নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ২৭ জুলাই, ২০২১
২০০৮ সালের পর কারা আওয়ামী লীগের প্রবেশ করেছে এবং কেন আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেছে এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার কাজ শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনায় সারাদেশে ২০০৮ সালের পর যারা আওয়ামী লীগে ঢুকেছে এবং বিভিন্ন পদ দখল করেছে তাদের তালিকা চিহ্নিত করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা বলেছেন যে, আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। এই দলটি গণতান্ত্রিক এবং জনবান্ধব। যে কেউ আওয়ামী লীগে ঢুকতে পারে যদি তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ মানেন। কিন্তু কেউ যদি নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য দলে ঢোকেন, মতলববাজির জন্য আওয়ামী লীগের পরিচয় ব্যবহার করেন এবং পদ দখল করেন তাহলে সেরকম আওয়ামী লীগার দরকার নেই। আওয়ামী লীগে ২০০৮ কে মাইলফলক রেখে ২০০৮ সালের পরে যারা আওয়ামী লীগে ঢুকেছেন তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আর এই প্রশ্নে আওয়ামী লীগের মধ্যে ভিন্ন মতামত পাওয়া গেছে। একদল লোক মনে করছেন যে, নতুন করে আওয়ামী লীগে দরকার নেই। আওয়ামী লীগের জনসমর্থন ব্যাপক আছে। যারা এখন আওয়ামী লীগে ঢুকে নেতা বনে যাচ্ছেন তারা আওয়ামী লীগের জন্য ক্ষতিকর এবং এদেরকে এখনই নিবৃত্ত করা দরকার। অবশ্য এর বিভিন্ন মতও রয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন আওয়ামী লীগের দরজা কখনো বন্ধ করা উচিত নয়। বরং সবসময় আওয়ামী লীগের দরজা খোলা রাখা উচিত। শুধু দরকার হলো যাচাই বাছাই করা। যাচাই বাছাই প্রক্রিয়া যদি সঠিক হয় তাহলে এরকম শাহেদ, হেলেনা কিংবা পাপিয়ার মতো ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগে ঢুকতে পারে না। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকদেরকে নতুন করে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা ২০০৮ সালের পর যারা আওয়ামী লীগের ঢুকেছেন তাদের তালিকা করবে পাশাপাশি তারা কেন ঢুকেছেন সেটিও খুঁজে বের করা হবে।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, ২০০৮ সালের পর আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ অনেক বেশি। ক্ষমতায় থাকার কারণেই এই অনুপ্রবেশ ঘটেছে এটি বুঝতে আওয়ামী লীগের নেতাদের কোনো অসুবিধা হয়নি। কিন্তু অনেকেই আওয়ামী লীগের ঢুকেছেন বাস্তবতায় এবং আদর্শে। বিশেষ করে বাম রাজনৈতিক সংগঠনগুলো, উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠনগুলো গত এক দশকে ক্ষয়িষ্ণু হয়ে গেছে। এই রাজনৈতিক দলগুলোতে যারা যে সমস্ত তরুণ এবং রাজনীতিতে আগ্রহী ব্যক্তিরা আছেন তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল দল হিসেবে আওয়ামী লীগকেই চিহ্নিত করেছে এবং আওয়ামী লীগে ঢুকে কাজ করতে চাইছেন। বাংলাদেশে আশির দশক থেকে জাসদ, কমিউনিস্ট পার্টির ন্যাপ থেকে বিপুল পরিমাণ রাজনৈতিক কর্মী আওয়ামী লীগে ঢুকেছে। এই সমস্ত কর্মীরা আওয়ামী লীগে যথেষ্ট যোগ্যতা এবং ভূমিকা রেখেছে। বেগম মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগের প্রবেশ করেছেন দুঃসময়ে। নব্বই দশকে আওয়ামী লীগের ঢুকেছেন নুরুল ইসলাম নাহিদ, নুর আলম লেলিনের মত মেধাবী নেতারা। আশির দশকে আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেছেন আবদুল মান্নান খানের মতো পরিশ্রমী নেতারা। ছাত্র ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগে প্রবেশ একটি স্বাভাবিক এবং নিয়মিত ঘটনা। নব্বইয়ের দশকে দেখা গেছে যে, জাসদ থেকে বিপুল পরিমাণ নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেছেন। শাহজাহান খান, শফি আহমেদের মত একসময় জাঁদরেল জাসদ ছাত্রলীগ করারা এখন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃত্বে আছেন। জাসদ থেকে আওয়ামী লীগে আসাকেও আওয়ামী লীগের নেতারা খুব একটা খারাপ চোখে দেখছেন না। এছাড়াও ন্যাপ, গণতান্ত্রিক পার্টি গণতান্ত্রিক পার্টি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে আওয়ামী লীগে লোকজন ঢুকতেই পারে। কিন্তু ২০০৮ সালের পর উদ্বেগজনকভাবে ধর্মান্ধ, মৌলবাদী, উগ্রবাদী এবং বিএনপির রাজনীতি থেকে আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেছে। এরকম ব্যক্তিদের সংখ্যা এখন আওয়ামী লীগে কম নয়।
এরা আওয়ামী লীগে ঢুকেছে মূলত তিনটি কারণ। প্রথম কারণ হলো যে, গ্রেফতার, হয়রানি ইত্যাদি এড়ানোর জন্য তারা আওয়ামী লীগের আশ্রয় নিয়েছে। দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগে নব্য গজিয়ে ওঠা এমপিরা তাদের দল ভারী করার জন্য, স্থানীয় পর্যায়ে তাদের শক্তি বাড়ানোর জন্য বিএনপি জামাত থেকে লোকজনকে ভাড়া করে এনেছে। তৃতীয়ত, এরা খোলস পাল্টিয়ে নানা রকম সুবিধা আদায়ের জন্য আওয়ামী লীগে ঢুকেছে। আর যে কারণেই হোক না কেন ২০০৮ সালের পর যারা আওয়ামী লীগের ঢুকেছে তাদেরকে এখন নিরীক্ষার আওতায় আনা হবে এবং যদি নিরীক্ষায় দেখা যায় যে তাদের উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগের আদর্শ বাস্তবায়ন নয়, তাদের উদ্দেশ্য অন্য তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এটি হবে আওয়ামী লীগের এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় শুদ্ধি অভিযান এমনটি বলেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।