নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, আমরা মনে করি, বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া একসময় বলেছিলেন শিশু আর পাগল ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নেই। ৯১ সালে সামরিক শাসকদের হাত থেকে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল। গণতন্ত্র ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর গণতন্ত্র বুটের তলায় পিষ্ট হয়েছে। সেই গণতন্ত্রকে উদ্ধার করার লক্ষ্যে বিএনপি যখন ক্ষমতায় এলো, মানুষ তখন তাদের কাছে প্রত্যাশা করেছিল যে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে। আমার ভোট আমি দিতে পারব, এই ছিল মানুষের প্রত্যাশা।
নির্বাচনের আরও দুই বছর বাকি আছে। কিন্তু এরমধ্যেই বিএনপি বলছে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, নিরপেক্ষ হবে না। চলমান ইস্যুতে বাংলা ইনসাইডারের সাথে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, কিন্তু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বিএনপি আবারও জিয়া এরশাদ স্টাইলে নির্বাচন করলো। গুণ্ডা দিয়ে তারা ভোটকেন্দ্র দখল করলো। ব্যালটে সিল মেরে বাক্স লুকোনোর প্রক্রিয়া শুরু করলো। তার প্রতিবাদেই জননেত্রী শেখ হাসিনা যিনি বিরোধী দলের নেত্রী ছিলেন, তিনি বললেন যে এই বিএনপি সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। আমরা নিরপেক্ষ নেতৃত্বে নির্বাচন চাই। এই আন্দোলন যখন তিনি শুরু করলেন, তখন জনগণ সাড়া দিলেন। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া বললেন শিশু আর পাগল ছাড়া নিরপেক্ষ লোক নেই। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে বাংলাদেশের মানুষ তাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ হলেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তথাকথিত একটি ভোট ডাকাতি নির্বাচন করার মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করলেন। কিন্তু জনতার দাবির মুখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবি বাস্তবায়ন করলো, সংবিধানে তা সন্নিবেশিত হলো। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে একমাত্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জননেত্রী শেখ হাসিনাই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন ২০০১ সালে। তাছাড়া কেউই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নাই। ক্ষমতায় যেনতেনভাবে থাকতে চেয়েছে। ২০০৬ সালে বেগম খালেদা জিয়া যেনতেনভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রায় এককোটি একুশ লক্ষ ভুয়া ভোটার করেছিলেন, পছন্দমতো ছাত্রদলের দলীয় দেড়শ ক্যাডারকে নির্বাচন কমিশনে সহকারী রিটার্নিং অফিসার করেছিলেন, এবং তাদের পছন্দমতো লোককে প্রিসাইডিং অফিসার করেছিলেন। এবং নির্বাচন কমিশনের নির্দেশেই সেদিন ভোটার বৃদ্ধি করা হয়েছিল। সংবিধানকে লঙ্ঘন করে তাদের পছন্দমতো লোককে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান করার জন্য তাদের দলের একসময়ের যে নেতা ছিল, সে বিচারপতিকে প্রধান উপদেষ্টা করার জন্য হঠাত করে বিচারপতিদের বয়স বৃদ্ধি করলেন। যার ফলে মানুষের মনে সন্দেহ হলো বিএনপি মানুষের ভোটের অধিকার আবার হরণ করতে চায়। তাই সেদিন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জামাত, বিএনপি, মুসলীম লীগ বাদে আর সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হলো খালেদা এবং তার ছেলে তারেকের এই দুরভিসন্ধির বিরুদ্ধে। এবং তার প্রমাণ সেদিনকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার একগুঁয়েমি এবং তারেক জিয়ার যেনতেনভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্রের কারণেই আজকের তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিতর্কিত হলো। তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বিতর্কিত করেছে, হত্যা করেছে বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া এবং নিজামি। তারা দুজন মিলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
