নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০২ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে অন্তত নির্বাচন পর্যন্ত দলের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে অনুরোধ জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই অনুরোধ জানাতেই গতকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি থেকে লন্ডনে উড়ে গেছেন বিএনপি মহাসচিব। তবে মহাসচিবের অনুরোধে আপাতত সাড়া দেননি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
সম্প্রতি ভারতে গিয়েছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল আউয়াল মিন্টুসহ দলটির একটি প্রতিনিধি দল। সেখানে ভারতের পক্ষ থেকে বিএনপি নেতাদের দুটি শর্ত দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, তারেক জিয়ার দল থেকে সরে দাঁড়াতে হবে এবং জামাতের সঙ্গ ছাড়তে হবে বিএনপিকে। আর শুধু এই দুটি শর্ত পূরণ করলেই বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হতে পারে ভারতের।
ভারতের দেওয়া শর্ত নিয়ে আলোচনা করতে ওই সময় লন্ডন ছুটে গিয়েছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওই সময় তারেক মহাসচিবের কথা শুনে বলেছিলেন, ভারতের সঙ্গে বিএনপির আলোচনা আর বাড়ানোর দরকার নেই। বরং আলোচনা হবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে। একই সঙ্গে জাতিসংঘেও বিএনপির অবস্থান তুলে ধরা হবে।
তারেক জিয়ার উদ্যোগেই তাঁর নিয়োগ করা লবিস্ট ফার্মের মাধ্যমে জাতিসংঘে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার সুযোগ পায় বিএনপি। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গেও কথা বলার সুযোগ আছে বলে জানা যায়। এরপরই গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন মির্জা ফখরুল। বিএনপি মহাসচিবের নিউইয়র্ক মিশনের লক্ষ্য ছিল একটাই ২০১৪ সালের মতো এবারও যেন জাতিসংঘ নির্বাচন তদারকিতে আসে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার এক বৈঠকে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব মির্জা ফখরুলের কাছে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ও অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এই মুহূর্তে হস্তক্ষেপ করার পরিস্থিতি জাতিসংঘের নেই। এছাড়া আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে অংশ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব। সমঝোতার মধ্য দিয়েই বিএনপিকে সমস্যা সমাধানে পরামর্শ জাতিসংঘের। পরে নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটন যান বিএনপি মহাসচিব। স্থানীয় সময় শুক্রবার ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া বিষয়ক ডেস্কের এক কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের সুযোগ পান মির্জা ফখরুল। ওই কর্মকর্তার কাছে বাংলাদেশ সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ বিএনপির বিভিন্ন দাবি নিয়ে কিছু কাগজপত্র জমা দেন মির্জা ফখরুল। বিএনপির পক্ষ বাংলাদেশের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি সর্বোপরি নির্বাচনে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জানানো হয়। তবে এসব দাবির কোনোটিই তেমন গুরুত্ব পায়নি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে। উপরন্তু মার্কিন সরকার ও পররাষ্ট্র দপ্তর বিএনপির নেতৃত্বে তারেক জিয়ার ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০০৬ সালেও তারেক জিয়াকে একজন সন্ত্রাসী এবং সন্ত্রাসবাদের মদদদাতা হিসেবে চিহ্নিত করে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়ান ইলেভেনে জেল থেকে বেরিয়ে তারেক জিয়ার যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারেক জিয়াকে ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানায় মার্কিন সরকার। সেই অবস্থান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো পরিবর্তন হয়নি তাই পরিষ্কার হলো মির্জা ফখরুলের এই সফরে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির তিনটি বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে,
১. একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে কীভাবে দুর্নীতিবাজ, আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত চিহ্নিত অপরাধী থাকতে পারে। বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা বাতিল নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের যথেষ্ট আপত্তি আছে। এই ৭ ধারা বাতিল হওয়ার কারণে বিএনপি এখন দুর্নীতিবাজদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে বলেই মত বিশ্লেষকদের।
২. জামাতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২০১৭ সালে হালনাগাদ করা সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় শিবির আছে। ঐক্য থেকে জামাতকে ছাড়া নিয়ে বিএনপির সুস্পষ্ট অবস্থান জানতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। উল্লেখ্য, মার্কিন মদদপুষ্ট যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্যও জামাত ছাড়ার বিষয়ে বিএনপিকে চাপ দিয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, মার্কিন অবস্থানের কারণেই যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্যও জামাত ছাড়া বিএনপি চায়। দুটি জোটই এক অবস্থান নিয়েছে, জামাত থাকলে আমরা বিএনপির সঙ্গে নেই।
৩. তারেক জিয়ার বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে ভালোভাবেই অবহিত যুক্তরাষ্ট্র। বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপ ও নেটওয়ার্কের সঙ্গে তারেকের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে পর্যাপ্ত তথ্য আছে বলে জানানো হয়। তাই বিএনপির নেতৃত্বে তারেক জিয়ার থাকা নিয়ে আপত্তি মার্কিন সরকারের।
ওয়াশিংটনের সূত্রগুলো বলছে, সেখানে মির্জা ফখরুলের আরও দুটি বৈঠক করার কথা ছিল। মার্কিন কংগ্রেসম্যান ও সিনেটরদের সঙ্গে হওয়ার কথা ছিল এসব বৈঠক। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর আর সে পথে পা বাড়াননি মির্জা ফখরুল। বরং প্রথম ফ্লাইটেই লন্ডনের পথ ধরেন।
শনিবার রাতে লন্ডনে পৌঁছে সেখানে থাকা পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন। আজ রোববার তারেক জিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন মির্জা ফখরুল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। এ সময় নির্বাচন পর্যন্ত দলের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান।
লন্ডনের সূত্রগুলো বলছে, মির্জা ফখরুলের অনুরোধ মানতে নারাজ তারেক জিয়া। অন্তত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়ের আগ পর্যন্ত তারেক জিয়া কিছুতেই দল থেকে সরে দাঁড়াবেন না। তারেক জিয়া দলের মহাসচিবকে বলেছেন, তিনি এই মুহূর্তে সরে গেলে দলের ওপরই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এ সময় বিএনপি মহাসচিব ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে দল থেকে সরে দাঁড়ালেও আসলে দল তারেক জিয়াই চালাবেন। তবে এমন প্রস্তাবে কোনো সাড়া দেননি তারেক। এই ইস্যুতে বিএনপি কোনো ভাঙনের মুখে পড়বে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি এভারকেয়ার হাসপাতাল তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।
আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।
বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।
জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।
এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।
শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।
আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।
কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।
কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ তৃণমূল উপজেলা নির্বাচন রাজনীতি ড. আব্দুর রাজ্জাক শাজাহান খান জাহিদ মালেক মোস্তফা কামাল
মন্তব্য করুন
এভারকেয়ার হাসপাতাল খালেদা জিয়া বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন