন প্রচারণায় এখন উৎসব মূখর রায়পুর পৌরসভার নির্বাচনী এলাকা। পৌরবাসীর বিভিন্ন সমস্যার সমাধান আর উন্নয়নের আশ্বাস দিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে এখন ছুটছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। ভোটারদের কাছে টানতে দিচ্ছেন, নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। অবশ্য ভোটাররা বলছেন, দল কানা হয়ে নয়, যাকে দিয়ে এলাকার উন্নয়ন হবে, এমন সৎ, যোগ্য ও দক্ষ ব্যাক্তিদেরকেই এবার বেঁচে নিবেন তারা। এদিকে সরকার দলীয় প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচার কার্যে বাধা ও নেতা-কর্মীদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা অভিযোগ করেছেন বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এবিএম জিলানী। একই অভিযোগ রায়পুর নাগরিক ঐক্য ব্যানারে জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর মনির আহম্মেদেরও। অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বলছেন, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এমন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে নির্বাচনী মাঠের সুন্দর পরিবেশ নষ্টের মাধ্যমে এখন গোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানা যায়, আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারি অনুষ্ঠিতব্য রায়পুর পৌরসভা নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডের ১৩ টি কেন্দ্রে এই প্রথমবার ইভিএম-এর মাধ্যামে ২৩ হাজার ৬’শ ৩১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ১১ হাজার ৯শ’ ৯০ জন ও মহিলা ভোটার ১১ হাজার ৬শ’ ৪১ জন। এ নির্বাচনে মেয়র পদে ৬ জন, কাউন্সিলর পদে ৫০ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনে মেয়র পদের প্রার্থীরা হলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট (নৌকা), পৌর বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র এবিএম জিলানী (ধানের শীষ), রায়পুর নাগরিক ঐক্যের ব্যানারে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন জামায়াত সমর্থিত অধ্যাপক মনির আহম্মেদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামীলীগের বহিস্কৃত নেতা মোঃ নাছির উদ্দিন সগির (পানির জগ), স্বতন্ত্র প্রার্থী পৌর শ্রমিকলীগ নেতা মাসুদ উদ্দিন (নারিকেল গাছ) ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মাওলানা আব্দুল খালেক (হাতপাখা)। এদিকে সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে সবক’টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকলেও সব কয়টি ওয়ার্ডে নেই বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী।
এরই মধ্যে পৌর নির্বাচনকে ঘিরে পোষ্টারে পোষ্টারে ছেয়ে গেছে রায়পুর পৌর এলাকার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা। কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন আওয়ামীলীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ওঠান বৈঠক আর গণসংযোগের মাধ্যামে ভোটারদের কাছে টানতে দিচ্ছেন, নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। কেউ কেউ স্থানীয় বিভিন্ন সমস্যা নিরসনে প্রতিশ্রুতি পাশাপাশি ঘোষণা করছেন ইশতেহার। অনেকেই আবার বিগত দিনে দায়িত্বশীলদের ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দিয়ে ভোটারদেরকে ভোট প্রদানে সচেতন থাকার অনুরোধও জানাচ্ছেন। এবারের নির্বাচনে তরুণ প্রার্থীদের সংখ্যাই বেশি। প্রচার-প্রচারণায়ও প্রবীণদের চাইতে নবীনরা অনেক এগিয়ে রয়েছেন।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও পৌর আওয়ামীলীগের আহবায়ক কাজী জামশেদ করিব বাক্কিবিল্লাহ বলেন, নৌকাকে বিজয়ী করতে দ্বিধা-দ্বন্ধ ভুলে এখন এক প্লাটফর্মে এসে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তরুণ প্রার্থীকে পেয়ে কর্মী, সমর্থক ও ভোটাররাও উচ্ছসিত। সকল ভেদাভেদ ভুলে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে বিরামহীন প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন দলের নেতাকর্মীরা। নান্দনিক পৌরসভা বিনির্মাণে ও উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার মনোনীত নৌকার প্রার্থীকের প্রাথীকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোঃ গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট বলেন, নৌকা হচ্ছে উন্নয়নের প্রতীক। উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে নৌকার কোন বিকল্প নেই। আমি নেতা নই, জনগণের সেবক হতে চাই। জনগন ২৮ ফেব্রæয়ারী পর্যন্ত আমার পাশে থাকলে, আমিও জনগনের সেবক হিসাবে সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থাকবো। ভোটারদের স্বত:স্ফুর্ত সাড়াই বলে দেয় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবারও তারা নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকেই বিপুল ভোটে জয়ী করবে, ইনশাআল্লাহ ।
এদিকে বিএনপিতে রয়েছে দলের অভ্যান্তরীণ কোন্দল। এতে খানিকটা কোণঠাসা অবস্থায় পড়েছেন বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী। দলীয় কোন্দলের কারণে যুবদল, ছাত্রদলসহ সহযোগী সংগঠনের একাংশ নিরব ভুমিকা পালন করায় এর প্রভাব পড়েছে নির্বাচনী কার্যে। এতে করে নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রমও চলছে অনেকটা ঢিমেতালে। এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক শোডাউন করে তারা কোনো ওয়ার্ডে কর্মী সমাবেশ করতে পারেননি। তবে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন ধানের শীষের প্রার্থীসহ দলের নেতাকর্মীরা।
ধানের শীষের প্রার্থী এবিএম জিলানী বলেন, নেতাকর্মীদের সাথে আমার কখনোই দূরত্ব ছিলনা। সাংগঠনিকভাবেও বিএনপি ও সহযোগি সংগঠন এখানে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী। রায়পুর উপজেলা ভোটের হিসেবে এটি বিএনপির দুর্গ বলে বিগত দিনেও প্রমাণিত হয়েছে এবং আগামীতেও ইনশাআল্লাহ হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে আমরা বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো।
এদিকে মোবাইল প্রতীকের প্রার্থী অধ্যাপক মনির আহম্মদ অভিযোগ বলেন, তার প্রচার কার্যে বাধা প্রদানসহ নেতাকর্মীদেরকে হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। এতে দিন দিন নির্বাচনী পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এঅবস্থায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে মোবাইল প্রতীকে মেয়র পদে তিনিই জয়লাভ করবে বলে আশাবাদী।
এষিয়ে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নাজিম উদ্দিন জানান, নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করতে কমিশনের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। কেউ আচরণ বিধি লঙ্ঘণ করলে তদন্ত করে নির্বাচনী আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য করুন
সুশীল ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বদিউল আলম মজুমদার আদিলুর রহমান খান
মন্তব্য করুন
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজা উপত্যকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও একমত বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার (১৫ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, “গাজায় শান্তি স্থাপন করার বিষয়টি আমরা আলোচনা করেছি। তিনি (ডোনাল্ড লু) বলেছেন, ইউএস অত্যন্ত টায়ারডলেসলি (অক্লান্তভাবে) কাজ করছে যাতে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তিনি আমাকে যেটুকু বলেছেন- ‘তারা আশাবাদী’।”
‘আমরা বলেছি, গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে, নিরীহ নারী ও শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে। ৩৫ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, তার মধ্যে ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু’, যোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এটি আসলে মেনে নেয়া যায় না। আমি বলেছি, টেলিভিশনে যখন এগুলো দেখি, তখন টেলিভিশন দেখা কন্টিনিউ করতে পারি না। সেখানে শান্তি স্থাপন করা দরকার। তিনিও একমত যে, সেখানে শান্তি স্থাপন করা দরকার। তিনি জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য টায়ারলেসলি কাজ করছেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক খুবই চমৎকার। আমাদের বহুমাত্রিক সহযোগিতার ক্ষেত্র রয়েছে। একইসাথে গত ৫৩ বছরের আমাদের অভিযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যে কারণে ডোনাল্ড লুকে ধন্যবাদ জানিয়েছি।’
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো সরকার গঠনের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। তিনি সম্পর্ককে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে যাওয়ার অভিপ্রায় প্রকাশ করেছেন। সেই অভিপ্রায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।’
‘আমাদের আলোচনা সেই লক্ষ্যেই হয়েছে। একক দেশ হিসেবে আমাদের রফতানির সবচেয়ে বড় গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী দেশও যুক্তরাষ্ট্র। আমি ডোনাল্ড লু’কে অনুরোধ জানিয়েছি, বাংলাদেশে ৪০টি আইটি ভিলেজ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেখানে যাতে যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগ বাড়ায়। যদিও কিছু বিনিয়োগ তারা এরইমধ্যে করেছে।’
হাসান মাহমুদ ডোনাল্ড লু ফিলিস্তিন গাজা
মন্তব্য করুন
রাজধানী ঢাকায় যেন ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বুধবার (১৫ মে) বনানীতে বিআরটিএর সদর কার্যালয়ে আয়োজিত সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্যাটারিচালিত কোনো গাড়ি (তিন চাকার) যেন ঢাকা সিটিতে না চলে। আমরা ২২টি মহাসড়কে নিষিদ্ধ করেছি। শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়, চলতে যেন না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। এর আগে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ঢাকার মধ্যে অটোরিকশা বন্ধে সম্মতি জানান।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ভয়াবহ ব্যাপার যখন রিকশাচালকরা দুই পা ওপরে উঠিয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালায়। অনেক প্রতিবন্ধী আছেন যারা চোখে কিছুটা কম দেখেন তারাও এই রিকশা নিয়ে নেমে পড়েন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, সিদ্ধান্তে আসা দরকার যে ঢাকায় ইজি বা অটোরিকশা চলবে না। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
সভায় বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানী ওবায়দুল কাদের অটোরিকশা
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফর করছেন। দু’দিনের সফরে প্রথম দিনে তিনি বাংলাদেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পিটার ডি হাসের বাসভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক ছিল একটি বড় ধরনের চমক। অতীতে দেখা গেছে, যে কোন মার্কিন প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করলেই একগুচ্ছ সুশীলের সঙ্গে বৈঠক করতেন। সেই সুশীলরা সকলেই পরিচিত ছিল। এর আগেও ডোনাল্ড লু, আফরিন আখতার বাংলাদেশ সফর করে যে সমস্ত সুশীলদের সাথে দেখা করেছিলেন এবার তাদেরকে এড়িয়ে গেছেন।
গত দুই বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে সমস্ত কর্মকর্তারা এসেছিলেন তারা বাংলাদেশের সুশীল সমাজের যে সমস্ত প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, বদিউল আলম মজুমদার, ড. স্বাধীন মালিক, ড. আসিফ নজরুল, পরিবেশ আন্দোলনের নেত্রী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মানবাধিকার কর্মী আদিলুর রহমান খান, তৃতীয় মাত্রার বিতর্কিত উপস্থাপক জিল্লুর রহমান, মতিউর রহমান, নুরুল কবিরের মত ব্যক্তিদেরকে। যারা সকলেই আওয়ামী বিরোধী এবং বিএনপি পন্থী হিসেবে পরিচিত। এদের কেউ কেউ স্বাধীনতাবিরোধীও বটে। এই সমস্ত বিরোধী পক্ষের সুশীলদেরকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বৈঠক করত এবং এই ধরনের বৈঠকগুলোর পরে সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকম বিষোদগার করা হত।
তবে এবার ডোনাল্ড লুর বৈঠকে এই সুশীলদের কাউকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ নীতিতে বড় পরিবর্তন বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। গতকালের বৈঠকে যে সমস্ত সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তাদের মধ্যে ছিলেন ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওম্যান সলিডারিটির নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার, মানবাধিকার কর্মী মহম্মদ নুর খান, চাকমা সার্কেলের রানী ও মানবাধিকার কর্মী ইয়ানিয়ান, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সংগঠক সোয়ানুর রহমান, তরুণ সংগঠক মাহমুদা আক্তার মনীষা।
এটি সম্পূর্ণ নতুন একটি সুশীল প্রতিনিধি দল যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সুশীল পরিবর্তন কেন এ নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বদিউল আলম মজুমদার, আদিলুর রহমান খান ও জিল্লুর রহমানের মতো ব্যক্তিদের সঙ্গে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার না হওয়াটাকে অনেকে বিস্ময়কর মনে করছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ নীতিতে তার অবস্থান পাল্টেছে। বাংলাদেশ কৌশল পরিবর্তন করার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে মার্কিন নীতিও পরিবর্তন হয়েছে। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। বাংলাদেশের বাজারে যেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান থাকে সে জন্য দেশটির তৎপরতা লক্ষণীয়। ডোনাল্ড লু সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বৈঠকেও মার্কিন কম্পানিগুলোর অর্থছাড় বিষয়েও আলোচনা করেছেন।
সবকিছু মিলিয়ে নতুন সরকারের সঙ্গে নতুনভাবে কাজ করতে আগ্রহী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর এ কারনেই এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগে যারা তাদের মিত্র ছিল সেই মিত্রদেরকে পরিবর্তন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন নতুন সুশীলদের সঙ্গে সম্পর্ক করছেন। যারা এতদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে গলাবাজি করত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংরক্ষণই যাদের দায়িত্ব ছিল তারা এখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অপাঙ্ক্তেয় হয়ে গেছে। আর এটি বোধহয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শিক্ষা। যুক্তরাষ্ট্রের যারা বন্ধু হয় তাদের শত্রুর দরকার হয়না।
ডোনাল্ড লু সুশীল সমাজ বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশে সুশীল সমাজের কিছু প্রতিনিধি আছেন যাদেরকে মনে করা হয় তারা মার্কিনপন্থী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে তারা গর্ব অনুভব করেন। কথায় কথায় মার্কিন দূতাবাসে যান। সেখানে প্রাতঃরাশ, মধ্যাহ্নভোজ, নৈশভোজে মিলিত হন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যা বলে তারা তার চেয়ে তিন ধাপ গলা উঁচিয়ে কথা বলেন। বাংলাদেশ নিয়ে তাদের কোন ভালবাসা নেই, প্রেম নেই, আগ্রহ নাই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এবং নীতি বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করাই যেন তাদের প্রধান লক্ষ্য। এই সমস্ত সুশীলদেরকে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রোফোন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফর করছেন। দু’দিনের সফরে প্রথম দিনে তিনি বাংলাদেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পিটার ডি হাসের বাসভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক ছিল একটি বড় ধরনের চমক। অতীতে দেখা গেছে, যে কোন মার্কিন প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করলেই একগুচ্ছ সুশীলের সঙ্গে বৈঠক করতেন। সেই সুশীলরা সকলেই পরিচিত ছিল। এর আগেও ডোনাল্ড লু, আফরিন আখতার বাংলাদেশ সফর করে যে সমস্ত সুশীলদের সাথে দেখা করেছিলেন এবার তাদেরকে এড়িয়ে গেছেন।