আপনারা যে গত দুটো নির্বাচন করেছেন, তাতে কোনো দল অংশগ্রহণ করেন, ১৫৩ জন বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েছে এবং গতবারের নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। অনেকে বলছে যে দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এই ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী যে নির্বাচন হয়, সে নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করার জন্য, সব দলকে অংশগ্রহণ করার জন্য সেদিন সর্বোচ্চ ছাড় দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে ফোন করে বলা হয়েছিল যে আসেন আমরা আলোচনায় বসি। সেদিন তিনি যে ব্যবহার করেছিলেন জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে, জাতি তা জানে। যেখানে মানুষের ভোটাধিকার নিয়ে কথা হচ্ছে, সেখানে মতিউর রহমান নিজামীর মুক্তির দাবিতে হরতাল ছিল বলেই সেদিন খালেদা জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে দুর্ব্যবহার করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সময় থেকেই বিএনপি-জামাতের একটি শক্তিশালী জোট যারা বাংলাদেশকে চায়নি বরং পাকিস্তানকে চেয়েছিল, সে শক্তির প্রতিবিধিত্ব করে বিএনপি। এই বিএনপি যদি নির্বাচনে না যায়, তাহলে বাকি যেসব রাজনৈতিক দল আছে, তারা সবজায়গায় প্রার্থী দিতে পারবেনা। যার ফলে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য, অসাংবিধানিক শক্তিকে উত্থিত করার জন্য বিএনপি সেদিন নির্বাচনে যায়নি। না যাওয়ার কারণেই অন্য কোনো দল প্রার্থী না দেবার কারণে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জিতেছে। কিন্তু নির্বাচন তো ঠিকই হয়েছে। আর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের যে নির্বাচন হয়েছিল, সেখানে নির্বাচন করার জন্য বিএনপি যায়নি। নইর্বাচন কমিশনের রেজিস্টারভুক্ত নয় এমন অনেক দলকেও গণভবনে ডেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবাইকে ডেকে কথা বলেছেন। একটি নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার জন্য শক্তিশালী প্রতিপক্ষ থাকে। বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্য করার জন্য নির্বাচনে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, যখন নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলো, তখন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ জননেত্রী শেখ হাসিনা তার জোটের প্রার্থী নির্বাচিত করে দিয়ে ১৫ দিন ধরে সারা বাংলাদেশ চষে বেড়াচ্ছিল ক্ষমতাসীন দল। প্রধানমন্ত্রী নিজেও তার নির্বাচনী এলাকাসহ অন্যান্য এলাকায় গিয়েছিলেন। কিন্তু ১৫ দিন পর্যন্ত বিএনপি কোনো একক প্রার্থী দিতে পারেনি। ডক্টর কামাল হোসেন যখন ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন যখন ২০ জন জামাত নেতাকে মনোনয়ন দেয়া হলো, তখন শোনা গিয়েছে যে তারেক জিয়া বিপুল পরিমাণে উৎকোচ গ্রহণ করার কারণে এই ২০ জন জামাত নেতাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, তারা লোক দেখানোর জন্য নির্বাচন করেছে, মনোনয়ন