নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ২১ জুলাই, ২০২১
এরশাদের গুপ্তধন নিয়ে জাতীয় পার্টিতে এবং এরশাদ পরিবারের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই উত্তেজনায় রওশন এরশাদ কার, এই প্রশ্ন এসেছে। রওশন এরশাদ একদিকে যেমন জিএম কাদেরকে ফোন করে বলেছেন যে তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হতে আগ্রহী নন, তেমনি তিনি বিদিশা এরশাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। আর এর ফলে রওশন এরশাদ কোন পক্ষে যাবেন এ নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু জাতীয় পার্টির ঘনিষ্ঠরা বলেন যে, রওশন এরশাদই হলেন আসল খেলোয়াড়। তিনি দুই পক্ষকে তার কর্তৃত্বে রেখেছেন। তিনি কারও পক্ষে নয়, তিনি নিজেই একটি পক্ষ। রওশন এরশাদ আসলে দুই পক্ষকে তার অনুগত রেখে এ গুপ্তধনের সন্ধান করতে চান। এ কারণেই রওশন এরশাদ কোনো পক্ষকেই সমর্থন দেয়নি। রওশন এরশাদের রাজনৈতিক জীবন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় তিনি এরকমই। রওশন এরশাদ এরশাদের নানারকম অনিয়ম, পরকীয়া এবং অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্কের পরও এরশাদকে আঁকড়ে ছিলেন কৌশলগত কারণে।
রওশন এরশাদই একমাত্র যিনি এরশাদের সব কিছু নীরবে সহ্য করেছেন। তারপরও এরশাদের পাশে থেকেছেন। এরশাদের সুসময়, দুঃসময় সবচেয়ে সব সময় তিনি নীরবতা অবলম্বন করেছেন। এরশাদ যখন বিদিশাকে বিয়ে করেছেন তখনও রওশন এরশাদ চুপ ছিলেন, কোন প্রতিক্রিয়া দেখাননি। যখন তার যে সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার সেই সময় সে সিদ্ধান্ত তিনি ঠিকই নিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে ২০১৪ সালের নির্বাচনের কথা বলেন জাপা নেতারা। ওই নির্বাচনে এরশাদ যেতে চাননি। বিভিন্ন মহল তাকে টোপ দিয়েছিল এবং সেই টোপ পেয়ে তিনি এক পর্যায়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সকলে যেন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে। তার এই কথায় জিএম কাদের সহ জাতীয় পার্টির অনেকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছিলেন।
রওশন এরশাদ সে সময় সরকারের পক্ষে ছিলেন এবং সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেই জাতীয় পার্টির একটি অংশকে নির্বাচন নিয়ে গিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত এরশাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার বাতিল হয়ে যায়। এরশাদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে তিনি শপথয় নেন। তখন থেকেই জাতীয় পার্টিতে রওশন এরশাদের একটি বড় অবস্থান ছিল এবং জাতীয় পার্টির অনেক নেতাই মনে করেন রওশন এরশাদের সে সময় রাজনৈতিক দূরদর্শিতা না থাকলে জাতীয় পার্টি এতদিন নিঃশেষিত হয়ে যেত। সেই সময়েই রওশন এরশাদ সংসদে বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হয়েছিলেন। শেষ দিনগুলোতে এরশাদের চেয়ে রওশন এরশাদকেই আস্থাশীল মনে করত সরকার এবং জাতীয় পার্টির বিভিন্ন মহল।
এরশাদ সব সময় পরিবর্তনশীল এবং নানা রকম চিন্তাভাবনা তার মাথায় খেলতে এবং সেই অনুযায়ী তিনি সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন। রওশন এরশাদ এমন ছিলেন না। রাজনীতিতে ক্যারিশমাটিক নেতা নন। কিন্তু পরিকল্পিত রাজনীতি এবং দলের সুবিধা কোনটাতে বেশি হবে এটা বোঝার ক্ষেত্রে তিনি শেষ দিনগুলোতে এরশাদকে হারিয়ে দিয়েছিলেন। কাজেই এই বাস্তবতায় এখন এরশাদের গুপ্তধন নিয়ে বিদিশা এবং জিএম কাদের মধ্যে যে বিতর্ক চলছে সেই বিতর্কে তিনি কোন পক্ষে যেতে চান না। কারণ রওশন এরশাদ খুব ভালো মত জানেন যে সরকার তার পক্ষে। তিনি যেদিকে যাবেন সেটি হবে আসল জাতীয় পার্টি এবং এরশাদের সম্পত্তির নোঙ্গর সেখানেই ভিড়বে। রওশন এরশাদ সবকিছু দেখছেন, সবকিছু বুঝছেন কিন্তু নীরবতা পালন করছেন। কারণ রওশন এরশাদ এই খেলায় তৃতীয় পক্ষ না, তিনি মূল পক্ষ।
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।