নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৯ অগাস্ট, ২০১৮
বিএনপিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দাতা দেশ পাঁচটি পরামর্শ দিয়েছে। এই পাঁচ পরামর্শ বিএনপি মানলে, তাদের সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবির প্রতি ঐ দাতা দেশগুলো সমর্থন জানাবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তাহলেই দাতা দেশগুলো বিএনপির পাশে থাকবে। বিএনপির উচ্চপর্যায়ের কয়েকজন প্রতিনিধিদের কাছে মার্কিন দূতাবাসের কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এই পাঁচ পরামর্শ উপস্থাপন করেন। বিএনপির প্রতিনিধিরা অবশ্য বলেছেন, দলীয় ফোরামে কথা বলে তারা এব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পাঁচ পরামর্শের প্রধান পরামর্শ হলো ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বৃহত্তর একটি জোট গঠন এবং বিএনপির ঐ জোটে থাকা।
বিএনপির প্রতি মার্কিন দূতাবাসের দ্বিতীয় পরামর্শ হলো, ২০ দলীয় জোটের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রেখে, জামাতকে বাইরে রেখে নতুন জোট গঠন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে, নতুন জোটের শরিকদের অন্তত দেড়শ আসন ছেড়ে দেওয়া। এবং সুশাসন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিন্ন নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন।
বেগম জিয়ার মুক্তির বিষয়টি রাজনৈতিক এবং নির্বাচনী বিষয়ে না এনে, এটিকে আদালতের মাধ্যমে ফয়সালা করা।
এবং তারেক জিয়াকে আপাতত মূল রাজনৈতিক প্রবাহের বাইরে রাখা।
বিএনপি এবং কূটনীতিক পাড়ার একাধিক সূত্র বলছে, গতকাল বুধবার মার্কিন দূতাবাসের দুজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের দীর্ঘ বৈঠক হয়। এই বৈঠকে, আগামী নির্বাচনে সরকারের বিরুদ্ধে একটি সর্বদলীয় প্লাটফরম গঠনের জন্য তাগিদ দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত ছয় মাস ধরে মার্কিন দূতাবাস আগামী নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক হয়, সে লক্ষ্যে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলছে। এই সব আলাপ-আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে, মার্কিন দূতাবাস এই প্রস্তাবমালা তৈরি করেছে। সূত্র মতে, সব দল জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে, নির্বাচলে কারচুপি এবং ভোট কেন্দ্র দখলের মতো ঘটনাগুলো বন্ধ হবে। মার্কিন দূতাবাস মনে করে, সব দল অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলে নির্বাচন কমিশনও তাদের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসবে। আর নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য সবার আগে বিরোধী পক্ষের ঐক্য প্রয়োজন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সকল রাজনৈতিক দলের দাবি হলেও, ঐ দাবিতে বৃহত্তর ঐক্যের বড় বাধা জামাত। মার্কিন দূতাবাস মনে করে, বিএনপির সঙ্গে জামাত থাকার কারণে উদার নৈতিক গণতান্ত্রিক দলগুলো এই দলটির সঙ্গে ঐক্য গড়তে অস্বস্তি বোধ করে। সূত্র মতে, ড. কামাল হোসেন, অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীসহ বেশ ক’জন ‘জনপ্রিয়’ নেতা মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিদের বলেছেন, বিএনপি জামাত থেকে বেরিয়ে এলেই কেবল বিএনপির সঙ্গে জোট গঠনে তাঁরা রাজি। তবে, বেশ ক’জন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি মার্কিন দূতাবাসকে এরকম জোটের নেতৃত্ব বিএনপির হাতে থাকা উচিত নয় বলে মত দিয়েছে। বিএনপির নেতৃত্বে জোট হলে, সুশাসন এবং গণতান্ত্রিক বিধি ব্যবস্থার কোনো উন্নতি হবে না বলেও মত দিয়েছেন সুশীলরা। সুশীলরা কিছুদিনের জন্য হলেও, আওয়ামী লীগ বিএনপির বাইরে কারও সরকার পরিচালনার নেতৃত্বে থাকা উচিত বলেও মনে করেন। মার্কিন দূতাবাস অবশ্য মনে করে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্যতম শর্ত হলো নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপির ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। সূত্র মতে, অধ্যাপক বি. চৌধুরীর নেতৃত্ব মেনে নেওয়ার ব্যাপারে বিএনপির নেতিবাচক মনোভাব থাকলেও ড. কামালের ব্যাপারে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক বলেই অনেকে মনে করছেন।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের
বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র
সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি।
উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
তবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি
পদে খোকন দায়িত্ব পালন করবেন কিনা সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দলটির
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে বিএনপি
চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের
উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের বৈঠক হয়। ওই বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন নেতা বলেন, একটি