বাণিজ্যের জন্য নির্বাচন করেছে এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না, আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে তিনি কী মনে করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জনগণ বিএনপির সাথে নেই। সংবিধানের ১১৮ থেকে ১২৬ ধারা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা, নির্বাচন কমিশনের কী দায়িত্ব তা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন একটি স্বতন্ত্র সংস্থা। এখানে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবেন, সব দল রাজনৈতিকভাবে অংশগ্রহণ করবে। যখন নির্বাচন ঘোষিত হবে, তখন সব সংস্থা নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে যাবে। বিএনপি যদি আন্দোলন করতে পারে, তাহলে ভালো কথা। বাংলাদেশের জনগণ বিএনপির আন্দোলনকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে। বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন, গান-পাউডারের আন্দোলন, অন্তসত্ত্বা মহিলাকে পুড়িয়ে মারার আন্দোলন। বিএনপির আন্দোলন মানেই ঘৃণা। এছাড়া আর কিছু নেই।
মন্তব্য করুন
দেশজুড়ে বিশেষ করে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু একটি ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক তথ্যও ডেঙ্গু আক্রান্তের তীব্রহারের ইঙ্গিত দেয়। ইতোমধ্যে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাফল্য দেখিয়েছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও কলকাতা মডেল। সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও মশা গবেষক অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার কেবি (কবিরুল বাশার) মডেল নামে একটি মডেল তৈরি করেছেন। বুধবার (১৫ মে) বাংলা ইনসাইডারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মডেল সম্পর্কে বিস্তারিত জানান।
বাংলাদেশ করোনা সংক্রমণ খুব সফলভাবে মোকাবেলা করেছে। মানুষ থেকে মানুষের ছড়ানো এই ভাইরাসটি মোকাবেলা করা খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে করোনার বিরুদ্ধে জয়ী হতে পেরেছে বাংলাদেশ।
দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা পরিচিত শত্রু এডিস মশা এবং তার দ্বারা সংক্রমিত রোগ ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া। ২০০০ সাল থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রায় প্রতিবছরই কমবেশি ডেঙ্গু হয়েছে। ডেঙ্গু এবং এর বাহক মশা সম্বন্ধে আমরা সকলেই অবগত এবং এর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও আমাদের জানা। তারপরেও আমরা কেন ব্যর্থ হচ্ছি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে?
গত কয়েকদিন ধরে
প্রতিদিন গড়ে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে প্রায় আড়াই হাজারের বেশী মানুষ। ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। কোনভাবেই যেন ঠেকানো যাচ্ছে না এডিস মশা এবং তার ডেঙ্গু সংক্রমণ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে এখন পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ২৩ হাজার মানুষ ডেঙ্গু রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। যদিও এই পরিসংখ্যানটি সম্পূর্ণ নয়। কারণ এটি শুধুমাত্র যে সকল হাসপাতালগুলোও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে রিপোর্টিং করে তাদের তথ্য। এছাড়াও অনেক হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে যার তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাতে পৌঁছায় না। আবার অনেক রোগী