ইনসাইড বাংলাদেশ

দেখে নিন প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পূর্ণ বিবরণী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:১৮ পিএম, ১৩ এপ্রিল, ২০২১


Thumbnail

বাংলা নববর্ষ-১৪২৮ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তিনি এই ভাষণ দেন। 

শেখ হাসিনার পূর্ণাঙ্গ ভাষণটি নিচে তুলে ধরা হলো- 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। প্রিয় দেশবাসী, আসসালামু আলাইকুম। দেশ-বিদেশে যে যেখানেই আছেন  সবাইকে জানাই ১৪২৮ বঙ্গাব্দের আন্তরিক শুভেচ্ছা। শুভ নববর্ষ। আজ আবাহনের দিন। ‘‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো/মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা” - কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী এই গান গেয়ে আজ আমরা আবাহন করবো নতুন বছরকে। একইসঙ্গে শুরু হয়েছে মুসলমানদের পবিত্র সিয়াম সাধনার মাস - মাহে রমজান। আমি সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে পবিত্র মাহে রমজানের মোবারকবাদ জানাচ্ছি।
 
নতুন বছরের শুভক্ষণে আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি জাতীয় চার নেতার প্রতি। স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহিদ এবং ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনকে। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাকে।
 
আমি স্মরণ করছি ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের কালরাতে ঘাতকদের হাতে নিহত আমার মা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তিন ভাই- মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল ও দশ বছরের ছোট্ট শেখ রাসেলকে- কামাল ও জামালের নবপরিণীতা বধূ- সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, আমার চাচা মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসেরসহ সেই রাতের সকল শহিদকে।

প্রিয় দেশবাসী, সৃষ্টির অমোঘ নিয়মে সময় চলে যায়। করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যেই আমরা এক বছরের অধিক সময় পার করলাম। গত বছর মার্চের প্রথম সপ্তাহের দিকে আমাদের দেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়েছিল। নানা আশঙ্কা আর আতঙ্ক গ্রাস করেছিল আমাদের। সেসব মোকাবিলা করেই আমাদের টিকে থাকতে হয়েছে। এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের থাবায় আমরা হারিয়েছি আমাদের অনেক প্রিয়জনকে, আপনজনকে। আমি সকলের রুহের মাগরিফরাত এবং আত্মার শান্তি কামনা করছি। স্বজনহারা পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
প্রিয় দেশবাসী, পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ বাঙালির সর্বজনীন উৎসব। আবহমানকাল ধরে বাংলার গ্রাম-গঞ্জে, আনাচে-কানাচে এই উৎসব পালিত হয়ে আসছে। গ্রামীণ মেলা, হালখাতা, বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার আয়োজন ছিল বর্ষবরণের মূল অনুসঙ্গ। 

ব্যবসায়ীরা আগের বছরের দেনা-পাওনা আদায়ের জন্য আয়োজন করতেন হালখাতা উৎসবের। গ্রামীণ পরিবারগুলো মেলা থেকে সারা বছরের জন্য প্রয়োজনীয় তৈজষপত্র কিনে রাখতেন। গৃহস্থ বাড়িতে রান্না হতো সাধ্যমত উন্নতমানের খাবারের। 

১৯৬০’র দশকের শেষভাগে ঢাকায় নাগরিক পর্যায়ে ছায়ানটের উদ্যোগে সীমিত আকারে বর্ষবরণ শুরু হয়। আমাদের মহান স্বাধীনতার পর ধীরে ধীরে এই উৎসব নাগরিক জীবনে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। ১৯৮০’র দশকে পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বাঙালির অসাম্প্রদায়িক এবং গণতান্ত্রিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটতে থাকে। মূলত আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনসমূহের কর্মী-সমর্থকদের অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলেই আজকের এই অবস্থান। কালক্রমে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান এখন শুধু আনন্দ-উল্লাসের উৎসব নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতির একটি শক্তিশালী ধারক-বাহক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। 

পয়লা বৈশাখ আমাদের সকল সঙ্কীর্ণতা, কুপমণ্ডুকতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা গড়তে উদ্বুদ্ধ করে। আমাদের মনের ভিতরের সকল ক্লেদ, জীর্ণতা দূর করে আমাদের নতুন উদ্যোমে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয়। আমরা যে বাঙালি, বিশ্বের বুকে এক গর্বিত জাতি, পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণে আমাদের মধ্যে এই স্বাজাত্যবোধ এবং বাঙালিয়ানা নতুন করে প্রাণ পায়, উজ্জীবিত হয়। 

আজ শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের যে প্রান্তেই বাঙালি জনগোষ্ঠি বসবাস করেন, সেখানেই বাঙালি’র হাজার বছরের লোক-সংস্কৃতির বিস্তার ঘটছে বর্ষবরণসহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। আর পৃথিবী জুড়ে তৈরি হচ্ছে বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে অন্য সংস্কৃতির সেতুবন্ধ।

গত বছরের মতো এ বছরও আমরা বাইরে কোনো অনুষ্ঠান করতে পারছিনে। কারণ, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ নতুন করে আঘাত হেনেছে সারা দেশে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের করোনাভাইরাস আরও মরণঘাতী হয়ে আভির্ভূত হয়েছে। পয়লা বৈশাখের আনন্দ তাই গত বছরের মতো এবারও ঘরে বসেই উপভোগ করবো আমরা। টেলিভিশন চ্যানেলসহ নানা ডিজিটাল মাধ্যমে অনুষ্ঠানমালা প্রচারিত হবে। সে সব অনুষ্ঠান উপভোগ ছাড়াও আমরা নিজেরাও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘরোয়া পরিবেশে আনন্দ উপভোগ করতে পারি। 

অতীতের সকল জঞ্জাল-গ্লানি ধুয়ে-মুছে আমরা নিজেদের পরিশুদ্ধ করবো। দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে যাবো সামনের দিকে। গড়বো আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যত- এই হোক এবারের নতুন বছরের শপথ। কবিগুরুর ভাষায় আবারও বলতে চাই: 

নিশি অবসান, ওই পুরাতন
বর্ষ হলো গত
আমি আজ ধূলিতলে এ জীর্ণ জীবন
করিলাম নত।
বন্ধু হও, শত্র হও, যেখানে যে কেহ রও
ক্ষমা করা আজিকার মতো
পুরাতনের বছরের সাথে 
পুরাতন অপরাধ যতো।

প্রিয় দেশবাসী, গত বছর করোনাভাইরাস আঘাত হানার পর আমাদের নানাবিধ বিরূপ পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়েছে। এই মহামারি প্রতিরোধে যেহেতু মানুষের সঙ্গ-নিরোধ অন্যতম উপায়, সে জন্য আমাদের এমন কিছু পদক্ষেপ করতে হয়েছে যারফলে মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর প্রভাব পড়েছে। 

গত সপ্তাহে দ্বিতীয় ঢেউ প্রবল আকার ধারণ করলে মানুষের চলাচলের উপর আমাদের কিছু কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হয়। আপনারা দেখেছেন, কোনোভাবেই সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না। জনস্থাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে তাই আমাদের আরও কিছু কঠোর ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। আমি জানি এরফলে অনেকেরই জীবন-জীবিকায় অসুবিধা হবে। কিন্তু আমাদের সকলকেই মনে রাখতে হবে - মানুষের জীবন সর্বাগ্রে। বেঁচে থাকলে আবার সব কিছু গুছিয়ে নিতে পারবো। 

গত বছর আমরা একটানা ৬২ দিন সাধারণ ছুটি বলবৎ করেছিলাম। আমরা এখনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিতে পারিনি। বিদেশের সঙ্গে চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। এই অবস্থা শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বের যেখানেই এই মরণঘাতী ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে, সেখানেই এ ধরনের ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। 

মানুষের জীবন রক্ষার পাশাপাশি আমাদের অর্থনীতি, মানুষের জীবন-জীবিকা যাতে সম্পূর্ণরূপে ভেঙে না পড়ে সেদিকে আমরা কঠোর দৃষ্টি রাখছি। সকলের সহযোগিতায় আমরা বেশ কিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছিলাম যারফলে গত বছর করোনাভাইরাস মহামারিজনিত প্রভাব আমরা সফলভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি।

করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনীতির উপর সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় গত বছর আমরা চারটি মূল কার্যক্রম নির্ধারণ করেছিলাম। চারটি কার্যক্রম হচ্ছে:
(১) সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি করা: সরকরি ব্যয়ের ক্ষেত্রে ‘কর্মসৃজনকেই’ প্রাধান্য দেওয়া; 
(২) আর্থিক সহায়তার প্যাকেজ প্রণয়ন: অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবিত করা, শ্রমিক-কর্মচারীদের কাজে বহাল রাখা এবং উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অক্ষুণ্ন রাখা;
(৩) সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি: দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী জনগণ, দিনমজুর এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত জনসাধারণের মৌলিক চাহিদা পূরণে বিদ্যমান সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি; 
(৪) মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করা: অর্থনীতির বিরূপ প্রভাব উত্তরণে মুদ্রা সরবরাহ এমনভাবে বৃদ্ধি করা যেন মুদ্রাস্ফীতি না ঘটে।
এই চার মূলনীতির ভিত্তিতে আমাদের কার্যক্রম এখনও অব্যাহত রয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৩ কোটি টাকার ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। কলকারখানায় যাতে উৎপাদন ব্যাহত না হয় সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা দিন মজুর, পরিবহন শ্রমিক, হকার, রিক্সাওয়ালা, দোকান কর্মচারী, স্কুল শিক্ষক, মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জিন, অন্যান্য ধর্মের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সেবাদানকারী, সাংবাদিকসহ নিম্নআয়ের নানা পেশার মানুষকে সহায়তা দিয়েছি। প্রায় আড়াই কোটি মানুষকে বিভিন্ন সরকারি সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে।

আপনাদের শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। সরকার সব সময় আপনাদের পাশে রয়েছে। দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানার পর আমি দরিদ্র-নিম্নবিত্ত মানুষদের সহায়তার জন্য কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি। আমরা ইতোমধ্যে পল্লী অঞ্চলে কর্মসৃজনের জন্য ৮০৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং পবিত্র রমজান ও আসছে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৬৭২ কোটিরও বেশি টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। এর দ্বারা দেশের প্রায় ১ কোটি ২৪ লাখ ৪২ হাজার নি¤œবিত্ত পরিবার উপকৃত হবেন। গত বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে ভিজিএফ, টেস্ট রিলিফসহ বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। 

প্রিয় দেশবাসী, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ইতোমধ্যেই বিজ্ঞানীরা বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছেন। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। আমাদের সৌভাগ্য টিকা উৎপাদনের শুরুতেই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টিকার ডোজ আমরা নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। ইতোমধ্যেই ৫৬ লাখের বেশি মানুষকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। যারা প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে দেশের সকলকে টিকার আওতায় নিয়ে আসবো। আমাদের সে প্রস্তুতি রয়েছে। তবে টিকা দিলেই একজন সম্পূর্ণভাবে সুরক্ষিত হবেন এমন নিশ্চয়তা নেই বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। কাজেই টিকা নেওয়ার পরও আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

ঢাকাসহ সারা দেশের প্রতিটি জেলায় করোনাভাইরাস রোগীর চিকিৎসা সুবিধার আওতা আরও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত সরকারি হাসপাতাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিদ্যমান আই.সি.ইউ. সুবিধা আরও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। 

তবে আমাদের সবাইকে সাবধান হতে হবে। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব আমাদের নিজের, পরিবারের সদস্যদের এবং প্রতিবেশির সুরক্ষা প্রদানের। কাজেই ভিড় এড়িয়ে চলুন। বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করুন। ঘরে ফিরে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে গরম পানির ভাপ নিন। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকার ইতোমধ্যে ১৮-দফা নির্দেশনা জারি করেছে। আমরা যদি সকলে করোনাভাইরাস মোকাবিলার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, অবশ্যই এই মহামারিকে আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হবো, ইনশাআল্লাহ। 

প্রিয় দেশবাসী, যুগে যুগে মহামারি আসে, আসে নানা ঝড়-ঝঞ্ঝা, দুর্যোগ-দুর্বিপাক। এসব মোকাবিলা করেই মানবজাতিকে টিকে থাকতে হয়। জীবনের চলার পথ মসৃণ নয়। তবে পথ যত কঠিনই হোক, আমাদের তা জয় করে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় তাই বলতে চাই:
আমরা চলিব পশ্চাতে ফেলি’ পচা অতীত
গিরি গুহা ছাড়ি’ খোলা প্রান্তরে গাহিব গীত।
সৃজিব জগৎ বিচিত্রতর বীর্যবান
তাজা জীবন্ত সে নব সৃষ্টি শ্রম-মহান।

বাঙালি বীরের জাতি। নানা প্রতিকূলতা জয় করেই আমরা টিকে আছি। করোনাভাইরাসের এই মহামারিও আমরা ইনশাআল্লাহ মোকাবিলা করবো। নতুন বছরে মহান আল্লাহর দরবারে তাই প্রার্থনা, বিশ্বকে এই মহামারির হাত থেকে রক্ষা করুন। 

আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। সবাইকে আবারও নতুন বছরের শুভেচ্ছা। সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলের সহায় হোন। খোদা হাফেজ। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কাঁচা মরিচের কেজি দেড়শ টাকা ছাড়িয়েছে

প্রকাশ: ১০:০৬ এএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

কোরবানির ঈদের মাসখানেক বাকি। ইতিমধ্যে বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম প্রতি কেজি ৮০-১০০ থেকে বেড়ে ১৫০-১৬০ টাকা হয়েছে। গত কোরবানির সময়ে ঢাকায় কাঁচা মরিচের কেজি ৭০০ টাকায় উঠেছিল।

বছরের এই সময়ে দেশে কাঁচা মরিচের কিছুটা সংকট থাকে। তাতে আমদানি করে প্রয়োজন মেটাতে হয়। এবার দাম বাড়তে থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। বাজারে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম উচ্চ মূল্যে স্থিতিশীল।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃষ্টির কারণে মরিচের সরবরাহ কমেছে। এতে বাড়ছে দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা বেড়েছে। এদিকে বাজারে গ্রীষ্মকালীন মরিচের গাছ এখন শুকিয়ে এসেছে। ফলনও আগের তুলনায় কমে এসেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সঙ্গনিরোধ শাখা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশের বাইরে থেকে কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি (আইপি) দেওয়া হয়নি। তবে বাজার পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।


কাঁচা মরিচ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দেশে দরিদ্র মানুষের খাবারের ব্যয় বেড়েছে ৫৮ শতাংশ

প্রকাশ: ০৯:৪৯ এএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েই চলছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) চলতি মাসে বাংলাদেশের খাদ্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, খানা জরিপ অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের খাবার কেনার খরচ ছিল প্রতি মাসে মাথাপিছু হাজার ৮৫১ টাকা। গত দুই বছরে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে মাথাপিছু খাবার কেনার খরচ বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ৯২৩ টাকা; যা দুই বছর আগের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বেশি।

সরকারি বেসরকারি সব হিসাব বলছে, গত দুই বছরে দেশের মানুষের আয় বাড়লেও এই সময়ে ধারাবাহিকভাবে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের আশপাশে থেকেছে। সামগ্রিকভাবে দেশের প্রধান খাদ্যগুলোর দাম বেড়েছে। বিশেষ করে চাল, আটা আমিষের প্রধান উৎস মুরগির মাংস, ডিম, মাছ সবজির দাম বাড়তির দিকে। বেড়েছে আলু, পেঁয়াজ, আদা, কাঁচা মরিচ ফলের দামও।

ডব্লিউএফপি গত মাসে (এপ্রিল) বাংলাদেশের খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রভাব নিয়ে আরেকটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের ১৭ শতাংশ মানুষ খাদ্যঝুঁকিতে ছিল; যা এর আগের মাসের তুলনায় শতাংশ বেড়েছে। দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। আর ৪৩ শতাংশ মানুষ বাকিতে খাবার কিনছে। ২২ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্য চিকিৎসা বাবদ খরচ কমিয়েছে। আর ১৩ শতাংশ মানুষ সঞ্চয় ভাঙছে। খাদ্যঝুঁকিতে থাকা মাত্র ২১ শতাংশ মানুষ বাইরে থেকে সহায়তা পাচ্ছে।

ডব্লিউএফপির চলতি মাসের বাজার তদারকি প্রতিবেদন বলছে, মাথাপিছু খাদ্যের দাম দেশের একেক বিভাগে একেকভাবে বেড়েছে। চট্টগ্রাম, ঢাকা সিলেটে জাতীয় গড়ের চেয়ে বেশি বেড়েছে। রংপুর, রাজশাহী ময়মনসিংহে তুলনামূলকভাবে কম বেড়েছে। বাকি এলাকাগুলোতে দাম অপরিবর্তিত আছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে ছয় মাস ধরে গমের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে। ফলে বাংলাদেশেও গমের আমদানি বেড়েছে। তবে আমদানির তুলনায় গমের দাম কমেনি। মার্চে আটার খুচরা মূল্য প্রতি কেজি প্রায় ৫৭ টাকায় পৌঁছেছে; যা এর আগের মাসের তুলনায় সামান্য বেশি। দেশে গমের চাহিদার ৮৫ শতাংশ আমদানি করা হয়।

টানা চতুর্থ মাসের মতো ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে দেশে চালের দাম বেড়েছে। আমনে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে শতাংশ বেশি উৎপাদন হওয়া সত্ত্বেও দাম বেড়েছে। উৎপাদন বেশি হওয়া সত্ত্বেও চালের দাম বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে চালকল মালিকেরা উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করেছেন।

ডব্লিউএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে দেশে সরকারি খাদ্য মজুত কমতির দিকে ছিল। সাধারণত বছরের এই সময়ে খাদ্যের মজুত কম থাকে। কিন্তু এবার মজুতের পরিমাণ আগের থেকে কম। ফেব্রুয়ারিতে সরকারি খাদ্য মজুত ছিল ১৫ লাখ ৬০ হাজার টন। এর মধ্যে চাল ১৩ লাখ ৩০ হাজার টন, যা আগের এক বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ কম।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে সরকারি মজুত গত দুই মাসে আরও কমেছে। গত ১৫ মে গুদামে চাল, গম ধান মিলিয়ে মোট মজুত ছিল ১১ লাখ ১২ হাজার ৪২০ টন। এর মধ্যে চাল লাখ ৫১ হাজার ৩২৫ টন আর গম লাখ ৫১ হাজার টন। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে চাল গমের সরবরাহ বাড়িয়ে দেওয়ায় মজুত কমছে। তবে আগামী জুন থেকে বোরো সংগ্রহ শুরু হলে মজুত বাড়তে শুরু করবে বলে মনে করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

ডব্লিউএফপি চলতি মাসে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে ২০১৯ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত খাদ্য পরিস্থিতির পরিবর্তনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, সংকটের সময় বাংলাদেশে খাদ্য ব্যবস্থাপনা বহুমুখী সমস্যার মধ্য দিয়ে গেছে। কোভিড-১৯ সংকটের পর ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে খাদ্য আমদানি কমে আসে। এর আগে ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে খাদ্যপণ্যের উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। ছাড়া ২০১০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত গবাদিপশুর উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার গণমাধ্যকে বলেন, ‘আমাদের খাদ্য উৎপাদন যথেষ্ট ভালো। আর সার, জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় চালের উৎপাদন খরচও বেড়েছে। ফলে চালের দাম আরও কমাতে গেলে কৃষক উৎপাদন কমিয়ে দেবেন। তখন চালের জন্য আমাদের আবারও আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভর করতে হবে।

ডব্লিউএফপির হিসাব অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ সালে খাদ্য মূল্যস্ফীতি প্রায় শতাংশে পৌঁছায়। এর আগে ছিল দশমিক শতাংশ। ২০২৩ সাল থেকে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দ্রুত বাড়তে থাকে। ওই বছরের অক্টোবরে তা ১৩ শতাংশে পৌঁছায়।

সংকট শুরু হওয়ার পর অর্থাৎ ২০১৭ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে খাদ্যের দাম ৭৫ শতাংশ বেড়ে যায়। এর মধ্যে শক্তি জোগায় এমন খাদ্যগুলোর দাম ২৫ শতাংশ বেড়ে যায়। চাল গমের মতো দানাদার খাদ্য, চিনি, ভোজ্যতেল, মাছ, মাংস মুরগির মতো প্রাণিজ আমিষ সবজি, দুধ ডিমের মতো পুষ্টিকর খাবারের দামও বেড়ে যায়।


দরিদ্র   মানুষ   খাবার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দুবাইয়ে গোপন সম্পদ ৫৩২ বাংলাদেশির, শীর্ষে ভারত ও পাকিস্তান

প্রকাশ: ০৯:৩১ এএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরের আবাসনবাজার বেশ রমরমা। বিভিন্ন দেশের সেলিব্রিটি থেকে শুরু করে সন্দেহভাজন অপরাধীরাও এখানে বিনিয়োগ করছে। কিনছে বাড়ি ও ফ্ল্যাট। এই তালিকায় পিছিয়ে নেই বাংলাদেশিরাও।

ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরির বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে ৫৩২ জন বাংলাদেশি সেখানে বাড়ি ও ফ্ল্যাট কিনেছেন। যার মূল্য ৩৭ কোটি ৭৪ লাখ ডলার।

ফাঁস হওয়া সম্পদ কেনার ঘটনার সঙ্গে ট্যাক্স অবজারভেটরি নিজেদের আনুমানিক হিসাবও দিয়েছে। যেখানে ফাঁস হওয়া ঘটনার সঙ্গে ফাঁস না হওয়া ঘটনাও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তবে কারা এসব সম্পদ কিনেছেন, সেই তথ্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।

তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে দুবাইয়ের শতভাগ রেডিমেড (প্রস্তুত) আবাসন সম্পদ কিনেছেন বা অপ্রস্তুত আবাসন সম্পদ কেনার জন্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করছেন এমন কিছু ব্যক্তির তালিকা ফাঁস হয়েছে।

তালিকায় ৩৯৪ জন বাংলাদেশির নাম এসেছে। ওই বছর তারা মোট ২২ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের সম্পদ কিনেছেন। সেবার বাংলাদেশিরা মোট ৬৪১টি সম্পদ কিনেছিলেন। তবে অবজারভেটরির মতে, ওই বছর সর্বমোট ৫৩২ জন বাংলাদেশি সেখানে বাড়ি-ফ্ল্যাট কিনেছেন।

ব্যাংক লুট করে বিসমিল্লাহ গ্রুপের খাজা সোলায়মান আনোয়ার চৌধুরীসহ অন্তত ২০ জন ঋণখেলাপির সম্পদ এখন দুবাইয়ে। তালিকায় আরও রয়েছে সাবেক মন্ত্রী, রাজনীতিক, অপরাধী, অর্থ পাচারকারীদের নাম।

ওয়ান-ইলেভেনের প্রভাবশালী সাবেক সেনা কর্মকর্তারা সেখানেই অবস্থান করছেন। তাদের রয়েছে বাড়ি, দোকানসহ নানা ধরনের ব্যবসা। আমলাদের অনেকেই তাঁদের বিত্তের ঘাঁটি গড়েছেন দুবাইয়ে। তাঁদের একাধিক বাড়ি আর বিশাল সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। সদ্যবিদায়ী মন্ত্রিসভার একজন মন্ত্রী এবং তাঁর মেয়ের নাম উঠে এসেছে গোপন সম্পদের পাহাড় গড়ার তালিকায়।

গত মঙ্গলবার একটি বৈশ্বিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা প্রকল্প ‘দুবাই আনলকড’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে বিশ্বের সম্পদশালীদের গোপন সম্পদের তথ্য ফাঁস করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, দুবাইয়ের আবাসন খাতে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা। তাদের তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশি নাগরিকও। ৩৯৪ বাংলাদেশির ২ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা মূল্যের ৬৪১টি সম্পত্তি রয়েছে দুবাইয়ে। সম্পত্তির মালিকের এ তালিকায় আরও রয়েছেন বিভিন্ন দেশের বড় ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এমনকি বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তি, অর্থ পাচারকারী ও অপরাধীরাও সেখানে বিপুল সম্পদের মালিক।

প্রতিবেদনে ভারতের ধনকুবের মুকেশ আম্বানির পাশাপাশি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির পরিবারের সদস্যদের নাম রয়েছে। তালিকায় দেখা গেছে, দুবাইয়ে সবচেয়ে বেশি সম্পদ রয়েছে ভারতীয়দের। সেখানে ৩৫ হাজার প্রপার্টির মালিক ২৯ হাজার ৭০০ ভারতীয়। এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন পাকিস্তানিরা। দেশটির ১৭ হাজার নাগরিকের দুবাইয়ে ২৩ হাজার প্রপার্টি রয়েছে। এর মূল্য ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মন্ত্রীর নির্দেশের প্রভাব পড়েনি সড়কে

প্রকাশ: ০৯:২২ এএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

সড়ক পরিবহন সেতু মন্ত্রীর নির্দেশের প্রভাব পড়েনি সড়কে। আগের মতোই রাজধানীর সড়কগুলোয় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। পেট্রল পাম্পগুলোও হেলমেট না থাকলে জ্বালানি দেওয়া বন্ধ করেনি। উল্টো ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশের পরদিনই খাতে বেড়েছে চাঁদার হার। গতকাল সরেজমিনে রাজধানী ঘুরে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

বুধবার (১৫ মে) বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়েবাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৭’-এর অধীনে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন থেকে ব্যাটারিচালিত কোনো রিকশা বা গাড়ি যেন ঢাকা শহরে না চলে। শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়, চলতে যেন না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। ছাড়া বুধবার থেকেই সারা দেশেনো হেলমেট, নো ফুয়েলকঠোরভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন।

সড়কে অব্যবস্থাপনা নিয়ে তিনি বিআরটিএর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এত উন্নয়নের পরও সড়ক, মহাসড়কে যানজট দুর্ঘটনা কেন?’ দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে এসব নির্দেশ দেন তিনি। তবে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে অবৈধ চাঁদার হার বৃদ্ধি ছাড়া সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রীর নির্দেশের কোনো প্রভাব গতকাল রাজধানীতে দেখা যায়নি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব--রব্বানী বলেন, মন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। এটা রেজ্যুলেশন হবে। মন্ত্রী স্বাক্ষর করবেন। এরপর আমরা পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সেই নির্দেশনা পাঠাব।

এদিকে পল্টন এলাকার একাধিক রিকশাচালক জানান, রিকশা নামাতে কেউ নিষেধ করেনি; তবে রিকশার মালিক বলেছেন, আগামী মাস থেকে প্রতিদিনের জমা ৫০ টাকা বেশি দিতে হবে। রাস্তায় রিকশা নামাতে উনার নাকি এখন বেশি চাঁদা দিতে হবে। নতুন বাজার এলাকার এক রিকশাচালক জানান, তিনি এক বছর ধরে প্রতিদিন ১০০ টাকা চাঁদা দিয়ে আসছেন। তার আগে দিতেন ৬০ টাকা। গতকাল থেকে চাঁদা ১২০ টাকা করা হয়েছে।

হাই কোর্ট ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর ব্যাটারিচালিত থ্রি-হুইলার অটোরিকশা বন্ধের নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশের পরও সড়কে নতুন করে নেমেছে কয়েক লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিপুল পরিমাণ চাঁদাবাজির কারণেই রিকশাগুলো বন্ধ হচ্ছে না। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে প্রায় ৪০ লাখ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রিকশা চলাচল করছে।

আইনগত অবৈধএসব অটোরিকশার মালিক-চালকদের কাছ থেকে বছরে প্রায় হাজার কোটি টাকা চাঁদাবাজি হচ্ছে। টাকার ভাগ যাচ্ছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা এবং ট্রাফিক থানা পুলিশের এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার পকেটে। রাজধানীতে প্রতিটি থ্রি-হুইলার অটোরিকশার জন্য এলাকাভেদে মাসে মালিককে দিতে হয় দেড় থেকে হাজার টাকা। টাকা দিলে দেওয়া হয় বিশেষ টোকেন, যা থাকে সিটের নিচে। ওই টোকেন থাকলেই সড়কে চলার অনুমতি মেলে। কিছু এলাকায় কিউআর কোড ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে।


সড়ক   পরিবহন   সেতু   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঝরল ৫ প্রাণ

প্রকাশ: ০৮:৪৯ এএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে পাঁচজন নিহত হয়েছেন।

শুক্রবার (১৭ মে) ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপজেলার বসন্তপুর এলাকায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম কক্সবাজারগামী রিলাক্স পরিবহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা হলেন হলেন, কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার মতিউর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ হোসেন (৩০), চট্টগ্রামের বাশখালীর বাহারছড়া গ্রামের নুরুল আবছারের ছেলে বদরুল হাসান রিয়াদ (২৬)।

আহতরা হলেন, কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার মতিউর রহমানের ছেলে ফিরোজ (৪০), একই এলাকার আলী আহমেদের ছেলে মোক্তার হোসেন (৪০), ফজলুর রহমান (৪২), আরাফাত (৩৪), সিয়াম (৩২), সোহাগ (২৮), কামরুন নাহার (২৫), স্বপন শিকদার (২৫), রফিকুল ইসলাম (৩০), মনির (৩০)। এদের মধ্যে চারজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, আমরা ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্তলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস গাড়িতে করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। পরে পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় গাড়ির ভিতর থেকে নিহত পাঁচ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

মিয়াবাজার হাইওয়ে থানার এসআই নজরুল ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে কক্সবাজার গামী রিলাক্স পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচ জন নিহত হয়েছেন।


মহাসড়ক দুর্ঘটনা   ঢাকা-চট্টগ্রাম  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন