স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদ (স্বাচিপ) এর মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেন, প্রথম কথা হলো, খালেদা জিয়ার মুখে এবং অন্যান্য পথে রক্ত যাচ্ছে এই কথাটার সত্যতা আছে কিনা এটা নিয়ে সন্দেহ আছে। এখন আমি যতদূর জানি, গতকাল সাড়ে দশটার দিকে এন্ডোসকপি করানো হয়েছে, বাইরের একজন নামীদামী ডাক্তার দিয়ে করেছে। এখানে কোনো ফাইন্ডিং নাই। রক্ত যাচ্ছে এ রকম কোন হিস্ট্রোরিও শুনি নাই আমরা। ভিতরে আদৌ কি হচ্ছে সেটা তো আমরা জানি না। ওখানকার হাসপাতালের ডাক্তাররাও কিন্তু কিছু বলে না। বোর্ডের সিদ্ধান্ত কিংবা যারা চিকিৎসা করতেছেন তারাও কিন্তু কোন কিছু বলে না। খালেদা জিয়া যখন বঙ্গবন্ধু ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি ছিলো তখন তার ডাক্তাররা কিন্তু প্রেস ব্রিফ করতো। বলতো যে কি অবস্থায় আছে। এখন কিন্তু সেখানে বলতেছে না।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও লিভার সিরোসিস সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান তুহিন।
অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেন, যতদূর আমরা খবর পায় উনি ভালোই আছেন। এখন এটা নিয়ে যেহেতু রাজনীতি আরম্ভ হচ্ছে, দল রাজনীতি করতেছে, এটা নিয়ে মন্তব্য করাও মুশকিল। তবে আমি যেটা মনে করি, আমাদের দেশে বিগত এক যুগে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় যে উন্নয়ন হয়েছে, আমাদের দেশেও অনেক অভিজ্ঞ ডাক্তার আছে। সেখানে এ সমস্ত রোগীর, যেহেতু বয়স্ক এবং অনেক জটিল রোগে ভুগছে, এই সমস্ত রোগীর চিকিৎসা আমাদের বাংলাদেশে আছে।
বেগম খালেদা জিয়ার মুখ ও পায়ুপথ দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে বলে জানা যায় জানালে তিনি বলেন, সরকার কিংবা বিএনপি কিংবা খালেদা জিয়ার পরিবার, তাদের উচিত বাংলাদেশে যারা নামীদামী ডাক্তার রয়েছে এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, লিভার বিশেষজ্ঞ যারা আছেন তাদেরকে নিয়ে একটা উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বোর্ড করা উচিত। বোর্ড করে চিকিৎসা করা উচিত যদি আসলেই ওই রকম কিছু হয়ে থাকে।
বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় এভারকেয়ার হাসপাতালে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভিন্ন জিনিস। চিকিৎসা ব্যবস্থা আলাদা। চিকিৎসা একটা মানবিক ব্যাপার। সেই প্রেক্ষাপটে এভারকেয়ার সহ আরও বিভিন্ন জায়গায় ভালো ভালো চিকিৎসক আছে। সুতরাং, যদি রোগীর অবস্থা খারাপই হয় দলেরও উচিত, এভারকেয়ার হাসপাতালেরও উচিত, তার ফ্যামিলিরও উচিত এবং সরকারেরও দায়দায়িত্ব আছে। খালেদা জিয়ার অবস্থা যদি খারাপ হয়ে থাকে এই এক্সিকিউটিভ অর্ডার বাতিল করে, সরকারের নিজস্ব তত্ত্ববাধায়নে বঙ্গবন্ধু ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞ টিমের দ্বারা বোর্ড করে তার চিকিৎসা করা উচিত।
তিনি বলেন, তারা কর্মসূচী দিয়েছে সহিংস কর্মসূচী, দানবিক কর্মসূচী। সরকার পতন করবে। সরকারের কাছে বিএনপি মানবিকতা চাচ্ছেন, সুযোগ চাচ্ছে, আবার সরকার পতনের কথাও বলছে। এখানে কোথাও একটা বোঝাপড়ার সমস্যা রয়েছে। বিএনপি আদৌ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চায় কিনা সেটা নিয়ে ধুম্রজাল রয়েছে। তারা তো চায় না।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশীদ বলেছেন, নির্বাচনের তফসিল পেছানোর সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। আমি এর কোনো সম্ভাবনা দেখি না। কারণ রাজনৈতিক দলগুলোর যে সন্দেহের প্রাচীর তৈরি হয়েছে তাতে সে সম্ভাবনা নেই। তবে এক দফা আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল শেষ চেষ্টা হিসেবে তফসিল পেছানোর জন্য তৎপরতা চালাতে পারে। কিন্তু তফসিল পেছানোর নামে যদি আবার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাকে কেউ প্রশ্ন বিদ্ধ করে ফেলে তাহলে আরেকটা অরাজকতার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। কাজেই নির্বাচন কমিশন এবং সরকারকে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবে। নির্বাচনী রোডম্যাপ বিপন্ন হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। তবে তফসিল পেছানোর সম্ভাবনা দেখি না।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, সরকার এবং নির্বাচন কমিশন যদি জনমত উপেক্ষা করে একতরফা নির্বাচনের দিকে যায় তাহলে চলমান যে সংঘাতময় পরিবেশ চলছে সেটাকে আরও উস্কে দেওয়া হবে। সেটা সাধারণ জনগণের জন্যও ভালো হবে না, সরকারের জন্যও ভালো হবে না। দেশের সাধারণ মানুষ এখন একটা সংকটের মধ্যে আছে। দ্রব্যমূল বৃদ্ধি সহ দুর্নীতি, লুটপাট, অব্যবস্থাপনা আগামীতে অর্থনৈতিক সংকটকে আরও তীব্রতর করতে পারে এমন আভাস অর্থনীতিবিদরা দিচ্ছেন। এ রকম পরিস্থিতিতে জনমত উপক্ষো করে এবং নির্বাচন কমিশনের কোনো কর্মকাণ্ড যেমন গ্রহণযোগ্য হবে তেমনি আমাদের দেশের সংকটকে আরও বাড়িয়ে দেবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, যেভাবে আমেরিকা চাচ্ছিল যে বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে ভারতও যেন আমেরিকার সাথে একই সুরে কথা বলে কিন্তু সেটা যে হবে না তা পরিষ্কার হয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারত যে আমেরিকার কথা শুনবে না সেটি তারা স্পষ্ট করেছে। এখন আমেরিকা কি করবে সেটা তারা ভালো জানে। তবে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমেরিকা সারা বিশ্বের মধ্যে প্রচন্ড সমালোচনার মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে ইসরায়েল ইস্যুতে তারা প্রচন্ড প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। আমেরিকা তার নিজ দেশেই প্রতিরোধের মুখে পড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, অনেক দিন ধরে আমাদের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছিল। রাস্তা-ঘাট বন্ধ না করে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল। সাধারণত নির্বাচনের আগ দিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ে। নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো কি করবে না করবে, নির্বাচনী ইশতেহার কেমন হবে ইত্যাদি। কিন্তু রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে দিয়ে হরতাল-অবরোধ করা কোন রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর উচিত না।