এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে শিক্ষার্থীরা হাফপাসের দাবিতে আন্দোলন করছে। অথচ এখন পর্যন্ত এ বিষয়টির সুরাহা হয়নি। এই আন্দোলনের মধ্যেই গত বুধবার এবং বৃহস্পতিবার দুজনের মৃত্যু ঘটেছে ঢাকায়। একজন নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী, অন্যজন গণমাধ্যমকর্মী। এই দুই জনের মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের আন্দোলন আবার নতুন করে দানা বাঁধতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে বিআরটিএ পরিবহন মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করছে। এসব বৈঠকে মনে হচ্ছে, অনেকটাই দায়সারা এবং এক ধরনের গা বাঁচানোর কৌশল। কোন বৈঠকেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সংকট সমাধানে আন্তরিক দেখা যাচ্ছে না। বরং সমস্যাকে জিয়িয়ে রেখে শিক্ষার্থীদের যেন সরকারের প্রতিপক্ষ করার এক প্রাণান্ত চেষ্টা চলছে। কারা এটি করছে এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা এর আগেও ২০১৮ সালের নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করেছিল। সেই আন্দোলনের স্থায়িত্ব ছিল ৯ দিন। এই আন্দোলনে পুরো ঢাকা শহর অচল হয়ে গিয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের দাবি মানার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। এবার শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এখন পর্যন্ত সীমিত পর্যায়ে। কারণ অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পুরোপুরিভাবে খোলেনি। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ পরীক্ষা নিয়ে এক ধরনের ব্যস্ত। কিন্তু এরকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে যেকোনো সময় আন্দোলন দানা বেঁধে উঠতে পারে এবং ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করতে পারে বলে জানা গেছে। তাহলে কি সরকারের ভেতর থেকেও কেউ কেউ চেষ্টা করছে যে, এই আন্দোলন জিয়িয়ে থাকুক?
বিআরটিএর চেয়ারম্যান পরিবহন মালিকদের সাথে বৈঠকের পর বলেছেন যে, কত স্কুল আছে এবং কত শিক্ষার্থী বাসে পরিবহন করে ইত্যাদির তালিকা দরকার। এ ধরনের অবাস্তব এবং উদ্ভট চিন্তা ভাবনা একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার মাথায় কিভাবে আসে সেই প্রশ্ন উঠেছে সরকারের মধ্যেই। কারণ এটি একটি নীতিগত প্রশ্ন। কত শিক্ষার্থী আছে বা কত শিক্ষার্থী বাসে পরিবহন করে সেটি মূল বিষয় নয়। তিনি কালক্ষেপণের জন্য নাকি শিক্ষার্থীদেরকে তাঁতিয়ে দেওয়ার জন্য এ ধরনের বক্তব্য রাখছেন সেটি একটি বিষয় বটে। পরিবহন মালিকদের বক্তব্য বেশ উদ্বেগজনক। তারা বলেছেন যে, আশিভাগ পরিবহন মালিক নাকি গরিব। গরিবই যদি হবেন তাহলে তারা পরিবহন মালিক হলেন কিভাবে? পুরো বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের তালবাহানা দেখা যাচ্ছে।
যেহেতু শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে আছেন, সেখানে সড়ক পরিবহন মন্ত্রীর একটি ভূমিকা থাকা উচিত ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত সড়ক পরিবহন মন্ত্রীর কোন ভূমিকা আমাদের চোখে পড়েনি। বরং তিনি বিষয়টি একধরনের এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়েছেন। এ ধরনের কৌশল খুবই আত্মঘাতী হতে পারে বলেও বিভিন্ন মহল মনে করছেন। ২০১৮ সালে যখন আন্দোলন করা হয়, তখন শিক্ষার্থীদেরকে যে সমস্ত আশ্বাসগুলো দেয়া হয়েছিল তার খুব কমই বাস্তবায়ন হয়েছে। কাজেই এখন নতুন করে আশ্বাস দিয়ে সবকিছু সমাধান হবে এমনটি ভাবার কোন কারণ নেই। তাছাড়া একটি নাজুক সময় শিক্ষার্থীরা মাঠে নেমেছেন এবং এর পরিণাম যেকোনো সময় ভয়ঙ্কর হতে পারে বলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। আর তাই দ্রুত স্কুলপড়ুয়া বাচ্চাদেরকে ঘরে নিতে হবে এবং এই আন্দোলনটির একটি ইতিবাচক সমাধান করতে হবে। কিন্তু সেই করার ক্ষেত্রে সরকারের একটি মহলের চরম গাফিলতির লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলেও মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
সাইবার যুদ্ধ আওয়ামী লীগ কোটা আন্দোলন তথ্য ডিজিটাল বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গ্রেপ্তার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলামগীর
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন গ্রেপ্তার তারেক জিয়া নাশকতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
এখন ষড়যন্ত্র এবং আন্দোলনের দু’টি অংশ হচ্ছে। একটি দৃশ্যমান অংশ যেটি মাঠে হচ্ছে। সরকার পতনের লক্ষ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ওপর ভর করে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, পেশাদার সন্ত্রাসীরা এক জোট হয়ে দেশে নাশকতা সৃষ্টি করেছে। একটি ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টির চেষ্টা করে সরকারকে হটানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলো। অন্যটি সাইবার জগতে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
বিএনপির বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযান চলছে। নির্বাচনের আগে ২৮ অক্টোবর বিএনপির তাণ্ডবের পর যেভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করেছিল সরকার ঠিক একইভাবে এবারও ১৭ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে যে সন্ত্রাস, সহিংসতা হচ্ছে তার হোতাদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এই সময় নাশকতায় ছাত্রশিবির এবং জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্রদল এবং বিএনপি নেতারা সরকার পতনের একটা নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন। সেই চেষ্টা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তারা আন্দোলনকে সহিংস এবং নাশকতার পথে নিয়ে যান। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো যেমন বিটিভি, সেতু ভবন ইত্যাদি হামলার পিছনে বিএনপির সরাসরি সম্পৃক্ততার খবর পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আর এই কারণেই যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
টানা তিন বারের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। দলে তার কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা আওয়ামী লীগ সভাপতির পরপরই। সারাদিনই দলীয় কার্যালয়ে কিছু না কিছু বলেন। সংবাদ সম্মেলন করে নানা বিষয়ে বক্তব্য রাখাকে তিনি রীতিমতো একটি রেওয়াজে পরিণত করেছেন। কিন্তু সেই ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে আওয়ামী লীগে এখন নানা রকম অস্বস্তি এবং প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে।