নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১২ অক্টোবর, ২০২১
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়ন দিতে গিয়ে রীতিমত কেলেঙ্কারিতে পড়েছে আওয়ামী লীগ। সারাদেশে তৃণমূলের মধ্যে এই মনোনয়ন নিয়ে নানারকম অস্থিরতা এবং উদ্বেগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিভিন্ন বিতর্কিত ব্যক্তিদেরকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দেয়ার পর আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে মনের পরিবর্তন করা হয়েছে। মনোনয়ন নিয়ে এরকম বিতর্কের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যদি কোন মনোনয়নে বিতর্কিত কাউকে পাওয়া যায় এবং সে ব্যাপারে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে মনোনয়ন পরিবর্তন করা হবে। এর ফলে আওয়ামী লীগের সভাপতির কাছে মনোনয়ন প্রাপ্ত বিতর্কিতদের নিয়ে বিভিন্ন রকম অভিযোগের স্তূপ জমা হচ্ছে।
সম্প্রতি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রুনিখাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া হিসেবে ইকবাল হোসেন ওরফে ইমদাদ ছাত্রজীবনে শিবিরের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তালিকায় ইকবাল হোসেনের নাম আসে, এটা নিয়ে এখন আওয়ামী লীগের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। শুধু এরকম নয়, বহু বিতর্কিত ব্যক্তিরাই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বা মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা পেতে যুদ্ধাপরাধীদের সন্তান এবং আত্মীয়রা তৎপর হচ্ছেন এমন কথা এখন আওয়ামী লীগেই শোনা যাচ্ছে। এছাড়াও ধর্ষণ মামলার আসামি, দলীয় নেতাকর্মীদের হত্যার মদদদাতা, আগে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া, সরকারি অর্থ লোপাট সহ বিভিন্ন অভিযোগে যারা অভিযুক্ত হয়েছেন তারাও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বলে বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন যে, মনোনয়নের নামের তালিকাগুলো এসেছে তৃণমূল থেকে। যথাসম্ভব যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে, তারপরও ভুল হতে পারে। তবে যেসব ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আওয়ামী লীগের একজন মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের কোন সন্তান, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত কোন ব্যক্তি, অতীতে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন এমন কোন ব্যক্তি এবং ধর্ষণ, নারী নির্যাতন বা অন্যান্য ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত কোন ব্যক্তি মনোনয়ন পাবেন না।
কিন্তু বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা গেছে যে, এরকম সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা স্বত্বেও অনেক ফাঁকফোকর দিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন অনেক দুর্বৃত্ত এবং যুদ্ধাপরাধীরা। বিভিন্ন এলাকায় খবর নিয়ে জানা গেছে যে, আওয়ামী লীগের এবারের মনোনয়ন নিয়ে তৃণমূল থেকে নানা রকম নয়ছয় করা হয়েছে। বিশেষ করে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এমন কিছু ব্যক্তির নাম পাঠিয়েছেন যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। বান্দরবানের লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ৬টি অভিযোগ করা হয়েছে। এই অভিযোগগুলো হলো- ধর্ষণ, টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের ভোটার করা, জন্ম সনদ বাণিজ্য, ভূমিহীনদের ঘর দিতে ঘুষ নেওয়া, সাংবাদিক নির্যাতন, রাস্তার ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মসাৎ, সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল বিতরণের বাণিজ্য। সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার হাজরার বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম। তিনি গদাইপুর চেয়ারম্যানের রাজাকার এবং যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামি মৃত্যু মোজাহার সরদারের ছেলে বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন যে, সব অভিযোগই সত্যি নয়। কিছু কিছু অভিযোগ সত্যি। যেখানে সত্যি সেখানে মনোনয়ন পরিবর্তন করা হবে। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছেন যে, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি যেহেতু দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন না সেইজন্য নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নেয়ার প্রতিযোগিতা বেশি হচ্ছে। আর এই প্রতিযোগিতায় যুদ্ধাপরাধীর সন্তান এবং বিতর্কিতরা আসতে পারেন। আমরা যাচাই-বাছাই করছি। তবে যদি কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হয় তার মনোনয়ন বাতিল করা হবে।
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।