বাসায় থেকেও চিকিৎসা নিচ্ছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব গবেষণাগার সবসময়ই মশা ও মশা বাহিত রোগ নিয়ে গবেষণা করে। আমরা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা, মাঠ পর্যায়ের এডিস মশার ঘনত্ব, বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, আদ্রতা এই কয়েকটি বিষয়কে নিয়ে মাল্টিভেরিয়েট এনালাইসিস করে ফোরকাস্টিং মডেল তৈরি করি। যার মাধ্যমে ডেঙ্গু সম্বন্ধে আগাম ধারণা দিতে পারি। আমাদের গবেষণাগার থেকে এ পর্যন্ত আমরা যে আগাম তথ্য দিয়েছি তার সবগুলোই সঠিক হয়েছে।
আমাদের বর্তমান ফোরকাস্টিং মডেল বলছে আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ হবে।
শুধুমাত্র ঢাকায় নয় বাংলাদেশের সব জায়গায় ডেঙ্গু আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে যাবে।
বাংলাদেশের ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা একটি মডেল তৈরি করেছি।
এই মডেলটি অনুযায়ী পাঁচ বছর কার্যক্রম চালাতে পারলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ হবে বলে আমি নিশ্চিত করতে পারি। ধারণা করা হয় এবছর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। আমার এই মডেলটি বাস্তবায়নে যে ব্যয় হবে তা মোট নিয়ন্ত্রণ ব্যয়ের চাইতে অনেক কম হবে। মানুষের কষ্ট লাঘব হবে। বাংলাদেশে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রস্তাবিত ”কেবি মডেল” রুপরেখা নিম্নরূপ।
১. স্বাস্থ্যকর্মী: প্রতি এক হাজার হোল্ডিং বা বাড়ির জন্য একজন করে স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দিতে হবে। আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে এই জনবল নিয়োগ করা যেতে পারে। এই স্বাস্থ্যকর্মী কাছে প্রতিটি বাড়ির মালিকের ফোন নাম্বার এবং ঠিকানা থাকবে। বাড়ির মালিকের সাথে তার নিয়মিত যোগাযোগ থাকবে। ওই বাড়িতে কারো কোনরকম জ্বর হয়েছে কিনা সেই তথ্য নিয়মিতভাবে তার কাছে থাকতে হবে। প্রতি ১৫ দিনে একদিন তার নির্ধারিত বাড়িতে গিয়ে বাড়ির মালিকপক্ষের কাউকে নিয়ে সম্পূর্ণ বাড়ি এবং বাড়ির আঙিনা ঘুরে দেখতে হবে কোথাও কোন পাত্রে পানি জমা আছে কিনা, যেখান থেকে ডেঙ্গুর বাহক এইডিস মশার প্রজনন হতে পারে। যদি ওই বাড়িতে এইডিস মশার জন্মাতে পারে বা জন্মেছে এমন কোন ধরনের পাত্র পাওয়া যায় তাহলে সেই বাড়ির লোককে দিয়ে সেইটি ব্যবস্থাপনা করতে হবে। তাদেরকে বুঝিয়ে দিতে হবে কিভাবে এই কাজটি করতে হয়। নিয়মিতভাবে তাদের এই কাজ করার জন্য অনুরোধ করতে হবে। যদি কোন বাড়িতে ডেঙ্গুর বাহক এইডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায় তাহলে সেই বাড়ির মালিককে মশার লার্ভা সম্পর্কে সম্মুখ জ্ঞান প্রদান করতে হবে। লার্ভা প্রাপ্ত বাড়ির মালিককে সর্তকতা নোটিশ প্রদান করতে হবে যেন ভবিষ্যতে আর না পাওয়া যায়। ভবিষ্যতে লার্ভা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সেই নোটিশে উল্লেখ থাকতে হবে।
বাড়ি ভিজিট করার সঙ্গে সঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য এবং উপাত্ত ডেঙ্গু নিধন অ্যাপে এন্ট্রি দিতে হবে। এন্টি দেওয়ার পরেই কেন্দ্রীয় টিম,জিআইএস টিম, র্যাপিড রেসপন্স টিম সেটি দেখতে পাবে। যদি কোন বাড়িতে ডেঙ্গু রোগী থাকে এবংএইডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায় তাহলে কেন্দ্রীয় র্যাপিড রেসপন্স টিম দ্রুত ওই বাড়ি এবং তার আশেপাশে মশা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিবে। মশা নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করে সেটিও অনলাইন অ্যাপে এন্ট্রি দিতে হবে যেন কেন্দ্রীয় টিম সেটি সহজেই মনিটরিং করতে পারে। স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে তিন ধরনের স্টিকার থাকবে;
