নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:২১ পিএম, ১২ জুলাই, ২০১৮
ভিসা বাতিল হয়ে যাওয়ায় ভারতে প্রবেশ করতে না পারার পেছনে কারণ হিসেবে বাংলাদেশকে দায়ী করলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ব্রিটিশ আইনজীবী লর্ড কার্লাইল। গতকাল বুধবার রাতে লন্ডনে ফিরে গিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
লর্ড কার্লাইল বলেন, ‘আমি একটি বৈধ বাণিজ্য ই-ভিসা নিয়ে দিল্লিতে গিয়েছিলাম কিন্তু আমাকে বলা হলো যে ভিসাটি বাতিল করা হয়েছে। মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারকে আমার ভিসা বাতিলে চাপ দিয়েছে আর ভারতও সেই অনুযায়ী কাজ করেছে।’
কার্লাইল আরও বলেন, ‘এটা খুব চিন্তার বিষয় যে ভারতকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা হয়।’
এর আগে গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ব্রিটিশ আইনজীবী লর্ড কার্লাইলকে দিল্লি বিমানবন্দর থেকেই লন্ডনে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিল ভারত। কার্লাইল দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছালে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তাঁকে জানান ভিসা বাতিল করায় তাঁর ভারতে প্রবেশের অনুমতি নেই। এরপর তাঁকে লন্ডনের ফিরতি ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয়।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সের সদস্য কার্লাইল খালেদার আইনজীবী হিসেবে প্রথমে বাংলাদেশে এসে সংবাদ সম্মেলন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ভিসা দেয়নি। এরপর তিনি দিল্লির লা মেরিডিয়ান হোটেলে ১২ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানিয়েছিলেন। এতে ঢাকা থেকে বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতা ও খালেদা জিয়ার আইনজীবীদেরও যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভারত সরকার কার্লাইলের ভিসা বাতিল করায় এ সংবাদ সম্মেলন পণ্ড হয়ে গেল।
ব্রিটিশ এ আইনজীবী বিএনপির নেতাকর্মীদের মতোই মনে করেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত’ এবং তাঁর বিরুদ্ধে যেসব সাক্ষ্যপ্রমাণ আদালতে পেশ করা হয়েছে সেগুলো ‘অগ্রহণযোগ্য’। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে দূরে রাখতেই খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি। এ বিষয়গুলো নিয়েই কার্লাইল সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে চেয়েছিলেন।
বিএনপি নেতাকর্মীরা অভিযোগ করছেন যে, বাংলাদেশ সরকারের আপত্তির কারণেই নাকি দিল্লি কার্লাইলকে ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। ঘটনা আসলে তা নয়। কার্লাইলকে ভারতের ভিসা না দেওয়ার আসল কারণ হলো, জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা। ইসলামিক ফ্যানাটিকদের সঙ্গে কার্লাইলের যোগসাজশ পেয়েছে ভারত। ভারতের মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিম এবং তার ডান হাত হিসেবে পরিচিত ছোটা শাকিলের লন্ডনে অবস্থানের বিষয়েও এক সময় সহযোগিতা করেছিলেন লর্ড কার্লাইল। দাউদ ইব্রাহিমের মতো মাফিয়া ডন ও তাঁদের দোসরদের ব্যাপারে ভারত সরকারের অবস্থান সবসময়ই কঠোর। আর সে কারণেই লর্ড কার্লাইলকে ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এই একই কারণে দুবাইয়ের আট-দশজন আইনজীবীকেও কখনো ভারতের ভিসা দেওয়া হয় না।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের
বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র
সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি।
উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
তবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি
পদে খোকন দায়িত্ব পালন করবেন কিনা সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দলটির
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে বিএনপি
চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের
উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের বৈঠক হয়। ওই বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন নেতা বলেন, একটি
সুষ্ঠু সমাধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে, এ ইস্যুতে এখন থেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের
কথা বলতে বারণ করা হয়েছে।
সূত্রমতে, বৈঠকে ব্যারিস্টার মাহবুব
উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল (বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব) নিজ নিজ অবস্থান থেকে যুক্তি-পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেন। বৈঠকের
শেষ পর্যায়ে মাহবুব উদ্দিন খোকন ও কায়সার কামাল একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ
প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করেন। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে আপাতত কোন্দ্বল নিরসন হয়েছে
বলে মনে করছেন বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা। পরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বৈঠকের
সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বৈঠকে উপস্থিত একজন আইনজীবী নেতা আরও বলেন, এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক
ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি-না এবং তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে দায়িত্ব
পালন করবেন কি-না সে সিদ্ধান্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেবেন।
এদিন বিকাল ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত বৈঠকে মহাসচিব ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু
মাহমুদ চৌধুরী, ড. আবদুল মঈন খান এবং আইনজীবীদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই
রায় চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, আহমেদ আযম খান উপস্থিত ছিলেন।
মাহবুব উদ্দিন খোকন ইস্যুতে বিএনপির
উচ্চপর্যায়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। গত সোমবার দলের স্থায়ী কমিটিতেও দুই ধরনের ভাষ্য
পাওয়া গেছে। বিএনপির সিনিয়র নেতা ও সিনিয়র আইনজীবীদের একাংশ খোকনকে জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরাম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনায় বিব্রত।
তারা মনে করেন, খোকনের মতো জনপ্রিয়
আইনজীবী নেতা এখন আর দলে নেই। তাকে অব্যাহতি দেওয়ার মাধ্যমে যাদের উৎসাহিত করা হয়েছে
তাদের আইন অঙ্গণে গ্রহণযোগ্যতা কম। আবার কারো কারো মত ছিল, দলের কেউ দলীয় স্বার্থের
ঊর্ধ্বে নয়। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনসহ যেকোনো বিষয়ে দলের সিদ্ধান্ত যারা
অমান্য করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। খোকনের বিরুদ্ধে কেনো
ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের একটি অংশ খোকনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নিতে জনমত গঠনে আদালত পাড়ায় কাজ করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে গত বুধবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান
তারেক রহমান আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে ওয়ান টু কথা বলেন। আইনজীবী নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে
বৃহস্পতিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে মহাসচিব সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক
করেন। এ বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বিষয়টি এতোদিন ছিল জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের, এখন তা বিএনপি টেকওভার করেছে। এই ইস্যুতে এখন সিদ্ধান্ত দেবেন দলের
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন বলেন, ‘ফোরামের তো গঠনতন্ত্রই নেই। সে (কায়সার কামাল) কীভাবে বহিষ্কার
করে? তার ক্ষমতা আছে বহিষ্কার করার? যে পর্যন্ত গঠনতন্ত্র না হবে, সে পর্যন্ত কাউকে
বহিষ্কার করা যাবে না। যত বহিষ্কার করা হয়েছে, তা আইনত কার্যকর নয়।’
এ সময় তিনি কায়সার কামালের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেও কথা বলেন। এর আগে গত শনিবার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে অব্যাহতি দেয় সংগঠনটি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি
চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার
সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে তিনি দলের সার্বিক বিষয়ে দলীয় প্রধানকে অবগত করেছেন।
বৃহস্পতিবার
(২৫ এপ্রিল) রাতে চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাত ৮টা
২০ মিনিটে খালেদা জিয়ার বাসভবনে প্রবেশ করেন বিএনপির মহাসচিব। রাত সোয়া ৯টার দিকে
তিনি বের হয়ে আসেন।
বিএনপির
মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ
তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতেই মির্জা ফখরুল ফিরোজায় গিয়েছিলেন। তবে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে সে বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি। উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।