সুষ্ঠু সমাধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে, এ ইস্যুতে এখন থেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের
কথা বলতে বারণ করা হয়েছে।
সূত্রমতে, বৈঠকে ব্যারিস্টার মাহবুব
উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল (বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব) নিজ নিজ অবস্থান থেকে যুক্তি-পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেন। বৈঠকের
শেষ পর্যায়ে মাহবুব উদ্দিন খোকন ও কায়সার কামাল একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ
প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করেন। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে আপাতত কোন্দ্বল নিরসন হয়েছে
বলে মনে করছেন বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা। পরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বৈঠকের
সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বৈঠকে উপস্থিত একজন আইনজীবী নেতা আরও বলেন, এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক
ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি-না এবং তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে দায়িত্ব
পালন করবেন কি-না সে সিদ্ধান্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেবেন।
এদিন বিকাল ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত বৈঠকে মহাসচিব ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু
মাহমুদ চৌধুরী, ড. আবদুল মঈন খান এবং আইনজীবীদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই
রায় চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, আহমেদ আযম খান উপস্থিত ছিলেন।
মাহবুব উদ্দিন খোকন ইস্যুতে বিএনপির
উচ্চপর্যায়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। গত সোমবার দলের স্থায়ী কমিটিতেও দুই ধরনের ভাষ্য
পাওয়া গেছে। বিএনপির সিনিয়র নেতা ও সিনিয়র আইনজীবীদের একাংশ খোকনকে জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরাম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনায় বিব্রত।
তারা মনে করেন, খোকনের মতো জনপ্রিয়
আইনজীবী নেতা এখন আর দলে নেই। তাকে অব্যাহতি দেওয়ার মাধ্যমে যাদের উৎসাহিত করা হয়েছে
তাদের আইন অঙ্গণে গ্রহণযোগ্যতা কম। আবার কারো কারো মত ছিল, দলের কেউ দলীয় স্বার্থের
ঊর্ধ্বে নয়। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনসহ যেকোনো বিষয়ে দলের সিদ্ধান্ত যারা
অমান্য করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। খোকনের বিরুদ্ধে কেনো
ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের একটি অংশ খোকনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নিতে জনমত গঠনে আদালত পাড়ায় কাজ করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে গত বুধবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান
তারেক রহমান আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে ওয়ান টু কথা বলেন। আইনজীবী নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে
বৃহস্পতিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে মহাসচিব সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক
করেন। এ বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বিষয়টি এতোদিন ছিল জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের, এখন তা বিএনপি টেকওভার করেছে। এই ইস্যুতে এখন সিদ্ধান্ত দেবেন দলের
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন বলেন, ‘ফোরামের তো গঠনতন্ত্রই নেই। সে (কায়সার কামাল) কীভাবে বহিষ্কার
করে? তার ক্ষমতা আছে বহিষ্কার করার? যে পর্যন্ত গঠনতন্ত্র না হবে, সে পর্যন্ত কাউকে
বহিষ্কার করা যাবে না। যত বহিষ্কার করা হয়েছে, তা আইনত কার্যকর নয়।’
এ সময় তিনি কায়সার কামালের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেও কথা বলেন। এর আগে গত শনিবার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে অব্যাহতি দেয় সংগঠনটি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি
চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার
সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে তিনি দলের সার্বিক বিষয়ে দলীয় প্রধানকে অবগত করেছেন।
বৃহস্পতিবার
(২৫ এপ্রিল) রাতে চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাত ৮টা
২০ মিনিটে খালেদা জিয়ার বাসভবনে প্রবেশ করেন বিএনপির মহাসচিব। রাত সোয়া ৯টার দিকে
তিনি বের হয়ে আসেন।
বিএনপির
মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ
তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতেই মির্জা ফখরুল ফিরোজায় গিয়েছিলেন। তবে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে সে বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি। উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।