সবুজ, হলুদ এবং লাল। যদি বাড়িতে কোন ধরনের পানি জমা না থাকে তাহলে সেই বাড়িতে সবুজ স্টিকার লাগানো, এইডিস মশার প্রজনন স্থল আছে কিন্তু লার্ভা নেই এমন বাড়িতে হলুদ আর যদি লার্ভা পাওয়া যায় তাহলে সেই বাড়িতে লাল স্টিকার লাগিয়ে দিতে হবে। বাড়ির মালিককে জানাতে হবে যে সে কোন কারণেই এই স্টিকার তুলে ফেলতে পারবে না। স্টিকার তুলে ফেললে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে ডেঙ্গু টেস্ট করার কিট থাকতে হবে।
ওই বাড়ির কারো জ্বর থাকে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা করিয়ে দিতে হবে। যদি কোন বাড়িতে ডেঙ্গু পজেটিভ পাওয়া যায় তাহলে সিটি কর্পোরেশনের চিকিৎসকের সাথে তার সংযোগ করিয়ে দিতে হবে। সিটি কর্পোরেশনের চিকিৎসক নিয়মিতভাবে তার খোঁজখবর রাখবেন এবং চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দিবেন। তার অধীনে থাকা প্রতিটি বাড়ির প্রতিবার পর্যবেক্ষণের পূর্ণাঙ্গ তথ্য ছবিসহ অ্যাপে আপলোড করতে হবে।
শুধুমাত্র আবাসিক এলাকা নয় একজন স্বাস্থ্যকর্মীর অধীনে তার এলাকার নির্ধারিত সমস্ত হোল্ডিং গুলোই থাকবে। সেটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল বা অফিস আদালতও হতে পারে। স্বাস্থ্যকর্মীকে ১৫ দিনে একদিন যেতেই হবে এবং সেই বাড়ির সমস্ত তথ্য অনলাইনে আপলোড করতে হবে। এ জাতীয় ডাটা ম্যানেজমেন্ট এর জন্য বিভিন্ন ধরনের ফ্রি অ্যাপস আছে। অথবা সিটি কর্পোরেশন নিজেরাও এই অ্যাপ তৈরি করে নিতে পারে।
২. ক্লিনার: প্রতিটি ব্লকে একজন করে ক্লিনার থাকবে। ক্লিনারের কাজ হচ্ছে আটকে যাওয়া ড্রেন, ডোবা, নর্দমার পানি প্রবাহিত রাখা। কারণ আবদ্ধ পানিতে মশা জন্ম হয়। সাথে সাথে তার ব্লকের বিভিন্ন স্থানে পড়ে থাকা পাত্র যেখানে এডিস মশা জন্মানোর সম্ভাবনা আছে সেগুলো পরিষ্কার রাখা।
৩. মশককর্মী: প্রতিটি ব্লকে দুজন করে মশককর্মী থাকবে যারা সকালে লার্ভিসাইড এবং বিকালে এডাল্টিসাইড স্প্রে করবে। প্রতি তিন দিন পর পর অবশ্যই একটি এলাকাতে লার্ভিসাইড এবং এডাল্টিসাইড স্প্রে নিশ্চিত করতে হবে। আর এই নিশ্চিতকরণের দায়িত্বে থাকবে একজন ওয়ার্ড সুপারভাইজার। ওয়ার্ড সুপারভাইজার আঞ্চলিক কীটতত্ত্ববিদকে রিপোর্ট করবেন।
৪. সুপারভাইজার: একটি
ওয়ার্ড এর জন্য একজন সুপারভাইজার থাকবে। তিনি তার ওয়ার্ডের সমস্ত স্বাস্থ্য কর্মী মশককর্মীদের নিয়মিত কাজ নিশ্চিত করবেন। তার স্বাস্থ্য কর্মীদের কাজের মাসিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন ওয়ার্ড কমিটিকে প্রদান করবেন।
তার ওয়ার্ড এ প্রতিটি বাড়ির মশা বাহিত রোগের খবরা খবর রাখবেন। তার ব্লকে কোথায় মশা জন্মানোর স্থান আছে সেটি কিউলেক্স মশা না এডিস মশা তার রেকর্ড তার কাছে থাকতে হবে। সাথে সাথে তার ব্লকের জনগণকে সচেতন করা এবং মশা নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সম্পৃক্ত করার দায়িত্ব তার থাকবে। তার অধীনে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়মিত মোবাইল অ্যাপে এন্ট্রি দিচ্ছে কিনা তা মনিটরিং করবেন।
৫. সহকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা: প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে চিকিৎসক সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে থাকবেন। তিনি সুপারভাইজারের কাছ থেকে ডেঙ্গুর বাহক এইডিস মশা, তার প্রজনন স্থল, ঘনত্ব, ডেঙ্গু রোগী ইত্যাদি সমস্ত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করবেন। তার ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা ও খবরাখবর রাখবেন। তিনি তার আঞ্চলিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে নিয়মিত মাসিক সভায় প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
আইন প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন: পৃথিবীতে কোন নাগরিকের সম্পৃক্ততা ছাড়া মশা নিয়ন্ত্রণ করা কখনোই সম্ভব নয়। নাগরিকদেরকে মশা নিয়ন্ত্রণে সম্পৃক্ত করার জন্য পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশে আইন রয়েছে। সেরকম একটি আইন বাংলাদেশে তৈরি করে তার বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। কোন ব্যক্তি যেন তার নিজ জায়গায় মশার প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি করে অপরের ক্ষতি করতে না পারে তা রোধ করাই এই আইনের উদ্দেশ্য।
মশা নিয়ন্ত্রণে কীটনাশকের পর্যাপ্ততা: মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত কীটনাশক জনগণের হাতের নাগালে আনতে হবে। তেলাপোকা এবং ইদুর মারার কীটনাশক এর মত মশা নিয়ন্ত্রণের কীটনাশক মানুষের কাছে সহজলভ্য হতে হবে। যেন মানুষ সহজেই এ কীটনাশক কিনে তার বাড়ি এবং আশেপাশে ব্যবহার করতে পারে।
কীটনাশক রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সহজীকরণ: আমাদের দেশে একটি কীটনাশক বাজারজাত করতে গেলে যে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া রয়েছে সেটিতে দীর্ঘসূত্রিতা দেখা যায়। একটি কীটনাশক রেজিস্ট্রেশন এর জন্য আবেদন করার পরে সর্বোচ্চ ৩ মাসের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা প্রয়োজন।
মশক নিয়ন্ত্রণ বা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কাজটি সুচারুরূপে সম্পন্ন করার জন্য নিম্নলিখিত কমিটি করা যেতে পারে:
কেন্দ্রীয় কমিটি, কমিটির সদস্য: মেয়র, উপদেষ্টা বা পরামর্শক, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা, উপ প্রধান স্বাস্থ্যকর্মকর্তা, স্বাস্থ্যকর্মকর্তা,আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, কীটতত্ত্ববিদ, জিআইএস এক্সপার্ট ও কাউন্সিলর।
কাজ: প্রতি দুই মাস অন্তর অন্তর ডেঙ্গু পরিস্থিতি ও মশক সমস্যা বিষয়ক মূল্যায়ন সভা। প্রতিটি ওয়ার্ডকে লিখিত আকারেপরবর্তী দিকনির্দেশনা প্রদান। মশা নিয়ন্ত্রণে কীটনাশক,
লোকবল, এবং সরঞ্জামাদি নিশ্চিত করা।
জি আই এস টিম, কমিটির সদস্য: প্রধান জিআইএস এক্সপার্ট, কীটতত্ত্ববিদ,স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
কাজ: স্বাস্থ্যকর্মীরা যে তথ্য উপাত্ত অ্যাপে এন্ট্রি দিচ্ছে তা নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ ও ম্যাপে রূপান্তর। ডেঙ্গুর হট স্পট নির্ধারণ। হটস্পট অনুযায়ী র্যাপিড রেসপন্স টিমের কাছে বাড়ির ঠিকানা ও তথ্য উপাত্ত সরবরাহ করা। র্যাপিড রেসপন্স টিমের কার্যক্রম নিশ্চিত করা।
মনিটরিং এন্ড ইভালুয়েশন টিম, কমিটির সদস্য: এটি সিটি কর্পোরেশনের বাইরের কোন অভিজ্ঞ কীটতত্ত্ববিদ বা প্রতিষ্ঠান দিয়ে করিয়ে নিতে হবে।
কাজ: দুই মাস অন্তর অন্তর প্রতিটি ওয়ার্ডের ডেঙ্গু পরিস্থিতি ও মশক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করবেন। প্রতিটি ওয়ার্ডের মশার ঘনত্ব ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করবেন। তাদের মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনলাইনে এন্ট্রি করবেন। এতে স্পষ্ট হবে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে যে কার্যক্রম করা হয়েছে সেটি আসলে ফলাফল দিয়েছে কিনা। ওয়ার্ড কমিটির কার্যক্রম কতটা ফলপ্রসু হলো তা এই মনিটরিং এন্ড ইভালুয়েশন টীম এর তথ্য উপাত্ত থেকে তুলনামূলক চিত্র পাওয়া যাবে
এবং এটি সরাসরি অনলাইনে দেখা যাবে। মনিটরিং এন্ড ইভালুয়েশন টিম তাদের মূল্যায়ন প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সরবরাহ করবে এবং এই প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় কমিটির পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
র্যাপিট রেসপন্স টিম, কমিটির সদস্য: কীটতত্ত্ববিদ,মশক সুপারভাইজার, স্প্রেম্যান, ফগারম্যান, ক্লিনার, ড্রাইভার।
কাজ: জিআই স্টিমের তথ্য উপাত্ত অনুযায়ী কোথাও ডেঙ্গুর রোগী পাওয়া গেলে সেই বাড়ির ৪০০ গজের মধ্যে উড়ন্ত মশা নিধন নিশ্চিত করা। কোথাও এইডিস মশার ঘনত্ব বেশি পাওয়া গেলে সেইখানেও মশা নিধন নিশ্চিত করা। তাদের কার্যক্রম সম্পন্ন করে মোবাইল অ্যাপে এন্ট্রি দেওয়া।
আঞ্চলিক কমিটি, কমিটির সদস্য: সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি অঞ্চলে একটি করে আঞ্চলিক কমিটি থাকতে হবে। আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা,কীটতত্ত্ববিদ,মশক সুপারভাইজার।
কাজ: তার অঞ্চলে মশক নিধন কার্যক্রম তদারকি করা। কেন্দ্রীয় কমিটিকে অবহিত করা। প্রতি দুই মাস অন্তর অন্তর প্রতিটি ওয়ার্ডের ডেঙ্গু পরিস্থিতি ও মশক সমস্যা বিষয়ক মূল্যায়ন সভা। প্রতিটি ওয়ার্ডকে লিখিত আকারেপরবর্তী দিকনির্দেশনা প্রদান। মশা নিয়ন্ত্রণে তার অঞ্চলে কীটনাশক, লোকবল, এবং সরঞ্জামাদি নিশ্চিত করা।
ওয়ার্ড কমিটি, কমিটির সদস্য: সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে ওয়ার্ড কমিটি থাকতে হবে। কাউন্সিলর, সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা,মশক সুপারভাইজার।
কাজ: তার ওয়ার্ডে মশক নিধন কার্যক্রম তদারকি করা। আঞ্চলিক কমিটিকে অবহিত করা। প্রতি মাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ও মশক সমস্যা বিষয়ক মূল্যায়ন সভা। মশক সুপারভাইজার কে লিখিত আকারেপরবর্তী দিকনির্দেশনা প্রদান। মশা নিয়ন্ত্রণে তার ওয়ার্ডে কীটনাশক, লোকবল, এবং সরঞ্জামাদি নিশ্চিত করা।
এ কাজগুলোকে বাস্তবায়নের জন্য অভিজ্ঞ কীটতত্ত্ববিদ দিয়ে আধুনিক এবং সময় উপযোগী গাইডলাইন তৈরি করে নিতে হবে। মশা নিয়ন্ত্রণের আধুনিক সরঞ্জামাদি এবং আধুনিক কীটনাশক নির্দেশিকা এই গাইডলাইন থাকবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সারা দেশের মশা এবং অন্যান্য বাহক নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি স্বতন্ত্র সেন্টার তৈরি করতে পারে। যেটির নাম হতে পারে বাংলাদেশ ভেক্টর কন্ট্রোল রিসার্চ সেন্টার। এই সেন্টারের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের মশা এবং অন্যান্য বাহক নিয়ন্ত্রণ হতে পারে। এই সেন্টারে বছরব্যাপী মশা, অন্যান্য বাহক ও কীটনাশক নিয়ে গবেষণা হবে এবং তারাই নির্দেশনা দিবে কখন কোন কীটনাশক কোন বাহক এর জন্য ব্যবহৃত হবে। বাহকের আচরণ এবং নতুন নতুন বাহক এর ক্ষেত্রে কি ধরনের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে সেটির দায়িত্ব তাদের উপর থাকবে। এই সেন্টারে অভিজ্ঞ কীটতত্ত্ববিদ নিয়োগ দিতে হবে। এই সেন্টার দেশব্যাপী মশা ও অন্যান্য বাহক নিয়ন্ত্রণের অভিভাবক হিসেবে কাজ করবে। এই প্রতিষ্ঠান অভিজ্ঞ কীটতত্ত্ববিদদের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন সেক্টরের জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তাদেরকে বাহকের আচরণ, প্রজনন এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্পর্কে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ প্রদান করবে। সাথে সাথে মশা নিয়ন্ত্রণের আধুনিক সরঞ্জাম ও কীটনাশক সরবরাহ করবে।
ডেঙ্গু যেহেতু এখন সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই তাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোকে মশক নিধনে যুগোপযোগী করে তুলতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ এবং জেলা পরিষদ প্রতিটি জায়গায় তাদের মশক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
প্রতিটি জেলাতে জেলা কীটতত্ত্ববিদ এর একটি পদ রয়েছে। কোন কোন জেলাতে এপদে কর্মকর্তা রয়েছে। যেসব জেলাতে পদগুলি ফাঁকা রয়েছে সেসব জেলাতে এই পথ গুলো পূরণ করে এই মশা নিয়ন্ত্রণ কাজ জোরদার করা প্রয়োজন।
এই মুহূর্তে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নাজুক। আগামী দুটি মাস পরিস্থিতি খারাপ থাকবে। তাই এই মুহূর্তে একে অপরকে দোষারোপ না করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এবং জনগণকে যার যার অবস্থান থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভালো হয়ে গেলে নীতি নির্ধারকরা ভুলে যাবেন না। আগামী বছরগুলোর জন্য একটি টেকসই পরিকল্পনা তৈরি করার জন্য উদ্যোগী হবেন নিশ্চয়ই।
জাহাঙ্গীরনগর প্রাণিবিদ্যা মশা গবেষক অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
দেশজুড়ে বিশেষ করে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু একটি ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক তথ্যও ডেঙ্গু আক্রান্তের তীব্রহারের ইঙ্গিত দেয়। ইতোমধ্যে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাফল্য দেখিয়েছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও কলকাতা মডেল। সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও মশা গবেষক অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার কেবি (কবিরুল বাশার) মডেল নামে একটি মডেল তৈরি করেছেন। মঙ্গলবার (১৫ মে) বাংলা ইনসাইডারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মডেল সম্পর্কে বিস্তারিত জানান।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, এপ্রিল মাসে তীব্র তাপদাহ যাচ্ছে। এটা একটু কষ্টদায়ক বটে। তবে মে মাসেও তো আবহাওয়া এমন থাকবে এবং সে সময় প্রচন্ড গরম থাকবে। কিন্তু তাই বলে তো আর স্কুল, কলেজ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এত লম্বা সময় ধরে বন্ধ রাখা যায় না।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, যারা দলের নির্দেশনা মানতে পারেননি, তারা তো না পারার দলে। দল থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না। এটা ছিল দলের বৃহত্তর স্বার্থে। সেজন্য সেটা পালন করা সবাই নৈতিক দায়িত্ব ছিল। কিন্তু যখন কেউ কেউ সেই নির্দেশ মান্য করেননি সেটার দায়-দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে। দলের প্রতি তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে আমার বড় প্রশ্ন রয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে একটি স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজনীতির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর উত্থান হয়েছে এবং তিনি যে দল ও ত্যাগী নেতাদের ভালোবাসেন, তাদের প্রতি যে তার মমত্ববোধ সেটি প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্তের কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে নতুন আলোর সঞ্চার দেখছেন এবং তারা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন যে, রাজনীতি রাজনীতিবিদদের কাছেই থাকবে।