নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২১
একটি রাজনৈতিক দল চলে একটি সুনির্দিষ্ট আদর্শ নিয়ে। প্রত্যেকটি ইস্যুতে রাজনৈতিক দলটির অভিন্ন মতামত এবং চিন্তা থাকে। রাজনৈতিক দলের পরিচালনার কৌশল হলো রাজনৈতিক দলগুলো ভেতরে একটি সুস্পষ্ট বিষয় নিয়ে বিতর্ক করবে। নানা রকম মত,পথ নিয়ে আলোচনা হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলীয়ভাবে যে সিদ্ধান্ত হবে সেটি হলো দলীয় সিদ্ধান্ত এবং সেই আলোকেই সকল নেতা কথা বলবে। এটিই গণতান্ত্রিক শিষ্ঠাচার নীতি। কিন্তু দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের মধ্যে এখন এই গণতান্ত্রিক রীতি নীতির ছিটেফোঁটাও দেখা যাচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের নেতারা ফ্রিস্টাইলে কথা বলছেন। সব ইস্যুতেই আওয়ামী লীগের নেতাদের নানা মত নানা পথ। এই নানা মত নানা পথের মধ্যে আওয়ামী লীগের মত কোনটা, আওয়ামী লীগের অবস্থান কি, এই নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
আওয়ামী লীগের মধ্যে এখন প্রধানত দুটি সুস্পষ্ট ধারা রয়েছে। একটি হলো সরকার লীগ, অন্যটি হলো আওয়ামী লীগ। সরকার লীগে যারা প্রভাবশালী মন্ত্রী তারা সরকার লীগের মূল হর্তাকর্তা। তারা কথাবার্তা বলেন আমলাদের মতো, সরকারের মতো এবং এই সমস্ত কথাবার্তার মধ্যে আওয়ামী লীগের চিন্তা-চেতনা রাজনীতির বিন্দুবিসর্গ উপস্থিত নেই। আর অন্যদিকে আওয়ামী লীগের যারা নেতা তারা সরকার থেকে নক্ষত্রের দূরে এবং তাদের কথাবার্তা সরকারের মন্ত্রীরা কানে তোলেন বলে মনে হয় না। এমনকি আওয়ামী লীগের যারা গুরুত্বপূর্ণ নেতা আবার সরকারেও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী তাদের মধ্যে দু`একজন ছাড়া যেমন, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এরকম দু`একজন ছাড়া কেউই রাজনৈতিক বিষয়ে কোনো বক্তব্য রাখেন না। একদিকে যখন আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে হবে, দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল করতে হবে তখন সরকার লীগের নেতারা বলেন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। আওয়ামী লীগের নেতারা যখন বলেন, হেফাজতকে দমন করতে হবে তখন সরকার লীগের মন্ত্রীরা বলেন, হেফাজত তাদের শত্রু নয়, দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতারা যখন বলেন যে, দুর্নীতি এবং দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করতে হবে তখন সরকার লীগের নেতারা বলেন যে, সরকার দুর্নীতিমুক্ত।
এই যে বিভিন্ন রকম বিষয় নিয়ে নানামুখী মত সেই মতগুলোই এখন আওয়ামী লীগের জন্য বিব্রতকর অবস্থা হয়েছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে যে, সরকারের যারা মন্ত্রী তাদের সঙ্গে যেমন দলের নেতাদের সমন্বয় নেই তেমনি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তৃণমূলের সমন্বয় নেই। তৃণমূলের মধ্যে এখন যে যেভাবে পারছেন ফ্রি স্টাইলে কথাবার্তা বলছেন। এমন কি কেউ কেউ ফেসবুকে এসে গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বিরুদ্ধে এমন সব অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছেন যেগুলি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো রকম ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানা যায়নি।
এ প্রসঙ্গে একটি উদাহরণ দিতেই হয়। আওয়ামী লীগের টিকিটে জেতা বসুরহাট পৌরসভার মেয়র ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কাদের মির্জা সম্প্রতি বলেছেন যে, ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। এ ধরনের কথা তিনি কেনো বলেন, কিভাবে বলেন এবং এসব কথার ভিত্তি কি তা নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো কথাবার্তা দেখা যায়নি। কেন কথাবার্তা দেখা যায়নি সেটি নিয়েও আওয়ামী লীগের ভেতরে নানা প্রশ্ন রয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারাই বলছেন যে, আমি লীগ একটি ফ্রি স্টাইল দলে পরিণত হয়েছে। যেখানে যে যা পারছে তা বলছে। নানা মত নানা পথ যখন বলা হচ্ছে তখন আওয়ামী লীগের আসলে বিভিন্ন ইস্যুতে অবস্থান কি এ নিয়ে সাধারণ মানুষ একটু চিন্তায় পড়েছে। আসলে আওয়ামী লীগের অবস্থান কি?
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।