নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ০৭ মে, ২০২১
বেগম জিয়ার ঢাকা থেকে লন্ডন যাত্রা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ হবে বলে মনে করছেন চিকিৎসক বিশেষজ্ঞরা। বেগম খালেদা জিয়া চারদিন ধরে সিসিইউ`তে চিকিৎসাধীন আছেন। তাকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়েছে এবং প্রতিদিন ২ থেকে ৩ ঘন্টা অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। তাছাড়া তার ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত এবং এটি কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। হাত এবং পায়ে বেগম খালেদা জিয়া ব্যথা অনুভব করছেন বলে জানা গেছে। একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন যে, সিসিইউ`তে বেগম খালেদা জিয়া বহুমাত্রিক সমস্যার মধ্যে রয়েছেন এবং এই সমস্যাগুলোকে নিবিড় পরিচর্যায় রেখেই সমাধান করতে হবে। এর মধ্যেই বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা তাকে লন্ডনে নিয়ে যেতে চাইছে। ইতিমধ্যে সরকারের কাছে লন্ডনে যাওয়ার জন্য বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার আবেদন করেছেন। সেই আবেদন এখন আইনমন্ত্রীর বিবেচনাধীন আছে এবং জানা গেছে সরকার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখছে। হয়তো দু-এক দিনের মধ্যেই সরকার এই আবেদনের ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দেবে।
কিন্তু বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিলেও এই মুহূর্তে এই শারীরিক অবস্থায় তাকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়াটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। একাধিক চিকিৎসক বলেছেন যে, কয়েকটি কারণে বেগম খালেদা জিয়ার এই লন্ডন যাত্রা হবে ঝুঁকিপূর্ণ,
প্রথমত, তিনি অনেক রকম অসুখে অসুস্থ এবং এই অসুখের মধ্যে প্লেনে করে ১০ ঘন্টার বিমান যাত্রা কোনোভাবেই তার জন্য ইতিবাচক ফল আনবে না। যদিও বলা হচ্ছে যে বেগম খালেদা জিয়াকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হবে এবং এয়ার আম্বুলান্স সিসিইউ, আইসিইউ এর সমস্ত সুযোগ সুবিধা থাকবে। কিন্তু তারপরেও চিকিৎসকরা বলছেন যে, এতটা উচ্চতায় একজন রোগীর শারীরিক অবস্থার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়।
দ্বিতীয়ত, চিকিৎসকরা মনে করছেন যদি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ১০ ঘন্টা যাত্রায় তার কোনো জটিলতা হয়, সমস্যা হয় তাহলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা প্রদানের যে ব্যবস্থা সেটি কীভাবে করা সম্ভব হবে? সেটা যদি না করে তাহলে পরে তার সমস্যা হতে পারে।
তৃতীয়ত, দেখা যাচ্ছে যে অক্সিজেন স্যাচুরেশন এবং উচ্চ রক্তচাপ ছাড়াও বেগম খালেদা জিয়ার অনেক রকম সমস্যা হতে পারে। অনেক উঁচুতে থাকার কারণে হৃদরোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেই ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক জরুরি চিকিৎসা ১০ ঘন্টা ধরে না করাটা কতটুকু ভালো হবে সেটি নিয়ে অনেক চিন্তিত। বিভিন্ন চিকিৎসক বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সাধারণত নিকটবর্তী স্থানে যাওয়াটা সহনীয় এবং সেটিও নেয়া হয় যখন একটি শারীরিক ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রেক্ষিতে। যেমন একজন চিকিৎসক উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, ওবায়দুল কাদের যখন হার্ট অ্যাটাক করলো তখন ডা. দেবি শেঠি তাকে প্রথমে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেননি। তার অবস্থা একটু স্থিতিশীল করে তারপর তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। সবক্ষেত্রেই একই জিনিস প্রযোজ্য।
বেগম খালেদা জিয়া এখন সিসিইউতে। চিকিৎসকরা মনে করছেন, এখানে তাকে চিকিৎসা দিয়ে তার অবস্থা আগে কিছুটা স্থিতিশীল করা দরকার। স্থিতিশীল করে তাকে সিসিইউ থেকে বের করে এনে যদি তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বিদেশে নেওয়া যায় তাহলে সেটি সমস্যা হতো না। কিন্তু সিসিইউ এর একজন রোগীকে বা আইসিইউ এর একজন রোগীকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যাওয়া সত্যিই ঝুঁকিপূর্ণ এবং আত্মঘাতীও বটে। কিন্তু বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা বিশেষ করে লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া এখন এইসব চিকিৎসকদের পরামর্শ শুনছেন না। তারা মনে করছেন যে, বেগম খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশ থেকে বের করাই হলো তাদের প্রধান লক্ষ্য। আর সেজন্যই তারেকের নির্দেশে বিএনপি এবং বেগম জিয়ার পরিবার এখন বেগম জিয়াকে দেশের বাইরে নেওয়ার জন্য মরিয়া চেষ্টা করছে।
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।