নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৯ পিএম, ০৩ মে, ২০২১
গত রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে হেফাজতের আহমদ শফী পন্থী নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। ওই সাক্ষাতে বাবুনগরীর বিরাগভাজন হিসবে পরিচিত এবং আহমদ শফীর ঘনিষ্ঠ মুফতি ফয়জুল্লাহ, মওলানা হাসনাত আলতাফ এবং মওলানা মঈনুদ্দীন রুহীসহ বেশ কয়েকজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কেন এই সাক্ষাৎ সে নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানারকম জল্পনা-কল্পনা চলছে। তবে হেফাজতকে ভেঙে আহমদ শফী পন্থীরা আরেকটি হেফাজত করতে চাইছে বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে। সেই গুঞ্জনের প্রেক্ষিতে আহমদ শফী পন্থীদের যে কয়েকজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে যে সাক্ষাৎ করলেন এটি এই গুঞ্জনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। হেফাজতের আহমদ শফী পন্থীরা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় নতুন করে জায়গা করে নিতে চাইছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। জুনায়েদ বাবুনগরীরা এখন নানা কারণে কোণঠাসা এবং এই অবস্থায় আহমদ শফী পন্থীরা হেফাজতের নতুন একটি শাখা করতে চাইছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হেফাজতের আহমদ শফী পন্থীরা এবং বাবুনগরী পন্থীরা একই মুদ্রার এপিট-ওপিট। এরা একই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে এবং এরা যখনই শক্তিশালী হবে তখনই এরা ছোবল মারবে। এজন্য কোনো হেফাজতকে আশ্রয় প্রশ্রয় না দেয়ার পক্ষে মত দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন যে, হেফাজত এখন কোণঠাসা। তাই আহমদ শফীরা সামনে চলে আসছেন, এটি তাদের কৌশল। খোলস পাল্টে তারা সরকারের ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছে এবং তারা আবার শক্তি সঞ্চয় করে সরকারকেই ছোবল দেবে। একই কথা বলা যায় জামায়াত সম্পর্কে, ২০১৯ সালে জামায়াত থেকে কিছু নেতা বেরিয়ে আমার বাংলাদেশ গঠন করেছেন এবং এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে গতকাল যোগ দিয়েছেন সাবেক জামায়াত নেতা ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে পলাতক ব্যরিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।
স্বাধীনতার পর থেকে জামায়াত বিভিন্নভাবে নিজেদের খোলস পাল্টে তাদের অস্তিত্ব জানান দেয়ার চেষ্টা করেছে এবং এটি তাদের নতুন খোলস পাল্টানো বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। যেহেতু জামায়াতের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে এবং কোনোভাবেই জামায়াতকে রাজনীতির মাঠে জায়গা দিচ্ছে না সেজন্য জামায়াত কখনও হেফাজতের মধ্যে থেকে বা কখনও অন্য দল করে সামনে আসতে চাইছে। আমার বাংলাদেশ জামায়াতেরই একটা নতুন মিশন বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, মূলত একাত্তরের ক্ষমা চাওয়া এবং জামায়াতের যে একাত্তরের ভূমিকা সেখান থেকে সরে এসে মুজিবুর রহমানসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে আমার বাংলাদেশ গঠন করা হয়েছে। যদিও রাজনীতিতে গত দুই বছরের বেশি সময় এই সংগঠনটি তেমন কোনো রেখাপাত করতে পারেনি। কিন্তু এখন জামায়াতই একে নতুন জীবন দিতে চাইছে। একটা সময় বাংলাদেশে যখন কমিউনিস্ট আন্দোলন নিষিদ্ধ ছিলো তখন ন্যাপিস্ট দিয়ে কমিউনিস্ট আন্দোলনকে পরিচালনা করা হতো ঠিক তেমনি আমার বাংলাদেশকে সামনে রেখে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি সংগঠিত হতে চাইছে বলে অনেকে মনে করছেন। আর এ কারণেই নতুন হেফাজত, বা আহমদ শফী পন্থী হেফাজত বা আমার বাংলাদেশ দুটিকেই বলা যায় যে তারা খোলস পাল্টানো কিন্তু তাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য এক। তারা আসলে সরকারের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াতে চায় এবং নিজেদের শক্তি দিয়ে সরকারকে ছোবল মারতে চায়। এজন্য এই দুটি সংগঠনের ব্যাপারে শুরু থেকেই সতর্ক অবস্থায় থাকা উচিৎ বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।