নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০১ পিএম, ১৭ মার্চ, ২০২১
সদ্য প্রয়াত ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। কিন্তু রাজনীতিবিদদের চেয়ে তিনি আলোচিত ছিলেন গবেষণাধর্মী রাজনৈতিক লেখনীর জন্য। তার প্রত্যেকটি গ্রন্থ বাংলাদেশের রাজনীতির একটি করে অনন্য দলিল বলে বিবেচিত হয়। একাধিক গ্রন্থের রচয়িতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ তাঁর গ্রন্থে পরিবেশিত তথ্যের ব্যাপারে ছিলেন সৎ। এবং এজন্যই তিনি প্রশংসিত ছিলেন। রাজনীতিতে তিনি যত কথাই বলুক না কেন, বই লেখার সময় তিনি নির্মোহ থাকতেন এবং সত্য অন্বেষণের চেষ্টা করতেন। তার একটি অন্যতম আলোচিত গ্রন্থের নাম হলো ‘বাংলাদেশ: এ স্টাডি অফ দ্য ডেমোক্রেটিক রেজিমস’ ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল) থেকে প্রকাশিত এই গ্রন্থটিতে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ স্বীকার করেছেন বেগম খালেদা জিয়ার চেয়ে শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক বেশি সাহসী ছিলেন। এই বইয়ের ৪৮ এবং ৪৯ পৃষ্ঠায় তিনি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরের পরিস্থিতি বর্ণনা করেছিলেন এভাবে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ তাঁর গ্রন্থে বলেন যে, নতুন সরকার এমন বেশ কিছু সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছিল যেটি পূর্বের বেগম খালেদা জিয়ার সরকার নিতে ব্যর্থ হয়েছিল।
গ্রন্থে তিনি বলেছিলেন, শেখ হাসিনা তার দায়িত্ব গ্রহণের ১০০ দিনের মধ্যেই রুলস অব বিজনেস পরিবর্তন করেন। ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত ক্যাবিনেট মিটিংয়ে মন্ত্রীদেরকে মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেন। এর ফলে সরকার সংসদের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য হয়। আগে এই মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা ছিল সচিবদের হাতে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ তার এই গ্রন্থে আরো বলেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী সংসদের কার্যপ্রণালি বিধি সংশোধন করেন। সংশোধন করে পার্লামেন্টের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোতে যেখানে মন্ত্রীরা প্রধান থাকতেন তা পরিবর্তন করে এমপিদের স্থায়ী কমিটির প্রধানের দায়িত্ব দেন।
যার ফলে প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা সংসদের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য হন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব চালু করেন, যার মাধ্যমে তিনি পার্লামেন্টে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেন। বিরোধী দলের কাছে প্রধানমন্ত্রীকে আরো বেশি জবাবদিহিতার পটভূমি তৈরি করেন শেখ হাসিনা। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ তার গ্রন্থে এটাও বলেছেন যে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম ছয় মাসের মধ্যেই অসাধারণ কিছু সাফল্য অর্জন করেন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ তার গ্রন্থে লিখেছেন যে, ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে গঙ্গার পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে ৩০ বছরের যে পানি নিয়ে দ্বন্দ্ব, তার অবসান ঘটে। আরেকটি সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল পার্বত্য শান্তিচুক্তি। ২ ডিসেম্বর, ১৯৯৭ সালে এটি স্বাক্ষর করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার। এর ফলে পার্বত্য এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা হওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদিও বিরোধী দল এই দুটি চুক্তির সমালোচনা করেছে কিন্তু দেশে-বিদেশে এই চুক্তি একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ আওয়ামী লীগের শাসনকালকে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেন যে, সরকার কৃষির দিকে নজর দেয় এবং চার বছর বাম্পার ফলন হয়। বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেন শেখ হাসিনা।
ঐ গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, সরকারের উদ্যোগেই হোক আর আবহাওয়ার কারণেই হোক, বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন ২৮ মিলিয়ন টনে পৌঁছে যায়। যা বাংলাদেশকে এক স্বস্তিদায়ক অবস্থাযনে নিয়ে গেছে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের ঐ গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, বিরোধী দলের সমালোচনা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৪ ভাগে উন্নীত করে, যা অত্যন্ত আশাপ্রদ এবং মুদ্রাস্ফীতির হারও তিনি কমিয়ে আনেন। আর এই সমস্ত সাফল্যের কারণেই আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে একটি শক্ত ভিত দিতে সক্ষম হয়।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।