ইনসাইড পলিটিক্স

তারেকের জন্য বিএনপি ছেড়েছেন যাঁরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২০ মে, ২০১৮


Thumbnail

তারা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। প্রত্যেকেই জিয়াউর রহমানের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। বিএনপি গঠনেও তাঁদের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখন তাঁরা বিএনপিতে নেই। বিএনপিতে না থাকলেও অনেকেই তাঁদের বিএনপির শুভাকাঙ্ক্ষী মনে করে। বিএনপির মধ্যেই অনেকের এই মত প্রবল যে, বিএনপির কঠিন সময়ে তাঁদের দরকার ছিল। বিএনপির নেতাদের একটি বড় অংশ মনে করেন, তারেক জিয়ার বাড়াবাড়ি এবং অপমানজনক আচরণের জন্যই এঁরা বিএনপিতে নেই। তারেক জিয়ার কর্তৃত্বের বলী বিএনপি নেতাদের মধ্যে আলোচিত তিনজন হলেন অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ এবং ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা।

অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে জিয়া বিএনপিতে ডেকে নিয়েছিলেন। অধ্যাপক চৌধুরীর বাবা কাফিলউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন আওয়ামী লীগের সদস্য। বি. চৌধুরী বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘আপনার ডাক্তার’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। জিয়ার আমন্ত্রণে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। জিয়া তাঁকে দলের মহাসচিব বানান। ১৯৮১’র ৩০ মে জিয়া চট্টগ্রামে এক সেনা বিদ্রোহে নিহত হন। ঐ সময় পাশের রুমে থেকেও অক্ষত ভাবে বেঁচে যান অধ্যাপক চৌধুরী। এরপর থেকে দলে অনেকেই তাঁকে সন্দেহের চোখে দেখেন। ৯১ এ বিএনপি ক্ষমতায় এলে তিনি হন সংসদ উপনেতা। কিন্তু ২০০১ সালের নির্বাচনে আবার জ্বলে ওঠে বি. চৌধুরীর টেলিভিশন প্রতিভা। পুত্র মাহি বি. চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে তৈরি করেন ‘সাবাশ বাংলাদেশ’। ঐ এক অনুষ্ঠান ২০০১ এ বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছিল বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। এর পুরস্কারও পান নগদ। বেগম জিয়া তাঁকে রাষ্ট্রপতি করেন। কিন্তু ২০০১ এর নভেম্বরে রাষ্ট্রপতি হয়ে ২০০২ এর জুনেই তাঁকে বিদায় নিতে হয়। রাষ্ট্রপতি হয়ে তিনি জিয়াউর রহমানের কবরে যাননি, এটা ছিল তাঁর অপরাধ। এজন্য বিএনপির সংসদীয় দলের সভায় তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অনাস্থা প্রস্তাব সংসদে ওঠার আগেই অধ্যাপক চৌধুরী রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান। গঠন করেন বিকল্প ধারা। বিএনপি তখন দুর্দান্ত প্রতাপে দেশ চালাচ্ছে। অধ্যাপক চৌধুরীর ‘বেয়াদপি’ তাঁদের সহ্য হবার কথাও না। বিএনপির ক্যাডাররা বিকল্প ধারার মিছিলে আক্রমণ করে। মহাখালীর রেললাইন ধরে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে বি. চৌধুরীর দৌড় এখনো বিএনপির অপরাজনীতির বড় বিজ্ঞাপন। কিন্তু প্রশ্ন হলো কেন বি. চৌধুরীকে তখন রাষ্ট্রপতি পদ থেকে সরে যেতে হয়েছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, জিয়ার কবরে না যাওয়াটা ছিল একটা অজুহাত। আসল কারণ ছিল তারেক। অধ্যাপক চৌধুরীর ছেলে মাহি বি. চৌধুরীর সঙ্গে ‘একান্ত ব্যক্তিগত’ বিষয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তারেক। বিএনপির অন্য একটি সূত্র দাবি করে, রাষ্ট্রপতি হিসেবে বি. চৌধুরী অল্প দিনের মধ্যে লাইম লাইটে এসেছিলেন, এটা তারেক পছন্দ করেননি। যে কারণেই হোক বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যকে বিএনপি ছাড়তে হয় তারেকের জন্যই, এনিয়ে কারোই কোনো সংশয় নেই।

কর্নেল (অ.) অলি আহমেদ বিএনপির কেবল প্রতিষ্ঠাতা সদস্যই ছিলেন না, ছিলেন জিয়ার সামরিক সহচরের মধ্যে সবচেয়ে বিশ্বস্ত। জিয়ার জীবন কালে কর্নেল (অব.) অলি ছিলেন তাঁর সার্বক্ষণিক সঙ্গী। কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ জিয়ার মৃত্যুর পরও তাঁর বিশ্বস্ততা অটুট রেখেছিলেন। রাজনীতিতে বেগম জিয়ার সবচেয়ে বিশ্বস্ত পরামর্শকদের মধ্যে তিনিই ছিলেন অন্যতম। ৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের পর অলিই ছিলেন ক্ষমতাবান মন্ত্রী। কিন্তু তারেক যুগে এসে নক্ষত্রের পতন ঘটে। ২০০১ এর নির্বাচনের চট্টগ্রামে কর্নেল অলির দুই আসনের একটি দেওয়া হয় জামাতাকে।মুক্তিযোদ্ধা এই সাবেক সেনা কর্মকর্তা তারেকের এই অপমান মেনে  নিতে পারেন নি । প্রতিবাদ করেন। বিএনপি নেতাদের অনেকেই স্মৃতিচারণ করেন, তারেক জিয়ার সঙ্গে কর্নেল (অব.) অলির বাদানুবাদ এখনো বিএনপির চর্চার বিষয়। হাওয়া ভবনের বচসার সময় উপস্থিত একজন নেতা বলেছিলেন, ঐ বিকেলে তারেক জিয়াকে অলি আহমেদ যা যা বলেছিলেন, তা অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেছে। অলি আহমেদ বলেছিলেন তুমি বিএনপিকে ধ্বংস করবে, তুমি নিজেও ধ্বংস হবে। ২০০৬ সালে অলি তাঁর নিজের গড়া দল ছেড়ে এলডিপি গঠন করেন।

ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ব্যক্তিত্বে এই দু’জনের ধারেকাছে না থাকলেও, তিনিও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। রাজনীতিতে তিনি যোগ্যতার চেয়েও বেশি পেয়েছেন। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে তারেকের ইচ্ছাতেই ব্যারিস্টার হুদা যোগাযোগ মন্ত্রী হন। এসময় হুদা, তারেক, মামুন জুটি সিএনজি বাণিজ্য থেকে শুরু করে সড়ক মহাসড়কে দুর্নীতি ও লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেন। ব্যারিস্টার হুদার ঘনিষ্ঠরা জানান, টাকা বানাতেই তারেক, মামুন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাকে যাচ্ছেতাই ভাবে ব্যবহার করেন। নাজমুল হুদা নিজেই ওয়ান ইলেভেনে গ্রেপ্তার হয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন, ‘তারেকের কারণেই বিএনপির প্রতি তার ঘৃণা এসেছিল।’ অবশ্য ২০১২ তে বিএনপি ছাড়ার কারণ আদর্শিক নয় বরং দুর্নীতি মামলা থেকে বাঁচতেই তিনি দল ছেড়েছেন।



Read in English- https://bit.ly/2Gxz0RO

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

খালেদা-তারেককে বাদ দেয়ার কথা ভাবছে বিএনপি

প্রকাশ: ১০:১৮ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।

সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বাদ দিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি কিনা- সেই বিকল্প চিন্তা আমাদের মধ্যে আছে। 

তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পক্ষ থেকে একটি কমিটি বা বডি বাছাই করা হবে যারা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দিবে। বিষয়টিকে আরও পরিষ্কার করে তুলে ধারার জন্য আলাল বলেন, এরকম কমিটি বা বডির চিন্তা-ভাবনা আছে। হয়তো ওই দুইজনের (খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান) পক্ষ থেকেই বলা হতে পারে- চূড়ান্ত পর্যায়ে গেলে অপশন এ-বি-সি থাকবে। এই নির্দিষ্ট পাঁচজন বা এই বডি মিলে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দিয়ে দিবে।

উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময় পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকদের সাথে বিএনপির বৈঠকে দলটির ভবিষ্যত পরিকল্পনা কিংবা আন্দোলন-সংগ্রাম নিয়ে কোন কিছু জানতে চাইলে বেশির ভাগ সময় কোন সদুত্তর দিতে পারেন না বিএনপির শীর্ষ নেতারা। এক্ষেত্রে তারা বলেন যে, তারা (বিএনপি) লন্ডনের (তারেক জিয়া) সঙ্গে কথা বলে পরে তাদেরকে (কূটনীতিক) জানাবেন। এ রকম বাস্তবতায় কূটনীতিকরা দলের নেতৃত্ব থেকে বিএনপির এই শীর্ষ দুই নেতাকে বাদ দেয়া যায় কিনা সে ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছে বিভিন্ন সময়। এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত বিএনপিতে কি সিদ্ধান্ত আসে।

খালেদা জিয়া   তারেক জিয়া   বিএনপি   সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

পদ্মশ্রী পদক পাওয়ায় শুভেচ্ছা জানাতে বন্যার বাসায় সস্ত্রীক নানক

প্রকাশ: ০৯:২৮ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ পদকে ভূষিত হওয়ায় দেশের খ্যাতনামা রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। সঙ্গে ছিলেন তার সহধর্মিনী অ্যাডভোকেট সৈয়দা আরজুমান বানু নারগিস।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বন্যার মোহাম্মদপুরের বাসায় গিয়ে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান নানক ও তার স্ত্রী। এ সময় ঢাকা ১৩ আসনের স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
  
শুভেচ্ছাকালে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, সংগীত অঙ্গনে বন্যার এই অর্জন বাংলাদেশের অর্জন। তার এই অর্জন আমাদের। সংগীত অঙ্গনে বন্যার এই অর্জন আগামী প্রজন্মের কাছে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। 

উল্লেখ্য, গত সোমবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দিল্লিতে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাত থেকে দেশটির চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ পদক গ্রহণ করেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।

রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা   জাহাঙ্গীর কবির নানক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তীব্র গরমের জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী: মির্জা আব্বাস

প্রকাশ: ০৭:১৮ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

তীব্র গরমের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে দায়ী করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেছেন, আজকে দেশে ঋতু নেই। এখনকার মানুষজনও বলতে পারে না বাংলাদেশে কয়টি ঋতু। দেশটি পরিকল্পিতভাবে ধীরে ধীরে মরুকরণের দিকে যাচ্ছে। এর জন্য দায়ী সরকার।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীতে সাধারণ মানুষের মাঝে বোতলজাত সুপেয় খাবার পানি, স্যালাইন ও হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচতে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন বিএনপির এ নেতা। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

মির্জা আব্বাস বলেন, ১১শ’র বেশি নদী ছিল বাংলাদেশে। কিন্তু তিনশ’র মতো নদী নিখোঁজ হয়ে গেছে আওয়ামী ভূমি দস্যুদের কারণে। এই হলো দেশের অবস্থা। অন্যদিকে ঢাকা শহরকে ইট-কাঠ-পাথরে ভরে দেওয়া হয়েছে। গাছ দেখা যায় না। ঢাকার চারপাশে জলাশয়গুলো ভরাট হয়ে গেছে। সরকারের মদদপুষ্ট ভূমি দস্যুরা সেসব ভরাট ও দখল করেছে। ভূমি দস্যুদের সঙ্গে সরকারের তলে তলে যোগাযোগ আছে। রাজধানীকে কৃত্রিম মরুভূমি বানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে তাপমাত্রা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিনই হিটস্ট্রোকে কোথাও না কোথাও মানুষ মারা যাচ্ছে। ঢাকা শহরও এর ব্যতিক্রম নয়। এ অবস্থায়ও সাধারণ মানুষকে সহায়তার জন্য জেডআরএফ পানি ও স্যালাইন বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। কারণ, আমরা রাজনীতি করি সমাজের কল্যাণের জন্য।

তীব্র গরম   মির্জা আব্বাস   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির ইউটার্ন

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, উপজেলা নির্বাচনটি দলীয় ভিত্তিতে হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক দিচ্ছেন না। কিন্তু আমাদের অবস্থান হলো খুব সুস্পষ্ট। আমরা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনেও কোনো নির্বাচনে যাব না। তার মতে, এই কারণেই বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

তবে বিএনপির সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করে দুই শতাধিক বিএনপির প্রার্থী এখন নির্বাচনের মাঠে। প্রথম দফার নির্বাচনে বিএনপির ৬৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তাদেরকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বলা হলেও শেষ পর্যন্ত ৪ জন ছাড়া কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা অত্যন্ত সংহত বলেও জানা গেছে। আর এ কারণেই বিএনপি ইউটার্ন নিয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত ছিলো যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনের পরেও বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বিএনপি এক্ষেত্রে অপেক্ষার নীতি গ্রহণ করেছে বলেই দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে।

তবে বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা বলছেন যে, বিএনপি পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং উপযুক্ত সময় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলেও ওই নেতা অভিমত ত্যক্ত করেছেন। 

বিএনপির আশা ছিলো স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তের পর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দফায় হয়তো বিএনপির নেতারা নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তার বিপরীত। প্রথম দফার চেয়ে দ্বিতীয় দফায় বিএনপির প্রার্থীর সংখ্যা বেশি এবং তৃতীয় দফাতেও আনুপাতিক হারে প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। এর কারণ হিসেবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যে সমস্ত এলাকায় বিএনপির জনপ্রিয়তা বেশি এবং যে সমস্ত এলাকায় নেতারা যত বেশি জনবান্ধব তারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। কারণ তারা মনে করছেন, সংগঠন রক্ষা করা এবং নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। আর এ কারণেই তারা দলীয় সিদ্ধান্তকে এখন তোয়াক্কা করছে না। 

অন্যদিকে বিএনপির শীর্ষ নেতারা অনুধাবন করছেন যে, উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তটা অত্যন্ত কঠোর হয়েছে, আত্মঘাতী হয়েছে এবং এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা বিএনপির জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জিং হবে। বিশেষ করে কোন কোন উপজেলায় যদি বহিষ্কার করা হয় তাহলে ওই এলাকাটি বিএনপি শূন্য হয়ে যাবে। এ কারণেই বিএনপি এখন তাদের সিদ্ধান্তকে পুনঃমূল্যায়ন করছে। কেউ কেউ বলছেন যে, বিএনপি ইউটার্ন করেছে। তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপির সব সিদ্ধান্ত আসে লন্ডন থেকে। বিএনপি নির্বাচনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কি নেবে তা জানার এখতিয়ার বিএনপির ঢাকার কোন নেতার নেই। লন্ডন থেকে কি বাণী আসে তার অপেক্ষায় আছে বিএনপি।

বিএনপি   উপজেলা নির্বাচন   বহিষ্কার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বেঁচে যাচ্ছেন রাজ্জাক, ফেঁসে যাচ্ছেন শাজাহান খান

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাচনে কোন্দল বিভক্তি এবং আধিপত্য ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এই নির্দেশনার মধ্যে সবচেয়ে বড় নির্দেশনা ছিল মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কয়েক দফা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নেতাকর্মীদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা একমাত্র প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ছাড়া কেউই মানেননি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিষয়টি বরদাস্ত করা হবে না এবং আগামী ৩০ এপ্রিল দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে তার কঠোর মনোভাবের কথা ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের যারা সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। আর এরকম ব্যবস্থা যদি শেষ পর্যন্ত নেওয়া হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছেন। গতকাল তাকে এ ব্যাপারে ইঙ্গিতও দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে শাজাহান খানকে ভর্ৎসনা করেছেন বলেও গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে।

অন্যদিকে ড. রাজ্জাক তার খালাতো ভাইকে প্রার্থী করলেও এই যাত্রায় তিনি বেঁচে যাচ্ছেন। কারণ আওয়ামী লীগ আত্মীয়স্বজনদের ব্যাপারে যে নীতিমালা গ্রহণ করেছে তাতে বলা হচ্ছে যে, যদি কোন স্বজন আগে উপজেলা চেয়ারম্যান থাকেন তবে তার প্রার্থী হতে কোনও অসুবিধা নেই। আগে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে ছিলেন ড. রাজ্জাকের খালাতো ভাই। কাজেই এবার তিনি প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি নীতির আওতায় পড়বেন না। আর এ কারণেই তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না বলেও জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেছেন, যে সমস্ত প্রার্থীরা আগে থেকেই উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন তারা এবার প্রার্থী হবেন। এমনকি তারা কোন নেতার স্বজন হলেও প্রার্থী হতে অসুবিধা নেই। এই বিবেচনায় ড. রাজ্জাক এ যাত্রায় বেঁচে যাচ্ছেন।

তবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়গুলোকে ইতিবাচক ভাবে নেননি। হয়তো তিনি সরাসরি শাস্তির হাত থেকে বাঁচবেন, তবে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যত এই সিদ্ধান্তে কতটা উজ্জ্বল হবে সেটি সময়ই বলে দেবে।

ড. আব্দুর রাজ্জাক   আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন   শাজাহান খান  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন