নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১০ জুন, ২০২১
হেফাজতের কমিটি যখন পুনরুজ্জীবিত করা হয় তখন অনেকেই মনে করেছিল সরকারের সাথে সমঝোতা করেই হয়তো হেফাজত নতুন কমিটি গঠন করেছে। কিন্তু কমিটি গঠনের পর চারিদিক থেকে বিদ্রোহ, অনাস্থা এবং হেফাজতের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে বোঝা যাচ্ছে যে, এই কমিটি সরকারের সাথে সমঝোতার ফসল নয় বরং জুনায়েদ বাবুনগরীর অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। বরং সরকার হেফাজতকে আরও কোণঠাসা এবং নিষ্ক্রিয় করার কাজেই বিভিন্ন রকম কৌশল অবলম্বন করছেন এবং সেই কৌশলটি কি তা স্পষ্ট করে যেমন হেফাজত বুঝছে না, তেমনি সাধারণ মানুষও বুঝছে না।
আবার অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, হেফাজত অস্থিত্ব রক্ষার জন্য বিভিন্ন রকম কৌশল গ্রহণ করছে। তবে হেফাজতের কৌশলটি খুব দৃশ্যমান। হেফাজত ২০১৩ সালে যে কৌশল গ্রহণ করেছিল সেই একই কৌশল গ্রহণ করেছে এবারো। ২০১৩ সালের ৫ মে`র পর হেফাজত সরকারের সঙ্গে দেনদরবার তদবির করে সরকারের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করেছিল এবং সরকারের সঙ্গে একটা সমঝোতায় পৌঁছতে সক্ষম হয়েছিল। সেই কৌশলে হেফাজত জয়ী হয়েছিল। সরকারের সঙ্গে সমঝোতার প্রেক্ষিতে সরকারকে দিয়ে বিভিন্ন রকম দাবি দাওয়া আদায় করে হেফাজত একটি আবহ তৈরি করেছিল যাতে মনে হতে পারে যে হেফাজত অত্যন্ত শক্তিশালী। কিন্তু ২০১৩ সালের পর থেকে হেফাজতের এই শক্তি আওয়ামী লীগের সমর্থকদের মধ্যে নানারকম অস্বস্তি তৈরি করেছিল।
বিশেষ করে পাঠ্যপুস্তক সংশোধনসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যেই নানা রকম বক্তব্য ছিল। আর হেফাজতের সেই কৌশল ছিল যে সরকারের ঘনিষ্ঠ হয়ে সরকারকে চাপে ফেলতে হবে এবং আহমদ শফীর মৃত্যুর পর জুনায়েদ বাবুনগরী সেই কৌশলের বাস্তবায়ন শুরু করেন। তিনি প্রথমে ভাস্কর্য ইস্যু নিয়ে সরকারকে চাপে ফেলেন। এরপর বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানকে নিয়ে হেফাজত এক অশুভ পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, হেফাজতের এই সমস্ত পরিকল্পনার পেছনে বিএনপি এবং জামায়াতের হাত ছিল। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, হেফাজত যেন একটা সরকারবিরোধী আন্দোলন করে সেজন্য ব্যাংককে গোপন বৈঠকও হয়েছিল। সেই বৈঠকের ফলশ্রুতি হিসেবেই হেফাজত বাবুনগরীর নেতৃত্বে আগ্রাসী হয়েছিল।
আর হেফাজতের সেই সময় কৌশল ছিল যে সরকারকে যদি কোণঠাসা করা যায়, তাহলে তার দু`ধরনের লাভ হতে পারে। প্রথমত সরকারের পতন হবে এবং একটি ইসলামী সরকার গঠন হবে আর সেটি যদি তারা সক্ষম নাও হতে পারে এরকম চাপের কাছে সরকার নতি স্বীকার করবে এবং হেফাজতকে সমীহ করে চলবে। কিন্তু হেফাজতের এই কৌশল আর সফল হয়নি। বরং সরকার হেফাজতকে দমনের নতুন কৌশল গ্রহণ করে। সেই কৌশলে হেফাজতের শীর্ষ একাধিক নেতা যেমন গ্রেপ্তার হয়েছে, আবার হেফাজত নেতৃবৃন্দের অবৈধ অর্থ-সম্পদের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এখন কেউই বলতে পারছেন না যে, সরকার রাজনৈতিক কারণে বা হেফাজত করার কারণে কাউকে গ্রেপ্তার করেছে। বরং হেফাজতের যেসমস্ত নেতা গ্রেপ্তার হয়েছে তা সুর্নির্দিষ্ট অপরাধের ভিত্তিতে।
যেমন মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক, অবৈধ অর্থ উপার্জন ইত্যাদি রয়েছে। আবার জুনায়েদ বাবুনগরীর বিরুদ্ধে আহমদ শফীকে হত্যা প্রচেষ্টা এবং অবৈধ সম্পদের মামলা রয়েছে। কাজেই সরকার এখন হেফাজতের নেতাদের যে অপকর্ম সেগুলোর ব্যাপারেই তদন্ত করছে। ফলে এর পেছনে এটা বিপুল জনসমর্থনও পাওয়া যাচ্ছে। তবে হেফাজতের কমিটি নিয়ে সরকার কোনো কৌশল করছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। এখন হেফাজতের কমিটি গঠনের পর হেফাজত যে নতুন সংকটে পড়েছে তাতে হচ্ছে যে কৌশলের খেলায় এখনও এগিয়ে আছে সরকারই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই কৌশলের খেলা কে জিতবে সেটা দেখার বিষয়।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সিরাজগঞ্জে গণমাধ্যম কর্মীদেরকে নিয়ে ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য নারী পক্ষ নামে একটি সংগঠন সিরাজগঞ্জ ও পাবনার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রবিবার (১৯ মে') দুপুরে শহরের এস. এস রোডস্থ নর্থ টাউন রেস্তোরাঁয় প্রোগ্রাম ফর উইম্যান ডেভোলপমেন্ট (পি ডাব্লিউডি) সার্বিক সহযোগিতা ও নারীপক্ষ আয়োজনে ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য দিনব্যাপী মতবিনিময় সভার শুভ উদ্বোধন করেন নারীপক্ষ চেয়ার পারসন গীতা দাস।
মতবিনময় সভায় নারীপক্ষ চেয়ারপার্সন গীতা দাস বলেন, মানুষ কোনো ভালো কর্ম করলে তাকে বিশেষায়িত করা যায়। কিন্তু নারীরা নির্যাতিত হলেও তাদেরকে বিশেষায়িত করা হয়। যেমন ধর্ষণের শিকার হলে তাকে ধর্ষিতা, নির্যাতনের শিকার হলে নির্যাতিতা বলা হয়। অথচ ধর্ষণের শিকার, নির্যাতনের শিকার লিখলেও হয়।’ একজন নারীকে মানুষ হিসেবে দেখলে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন কামরুন নাহার, ফেরদৌসী আখতার, পিডাব্লিউডি নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা জলি।
এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি চ্যানেল টুয়েন্টিফর সিনিয়র রিপোর্টার সাংবাদিক হীরুকগুণ, এনটিভি জেলা প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম ইন্না, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সুজন সরকার, বৈশাখী টেলিভিশন সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সুজিত সরকার, দীপ্ত টিভির সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি শিশির, দীপ্ত টিভি পাবনা জেলা প্রতিনিধি শামসুল আলম সহ অনেকে।
মন্তব্য করুন
পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামালের বিরুদ্ধে জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে প্রচারণার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের শিবপুর বাজার এলাকা থেকে জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করেন চেয়ারম্যার প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামাল।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপে আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যার প্রার্থী তানভীর ইসলাম বলেন, সাইফুল ইসলাম কামালের গুন্ডা সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত আমার কর্মী, সমর্থক, ভোটারদের ভয়ভীতি, হুমকী, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে ভোট দিতে নিরুৎসাহিত করছে। ফলে নির্বাচন কমিশনের ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আচরণবিধি সাইফুল ইসলাম কামাল বারবার লঙ্ঘন করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামাল বলেন, ‘ঘোড়া নিয়ে প্রচার প্রচারণা করিনি। তবে আমি ঘেড়ার গাড়ি নিয়ে প্রচার প্রচারণা করেছি। এটাও যদি বিধি নিষেধ থাকে তাহলে এটাও পরিহার করবো।’
পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট ও রিটার্নিং অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় চেয়ারম্যান প্রার্থী এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি আমরা। তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন