নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:২৬ এএম, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
জাতিসংঘে আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক গিয়েছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে ব্যর্থ হয়ে পরে পরে গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে। মার্কিন রাজধানী থেকে কিছু একটা নিয়েই দেশে ফেরার ইচ্ছা ছিল তাঁর। কিন্তু ওয়াশিংটনেও ব্যর্থ হতে হলো বিএনপি মহাসচিবকে। সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ করতে গিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধেই একগাদা অভিযোগ শুনতে হলো মির্জা ফখরুলকে। বিএনপির নেতৃত্ব নিয়েই মার্কিনীদের আপত্তির কথা জানালেন দলটির মহাসচিব।
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন মির্জা ফখরুল। বিএনপি মহাসচিবের নিউইয়র্ক মিশনের লক্ষ্য ছিল একটাই ২০১৪ সালের মতো এবারও যেন জাতিসংঘ নির্বাচন তদারকিতে আসে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার এক বৈঠকে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ও অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এই মুহূর্তে হস্তক্ষেপ করার পরিস্থিতি তাঁদের নেই। একই সঙ্গে আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে অংশ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব। জাতিসংঘ মহাসচিবের সাক্ষাৎ পেতেও ব্যর্থ হন মির্জা ফখরুল। মহাব্যস্ত জাতিসংঘ মহাসচিব কোনো সময় দিতে পারেননি তাঁকে। নিউইয়র্কে ব্যর্থ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল শুক্রবারই নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটন যান।
নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার ওয়াশিংটনে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া বিষয়ক মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারির সঙ্গে একটি বৈঠকে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন বিএনপি মহাসচিব। পরে কংগ্রেসম্যানদের সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করেও তিনি ব্যর্থ। অবশ্য ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া বিষয়ক একজন ডেস্ক কর্মকর্তার সাক্ষাৎ পান বিএনপি মহাসচিব। ওই কর্মকর্তার কাছে বাংলাদেশের সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ বিএনপির বিভিন্ন দাবি নিয়ে কিছু কাগজপত্র জমা দেন মির্জা ফখরুল।
এ পর্যায়ে ডেস্ক কর্মকর্তা মির্জা ফখরুলের কাছে তাঁর সংগঠনের পরিচয় জানতে চান। বিএনপির কথা জেনে তিনি প্রশ্ন করে এখন সংগঠনের নেতৃত্বে কে?
এমন প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়াই এখন বিএনপির নেতৃত্বে। অবশ্য হালনাগাদ তথ্য জানা ডেস্ক কর্মকর্তা মির্জা ফখরুলকে বলেন, তিনি তো এখন কারাগারে। তাহলে নেতৃত্বে থাকেন কীভাবে?
এবার মির্জা ফখরুল বলেন, আসলে নেতৃত্বে এখন তারেক জিয়া। এবার বিস্মিত ডেস্ক কর্মকর্তা বলেন, how could a terrorist can be a party chief? অর্থাৎ, একজন সন্ত্রাসী কীভাবে একটি দলের নেতা হয়?
এরপর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই ডেস্ক কর্মকর্তা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে মির্জা ফখরুলকেই তথ্য জানান। একই সঙ্গে দলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী থাকা, জামাতের মতো সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক গণতন্ত্রের জন্য কতটা হুমকির তাই মির্জা ফখরুলকে বলেন দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক মার্কিন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, সরকারের দমননীতি, বিএনপির ওপর দমন-পীড়নসহ নানা বিষয়ে মার্কিনীদের অবহিত করতে গিয়ে উল্টো নিজেই দল নিয়ে শিক্ষা পেলেন মির্জা ফখরুল।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের
বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র
সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি।
উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
তবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি
পদে খোকন দায়িত্ব পালন করবেন কিনা সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দলটির
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে বিএনপি
চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের
উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের বৈঠক হয়। ওই বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন নেতা বলেন, একটি
সুষ্ঠু সমাধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে, এ ইস্যুতে এখন থেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের
কথা বলতে বারণ করা হয়েছে।
সূত্রমতে, বৈঠকে ব্যারিস্টার মাহবুব
উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল (বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব) নিজ নিজ অবস্থান থেকে যুক্তি-পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেন। বৈঠকের
শেষ পর্যায়ে মাহবুব উদ্দিন খোকন ও কায়সার কামাল একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ
প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করেন। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে আপাতত কোন্দ্বল নিরসন হয়েছে
বলে মনে করছেন বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা। পরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বৈঠকের
সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বৈঠকে উপস্থিত একজন আইনজীবী নেতা আরও বলেন, এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক
ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি-না এবং তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে দায়িত্ব
পালন করবেন কি-না সে সিদ্ধান্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেবেন।
এদিন বিকাল ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত বৈঠকে মহাসচিব ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু
মাহমুদ চৌধুরী, ড. আবদুল মঈন খান এবং আইনজীবীদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই
রায় চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, আহমেদ আযম খান উপস্থিত ছিলেন।
মাহবুব উদ্দিন খোকন ইস্যুতে বিএনপির
উচ্চপর্যায়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। গত সোমবার দলের স্থায়ী কমিটিতেও দুই ধরনের ভাষ্য
পাওয়া গেছে। বিএনপির সিনিয়র নেতা ও সিনিয়র আইনজীবীদের একাংশ খোকনকে জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরাম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনায় বিব্রত।
তারা মনে করেন, খোকনের মতো জনপ্রিয়
আইনজীবী নেতা এখন আর দলে নেই। তাকে অব্যাহতি দেওয়ার মাধ্যমে যাদের উৎসাহিত করা হয়েছে
তাদের আইন অঙ্গণে গ্রহণযোগ্যতা কম। আবার কারো কারো মত ছিল, দলের কেউ দলীয় স্বার্থের
ঊর্ধ্বে নয়। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনসহ যেকোনো বিষয়ে দলের সিদ্ধান্ত যারা
অমান্য করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। খোকনের বিরুদ্ধে কেনো
ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের একটি অংশ খোকনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নিতে জনমত গঠনে আদালত পাড়ায় কাজ করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে গত বুধবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান
তারেক রহমান আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে ওয়ান টু কথা বলেন। আইনজীবী নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে
বৃহস্পতিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে মহাসচিব সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক
করেন। এ বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বিষয়টি এতোদিন ছিল জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের, এখন তা বিএনপি টেকওভার করেছে। এই ইস্যুতে এখন সিদ্ধান্ত দেবেন দলের
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন বলেন, ‘ফোরামের তো গঠনতন্ত্রই নেই। সে (কায়সার কামাল) কীভাবে বহিষ্কার
করে? তার ক্ষমতা আছে বহিষ্কার করার? যে পর্যন্ত গঠনতন্ত্র না হবে, সে পর্যন্ত কাউকে
বহিষ্কার করা যাবে না। যত বহিষ্কার করা হয়েছে, তা আইনত কার্যকর নয়।’
এ সময় তিনি কায়সার কামালের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেও কথা বলেন। এর আগে গত শনিবার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে অব্যাহতি দেয় সংগঠনটি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি
চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার
সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে তিনি দলের সার্বিক বিষয়ে দলীয় প্রধানকে অবগত করেছেন।
বৃহস্পতিবার
(২৫ এপ্রিল) রাতে চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাত ৮টা
২০ মিনিটে খালেদা জিয়ার বাসভবনে প্রবেশ করেন বিএনপির মহাসচিব। রাত সোয়া ৯টার দিকে
তিনি বের হয়ে আসেন।
বিএনপির
মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ
তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতেই মির্জা ফখরুল ফিরোজায় গিয়েছিলেন। তবে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে সে বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি। উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।