নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:১৮ পিএম, ০১ অগাস্ট, ২০২১
নিজেকে কথিত ‘আসল বিএনপি’ বা পুনর্গঠনের উদ্যোক্তা দাবি করে কামরুল হাসান বলেছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে রাজনৈতিক লড়াই করার জন্য বিএনপি এখন সুসংহত অবস্থায় নেই। ক্ষমতায় গেলে বিএনপি মানুষের জন্য কী করতে পারবে, সে হোমওয়ার্ক নেই। আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার মতো শক্তিশালী নেতৃত্ব পেয়েছে। কিন্তু বিএনপির শেখ হাসিনা কোথায়? এ ছাড়া বিএনপি জনস্বার্থ ইস্যুতে রাজনীতিটা করতে পারছে কি না, সে প্রশ্নও তোলেন কামরুল হাসান।
রোববার (১ আগস্ট) কামরুল হাসান ভার্চ্যুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। তিনি লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। সেখানে তিনি বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, জোর করে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি ও গৃহিণী খালেদা জিয়া ক্ষমতা ধরে রেখেছেন। সবকিছু পুত্রের কথায় চলবে না।
কামরুল হাসান বলেন, বিএনপিতে জিয়াউর রহমানকে সামনে রেখে রাজনীতি করতে হবে। খালেদা জিয়াকে রেখেই দল পুনর্গঠন করতে হবে। তবে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে দেওয়া যাবে না। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায়ই নতুন নেতৃত্বের কথা বলেন কিন্তু বিএনপিতে সেটা নেই কেন? এ ছাড়া তিনি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে সজ্জন ব্যক্তি উল্লেখ করে তাঁকে সামনে রেখে বিএনপি পুনর্গঠন করার কথা বলেন।
কামরুল হাসান বলেন, গণতান্ত্রিক উপায়ে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচন করে তৃণমূল পর্যায়ে ঢেলে সাজাতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত জামায়াত ছাড়ার ব্যাপারটা নিশ্চিত না হচ্ছে, সরকারকে আরও কঠোর হয়ে জামায়াতপন্থী বিএনপি নেতা-কর্মীদের নির্মূলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে কামরুল হাসান বলেন, ‘বিএনপির বর্তমান অকার্যকর রাজনীতির কারণে সারা দেশের নেতা-কর্মীরা বলি হচ্ছেন। কিন্তু আজকের বেগম জিয়া সরকারের সঙ্গে আপস করে নিজ গৃহে থাকার সুবিধা নিয়ে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দলের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছেন। অন্যদিকে একজন তারেক রহমান সুদীর্ঘ সময় নিয়ে দেশের বাইরে অবস্থান করে এখনো মানি মেকিংয়ে আছেন এবং আরামে আছেন। তাঁর মনোনয়ন-বাণিজ্য চলছে।’
সরকারের উদ্দেশে কামরুল হাসান বলেন, ‘আপনারা খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তির জন্য চিন্তা করুন। সেটা বৃহৎ রাজনৈতিক কারণে। আর যদি আইনের গতিতে সবকিছু চলতে থাকে, তবে তাঁর আজকের পরিণতির জন্য বলব, এটিই প্রকৃতির বিচার। কারণ, তিনি অপরাধীও।’
সংবাদ সম্মেলনে কামরুল হাসান কয়েকটি ঘোষণা দেন। এ বছরের মধ্যেই দলীয় বিপ্লব করবেন। বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে প্রতীকী উচ্চ আদালত বসাবেন। সেখানে গত ২০ বছরের মধ্যে বেঁচে থাকা কাউন্সিলরদের ভোটে শীর্ষ নেতা বাছাই করা হবে। আগামী ২ সেপ্টেম্বর বিএনপির ওপর ‘মম অব দ্য ডন’ নামে একটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করবেন। জামায়াতকে জোটের নাম থেকে বাদ দেওয়া, বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে পররাষ্ট্রনীতি দাঁড় করানো, জনস্বার্থের রাজনীতি, স্বেচ্ছাসেবক দলকে করোনা মোকাবিলায় কাজে লাগানো। রাজনৈতিক দলকে প্রণোদনা দিতে নির্বাচন কমিশনকে বাধ্য করা এবং খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বিএনপির নীতিনির্ধারণী থেকে অব্যাহতি নিতে বাধ্য করা।
কাউন্সিল প্রসঙ্গে বিএনপি পুনর্গঠনের কথিত এই উদ্যোক্তা বলেন, খালেদা জিয়া একপ্রকার মুচলেকা দিয়ে রাজনীতি থেকে সরে গেছেন। তারেক রহমান বাংলাদেশে বসে রাজনীতি করছেন না। দলের দুর্দশা দলের নেতা-কর্মীরা মেনে নিতে পারছেন না। এ ছাড়া তিনি জানান, তাঁর সঙ্গে দলের জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের প্রায় সবাই আছেন। কিন্তু কৌশলগত কারণে এখন নাম প্রকাশ করছেন না।
২০১৫ সালের ৯ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজেকে ‘আসল বিএনপি’র নেতা ও পুনর্গঠনের উদ্যোক্তা দাবি করে আলোচনায় আসেন কামরুল হাসান।
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।