নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৮ মার্চ, ২০২১
‘প্রতিনায়ক সিরাজুল আলম খান’ গ্রন্থটির লেখক মহিউদ্দিন আহমেদ। বইটি সদ্য প্রথমা প্রকাশন প্রকাশ করেছে। বইটির ৩৫৩ নং পৃষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার পর জাসদের মূল্যায়ন তুলে ধরা হয়েছে। পাঠকের জন্য প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় ঐ মূল্যায়নের কিছু অংশ উদ্বৃত করা হলো।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের রাজনৈতিক পালাবদল নিয়ে জাসদের ভেতরে আলাপ হয়েছিল। দলের মূল্যায়ন ছিল, এর ফলে ভারত-সোভিয়েত প্রভাব থেকে দেশ কিছুটা মুক্ত হবে। তবে তাতে করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বাড়বে। পঁচাত্তরের অক্টোবরে প্রকাশিত জাসদের একটি দলিলে এ তথ্য উঠে এসেছে। এখানে প্রাসঙ্গিক অংশটুকু উদ্বৃত করা হলো:
শেখ মুজিবের হত্যার মধ্য দিয়ে খন্দকার মোশতাক আহমদের নেতৃত্বে বর্তমানে বাংলাদেশে যে সরকার গঠিত হয়েছে, তার দ্বারা বাংলাদেশের রাষ্ট্রের শ্রেণি চরিত্রের কোনোই পরিবর্তন সাধিত হয়নি। শেখ মুজিব এবং খন্দকার মোশতাক আহমেদ-দুজনই বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়াশীল বুর্জোয়া শ্রেণির প্রতিনিধি। মিলিটারি, পুলিশ প্রশাসন, সরকারি আমলা, কর্মচারীদের মধ্যে মুজিব ও তাঁর পরিবারের চূড়ান্ত ব্যক্তিগত স্বেচ্ছাচারী কার্যকলাপের জন্য যে চরম মুজিববিরোধী মানসিকতা গড়ে উঠেছিল, তারই পরিণতিতে খন্দকার মোশতাক আহমদকে সামনে রেখে কার্যত সামরিক বাহিনী শেখ মুজিবকে অপসারণ করে রাষ্ট্রক্ষমতা করায়ত্ত করেছে। এর দ্বারা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জাতীয় বুর্জোয়া বা প্রতিক্রিয়াশীল পুঁজিবাদী চরিত্রের কোনো পরিবর্তন হয়নি। প্রেসিডেনশিয়াল শাসন পদ্ধতি চালু করার মারফত শেখ মুজিব কর্তৃক সর্বময় ক্ষমতা করায়ত্ত করার ক্ষেত্রে সংশোধনবাদী সোভিয়েত এবং ভারতের পুরোপুরি সাহায্য ও সমর্থনের ফলে শেখ মুজিব যতটুকু পরিমাণে সোভিয়েত ও ভারতের শাসকগোষ্ঠীর চাপের কাছে আবদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন, এই পরিবর্তনের ফলে বৈদেশিক ক্ষেত্রে তাঁর হাত থেকে বাংলাদেশ খানিকটা মুক্ত হবে এবং ততটুকু অর্থে বাংলাদেশে পশ্চিমা, বিশেষ করে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের অনুপ্রবেশ সহজতর হবে।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:১৫ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:১২ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:০৭ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিতে বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক অভাবনীয়, অনন্য এবং যুগান্তকারী একটি মডেল। শিশু স্বাস্থ্য, মাতৃ স্বাস্থ্য এবং কিশোরীদের স্বাস্থ্য পরিসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এটি একটি অসাধারণ উদ্যোগ। নবজাতকের মৃত্যু, মাতৃ মৃত্যু কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অনুসরণ শুরু করেছে। গত বছর ১৭ মে কমিউনিটি ক্লিনিক ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিসিয়েটিভ’ হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়। ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ সারা বিশ্বের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যাশী জনগণের জন্য ‘আলোক বর্তিকা’।
আজকে আমরা ১৭ মে নিয়ে কথা বলছি। যেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। আবার গত বছর এই দিনে তাঁর চিন্তা প্রসূত কমিউনিটি ক্লিনিককে জাতিসংঘ ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আজকে আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছি, উন্নয়নশীল বাংলাদেশের কথা বলছি, যে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি, একদিন উন্নত বাংলাদেশ হব বলে স্বপ্ন দেখছি এই সবকিছু শেখ হাসিনার স্বপ্ন, শেখ হাসিনার ইনিশিয়েটিভ। বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৭৮১ সালে পলাশি যুদ্ধে ইতিহাসের ঘৃণিত সেনাপতি মির্জাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাব সিরাজ উদ্দৌলার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ২০০ বছরের গোলামী আমাদের ললাটে এসেছিল। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হলেও বাঙালী এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা পায়নি। যার পটভূমিতে বীরদর্পে আবির্ভূত হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ থেকে ৭৫’ বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে স্বাধীনতার লাল পতাকা উড়েছিল বাঙালী আশায় বুক বেধেছিল।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বিয়োগান্তের ঘটনায় জাতি ছিল দিক নির্দেশনাহীন। নারকীয় এই ঘটনায় জনগণ হয়ে পড়েন দিশেহারা। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করার কোন শক্তি সাহস ছিল না। দলের অনেক বড় বড় নেতাও ছিলেন কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ধানমন্ডির ৩২ বাড়ি ছিল কবরের নীরবতা। সমগ্র জাতি তখন অন্ধকারে। সামরিক বুটে পিষ্ঠ গণতন্ত্র। নির্বাসনে সংবিধান আর মানুষের মৌলিক অধিকার। বাক স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না। এমনকি বঙ্গবন্ধু নাম উচ্চারণ ছিল নিষিদ্ধ।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের মৌলিক চরিত্রকেই বদলে ফেলা হয়। বিশেষ করে পাকিস্তানি ধারায় সামরিক শাসনের সংস্কৃতির প্রবর্তন ঘটে দেশে। সাম্প্রদায়িকতা ফিরে আসে রাজনীতি, প্রশাসন, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে। একের পর এক স্বপ্নভঙ্গের ঘটনা ঘটতে থাকে দেশে। বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ঘোর অমানিশার অন্ধকার। ঠিক এমন প্রতিকূল সময় ১৯৮১ সালের ১৭ মে সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর রক্তস্নাত মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন বাঙালির মুক্তির মহানায়কের যোগ্য উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনা।