নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৯ মে, ২০২১
শেষ পর্যন্ত যাওয়া হলো না বেগম খালেদা জিয়ার। তারেক জিয়ার যে পরিকল্পনা ছিলো অসুস্থতার অজুহাতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাবেন সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গেলো। বেগম খালেদা জিয়াকে আপাতত বাংলাদেশে থেকেই চিকিৎসা করতে হচ্ছে। আজ আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত জানান সেই সিদ্ধান্ত জানার পর তারেক জিয়া ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। অবশ্যই সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানার আগে সকাল থেকেই জানা যাচ্ছিল যে, বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া হচ্ছে না। সরকার নানা বাস্তবতায় তাকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে না। এটিতে তারেক জিয়া অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ক্ষুব্ধ হওয়ার পিছনে কারণ আছে। তারেক জিয়া খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যেয়ে যে পরিকল্পনা এঁটে ছিলেন সেই পরিকল্পনা এখন ভেস্তে গেলো।
তারেক জিয়া বিভিন্ন সময় বলেছিলেন যে, একবার যদি তার মাকে লন্ডন নিয়ে আসতে পারেন তাহলে তিনি সরকারকে দেখিয়ে দিবেন। বাংলাদেশে তিনি অনেকগুলো ছক কেটেছেন। হেফাজত সন্ত্রাসীসহ নানারকম নানা গ্রুপকে তৈরি করেছেন। যখনই তার মা দেশ ছাড়বেন তখনই তিনি দায়মুক্ত হবেন এবং তখনই সরকারকে যতরকম বেকায়দায় ফেলা যায় সব কিছুই করবেন। এটি ছিলো তার পরিকল্পনা। আর এ কারণেই তারেক জিয়া বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপির নেতাকর্মী এবং তৃণমূল এই আবেদন নাকচ হওয়ায় প্রকাশ্যে অসন্তোষ এবং হতাশা প্রকাশ করলেও ভেতরে ভেতরে খুশি হয়েছেন। তারা মনে করছেন যে, সরকার শেষ পর্যন্ত বিএনপিকে বাঁচিয়ে দিলো।
বিএনপির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে গেলে বিএনপি`র আর কিছুই থাকত না। বিএনপি একটা নামগোত্রহীন রাজনৈতিক দলে পরিণত হতো। কিন্তু এখন বেগম খালেদা জিয়াকে যখন অনুমতি দেওয়া হয়নি তখন আমরা এটি নিয়ে যেমন আন্দোলন করার সুযোগ পাবো পাশাপাশি এটি জনমনে সরকার বিরোধী একটি মনোভাব তৈরি করবে। এটাকে যদি আমরা পুঁজি করে কিছু জনগণের কাছে যেতে পারি তাহলে জনগণের সহানুভূতি পাবো এবং দলকে সংগঠিত করতে পারবো। বিএনপির অন্য একজন নেতা মনে করছেন যে, বেগম খালেদা জিয়াই বিএনপির নেতা। তিনি কিছু যদি নাও বলেন, নাও করেন প্রতীকী নেতা হিসেবে তিনি থাকবেন। এটি বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ এবং অটুট রাখবে। আর এ কারণে বেগম খালেদা জিয়া যদি বিদেশে যেতেন তাহলে কিছুদিন পরেই হয়তো বিএনপিতে এক ধরনের হতাশা নেমে আসতো এবং সংকট দেখা দিতো।
সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপিতে তারেক জিয়াকে নিয়ে অনেক রকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর তারেক জিয়ার ভূমিকা এবং তার নেতৃত্বে দক্ষতা ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিএনপি নেতারা মনে করেন, তারেক জিয়া একটি রাজনৈতিক দলকে সংগঠিত করা এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নীতিমালার অনুসরণ না করে বরং ষড়যন্ত্র এবং অন্যান্য তৎপরতার দিকে বেশি উৎসাহী। এটিকে তৃণমূল পছন্দ করে না। বিএনপি নেতারা মনে করেন যে, বিএনপিতে অনেক কর্মী জনসমর্থন রয়েছে। তাদের দরকার সংগঠনকে শক্তিশালী করে একটি আন্দোলন গড়ে তোলার। কোন ষড়যন্ত্রের পথে বিএনপির যাওয়ার দরকার নেই। কিন্তু তারেক জিয়া শর্টকাট পদ্ধতি খুঁজে যেয়ে শুধু ষড়যন্ত্রের পথই খুঁজে পান। এইসবের প্রেক্ষিতে যদি শেষ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া বিদেশ চলে যেতেন তাহলে দলের পুরো নেতৃত্ব আসতো তারেক জিয়ার কাছে। তখন হয়তো তারেক জিয়ার নেতৃত্ব মেনে নিতে অপারগ অনেকেই বিএনপি ত্যাগ করতেন। বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, আল্লাহ যা করে ভালোর জন্য করে। শেষ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ না যাওয়াতে দলটা অন্তত বাঁচল।
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।