নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০২ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১
টাকার বিপরীতে বেড়ে চলছে মার্কিন ডলারের দাম। রপ্তানি কম হওয়া এবং রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার কারণে আগের তুলনায় বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা। ডলারের দাম অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকার কারণে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি এবার উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে বৈদেশিক মুদ্রার ডিলার হিসেবে কর্মরত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো।
বাজার সূত্রে জানা গেছে, দেশের ব্যাংকগুলোতে এখন নগদ মার্কিন ডলারের মূল্য ৮৭ টাকা। আমদানি পর্যায়ে ডলারের দর উঠেছে ৮৪ টাকা ৭৫ পয়সা। অর্থাৎ যারা ভ্রমণ করতে বিদেশে যাচ্ছেন, তাদের ৮৭ টাকা দরে ডলার কিনতে হচ্ছে। এ যাবৎকালে ডলারের সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থান ছিল গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। সেসময় আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দর ৮৪ টাকা ৯৫ পয়সায় উঠেছিল। গত বৃহস্পতিবার সে রেকর্ড ভেঙে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকাকে দুর্বল করে দিয়ে ডলার হয়েছে আরো শক্তিশালী। এদিন আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারের দাম উঠেছে ৮৫ টাকা ৫০ পয়সায়। খোলা বাজারে ডলারের বিনিময় মূল্য ছিল ৮৭ টাকা ৮০ পয়সা।
ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় দেশে চাপ বেড়েছে আমদানিতে। ফলে এর দায় পরিশোধে লাগছে বাড়তি ডলার। এ কারণে বাড়ছে ডলারের দর। তবে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা মজুত রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যাংকগুলোর চাহিদার বিপরীতে ডলার বিক্রি করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে নিজেদের মধ্যে ৮৫ টাকা ৩০ পয়সা দরে ডলার লেনদেন করছে ব্যাংকগুলো। গত ২ সেপ্টেম্বর এ দর ছিল ৮৫ টাকা ২০ পয়সা। আগের মাসের শুরুতে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা। এ হিসাবে ডলারের বিপরীতে ৩৪ কর্মদিবসের ব্যবধানে ৫০ পয়সা দর হারিয়েছে টাকা। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই থেকেই ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা স্থিতিশীল ছিল ডলার।
ব্যাংকগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, আমদানি দায় মেটাতে ব্যবসায়ীদের থেকে দেশি ও বিদেশি খাতের বেশিরভাগ ব্যাংক প্রতি ডলারে ৮৫ টাকা ৩৫ পয়সা পর্যন্ত নিচ্ছে। তবে নগদ ডলারের মূল্য বেশিরভাগ ব্যাংকে ৮৭ টাকার উপরে রয়েছে। কয়েকটি ব্যাংকে ৮৮ টাকা ছাড়িয়ে গেছে নগদ ডলারের মূল্য।
জানা গেছে, ব্যাংকগুলোর মতোই বেশি দামে ডলার বিক্রি করছে মানি এক্সচেঞ্জ কমিশনগুলো। মতিঝিল পাইওনির এক্সচেঞ্জের এক কর্মকর্তা জানান, তারা ডলার কিনছেন ৮৭ টাকা ৫০ পয়সায় আর বিক্রি করছেন ৮৭ টাকা ৭০ পয়সায়।
এদিকে, খোলাবাজারেও ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে ডলারের দাম। খোলা বাজারে আজকের ডলার বিক্রি হচ্ছে ৮৭ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ৮৯ টাকা পর্যন্ত এবং কিনছে ৮৭ টাকা থেকে ৮৭ টাকা ৩০ পয়সা।
ডলার বিক্রেতারা জানান, ভ্রমণ কিংবা অফিসিয়াল কাজে যারা বিদেশ যান তারাই মূলত খোলা বাজার থেকে ডলার কেনেন। এতদিন করোনার কারণে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ছিল অধিকাংশ দেশে। এখন আস্তে আস্তে খুলে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন দেশের বর্ডার। ফলে বিদেশ যাত্রা বাড়ছে। তাই ডলারের চাহিদাও বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, শিল্পের কাঁচামাল, মূলধনি যন্ত্রপাতিসহ সব ধরনের পণ্যের আমদানি বাড়ছে। ইউরোপ-আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। বাংলাদেশে করোনার মধ্যেই পুরোদমে উৎপাদন কর্মকাণ্ড চলছে। সব মিলিয়ে আমদানি বাড়াটাই স্বাভাবিক। আর এটা অর্থনীতির জন্য মঙ্গল
মন্তব্য করুন
আগামী ৬ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করা হবে। টানা চতুর্থ মেয়াদের মত দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে আওয়ামী লীগ সরকারের এটিই হবে প্রথম বাজেট। আর এমন এক সময়ে এবার বাজেট দেওয়া হচ্ছে যখন অর্থনৈতিক সংকট ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। কিছু কিছু দৃশ্যমান সংকট সকলের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
সরকারও অর্থনৈতিক সংকটের কথা অস্বীকার করছে না বরং অর্থনৈতিক সংকট সমাধানের জন্য সরকার বিভিন্ন রকম প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থনৈতিক সংকট নিরসনের জন্য দফায় দফায় নানা রকম সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সে সমস্ত সিদ্ধান্ত অনেক ক্ষেত্রেই তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে বলেও বিভিন্ন মহল অভিযোগ করেছেন।
বিশেষ করে ব্যাংকের সুদ সীমা উঠিয়ে দেওয়া, এক ধাপে ডলারের মূল্য ৭ টাকা বাড়ানো কিংবা ক্রলিং পদ্ধতি প্রবর্তন ইত্যাদি সিদ্ধান্তগুলো কতটা বাস্তবসম্মত, কতটা দাতাদের চাপে সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আর এ কারণেই এবারের বাজেট অর্থনীতির জন্য একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন।
সরকারের পক্ষ থেকে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেছেন যে, এবারের বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হল মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস করা এবং জীবনযাত্রাকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা। তবে সরকারের পক্ষ থেকে আগামী অর্থ বছরে বড় অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য তিনটি ইস্যুকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এবং এই তিনটি ইস্যুতে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সরকার এই নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
যে তিনটি ইস্যুতে সরকার কঠোর হবে তার মধ্যে রয়েছে-
১. ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ
ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কী কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে সেটির একটি নির্দেশনা চূড়ান্ত করে ফেলেছে। এই সমস্ত ঋণখেলাপিরা ১ জুলাই থেকে বিদেশে যেতে পারবেন না, তারা কোন সুযোগ সুবিধা পাবেন না, কোন নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য ট্রেড লাইসেন্স বা কোম্পানি করতে পারবেন না- ইত্যাদি নানা রকম বিধি-নিষেধ আরোপ করা হচ্ছে দুষ্ট ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে।
২. দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান
আওয়ামী লীগ তার চতুর্থ দফার নির্বাচনী ইস্তেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি ঘোষণা করেছিল এবং দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছিল। এবার সরকার এ ব্যাপারে কঠোর হতে যাচ্ছে বলেই জানা গেছে।
চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনা এবং তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার একটি সংস্কৃতি চালু করতে চাইছে এবং সরকারি কেনাকাটায় দুর্নীতি বন্ধের জন্য সরকার আরও স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ করছে। দুর্নীতির পাশাপাশি অপচয় বন্ধের জন্য সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, যা আগামী বাজেটে জানা যাবে বলে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে।
৩. অর্থ পাচার
অর্থ পাচার প্রতিরোধে সরকার গতবছর থেকেই বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। কিন্তু সেই উদ্যোগ সফলতার মুখ দেখেনি। অর্থ পাচার বন্ধের জন্য এবং পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য গত বছরই সরকারের পক্ষ থেকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। যারা বিদেশ থেকে অর্থ নিয়ে আসবেন তাদেরকে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করা হবে না বলেও ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু তার ব্যাপারে কোন ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যায়নি। এখন সরকার কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করার ব্যাপারে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
ইতোমধ্যে অর্থ পাচার প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সরকারের সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। আর বিদেশে যারা অবৈধভাবে অর্থ পাচার করেছে তাদের তালিকা প্রস্তুত করার কাজটিও চলছে। তবে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়, সহজ নয়। আর এ কারণেই সরকারের পক্ষ থেকে অর্থ পাচার প্রতিরোধে দ্রুত কোনও ফলাফল নাও পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে এই তিনটি ইস্যুকে আগামী অর্থবছরের বাজেটে জোর দেওয়া হবে এবং সরকারের ধারণা খেলাপি ঋণ, দুর্নীতি এবং অর্থ পাচার বন্ধ করলে অর্থনীতির চেহারা পাল্টে যাবে।
বাংলাদেশ ইকোনমি সরকার অর্থনীতি
মন্তব্য করুন
গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া সূচকের বড় পতনের মধ্যদিয়ে লেনদেন হয়েছে শেয়ারবাজারে। এতে সপ্তাহজুড়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধনও পাঁচ হাজার কোটি টাকার ওপরে কমেছে।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক এবং লেনদেনের গতিও কমেছে। গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৮৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯০টির। আর ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ১ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৭ হাজার ২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৫ হাজার ২০২ কোটি টাকা বা দশমিক ৭৪ শতাংশ।
এদিকে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৪৩ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৪৫ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা দশমিক ৮১ শতাংশ। প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে এ সূচকটি কমেছে ৪১ দশমিক ২৫ পয়েন্ট বা ২ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৭ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৭ শতাংশ।
আর ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকেরও গত সপ্তাহে বড় পতন হয়েছে। গত সপ্তাহে এ সূচকটি কমেছে ৩০ দশমিক ৪১ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৪৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১০ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৮২ শতাংশ।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও কমেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৭৬৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৯৬০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১৯৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা বা ২০ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৮২১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ৪ হাজার ৮০২ কোটি ৭২ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৯৮১ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ই-জেনারেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি ৬ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ২৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাভেলো আইসক্রিম।
এছাড়া লেনদেনে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস, বেস্ট হোল্ডিং, ওরিয়ন ইনফিউশন, গোল্ডেন সন, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ফারইস্ট নিটিং এবং অ্যাডভেন্ট ফার্মা।
মন্তব্য করুন
দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রায় ৩০টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে যাচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান। অফশোর ব্যাংকিং হিসাবের আওতায় প্রবাসীরা যাতে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে ডলার জমা রাখতে উদ্বুদ্ধ হন, সেজন্য আয়োজিত নানা প্রচারণায় অংশ নেবেন তারা। পাশাপাশি অর্থ পাচার প্রতিরোধ- সংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠানেও তাদের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২৪ মে নিউইয়র্কের একটি হোটেলে প্রবাসীদের জন্য অফশোর ব্যাংকিং ফিক্সড ডিপোজিট-সংক্রান্ত প্রচারণা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান।
বিশেষ অতিথি থাকবেন নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবদুল মুহিত, ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান, নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হুদা।
ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আর এফ হোসেন, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এমডি আবুল কাশেম মো. শিরিন, ব্যাংক এশিয়ার এমডি সোহেল আর কে হুসেইন, অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মুরশেদুল কবীর ও সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিন। জানা গেছে, এ অনুষ্ঠানের খরচও বহন করবে উল্লিখিত ব্যাংকগুলো।
পাশাপাশি একই সময়ে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের আয়োজনে আন্তর্জাতিক ব্যাংক সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হবে। এ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন আরও ২৫ জন এমডি। জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে এসব ব্যাংক এমডির বিদেশ যাওয়াসংক্রান্ত নথি অনুমোদন করেছে। ব্যাংক খাতে ডলারের জোগান বাড়াতে বিভিন্ন ব্যাংক অফশোর ব্যাংকিংকে বিশেষ জোর দিয়েছে। এ জন্য নানা প্রচারণাও চালাচ্ছে ব্যাংক। তারই অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রচারণামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশিদের প্রায় ৫ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলারের অফশোর সম্পদ আছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। যা বাংলাদেশের মোট জিডিপির প্রায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ। এই সম্পদের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ এশিয়ার ট্যাক্স হেভেনগুলোতে, বাকিটা ইউরোপ ও আমেরিকায়।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ট্যাক্স
অবজারভেটরির প্রকাশিত অ্যাটলাস অফ অফশোর ওয়ার্ল্ড শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব জানা গেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের অফশোর
বিনিয়োগের ২০২২ সালের তথ্য দিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ট্যাক্স হেভেনে বিদেশি
ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান স্বল্প কর দিয়ে বা বিনা করে বিনিয়োগ করতে পারেন। আর বিনিয়োগকৃত
এই সম্পদকে অফশোর সম্পদ বলা হয়।
২০২১ সালে ট্যাক্স হেভেনে বাংলাদেশিদের
মালিকানাধীন অফশোর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৮ দশমিক ১৪৫ বিলিয়ন ডলার, যা
এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এর মধ্যে ৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছিল সিঙ্গাপুর, আরব
আমিরাত, হংকংসহ
এশিয়ার ট্যাক্স হেভেনগুলোতে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, না
জানিয়ে এই অফশোর বিনিয়োগে শূন্য দশমিক ৫ বিলিয়ন কর পাওয়া যায়নি বলে অনুমান করা যায়।
এতে আরও দেখা গেছে, ট্যাক্স
হেভেনে রিয়েল এস্টেট খাতে বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ করা মোট অফশোর সম্পদের পরিমাণ শূন্য
দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশের জিডিপির শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ।
রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগের বেশিরভাগই
সিঙ্গাপুর ও দুবাইতে। এছাড়া লন্ডন ও প্যারিসে কিছু বিনিয়োগ হয়েছে এ খাতে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, 'অফশোর রিয়েল এস্টেট
শেষ পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগকারীর মালিকানাধীন হয় কিংবা জটিল অফশোর কাঠামোর মাধ্যমে
ভিন্ন দেশের কোনো বাসিন্দার মালিকানাধীন হয়ে থাকে যেখানে প্রকৃত মালিকের পরিচয় অস্পষ্ট
থাকে।'
অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং
প্রজেক্টের (ওসিসিআরপি) সাম্প্রতিক একটি অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অন্তত
৩৯৪ জন বাংলাদেশি দুবাইয়ের ৬৪১টি আবাসিক সম্পত্তির মালিক, যার আনুমানিক মূল্য প্রায়
২২৫ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন ডলার। সংস্থাটি ২০২২ সাল থেকে এ অনুসন্ধান পরিচালনা করেছে।
ওসিসিআরপি বলছে, দুবাই
অফশোর বিনিয়োগের জন্য জনপ্রিয় কারণ 'পলাতক অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও ফিরিয়ে দেওয়ার
ক্ষেত্রে বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আমিরাত যথাযথ প্রতিক্রিয়া দেখায় না।'
এ প্রসঙ্গে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, 'তদন্তাধীন বা অন্য কোথাও নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ
হাই-প্রোফাইল ব্যক্তিরা কীভাবে যাচাই-বাছাই ছাড়াই এই সম্পদ কিনতে পারে এবং মালিক হয়ে
যেতে পারে তা বোঝা কঠিন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিজেদেরই এসব ঘটনা চিহ্নিত করতে পারা
উচিত এবং সম্পদগুলো টার্গেট করে সন্দেহজনক কিছু মনে হলে বিদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গোয়েন্দা
তথ্য শেয়ার করা উচিত।'
মন্তব্য করুন
দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রায় ৩০টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে যাচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান। অফশোর ব্যাংকিং হিসাবের আওতায় প্রবাসীরা যাতে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে ডলার জমা রাখতে উদ্বুদ্ধ হন, সেজন্য আয়োজিত নানা প্রচারণায় অংশ নেবেন তারা। পাশাপাশি অর্থ পাচার প্রতিরোধ- সংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠানেও তাদের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সরকারি-বেসরকারি প্রায় ৩০টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন । অফশোর ব্যাংকিং হিসাবের আওতায় প্রবাসীরা যাতে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে ডলার জমা রাখতে উদ্বুদ্ধ হন, সে জন্য আয়োজিত নানা প্রচারণায় অংশ নেবেন তারা। ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে যাচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমানও।